ঈদের আগে নিখোঁজ স্বজনদের ফেরত চান তারা
নিখোঁজ স্বজনদের ফিরে পাবার আশায় এখনো পথে চেয়ে তাঁরা। প্রেসক্লাব, ঢাকা, ২৫ মে। ছবি: হাসান রাজা |
সবাই
ছিলেন অশ্রুসজল। কারও বাবা, কারও ভাই বা সন্তান বহু দিন ধরে নিখোঁজ।
মানববন্ধন করে তাঁরা নিখোঁজ স্বজনদের ফিরিয়ে দেওয়ার আকুতি জানিয়েছেন।
তাঁদের এ আকুতি সরকারের কাছে। মানববন্ধন শেষে নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের
সদস্যরা একে অন্যকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তখন কেউ কেউ
অজ্ঞান হয়ে যান।
শনিবার রাজধানীর প্রেসক্লাবের সামনে ‘মায়ের ডাক: খুন, গুম আর নয়’শীর্ষক এক মানববন্ধন ঘিরে এ দৃশ্যপট তৈরি হয়। বিভিন্ন সময়ে নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের প্ল্যাটফর্ম ‘মায়ের ডাক’ এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
মানববন্ধনে নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা স্বজন হারিয়ে নিজেদের দুঃসহ কষ্টের কথা তুলে ধরেন। ছেলের সন্ধান না পেয়ে কোনো মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। কেউ প্রিয়জনের মুখটি দেখতে না পারার যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন। কারও কারও পরিবারের খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। মানববন্ধনে ১৯টি পরিবারের স্বজনেরা অংশ নেন।
নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জড়িত থাকার অভিযোগ করেছেন নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনেরা। তাঁদের সবারই দাবি ঈদের আগে নিখোঁজ স্বজনকে ফিরিয়ে দেওয়ার। ছোট্ট লামিয়া ঈদের আগে নিখোঁজ বাবাকে ফিরিয়ে দেওয়ার আকুতি জানিয়ে বলে, ‘আমি আমার বাবাকে ফেরত চাই। বাবার সঙ্গে ঈদ করতে চাই।’ কথা শেষ হতেই লামিয়া বাবার ছবির দিকে তাকিয়ে কাঁদতে শুরু করে।
মানববন্ধনে জানানো হয়, গত পাঁচ থেকে ছয় বছরে পাঁচ শতাধিক লোক ‘গুমের’ শিকার হয়েছেন। এঁদের মধ্যে অল্প কয়েকজন ফিরেও এসেছেন। কিন্তু তাঁরা কোথা থেকে ফিরে এসেছেন, কোথায় ছিলেন সে বিষয়ে একটি কথাও বলছেন না।
দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে মানবাধিকার কর্মী নূর খান বলেন, ‘নির্যাতনের হাতিয়ার হিসেবে গুমকে ব্যবহার করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তথা সরকার এই হাতিয়ার ব্যবহার করছেন বলে কেউ কেউ মনে করছেন।’
নিখোঁজ মানুষকে ফিরে পেতে, উদ্ধার করতে তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি তোলেন তিনি।
২০১৩ সালের ১১ ডিসেম্বর মিরপুরের পল্লবী থেকে নিখোঁজ হন বিএনপি কর্মী সেলিম রেজা পিন্টু। এরপর থেকে তাঁর আর কোনো খোঁজ নেই জানিয়ে পিন্টুর বোন মুন্নী বলেন, ‘সাড়ে পাঁচ বছর ধরে প্রতি রাতে দরজার পাশে বসে থাকি, ভাইটা ফেরত আসবে। বৃদ্ধ বাবা-মাও পথ চেয়ে বসে থাকেন।’
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘স্বজন হারানোর বেদনা আপনার চেয়ে বেশি কে বুঝেছেন? আপনি সবচেয়ে বেশি বুঝেছেন। আপনার শাসন আমলে কীভাবে এত মানুষ নিখোঁজ হন? আপনি কীভাবে অ্যালাউ করেন।’
ছেলেকে হারিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন নিখোঁজ সাজেদুল ইসলামের মা। তিনি মৃত্যুর আগে কেবল একবার ছেলের মুখটি দেখতে চান। মানববন্ধনে এই আকুতি জানান সাজেদুল ইসলামের বোন মারুফা ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ভাইকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বলে বলে ক্লান্ত। বলার মতো আর শক্তি নেই। আমার ভাইকে ফিরিয়ে দিন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ আমলে নিচ্ছে না।’
মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের পরিচালক নাসিরউদ্দিন এলান বলেন, ‘গুম একটি মানবতাবিরোধী অপরাধ। সে অপরাধের বিচার হবে। আমরা মনে করি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এদের উঠিয়ে নিয়ে গেছে। কারণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তাঁদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’
