মৃতদেহ থেকে কিডনি প্রতিস্থাপনে জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকরা by তাসকিনা ইয়াসমিন
দেশে
কিডনি রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। যেসব রোগীর কিডনি একেবারেই কাজ করে না,
অর্থাৎ মরণাপন্ন অবস্থা, তাদের বেঁচে থাকার একমাত্র বিকল্প হচ্ছে কিডনি
প্রতিস্থাপন । এক্ষেত্রে সাধারণত ডোনার হয়ে থাকেন রোগীর রক্তসম্পর্কের
কোনও স্বজন। চিকিৎসকরা বলছেন, দেশে কিডনির ডোনারের তীব্র সংকট রয়েছে।
সেজন্যই মৃতদেহ (ক্যাডাভার) থেকে কিডনি নিয়ে রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপনের
ওপরে জোর দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে বছরে ১১ ভাগ মানুষ কিডনি রোগে মারা যান। আর অস্ট্রেলিয়ায় এই রোগে মৃত্যুর হার শতকরা ১৬ ভাগ, আইসল্যান্ডে ১০ ভাগ এবং বাংলাদেশে ১৬ ভাগ। একটি গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ডা.রফিকুল ইসলাম জানান,দেশে প্রতিবছর কিডনি রোগে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার মানুষ মারা যান। এছাড়া, বর্তমানে দেশে কিডনি রোগের চিকিৎসা দিচ্ছেন মোট ১৭০ জন নেফ্রোলজিস্ট। রোগীদের ডায়ালায়সিস করার জন্য ১৩০টি সেন্টার রয়েছে। এসব সেন্টারে ১২০০ ডায়ালায়সিস মেশিনে মোট ২৫ হাজার রোগী ডায়ালায়সিস করিয়ে থাকেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, বছরে একজন রোগীর কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করাতে দুই থেকে তিন লাখ টাকা খরচ হয়। মাত্র ১০ ভাগ রোগী এই ব্যয় বহন করতে পারেন। বেশির ভাগ রোগীর পক্ষে এই পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা সম্ভব হয় না। ফলে তাদের অনিবার্য পরিণতি হয় মৃত্যু।
প্রফেসর ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কারও কিডনি ৭০ থেকে ৮০ ভাগ বিকল না হলে সাধারণত রোগ ধরা পড়ে না। তাই আমরা এটিকে বলি সাইলেন্স কিলার।’ তিনি বলেন, ‘কিডনি রোগ থেকে বাঁচতে হলে এর প্রতিরোধই হচ্ছে উত্তম উপায়। বিশ্বজুড়ে ক্রনিক কিডনি ডিজিজ (সিকেডি)-এ ৮৫০ মিলিয়ন মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। এরমধ্যে দুই দশমিক চার মিলিয়ন রোগী প্রতিবছর মারা যাচ্ছেন।’
সব দেশে সব বয়সী মানুষের মধ্যে এই রোগে আক্রান্তের হার ১০ ভাগ। এছাড়া, বিশ্বে প্রতি পাঁচ জন পুরুষের মধ্যে একজন এবং প্রতি চার জন নারীর মধ্যে একজন কিডনি রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। আগামী ১০ বছরের মধ্যে সারা বিশ্বে ৩১ দশমিক সাত ভাগ মানুষ কিডনি রোগে মারা যাবেন বলে সতর্ক বার্তা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা ।
সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা বলছেন, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ থাকলে কিডনি বিকল হওয়ার ঝুঁকি থাকে বেশি। অতিরিক্ত মোটা, অকারণে বমির ভাব— এ ধরনের লক্ষণগুলো কিডনি বিকল হওয়ার কারণ হতে পারে। কোনও সাধারণ চিকিৎসক যদি মনে করেন যে, রোগীর কিডনিতে সমস্যা আছে, তাহলে রোগীকে দ্রুত কিডনি বিশেষজ্ঞের কাছে রেফার করা উচিত। কারণ, কিডনি রোগ হলে রোগীর উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ পর্যন্ত দেশে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, ৭০ ভাগ ডোনার হলেন মায়েরা। মা তার সন্তানকে কিডনি দিয়েছেন। এছাড়া, বাবা দিয়েছেন ১২ ভাগ, বোন ৮ ভাগ, অন্যরা ১০ ভাগ এবং একজন মাত্র স্বামী তার স্ত্রীকে কিডনি দিয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে কিডনির রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা খুব বেশি। এ কারণে কিডনির চাহিদাও বেশি। তাই, মৃতদেহ (ক্যাডাভার) থেকে কিডনি প্রতিস্থাপন করতে পারলে তা সবার জন্য ভালো হবে।’
কিডনি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, ‘এদেশের গণমাধ্যম বা স্বেচ্ছাসেবি কোনও সামাজিক সংগঠন ক্যাডাভার থেকে কিডনি প্রতিস্থাপনের লক্ষ্যে সচেতনতা তৈরির কাজটি করতে পারে। আমরা চিকিৎসকরা যদি এটি নিয়ে কাজ করি, তাহলে মানুষজন অন্য চোখে দেখবে। তারা ধারণা করবে— এতে আমাদের কোনও বিশেষ উদ্দেশ্য আছে।’
