১৮ বছর ধরে আদালতে ঘুরছেন শতবর্ষী রাবেয়া খাতুন by তোফায়েল হোছাইন
অস্ত্র
মামলা থেকে মুক্তি পেতে আদালতের বারান্দায় ১৮ বছর ধরে ঘুরছেন ১০৪ বছর বয়সী
বৃদ্ধা রাবেয়া খাতুন। প্রতি হাজিরার দিনে বয়সের ভারে ন্যূব্জ শরীরটাকে
অনেক কষ্ট করে টেনে নিয়ে তিনি আদালতে আসেন। দীর্ঘ সময় ধরে এই আসা-যাওয়ার
শাস্তি থেকে তিনি এখন মুক্তি চান। আদালতে বাংলা ট্রিবিউনের এ প্রতিনিধির
সঙ্গে আলাপকালে রাবেয়া খাতুন বলেন, ‘অনেকদিন ধরে এই মামলা আমি ভোগ করতেছি।
আদালত আমাকে এ থেকে খালাসও দেয় না, কোনও কিচ্ছু দেয়ও না।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৮ বছর আগে আমার নামে মিথ্যা অস্ত্র মামলা দেওয়া হয়। আমি কোনও অস্ত্র দেখিই নাই। এই মামলা এতদিন ধরে ভোগ করতেছি। আদালত আমাকে খালাস দেয় না। কোনও শাস্তিও বা অন্যকিচ্ছুও দেয় না। আমার ১০৪ বছর বয়স। আমি অনেক দূর থেকে আসি। আমি আর পারি না। আমি মামলা থেকে খালাস চাই।’
বুধবার (১৩ মার্চ) ঢাকা মহানগর ১ম অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে হাজিরা দিতে আসেন রাবেয়া খাতুন। ওই আদালতে তার মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। আদালতের বারান্দায় দাঁড়িয়ে নিজের আক্ষেপের কথা শোনান তিনি।
জানা যায়, ২০০২ সালে ২ জুন তেজগাঁও থানার মামলায় গ্রেফতার হন রাবেয়া খাতুন। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে ১৯ (ক) অবৈধভাবে অস্ত্র ও গুলি নিজ হেফাজতে রাখার অপরাধে সংশ্লিষ্ট থানার এসআই আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে রাবেয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। গ্রেফতারের পর আদালত রাবেয়া খাতুনকে এক দিনের রিমান্ডে পাঠান। ছয় মাস কারাগারে থাকার পর জামিন পান রাবেয়া খাতুন। পরে রাবেয়া খাতুনসহ দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ২০০৩ সালের ২৪ মার্চ মামলাটির বিচার শুরু হয়।
রাবেয়া খাতুনের আইনজীবী মেহেদী হাছান পলাশ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘একজন নিরীহ বয়স্ক মহিলা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে মামলা মোকাবেলা করছেন। কিন্তু ন্যায়বিচার পাচ্ছেন না। তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য প্রতিটি তারিখে আদালতে হাজিরা দেন। তবু মামলা শেষ হচ্ছে-না।’
তিনি আরও বলেন, ‘মামলাটি দীর্ঘ ১৭ বছর বিচার চললেও রাষ্ট্রপক্ষ তা শেষ করার আশানুরূপ কোনও উদ্বেগ নিচ্ছে না। পূর্বের বিচারক মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত করে আসামির আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ধার্য করেন। কিন্তু পরবর্তীতে অন্য আরেক বিচারক আত্মপক্ষ সমর্থন থেকে উত্তল করে আবারও সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেন। তাছাড়া গত পাঁচ বছর পর থেকে আর কোনও সাক্ষী সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আদালতে আসেনি।’
এদিকে সংশ্লিষ্ট আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুস সাত্তার দুলাল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আছে। তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ এখনও হয়নি। আর তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষীটা হলো মামলা প্রমাণ করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য ১৩ মার্চ মামলাটির ধার্য তারিখে সাক্ষীর জন্য তদন্ত কর্মকর্তার প্রতি জামিন অযোগ্য ধারায় ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হয়। আগামী ২৪ এপ্রিল পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য আছে। আশা করি আগামী ধার্য তারিখে সাক্ষীগ্রহণ সমাপ্ত হলে মামলা প্রসিকিউশন থেকে প্রমাণ করতে পারবো।’
মামলার এজহারে বলা হয়, ‘আসামি রাবেয়া খাতুনকে তেজগাঁও থানা এলাকার ৩/ক গার্ডেন রোড, কাজীপাড়া আব্দুল জাহিদের ঘরের দক্ষিণ পাশ থেকে পালানোর সময় একটি চটের ব্যাগসহ গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও ৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। রাবেয়ার সঙ্গে আরও দুইজন আসামি জুলহাস ও মাসুদের সমপৃক্ততা ছিল।’
২০০২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আব্দুল আজিজ তদন্ত শেষে ১২ জনকে সাক্ষী করে রাবেয়াসহ দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।অপর এক আসামি মাসুদের বিরুদ্ধে সঠিক নাম-ঠিকানা খুঁজে না পাওয়ায় অব্যাহতির সুপারিশ করেন। বর্তমানে জুলহাস পলাতক রয়েছেন। মামলাটিতে এ পর্যন্ত ১২ জন সাক্ষীর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ৬ জন সাক্ষী আদালত উপস্থাপন করেছেন।
২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর আসামি রাবেয়া খাতুনের আইনজীবী সাক্ষী সমাপ্ত করে পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য আবেদন করেন। তৎকালীন বিচারক রুহুল আমীন আবেদন মঞ্জুর করে আসামির আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য দিন ধার্য করেন। অতঃপর গত ২০১৭ সালের ২৮ অক্টোবর আরেক বিচারক এসে মামালটি আসামির আত্মপক্ষ সমর্থনের থেকে উত্তল করে আবারও সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেন।
