নদী নিয়ে কানামাছি খেলা বন্ধ হওয়া উচিত: হাইকোর্ট
আদালতের
নির্দেশে উচ্ছেদের পর আবারো নদী দখলের ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন
হাইকোর্ট। বলেছেন, নদী দখল উচ্ছেদ নিয়ে কানামাছি খেলা হচ্ছে। আমরা নির্দেশ
দিচ্ছি, উচ্ছেদ হচ্ছে আবার দখল হয়ে যাচ্ছে। আমরা যে তিমিরে ছিলাম সে
তিমিরেই থেকে যাচ্ছি। এই কানামাছি খেলা বন্ধ হওয়া উচিত। তুরাগ নদীর দখল ও
অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদনের দ্বিতীয় দিনের রায়
ঘোষণাকালে বৃহস্পতিবার এ মন্তব্য করেন বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও
বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ।
রায় ঘোষণার আগে হাইকোর্ট রিট আবেদনের আইনজীবী মনজিল মোরসেদের কাছে জানতে চান, নদীরক্ষায় যে সরকার একটি জাতীয় নদীরক্ষা কমিশন করেছে, একটি আইন করেছে সে তথ্য জানাননি কেন? চার নদীরক্ষায় ২০০৯ সালে হাইকোর্টের রায় মোতাবেক জাতীয় নদীরক্ষা কমিশন হয়েছে। আইনও হয়েছে। কমিশন কাজও করছে।
বিচারপতি খায়রুল হক সাহেব যে পরামর্শ দিয়েছেন, সরকার কাজও শুরু করেছে। যেখানে পারছেন না সেখান থেকে শুরু করতে চাই।
তখন মনজিল মোরসেদ বলেন, আইনের অধীনে নদীরক্ষা কমিশন গঠন হয়েছে এবং কাজ করছে। কমিশন তো নদী সংক্রান্ত অভিযোগ নিষ্পত্তি করবে এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কিন্তু নদী কমিশন তো কার্যকর না। তারা কেবল সুপারিশ ছাড়া আর কিছুই করতে পারে না।
তখন হাইকোর্ট বলেন, ‘নদী দখল করা হচ্ছে, আমরা নির্দেশ দিচ্ছি, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছদ হচ্ছে। কয়েকদিন নিরিবিলি থাকার পর আবার দখল শুরু হচ্ছে। এই কানামাছি খেলা বন্ধ হওয়া উচিত। আপনার রিটে একটি মাইলফলক রায় হতে যাচ্ছে। এই সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত। নদী থাকবে। আবার নদী দখল করার মনোবৃত্তিসম্পন্ন কিছু লোকেরও অভাব হবে না। এর একটা সুষ্ঠু সমাধান হওয়া উচিত। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
মনজিল মোরসেদকে উদ্দেশ্য করে হাইকোর্ট বলেন, কমিশনের কার্যক্রম, এখতিয়ার ও ক্ষমতা নিয়ে আপনি খোঁজ-খবর নিন, আমরাও নেই। রোববার একটা দিক-নির্দেশনা দেবো। হাইকোর্টে এসব মামলা আসাই উচিত না মন্তব্য করে আদালত বলেন, ‘বর্তমানে হাইকোর্টে ৫ লাখ মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। আজকের পর আর যদি কোনো মামলা না নেয়া হয় এবং আমরা বিচারকরা যদি দিনরাত কাজ করি, তাহলেও এই ৫ লাখ মামলা নিষ্পত্তি করতে ৩০ বছর লাগবে।’
আদালত বলেন, ‘জাস্টিস ডিলেইড জাস্টিস ডিনাইড’। এজন্য কমিশন (নদী) যদি সঠিকভাবে কাজ করতো তাহলে অনেক বিষয় আদালতে আসতে হতো না। ফলে মামলা জটেরও সৃষ্টি হতো না।’
সাংবাদিক ও সংবাদ মাধ্যমের ভূমিকা নিয়েও কথা বলেন বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল। তিনি বলেন ‘সাংবাদিকরা অনিয়ম, দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিধায় আমরা অনেক অনিয়মের বিষয়ে জানতে পারছি। তবে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা তো ওই অর্থে আমাদের দেশে নাই। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি প্রকাশ করেছিলেন দুইজন সাংবাদিক।