ইনসাফ বারাকাহ কিডনি অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রফেসর ডা. এম ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আইনের কারণে এখনও এ বিষয়টি নিয়ে কাজ হচ্ছে না। তবে এটি হলে রোগীর জন্য এবং আমাদের চিকিৎসকদের সবার জন্যই ভালো হয়। পাশের দেশ ভারতের কোনও কোনও এলাকায় মরদেহ থেকে কিডনি সংগ্রহ করে তা রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশে জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হলে এটি শুরু করা সম্ভব।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে বছরে ১১ ভাগ মানুষ কিডনি রোগে মারা যান। আর অস্ট্রেলিয়ায় এই রোগে মৃত্যুর হার শতকরা ১৬ ভাগ, আইসল্যান্ডে ১০ ভাগ এবং বাংলাদেশে ১৬ ভাগ। একটি গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ডা.রফিকুল ইসলাম জানান,দেশে প্রতিবছর কিডনি রোগে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার মানুষ মারা যান। এছাড়া, বর্তমানে দেশে কিডনি রোগের চিকিৎসা দিচ্ছেন মোট ১৭০ জন নেফ্রোলজিস্ট। রোগীদের ডায়ালায়সিস করার জন্য ১৩০টি সেন্টার রয়েছে। এসব সেন্টারে ১২০০ ডায়ালায়সিস মেশিনে মোট ২৫ হাজার রোগী ডায়ালায়সিস করিয়ে থাকেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, বছরে একজন রোগীর কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করাতে দুই থেকে তিন লাখ টাকা খরচ হয়। মাত্র ১০ ভাগ রোগী এই ব্যয় বহন করতে পারেন। বেশির ভাগ রোগীর পক্ষে এই পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা সম্ভব হয় না। ফলে তাদের অনিবার্য পরিণতি হয় মৃত্যু।
প্রফেসর ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কারও কিডনি ৭০ থেকে ৮০ ভাগ বিকল না হলে সাধারণত রোগ ধরা পড়ে না। তাই আমরা এটিকে বলি সাইলেন্স কিলার।’ তিনি বলেন, ‘কিডনি রোগ থেকে বাঁচতে হলে এর প্রতিরোধই হচ্ছে উত্তম উপায়। বিশ্বজুড়ে ক্রনিক কিডনি ডিজিজ (সিকেডি)-এ ৮৫০ মিলিয়ন মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। এরমধ্যে দুই দশমিক চার মিলিয়ন রোগী প্রতিবছর মারা যাচ্ছেন।’
সব দেশে সব বয়সী মানুষের মধ্যে এই রোগে আক্রান্তের হার ১০ ভাগ। এছাড়া, বিশ্বে প্রতি পাঁচ জন পুরুষের মধ্যে একজন এবং প্রতি চার জন নারীর মধ্যে একজন কিডনি রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। আগামী ১০ বছরের মধ্যে সারা বিশ্বে ৩১ দশমিক সাত ভাগ মানুষ কিডনি রোগে মারা যাবেন বলে সতর্ক বার্তা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা ।
সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা বলছেন, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ থাকলে কিডনি বিকল হওয়ার ঝুঁকি থাকে বেশি। অতিরিক্ত মোটা, অকারণে বমির ভাব— এ ধরনের লক্ষণগুলো কিডনি বিকল হওয়ার কারণ হতে পারে। কোনও সাধারণ চিকিৎসক যদি মনে করেন যে, রোগীর কিডনিতে সমস্যা আছে, তাহলে রোগীকে দ্রুত কিডনি বিশেষজ্ঞের কাছে রেফার করা উচিত। কারণ, কিডনি রোগ হলে রোগীর উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ পর্যন্ত দেশে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, ৭০ ভাগ ডোনার হলেন মায়েরা। মা তার সন্তানকে কিডনি দিয়েছেন। এছাড়া, বাবা দিয়েছেন ১২ ভাগ, বোন ৮ ভাগ, অন্যরা ১০ ভাগ এবং একজন মাত্র স্বামী তার স্ত্রীকে কিডনি দিয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে কিডনির রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা খুব বেশি। এ কারণে কিডনির চাহিদাও বেশি। তাই, মৃতদেহ (ক্যাডাভার) থেকে কিডনি প্রতিস্থাপন করতে পারলে তা সবার জন্য ভালো হবে।’
কিডনি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, ‘এদেশের গণমাধ্যম বা স্বেচ্ছাসেবি কোনও সামাজিক সংগঠন ক্যাডাভার থেকে কিডনি প্রতিস্থাপনের লক্ষ্যে সচেতনতা তৈরির কাজটি করতে পারে। আমরা চিকিৎসকরা যদি এটি নিয়ে কাজ করি, তাহলে মানুষজন অন্য চোখে দেখবে। তারা ধারণা করবে— এতে আমাদের কোনও বিশেষ উদ্দেশ্য আছে।’
ইনসাফ বারাকাহ কিডনি অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রফেসর ডা. এম ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আইনের কারণে এখনও এ বিষয়টি নিয়ে কাজ হচ্ছে না। তবে এটি হলে রোগীর জন্য এবং আমাদের চিকিৎসকদের সবার জন্যই ভালো হয়। পাশের দেশ ভারতের কোনও কোনও এলাকায় মরদেহ থেকে কিডনি সংগ্রহ করে তা রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশে জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হলে এটি শুরু করা সম্ভব।’
No comments