মামলায় ৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ২০০৭ সালে তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।এরপর আবার ২০১৪ সালের আরও তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১১ মের পর থেকে আর কোনও সাক্ষী আদালতে আসে নাই। আগামী ২৪ এপ্রিল পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত।
তিনি আরও বলেন, ‘১৮ বছর আগে আমার নামে মিথ্যা অস্ত্র মামলা দেওয়া হয়। আমি কোনও অস্ত্র দেখিই নাই। এই মামলা এতদিন ধরে ভোগ করতেছি। আদালত আমাকে খালাস দেয় না। কোনও শাস্তিও বা অন্যকিচ্ছুও দেয় না। আমার ১০৪ বছর বয়স। আমি অনেক দূর থেকে আসি। আমি আর পারি না। আমি মামলা থেকে খালাস চাই।’
বুধবার (১৩ মার্চ) ঢাকা মহানগর ১ম অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে হাজিরা দিতে আসেন রাবেয়া খাতুন। ওই আদালতে তার মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। আদালতের বারান্দায় দাঁড়িয়ে নিজের আক্ষেপের কথা শোনান তিনি।
জানা যায়, ২০০২ সালে ২ জুন তেজগাঁও থানার মামলায় গ্রেফতার হন রাবেয়া খাতুন। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে ১৯ (ক) অবৈধভাবে অস্ত্র ও গুলি নিজ হেফাজতে রাখার অপরাধে সংশ্লিষ্ট থানার এসআই আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে রাবেয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। গ্রেফতারের পর আদালত রাবেয়া খাতুনকে এক দিনের রিমান্ডে পাঠান। ছয় মাস কারাগারে থাকার পর জামিন পান রাবেয়া খাতুন। পরে রাবেয়া খাতুনসহ দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ২০০৩ সালের ২৪ মার্চ মামলাটির বিচার শুরু হয়।
রাবেয়া খাতুনের আইনজীবী মেহেদী হাছান পলাশ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘একজন নিরীহ বয়স্ক মহিলা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে মামলা মোকাবেলা করছেন। কিন্তু ন্যায়বিচার পাচ্ছেন না। তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য প্রতিটি তারিখে আদালতে হাজিরা দেন। তবু মামলা শেষ হচ্ছে-না।’
তিনি আরও বলেন, ‘মামলাটি দীর্ঘ ১৭ বছর বিচার চললেও রাষ্ট্রপক্ষ তা শেষ করার আশানুরূপ কোনও উদ্বেগ নিচ্ছে না। পূর্বের বিচারক মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত করে আসামির আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ধার্য করেন। কিন্তু পরবর্তীতে অন্য আরেক বিচারক আত্মপক্ষ সমর্থন থেকে উত্তল করে আবারও সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেন। তাছাড়া গত পাঁচ বছর পর থেকে আর কোনও সাক্ষী সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আদালতে আসেনি।’
এদিকে সংশ্লিষ্ট আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুস সাত্তার দুলাল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আছে। তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ এখনও হয়নি। আর তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষীটা হলো মামলা প্রমাণ করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য ১৩ মার্চ মামলাটির ধার্য তারিখে সাক্ষীর জন্য তদন্ত কর্মকর্তার প্রতি জামিন অযোগ্য ধারায় ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হয়। আগামী ২৪ এপ্রিল পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য আছে। আশা করি আগামী ধার্য তারিখে সাক্ষীগ্রহণ সমাপ্ত হলে মামলা প্রসিকিউশন থেকে প্রমাণ করতে পারবো।’
মামলার এজহারে বলা হয়, ‘আসামি রাবেয়া খাতুনকে তেজগাঁও থানা এলাকার ৩/ক গার্ডেন রোড, কাজীপাড়া আব্দুল জাহিদের ঘরের দক্ষিণ পাশ থেকে পালানোর সময় একটি চটের ব্যাগসহ গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও ৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। রাবেয়ার সঙ্গে আরও দুইজন আসামি জুলহাস ও মাসুদের সমপৃক্ততা ছিল।’
২০০২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আব্দুল আজিজ তদন্ত শেষে ১২ জনকে সাক্ষী করে রাবেয়াসহ দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।অপর এক আসামি মাসুদের বিরুদ্ধে সঠিক নাম-ঠিকানা খুঁজে না পাওয়ায় অব্যাহতির সুপারিশ করেন। বর্তমানে জুলহাস পলাতক রয়েছেন। মামলাটিতে এ পর্যন্ত ১২ জন সাক্ষীর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ৬ জন সাক্ষী আদালত উপস্থাপন করেছেন।
২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর আসামি রাবেয়া খাতুনের আইনজীবী সাক্ষী সমাপ্ত করে পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য আবেদন করেন। তৎকালীন বিচারক রুহুল আমীন আবেদন মঞ্জুর করে আসামির আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য দিন ধার্য করেন। অতঃপর গত ২০১৭ সালের ২৮ অক্টোবর আরেক বিচারক এসে মামালটি আসামির আত্মপক্ষ সমর্থনের থেকে উত্তল করে আবারও সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেন।
মামলায় ৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ২০০৭ সালে তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।এরপর আবার ২০১৪ সালের আরও তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১১ মের পর থেকে আর কোনও সাক্ষী আদালতে আসে নাই। আগামী ২৪ এপ্রিল পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত।
No comments