বছরে ধর্ষণের শিকার ৫৭১ শিশু
২০১৮
সালে সারা দেশে ২৮ প্রতিবন্ধী শিশুসহ ৫৭১ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এর
মধ্যে ৯৪ শিশু গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। ৬ শিশু ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছে।
এদিকে একই বছরে ৮১২ শিশু বিভিন্ন ধরনের যৌন নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার
হয়েছে।
‘শিশু অধিকার সংরক্ষণে ২০১৮-এর পরিস্থিতি’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে প্রতিবেদনটির তথ্য তুলে ধরা হয়। এই উপলক্ষে চাইল্ড রাইটস অ্যাডভোকেসি কোয়ালিশন ইন বাংলাদেশ ‘শিশু অধিকার সংরক্ষণে ২০১৮-এর পরিস্থিতি, বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
এবারের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ২০১৮ সালে ৪৩ শিশু উত্ত্যক্তের এবং ৮৭ শিশু যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে। বখাটেদের হাতে লাঞ্ছনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে ১৮টি। এই সংখ্যা বিভিন্ন পত্রপত্রিকা এবং রিপোর্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা। কিন্তু বাস্তবে এর সংখ্যা আরও বেশি।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘এই প্রতিবেদনে যা উঠে এসেছে, এটাই দেশের শিশু অধিকার পরিস্থিতির অবস্থা। এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। যে প্রতিবন্ধকতা আছে, তা অতটা কঠিন নয়। আইন তো আছেই। অংশীজনদের দায়িত্ব পালন করা উচিত। এ থেকে উত্তরণের উপায় যে আইন, বিজ্ঞপ্তি আছে, তা দিয়ে সচেতনতা তৈরি করা এবং অপরাধের ভীতিটা জানাতে হবে।’
ধর্ষণ, আত্মহত্যা বাড়ছে, উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, চাইল্ড পার্লামেন্টের নিজস্ব জরিপে এসেছে, ৮৭ শতাংশ শিশুই কোনো না কোনো যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। গণপরিবহনেই নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৫৩ শতাংশ। রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এমনকি পরিবারেও শিশুরা যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। কর্মজীবী ও গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের অবস্থা আরও ভয়াবহ। শিশুদের আত্মহত্যা করার প্রবণতা বেড়েছে ৩৯ দশমিক ৯১ শতাংশ। ২০১৮ সালে ২৯৮ শিশু আত্মহত্যা করেছে, ২০১৭ সালে এই সংখ্যাটি ছিল ২১৩।
প্রতিবেদনে শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে একটি জাতীয় সুরক্ষা কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা, পৃথক শিশু অধিদপ্তর ও জাতীয় শিশু অধিকার কমিশন গঠনের সুপারিশ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আবু তালেব। তিনি বলেন, ‘শিশু অধিকার কমিশন ও অধিদপ্তর গঠনের কাজ এগিয়েছে। কিন্তু হয়নি। আমার বিশ্বাস ও আশা ২০১৯ সালের মধ্যে এগুলো বাস্তবায়িত হবে।’
মা-বাবার হাতে ৫৩ শিশু খুন
শিশু পরিস্থিতি প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালে ৪ হাজার ৫৬৬ শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। গত বছর ৪১৮ শিশু হত্যার শিকার হয়েছে, যা ২০১৭ সালের তুলনায় ২৩ দশমিক ৩০ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে ৮১ শিশুকে অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারীরা হত্যা করেছে। মা-বাবার দ্বারা খুন হয়েছে ৫৩ শিশু। ৩১ শিশুকে অপহরণের পর হত্যা এবং ৬০ শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।
২০১৮ সালে আগুনে পুড়ে, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে, বজ্রপাতে, রাজনৈতিক সহিংসতায়, ভুল চিকিৎসায়, কর্তৃপক্ষের অবহেলায়, নৌ দুর্ঘটনায়, খাদ্যে বিষক্রিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনায় অপমৃত্যুর শিকার হয়েছে ২ হাজার ৩৫৪ শিশু, যা ২০১৭ সালের তুলনায় ৩৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি। পানিতে ডুবে মারা গেছে ৬০৬ শিশু। আর সড়ক দুর্ঘটনায় ৬২৭ শিশু নিহত হয়েছে, যা ২০১৭ সালের তুলনায় ৭৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেশি (৩৫৭ শিশু)।
চাইল্ড রাইটস অ্যাডভোকেসি কোয়ালিশন ইন বাংলাদেশ হচ্ছে শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা বেসরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার ১০ সদস্যের একটি জোট। ২০১৩ সাল থেকে এই জোটের পক্ষ থেকে প্রতিবছর শিশু অধিকার পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনটি তৈরির জন্য কোয়ালিশন সদস্য এবং অন্যান্য সংগঠনের কর্ম এলাকা থেকে জরিপ, দলগত আলোচনা এবং সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করা হয়। জরিপে গুণগত ও পরিমাণগত উভয় পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে।
