আমানত ফেরত দিতে পারছে না পিপলস লিজিং by দীন ইসলাম ও এম এম মাসুদ
হাতে
ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন, টেস্ট রিপোর্ট। সঙ্গে ফিক্সড ডিপোজিটের ফটোকপি ও
একটি লাঠি। এভাবেই মতিঝিল সিটি সেন্টারের ১৭ তলায় পিপলস লিজিং অ্যান্ড
ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস অফিসে হাজির হলেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা
আব্দুস সামাদ। হাপাতে হাপাতে নারী রিসিপশনিস্ট এর কাছে জানতে চাইলেন,
এমডিসহ অন্য কর্মকর্তারা কেউ আছেন কিনা। না সূচক জবাব শোনার পর হতাশ আব্দুস
সামাদ কথা বলেন মানবজমিন প্রতিবেদকের সঙ্গে। তিনি জানান, সরকারি চাকুরি
শেষে জীবনের শেষ সম্বল পেনশনের ২৫ লাখ টাকা পিপলস লিজিংয়ে রেখেছিলেন।
উদ্দেশ্য মূল টাকা রেখে একটু স্বচ্ছলভাবে জীবনযাপন করা। কিন্তু ওই আশায়
গুড়েবালি। ছয় মাস ধরে ২৫ লাখ টাকার মাসিক লাভ পাচ্ছেন না। এখন আসল টাকাও
ফেরত পাবেন কিনা সেই চিন্তায় আছেন। সরজমিনে লিজিং কোম্পানিটির রিসিপশনে তিন
ঘন্টা অপেক্ষা করে মিহন ওমর, মোহাম্মদ হোসেন, হাফিজুর রহমান ও পারভেজ
ইসলামসহ অনেক আমানতকারীকে পাওয়া যায়।
সবার মুখে একই কথা, মূল টাকা ফেরত পাবো তো। প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন শাখাতে গ্রাহকরা ভিড় করছেন। ধরনা দিয়েও টাকা পাচ্ছে না গ্রাহকরা। এমনকি কয়েক মাস ধরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনও ঠিকমতো দিতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি। গতকাল তাদের কার্যালয়ে গিয়ে দায়িত্বশীল কাউকেই পাওয়া যায়নি। এদিন দুপুর আড়াইটায় মতিঝিলের প্রধান কার্যালায়ে যাত্রাবাড়ি থেকে আসেন হাফিজুর রহামান। তিনি মানবজমিনকে বলেন, এক বছর আগে তিনি পিপলস লিজিংয়ে ১০ লাখ টাকা রাখেন। গতকাল এসেছিলেন তুলতে। কিন্তু অফিসের কেউ তাকে দেখা দেননি।
দিনের পর দিন ঘুরছেন। এর শেষ কোথায় তিনি তা জানেন না। আরেক গ্রাহক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, আমার অফিসের বসের প্রায় এক কোটি টাকা এই প্রতিষ্ঠানে রয়েছে। কিন্তু এখন তুলতে পারছি না। এ টাকা আদায় ছাড়া কোন পথ দেখতে পাচ্ছি না। একই দিনে নিডস এডুকেশন নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত পারভেজ ইসলাম আসেন তার ফিক্স ডিপোজিটের অর্থ তুলে নিতে। তিনি মানবজমিনকে বলেন, আমার বন্ধুর এক কোটির বেশি টাকা এই প্রতিষ্ঠনে রয়েছে। তাকেও টাকা দিতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি। এদিকে ধানমন্ডির বাসিন্দা মুতাসীর উদ্দীন খান ইয়ামীন বেশি সুদের আশায় ৩০ লাখ টাকার ৬ মাস মেয়াদি আমানত (টিডিআর) রাখেন পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসে।
দশ লাখ টাকা করে তিনটি হিসাবে অর্থ জমা করেন গেল বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে। বার্ষিক ১২ শতাংশ হারে সুদসহ আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে তার টাকা ফেরত দেয়ার কথা। কিন্তু পিপলস লিজিং তার আমানত ফেরত দিচ্ছে না। তার পাওনা এক লাখ ৬০ হাজার টাকার সুদসহ মোট ৩১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। পিপলস লিজিংয়ের প্রধান কার্যালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন জায়গায় দৌড়ঝাঁপ করে কাজের কাজ না হওয়ায় নিরুপায় হয়ে এখন ধরনা দিয়েছেন পুলিশের কাছে। টাকা আদায় করে দেয়ার ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানিয়ে ঢাকা মহনগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পিপলস লিজিং এ প্রতিদিন ধর্ণা দেয়া এসব গ্রাহকের বাইরে