এ সময় বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমাদের এখানেও কিছু কিছু অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা হয়। তারাই তো সমাজের হুইসেল ব্লোয়ার।
গত বুধবার এ রিট আবেদনের প্রথমদিনের রায় দেয়া শুরু হয়েছিল। ওইদিন আদালত নদীকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে আইনগত (লিগ্যাল পারসন) সত্তা হিসেবে উল্লেখ করেন। এ অর্থ একজন মানুষ যেমন আইনি অধিকার ভোগ করে নদীরও তেমন অধিকার স্বীকৃতি পেলো। আদালত বলেন, জাতীয় নদীরক্ষা কমিশন বা বিদ্যমান আইনের সঙ্গে রায়ের নির্দেশনা যেন সাংঘর্ষিক, পরস্পরবিরোধী বা বাড়াবাড়ি কিছু না হয়, সেজন্য আগামী রোববার বাকি রায় ঘোষণা করা হবে।
মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) তুরাগ নদীর অবৈধ দখলদারদের নাম ও স্থাপনার তালিকা হাইকোর্টে দাখিল করে বিচারিক তদন্ত কমিটির আরজি জানায়। পরে তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিরা রিট আবেদনে পক্ষভুক্ত হন। উভয়পক্ষের দীর্ঘ শুনানি শেষে গত বুধবার রায় দেয়া শুরু করেন হাইকোর্ট।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, রাজধানীর পাশের চার নদী রক্ষার রিটে জাতীয় নদীরক্ষা কমিশন গঠনের নির্দেশনা ছিল। এর প্রেক্ষিতেই নদীরক্ষা কমিশন গঠন করে সরকার। নদীরক্ষায় সকল বিষয় এ কমিশনের কাছে থাকার কথা ছিল। কিন্তু আইন প্রণেতারা যখন আইন করলেন সেখানে কমিশনকে একটি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেন। অর্থাৎ কমিশন শুধু প্রতিবেদন দিতে পারবে, কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবে না।’
আদালতকে বলেছেন, ‘আমরা এমন একটি রায় দিতে চাই। যাতে অবৈধ দখলমুক্ত করতে এইচআরপিবিকে বার বার আদালতে আসতে না হয়। আদালতের উপর বোঝা না হয়। ২০১৬ সালে একটি ইংরেজি দৈনিকে ‘তুরাগকে মৃত ঘোষণার সময় এসেছে’- শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশের পর হাইকোর্টে রিট আবেদনটি দায়ের করে এইচআরপিবি।
রায় ঘোষণার আগে হাইকোর্ট রিট আবেদনের আইনজীবী মনজিল মোরসেদের কাছে জানতে চান, নদীরক্ষায় যে সরকার একটি জাতীয় নদীরক্ষা কমিশন করেছে, একটি আইন করেছে সে তথ্য জানাননি কেন? চার নদীরক্ষায় ২০০৯ সালে হাইকোর্টের রায় মোতাবেক জাতীয় নদীরক্ষা কমিশন হয়েছে। আইনও হয়েছে। কমিশন কাজও করছে।
বিচারপতি খায়রুল হক সাহেব যে পরামর্শ দিয়েছেন, সরকার কাজও শুরু করেছে। যেখানে পারছেন না সেখান থেকে শুরু করতে চাই।
তখন মনজিল মোরসেদ বলেন, আইনের অধীনে নদীরক্ষা কমিশন গঠন হয়েছে এবং কাজ করছে। কমিশন তো নদী সংক্রান্ত অভিযোগ নিষ্পত্তি করবে এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কিন্তু নদী কমিশন তো কার্যকর না। তারা কেবল সুপারিশ ছাড়া আর কিছুই করতে পারে না।
তখন হাইকোর্ট বলেন, ‘নদী দখল করা হচ্ছে, আমরা নির্দেশ দিচ্ছি, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছদ হচ্ছে। কয়েকদিন নিরিবিলি থাকার পর আবার দখল শুরু হচ্ছে। এই কানামাছি খেলা বন্ধ হওয়া উচিত। আপনার রিটে একটি মাইলফলক রায় হতে যাচ্ছে। এই সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত। নদী থাকবে। আবার নদী দখল করার মনোবৃত্তিসম্পন্ন কিছু লোকেরও অভাব হবে না। এর একটা সুষ্ঠু সমাধান হওয়া উচিত। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