‘শিশু অধিকার সংরক্ষণে ২০১৮-এর পরিস্থিতি’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে প্রতিবেদনটির তথ্য তুলে ধরা হয়। এই উপলক্ষে চাইল্ড রাইটস অ্যাডভোকেসি কোয়ালিশন ইন বাংলাদেশ ‘শিশু অধিকার সংরক্ষণে ২০১৮-এর পরিস্থিতি, বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
এবারের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ২০১৮ সালে ৪৩ শিশু উত্ত্যক্তের এবং ৮৭ শিশু যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে। বখাটেদের হাতে লাঞ্ছনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে ১৮টি। এই সংখ্যা বিভিন্ন পত্রপত্রিকা এবং রিপোর্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা। কিন্তু বাস্তবে এর সংখ্যা আরও বেশি।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘এই প্রতিবেদনে যা উঠে এসেছে, এটাই দেশের শিশু অধিকার পরিস্থিতির অবস্থা। এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। যে প্রতিবন্ধকতা আছে, তা অতটা কঠিন নয়। আইন তো আছেই। অংশীজনদের দায়িত্ব পালন করা উচিত। এ থেকে উত্তরণের উপায় যে আইন, বিজ্ঞপ্তি আছে, তা দিয়ে সচেতনতা তৈরি করা এবং অপরাধের ভীতিটা জানাতে হবে।’
ধর্ষণ, আত্মহত্যা বাড়ছে, উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, চাইল্ড পার্লামেন্টের নিজস্ব জরিপে এসেছে, ৮৭ শতাংশ শিশুই কোনো না কোনো যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। গণপরিবহনেই নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৫৩ শতাংশ। রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এমনকি পরিবারেও শিশুরা যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। কর্মজীবী ও গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের অবস্থা আরও ভয়াবহ। শিশুদের আত্মহত্যা করার প্রবণতা বেড়েছে ৩৯ দশমিক ৯১ শতাংশ। ২০১৮ সালে ২৯৮ শিশু আত্মহত্যা করেছে, ২০১৭ সালে এই সংখ্যাটি ছিল ২১৩।
প্রতিবেদনে শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে একটি জাতীয় সুরক্ষা কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা, পৃথক শিশু অধিদপ্তর ও জাতীয় শিশু অধিকার কমিশন গঠনের সুপারিশ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আবু তালেব। তিনি বলেন, ‘শিশু অধিকার কমিশন ও অধিদপ্তর গঠনের কাজ এগিয়েছে। কিন্তু হয়নি। আমার বিশ্বাস ও আশা ২০১৯ সালের মধ্যে এগুলো বাস্তবায়িত হবে।’
মা-বাবার হাতে ৫৩ শিশু খুন
শিশু পরিস্থিতি প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালে ৪ হাজার ৫৬৬ শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। গত বছর ৪১৮ শিশু হত্যার শিকার হয়েছে, যা ২০১৭ সালের তুলনায় ২৩ দশমিক ৩০ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে ৮১ শিশুকে অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারীরা হত্যা করেছে। মা-বাবার দ্বারা খুন হয়েছে ৫৩ শিশু। ৩১ শিশুকে অপহরণের পর হত্যা এবং ৬০ শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।
২০১৮ সালে আগুনে পুড়ে, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে, বজ্রপাতে, রাজনৈতিক সহিংসতায়, ভুল চিকিৎসায়, কর্তৃপক্ষের অবহেলায়, নৌ দুর্ঘটনায়, খাদ্যে বিষক্রিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনায় অপমৃত্যুর শিকার হয়েছে ২ হাজার ৩৫৪ শিশু, যা ২০১৭ সালের তুলনায় ৩৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি। পানিতে ডুবে মারা গেছে ৬০৬ শিশু। আর সড়ক দুর্ঘটনায় ৬২৭ শিশু নিহত হয়েছে, যা ২০১৭ সালের তুলনায় ৭৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেশি (৩৫৭ শিশু)।
চাইল্ড রাইটস অ্যাডভোকেসি কোয়ালিশন ইন বাংলাদেশ হচ্ছে শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা বেসরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার ১০ সদস্যের একটি জোট। ২০১৩ সাল থেকে এই জোটের পক্ষ থেকে প্রতিবছর শিশু অধিকার পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনটি তৈরির জন্য কোয়ালিশন সদস্য এবং অন্যান্য সংগঠনের কর্ম এলাকা থেকে জরিপ, দলগত আলোচনা এবং সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করা হয়। জরিপে গুণগত ও পরিমাণগত উভয় পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে।
No comments