অনেকেই জমানো টাকা তুলতে পারছেন না। এমনকি কয়েক মাস ধরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি। এজন্য সিনিয়র ও জুনিয়র মিলিয়ে কয়েক শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারি প্রতিষ্ঠানটি ছেড়ে চলে গেছেন। প্রতিষ্ঠানটির চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার মানিক লাল সমাদ্দারসহ বেশ কয়েক জন সিনিয়র কর্মকর্তা চলে গেছেন। এছাড়া অনেক কর্মকর্তা যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পিপলস লিজিংয়ের প্রধান কার্যালয়সহ গুলশান, মতিঝিল ও চট্টগ্রাম ব্রাঞ্চ অফিসে গ্রাহকদের সঙ্গে বচসার ঘটনা ঘটছে।
পিপলস লিজিং সূত্রে জানা গেছে, মালিক পক্ষ জালিয়াতি করে বিপুল অঙ্কের অর্থ আত্মসাতের কারণে প্রতিষ্ঠানটি ধুঁকে ধুঁকে চলছে। টাকা রেখে ফেরত না পাওয়ার তালিকায় সাবেক সচিব, পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ সুপরিচিত অনেক ব্যক্তিও রয়েছেন। এদের অনেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। এরপরও থেমে নেই পিপলস্? লিজিংয়ের আমানত সংগ্রহ। উচ্চসুদে আমানত সংগ্রহে নানা উপায়ে টোপ দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে ব্যাংকগুলো যেখানে ৬ থেকে ৭ শতাংশ সুদে মেয়াদি আমানত নিচ্ছে সেখানে পিপলস লিজিং ১২ শতাংশ সুদে আমানতের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তির মোবাইলে এসএমএস দিচ্ছে। এ ছাড়া ৫ বছরে দ্বিগুণসহ আকর্ষণীয় নানা স্কিম নিয়ে হাজির হচ্ছে মানুষের কাছে। বিশেষ করে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী, নারীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে উচ্চসুদের প্রলোভন দেখিয়ে আমানত সংগ্রহের চেষ্টা করছে। আমানত সংগ্রহে কারও মোবাইলে এসএমএস দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছে না এ প্রতিষ্ঠান। বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানলেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
পিপলস লিজিংয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ জন গ্রাহক তাদের আমানত তুলে নিতে অফিসটিতে আসেন। কিন্তু কাউকে টাকা দিতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি। ব্যক্তি আমানতকারীদের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ব্যাংক তাদের গচ্ছিত অর্থ চেয়েও ফেরত পাচ্ছে না। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি ব্যাংক এই কোম্পানিতে আমানত না রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে চিঠি দিয়েছে। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, ব্র্যাক ও রূপালী ব্যাংক এই কোম্পানিতে রাখা তাদের স্থায়ী আমানত তুলে নিতে চিঠি দিয়েছে। কিন্তু ওই চিঠির কোন সদুত্তর পায়নি তারা। এসব বিষয়ে পিপলস লিজিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি হুদার বক্তব্যের জন্য বিভিন্ন উপায়ে চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
অফিসে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। বলা হয়, স্যার অফিসে আসেননি। তার ব্যক্তিগত মোবাইলে ফোন ও এসএমএস করে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এদিন অফিসে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজী আহমেদ জামালকে পাওয়া যায়। তবে তিনি কারও সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক পরিদর্শনে দেখা যায়, পিপলস লিজিং থেকে বিতরণ করা ঋণের বেশিরভাগই জালিয়াতির মাধ্যমে তুলে নিয়েছেন পরিচালকরা। ভুয়া কাগজ তৈরি করে