পরিবারের কাছে নিখোঁজ ব্যক্তিদের পৌঁছে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘গুম-হত্যার জন্য দায়ী বিভিন্ন ধরনের জননিরাপত্তা বাহিনী, আইন শৃঙ্খলাবাহিনী। গণতন্ত্র না থাকলে এ ধরনের ঘটনা বাড়তেই থাকবে।’
শনিবার রাজধানীর প্রেসক্লাবের সামনে ‘মায়ের ডাক: খুন, গুম আর নয়’শীর্ষক এক মানববন্ধন ঘিরে এ দৃশ্যপট তৈরি হয়। বিভিন্ন সময়ে নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের প্ল্যাটফর্ম ‘মায়ের ডাক’ এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
মানববন্ধনে নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা স্বজন হারিয়ে নিজেদের দুঃসহ কষ্টের কথা তুলে ধরেন। ছেলের সন্ধান না পেয়ে কোনো মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। কেউ প্রিয়জনের মুখটি দেখতে না পারার যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন। কারও কারও পরিবারের খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। মানববন্ধনে ১৯টি পরিবারের স্বজনেরা অংশ নেন।
নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জড়িত থাকার অভিযোগ করেছেন নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনেরা। তাঁদের সবারই দাবি ঈদের আগে নিখোঁজ স্বজনকে ফিরিয়ে দেওয়ার। ছোট্ট লামিয়া ঈদের আগে নিখোঁজ বাবাকে ফিরিয়ে দেওয়ার আকুতি জানিয়ে বলে, ‘আমি আমার বাবাকে ফেরত চাই। বাবার সঙ্গে ঈদ করতে চাই।’ কথা শেষ হতেই লামিয়া বাবার ছবির দিকে তাকিয়ে কাঁদতে শুরু করে।
মানববন্ধনে জানানো হয়, গত পাঁচ থেকে ছয় বছরে পাঁচ শতাধিক লোক ‘গুমের’ শিকার হয়েছেন। এঁদের মধ্যে অল্প কয়েকজন ফিরেও এসেছেন। কিন্তু তাঁরা কোথা থেকে ফিরে এসেছেন, কোথায় ছিলেন সে বিষয়ে একটি কথাও বলছেন না।
দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে মানবাধিকার কর্মী নূর খান বলেন, ‘নির্যাতনের হাতিয়ার হিসেবে গুমকে ব্যবহার করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তথা সরকার এই হাতিয়ার ব্যবহার করছেন বলে কেউ কেউ মনে করছেন।’
নিখোঁজ মানুষকে ফিরে পেতে, উদ্ধার করতে তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি তোলেন তিনি।
২০১৩ সালের ১১ ডিসেম্বর মিরপুরের পল্লবী থেকে নিখোঁজ হন বিএনপি কর্মী সেলিম রেজা পিন্টু। এরপর থেকে তাঁর আর কোনো খোঁজ নেই জানিয়ে পিন্টুর বোন মুন্নী বলেন, ‘সাড়ে পাঁচ বছর ধরে প্রতি রাতে দরজার পাশে বসে থাকি, ভাইটা ফেরত আসবে। বৃদ্ধ বাবা-মাও পথ চেয়ে বসে থাকেন।’
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘স্বজন হারানোর বেদনা আপনার চেয়ে বেশি কে বুঝেছেন? আপনি সবচেয়ে বেশি বুঝেছেন। আপনার শাসন আমলে কীভাবে এত মানুষ নিখোঁজ হন? আপনি কীভাবে অ্যালাউ করেন।’
ছেলেকে হারিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন নিখোঁজ সাজেদুল ইসলামের মা। তিনি মৃত্যুর আগে কেবল একবার ছেলের মুখটি দেখতে চান। মানববন্ধনে এই আকুতি জানান সাজেদুল ইসলামের বোন মারুফা ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ভাইকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বলে বলে ক্লান্ত। বলার মতো আর শক্তি নেই। আমার ভাইকে ফিরিয়ে দিন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ আমলে নিচ্ছে না।’
মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের পরিচালক নাসিরউদ্দিন এলান বলেন, ‘গুম একটি মানবতাবিরোধী অপরাধ। সে অপরাধের বিচার হবে। আমরা মনে করি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এদের উঠিয়ে নিয়ে গেছে। কারণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তাঁদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’
পরিবারের কাছে নিখোঁজ ব্যক্তিদের পৌঁছে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘গুম-হত্যার জন্য দায়ী বিভিন্ন ধরনের জননিরাপত্তা বাহিনী, আইন শৃঙ্খলাবাহিনী। গণতন্ত্র না থাকলে এ ধরনের ঘটনা বাড়তেই থাকবে।’
নিখোঁজ স্বজনদের ফিরে পাবার আশায় এখনো পথে চেয়ে তাঁরা। প্রেসক্লাব, ঢাকা, ২৫ মে। ছবি: হাসান রাজা |
No comments