মনজিল মোরসেদকে উদ্দেশ্য করে হাইকোর্ট বলেন, কমিশনের কার্যক্রম, এখতিয়ার ও ক্ষমতা নিয়ে আপনি খোঁজ-খবর নিন, আমরাও নেই। রোববার একটা দিক-নির্দেশনা দেবো। হাইকোর্টে এসব মামলা আসাই উচিত না মন্তব্য করে আদালত বলেন, ‘বর্তমানে হাইকোর্টে ৫ লাখ মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। আজকের পর আর যদি কোনো মামলা না নেয়া হয় এবং আমরা বিচারকরা যদি দিনরাত কাজ করি, তাহলেও এই ৫ লাখ মামলা নিষ্পত্তি করতে ৩০ বছর লাগবে।’
আদালত বলেন, ‘জাস্টিস ডিলেইড জাস্টিস ডিনাইড’। এজন্য কমিশন (নদী) যদি সঠিকভাবে কাজ করতো তাহলে অনেক বিষয় আদালতে আসতে হতো না। ফলে মামলা জটেরও সৃষ্টি হতো না।’
সাংবাদিক ও সংবাদ মাধ্যমের ভূমিকা নিয়েও কথা বলেন বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল। তিনি বলেন ‘সাংবাদিকরা অনিয়ম, দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিধায় আমরা অনেক অনিয়মের বিষয়ে জানতে পারছি। তবে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা তো ওই অর্থে আমাদের দেশে নাই। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি প্রকাশ করেছিলেন দুইজন সাংবাদিক।
এ সময় বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমাদের এখানেও কিছু কিছু অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা হয়। তারাই তো সমাজের হুইসেল ব্লোয়ার।
গত বুধবার এ রিট আবেদনের প্রথমদিনের রায় দেয়া শুরু হয়েছিল। ওইদিন আদালত নদীকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে আইনগত (লিগ্যাল পারসন) সত্তা হিসেবে উল্লেখ করেন। এ অর্থ একজন মানুষ যেমন আইনি অধিকার ভোগ করে নদীরও তেমন অধিকার স্বীকৃতি পেলো। আদালত বলেন, জাতীয় নদীরক্ষা কমিশন বা বিদ্যমান আইনের সঙ্গে রায়ের নির্দেশনা যেন সাংঘর্ষিক, পরস্পরবিরোধী বা বাড়াবাড়ি কিছু না হয়, সেজন্য আগামী রোববার বাকি রায় ঘোষণা করা হবে।
মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) তুরাগ নদীর অবৈধ দখলদারদের নাম ও স্থাপনার তালিকা হাইকোর্টে দাখিল করে বিচারিক তদন্ত কমিটির আরজি জানায়। পরে তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিরা রিট আবেদনে পক্ষভুক্ত হন। উভয়পক্ষের দীর্ঘ শুনানি শেষে গত বুধবার রায় দেয়া শুরু করেন হাইকোর্ট।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, রাজধানীর পাশের চার নদী রক্ষার রিটে জাতীয় নদীরক্ষা কমিশন গঠনের নির্দেশনা ছিল। এর প্রেক্ষিতেই নদীরক্ষা কমিশন গঠন করে সরকার। নদীরক্ষায় সকল বিষয় এ কমিশনের কাছে থাকার কথা ছিল। কিন্তু আইন প্রণেতারা যখন আইন করলেন সেখানে কমিশনকে একটি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেন। অর্থাৎ কমিশন শুধু প্রতিবেদন দিতে পারবে, কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবে না।’
আদালতকে বলেছেন, ‘আমরা এমন একটি রায় দিতে চাই। যাতে অবৈধ দখলমুক্ত করতে এইচআরপিবিকে বার বার আদালতে আসতে না হয়। আদালতের উপর বোঝা না হয়। ২০১৬ সালে একটি ইংরেজি দৈনিকে ‘তুরাগকে মৃত ঘোষণার সময় এসেছে’- শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশের পর হাইকোর্টে রিট আবেদনটি দায়ের করে এইচআরপিবি।
No comments