প্রায় হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ২০১৫ সালে ৫ পরিচালককে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে শুধু প্রতিষ্ঠানের নামে জমি কেনার কথা বলে নিজ নামে জমি রেজিস্ট্রি করার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা। জমি রেজিস্ট্রির এ জালিয়াতির মাধ্যমে সাবেক চেয়ারম্যান মতিউর রহমান ১১৬ কোটি টাকা, সাবেক পরিচালক খবির উদ্দিন মিয়া ১০৭ কোটি টাকা, আরেফিন সামসুল আলামিন, নার্গিস আলামিন ও হুমায়রা আলামিনের ২৯৮ কোটি টাকা আত্মসাতের তথ্য ওই সময়ে দুদকে জানানো হয়।
সবার মুখে একই কথা, মূল টাকা ফেরত পাবো তো। প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন শাখাতে গ্রাহকরা ভিড় করছেন। ধরনা দিয়েও টাকা পাচ্ছে না গ্রাহকরা। এমনকি কয়েক মাস ধরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনও ঠিকমতো দিতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি। গতকাল তাদের কার্যালয়ে গিয়ে দায়িত্বশীল কাউকেই পাওয়া যায়নি। এদিন দুপুর আড়াইটায় মতিঝিলের প্রধান কার্যালায়ে যাত্রাবাড়ি থেকে আসেন হাফিজুর রহামান। তিনি মানবজমিনকে বলেন, এক বছর আগে তিনি পিপলস লিজিংয়ে ১০ লাখ টাকা রাখেন। গতকাল এসেছিলেন তুলতে। কিন্তু অফিসের কেউ তাকে দেখা দেননি।
দিনের পর দিন ঘুরছেন। এর শেষ কোথায় তিনি তা জানেন না। আরেক গ্রাহক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, আমার অফিসের বসের প্রায় এক কোটি টাকা এই প্রতিষ্ঠানে রয়েছে। কিন্তু এখন তুলতে পারছি না। এ টাকা আদায় ছাড়া কোন পথ দেখতে পাচ্ছি না। একই দিনে নিডস এডুকেশন নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত পারভেজ ইসলাম আসেন তার ফিক্স ডিপোজিটের অর্থ তুলে নিতে। তিনি মানবজমিনকে বলেন, আমার বন্ধুর এক কোটির বেশি টাকা এই প্রতিষ্ঠনে রয়েছে। তাকেও টাকা দিতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি। এদিকে ধানমন্ডির বাসিন্দা মুতাসীর উদ্দীন খান ইয়ামীন বেশি সুদের আশায় ৩০ লাখ টাকার ৬ মাস মেয়াদি আমানত (টিডিআর) রাখেন পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসে।
দশ লাখ টাকা করে তিনটি হিসাবে অর্থ জমা করেন গেল বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে। বার্ষিক ১২ শতাংশ হারে সুদসহ আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে তার টাকা ফেরত দেয়ার কথা। কিন্তু পিপলস লিজিং তার আমানত ফেরত দিচ্ছে না। তার পাওনা এক লাখ ৬০ হাজার টাকার সুদসহ মোট ৩১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। পিপলস লিজিংয়ের প্রধান কার্যালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন জায়গায় দৌড়ঝাঁপ করে কাজের কাজ না হওয়ায় নিরুপায় হয়ে এখন ধরনা দিয়েছেন পুলিশের কাছে। টাকা আদায় করে দেয়ার ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানিয়ে ঢাকা মহনগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পিপলস লিজিং এ প্রতিদিন ধর্ণা দেয়া এসব গ্রাহকের বাইরে অনেকেই জমানো টাকা তুলতে পারছেন না। এমনকি কয়েক মাস ধরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি। এজন্য সিনিয়র ও জুনিয়র মিলিয়ে কয়েক শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারি প্রতিষ্ঠানটি ছেড়ে চলে গেছেন। প্রতিষ্ঠানটির চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার মানিক লাল সমাদ্দারসহ বেশ কয়েক জন সিনিয়র কর্মকর্তা চলে গেছেন। এছাড়া অনেক কর্মকর্তা যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পিপলস লিজিংয়ের প্রধান কার্যালয়সহ গুলশান, মতিঝিল ও চট্টগ্রাম ব্রাঞ্চ অফিসে গ্রাহকদের সঙ্গে বচসার ঘটনা ঘটছে।
