চাঞ্চল্যকর মামলায় সাক্ষী সংকট by নাজুমল আহসান রাজু
চাঞ্চল্যকর
মামলার সাক্ষীরা আদালতে না আসায় বিলম্বিত হচ্ছে মামলার বিচার। নির্ধারিত
সময়ে সাক্ষী হাজির না হওয়ায় বছরের পর বছর ঝুলছে মামলার কার্যক্রম।
চাঞ্চল্যকর অনেক মামলায় সাক্ষী না আসায় কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে প্রসিকিউশনকে।
অনেক ক্ষেত্রে বাধ্য হয়ে আদালতকে সাক্ষী হাজিরে সমনও জারি করতে হচ্ছে।
তারপরও সাক্ষীদের আদালতে আসা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। সাক্ষী হাজিরে
প্রসিকিউশন ও পুলিশের মধ্যে সমন্বয়হীনতার অভিযোগ রয়েছে। এতে
বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ ও হতাশা।
সূত্র জানায়, ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং মহানগর দায়রা জজ আদালতেই সাক্ষী সংকটে ঝুলছে অন্তত ২৫০ চাঞ্চল্যকর মামলা। সারা দেশে এমন অনেক মামলা রয়েছে যা সাক্ষী না আসায় নিষ্পত্তি হচ্ছে না।
প্রসিকিউশনের বিরুদ্ধেও সাক্ষী হাজির না করার নির্লিপ্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
কয়েকটি চাঞ্চল্যকর মামলা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ধার্য তারিখে সাক্ষী না আসায় দফায় দফায় পেছানো হয়েছে মামলার শুনানি এবং দিন, মাস বছর পেরিয়ে মামলাগুলো ঝুলছে। ছয় বছর আগের আশুলিয়ার তাজরিন ফ্যাশনে অগ্নিকাণ্ডের মামলার বিচার এখনো বাকি। ১০৪ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ১০ জনের সাক্ষ্য হয়েছে গত তিন বছরে। মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডে ২০১২ সালের ২৪শে নভেম্বর ১২২ জন শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। আহত হন অর্ধশতাধিক। ২০১৫ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়েছে কিন্তু অগ্রগতি সামান্য।
গুরুত্বপূর্ণ দুই সাক্ষী আদালতে না আসায় থমকে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রথাবিরোধী লেখক অধ্যাপক ড. হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলার বিচার। আদালত থেকে জামিন অযোগ্য সমন জারি করেও হাজির করা যায়নি দুই চিসিক সাক্ষী ডা. শহিদুল ইসলাম ও ডা. মেজর শওকত হাসানকে। একুশের বইমেলা থেকে বের হওয়ার পথে ২০০৪ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারি সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্বৃত্তদের চাপাতির কোপে ক্ষতবিক্ষত হয়ে ১৫ই আগস্ট মারা যান জার্মানির মিউনিখে। ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন এ হত্যা মামলার বিচার শেষ হয়নি গত ১৫ বছরেও। মাত্র দুইজন সাক্ষীর জন্য বিচার আটকে আছ এ মামলার বিচার কাজ। ২০১২ সালের ১০ই সেপ্টেম্বর পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন হয়েছিল।
সাক্ষী দিতে অনীহার কারণে সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যার মামলার মাত্র ৪৩ জনের সাক্ষ্য সম্পন্ন হয়েছে। অথচ মোট সাক্ষী ১৭১ জন। জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার দিন ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট সকালে খুনিদের ছোড়া কামানের গোলায় মোহাম্মদপুরের শের শাহ সুরী রোডের ১৩ জন নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলা গত দেড়যুগের মতো বিচার ঝুলছে।
বিধি অনুসারে আদালতে সাক্ষী হাজিরের দায়িত্ব পুলিশের। আর সাক্ষী আদালতে উপস্থিতি নিশ্চিত করবে প্রসিকিউশন। এক্ষেত্রে পুলিশ ও প্রসিকিউশনের মধ্যে সমন্বয়হীনতা রয়েছে। পুলিশ সাক্ষীকে হাজির করলে শুনানি হয় না আবার পুলিশ সাক্ষী হাজির করতে না পারায় শুনানি পিছিয়ে যায়। সাক্ষীরাও আদালতে আসেন সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে। দেখা যায় নিজের সময় ও অর্থ খরচ করে সাক্ষী আদালতে হাজির হলেও কোনো কারণে শুনানি না হলে ওই সাক্ষী তার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। গুরুতর অপরাধের মামলায় সাক্ষীদের জীবনের ঝুঁকি থাকে। তা সত্ত্বেও সাক্ষীরা আদালতে এসে সাক্ষী দেয়ার নজির কম নয়। অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ ও প্রসিকিউশন সাক্ষীদের তাদের শেখানো সাক্ষী দিতে বাধ্য করেন। এ কারণে সাক্ষীদের মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়ে।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু মানবজমিনকে বলেছেন, সাক্ষীরা আদালতে আসতে চান না। তারা স্বেচ্ছায় আসতে না চাইলে আদালত সমন জারি করেন। তারপরেও অনেকের ঠিকানা বদল হওয়ায় সমন ফিরে আসে। মামলার বিলম্বিত বিচারের অন্যতম কারণ সাক্ষীদের না আসা।