পিপলস লিজিং সূত্রে জানা গেছে, মালিক পক্ষ জালিয়াতি করে বিপুল অঙ্কের অর্থ আত্মসাতের কারণে প্রতিষ্ঠানটি ধুঁকে ধুঁকে চলছে। টাকা রেখে ফেরত না পাওয়ার তালিকায় সাবেক সচিব, পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ সুপরিচিত অনেক ব্যক্তিও রয়েছেন। এদের অনেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। এরপরও থেমে নেই পিপলস্? লিজিংয়ের আমানত সংগ্রহ। উচ্চসুদে আমানত সংগ্রহে নানা উপায়ে টোপ দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে ব্যাংকগুলো যেখানে ৬ থেকে ৭ শতাংশ সুদে মেয়াদি আমানত নিচ্ছে সেখানে পিপলস লিজিং ১২ শতাংশ সুদে আমানতের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তির মোবাইলে এসএমএস দিচ্ছে। এ ছাড়া ৫ বছরে দ্বিগুণসহ আকর্ষণীয় নানা স্কিম নিয়ে হাজির হচ্ছে মানুষের কাছে। বিশেষ করে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী, নারীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে উচ্চসুদের প্রলোভন দেখিয়ে আমানত সংগ্রহের চেষ্টা করছে। আমানত সংগ্রহে কারও মোবাইলে এসএমএস দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছে না এ প্রতিষ্ঠান। বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানলেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
পিপলস লিজিংয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ জন গ্রাহক তাদের আমানত তুলে নিতে অফিসটিতে আসেন। কিন্তু কাউকে টাকা দিতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি। ব্যক্তি আমানতকারীদের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ব্যাংক তাদের গচ্ছিত অর্থ চেয়েও ফেরত পাচ্ছে না। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি ব্যাংক এই কোম্পানিতে আমানত না রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে চিঠি দিয়েছে। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, ব্র্যাক ও রূপালী ব্যাংক এই কোম্পানিতে রাখা তাদের স্থায়ী আমানত তুলে নিতে চিঠি দিয়েছে। কিন্তু ওই চিঠির কোন সদুত্তর পায়নি তারা। এসব বিষয়ে পিপলস লিজিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি হুদার বক্তব্যের জন্য বিভিন্ন উপায়ে চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
অফিসে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। বলা হয়, স্যার অফিসে আসেননি। তার ব্যক্তিগত মোবাইলে ফোন ও এসএমএস করে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এদিন অফিসে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজী আহমেদ জামালকে পাওয়া যায়। তবে তিনি কারও সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক পরিদর্শনে দেখা যায়, পিপলস লিজিং থেকে বিতরণ করা ঋণের বেশিরভাগই জালিয়াতির মাধ্যমে তুলে নিয়েছেন পরিচালকরা। ভুয়া কাগজ তৈরি করে প্রায় হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ২০১৫ সালে ৫ পরিচালককে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে শুধু প্রতিষ্ঠানের নামে জমি কেনার কথা বলে নিজ নামে জমি রেজিস্ট্রি করার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা। জমি রেজিস্ট্রির এ জালিয়াতির মাধ্যমে সাবেক চেয়ারম্যান মতিউর রহমান ১১৬ কোটি টাকা, সাবেক পরিচালক খবির উদ্দিন মিয়া ১০৭ কোটি টাকা, আরেফিন সামসুল আলামিন, নার্গিস আলামিন ও হুমায়রা আলামিনের ২৯৮ কোটি টাকা আত্মসাতের তথ্য ওই সময়ে দুদকে জানানো হয়।
No comments