তৈরি পোশাক কারখানা তাজরিন ফ্যাশনের অগ্নিকাণ্ডের মামলায় সাক্ষীদের বিরুদ্ধে অজামিনযোগ্য পরোয়ানা জারি করেও তাদের আদালতে হাজির করা যায়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পিপি কাজী শাহানারা ইয়াসমিন। এ মামলার অধিকাংশ সাক্ষী তাজরিনের শ্রমিক হওয়ায় অনেকে ঠিকানা বদলেছেন যে কারণে তাদের খুঁজে বের করে আদালতে হাজির করা সম্ভব হচ্ছে না।
সূত্র জানায়, ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং মহানগর দায়রা জজ আদালতেই সাক্ষী সংকটে ঝুলছে অন্তত ২৫০ চাঞ্চল্যকর মামলা। সারা দেশে এমন অনেক মামলা রয়েছে যা সাক্ষী না আসায় নিষ্পত্তি হচ্ছে না।
প্রসিকিউশনের বিরুদ্ধেও সাক্ষী হাজির না করার নির্লিপ্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
কয়েকটি চাঞ্চল্যকর মামলা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ধার্য তারিখে সাক্ষী না আসায় দফায় দফায় পেছানো হয়েছে মামলার শুনানি এবং দিন, মাস বছর পেরিয়ে মামলাগুলো ঝুলছে। ছয় বছর আগের আশুলিয়ার তাজরিন ফ্যাশনে অগ্নিকাণ্ডের মামলার বিচার এখনো বাকি। ১০৪ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ১০ জনের সাক্ষ্য হয়েছে গত তিন বছরে। মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডে ২০১২ সালের ২৪শে নভেম্বর ১২২ জন শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। আহত হন অর্ধশতাধিক। ২০১৫ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়েছে কিন্তু অগ্রগতি সামান্য।
গুরুত্বপূর্ণ দুই সাক্ষী আদালতে না আসায় থমকে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রথাবিরোধী লেখক অধ্যাপক ড. হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলার বিচার। আদালত থেকে জামিন অযোগ্য সমন জারি করেও হাজির করা যায়নি দুই চিসিক সাক্ষী ডা. শহিদুল ইসলাম ও ডা. মেজর শওকত হাসানকে। একুশের বইমেলা থেকে বের হওয়ার পথে ২০০৪ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারি সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্বৃত্তদের চাপাতির কোপে ক্ষতবিক্ষত হয়ে ১৫ই আগস্ট মারা যান জার্মানির মিউনিখে। ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন এ হত্যা মামলার বিচার শেষ হয়নি গত ১৫ বছরেও। মাত্র দুইজন সাক্ষীর জন্য বিচার আটকে আছ এ মামলার বিচার কাজ। ২০১২ সালের ১০ই সেপ্টেম্বর পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন হয়েছিল।
সাক্ষী দিতে অনীহার কারণে সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যার মামলার মাত্র ৪৩ জনের সাক্ষ্য সম্পন্ন হয়েছে। অথচ মোট সাক্ষী ১৭১ জন। জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার দিন ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট সকালে খুনিদের ছোড়া কামানের গোলায় মোহাম্মদপুরের শের শাহ সুরী রোডের ১৩ জন নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলা গত দেড়যুগের মতো বিচার ঝুলছে।
বিধি অনুসারে আদালতে সাক্ষী হাজিরের দায়িত্ব পুলিশের। আর সাক্ষী আদালতে উপস্থিতি নিশ্চিত করবে প্রসিকিউশন। এক্ষেত্রে পুলিশ ও প্রসিকিউশনের মধ্যে সমন্বয়হীনতা রয়েছে। পুলিশ সাক্ষীকে হাজির করলে শুনানি হয় না আবার পুলিশ সাক্ষী হাজির করতে না পারায় শুনানি পিছিয়ে যায়। সাক্ষীরাও আদালতে আসেন সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে। দেখা যায় নিজের সময় ও অর্থ খরচ করে সাক্ষী আদালতে হাজির হলেও কোনো কারণে শুনানি না হলে ওই সাক্ষী তার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। গুরুতর অপরাধের মামলায় সাক্ষীদের জীবনের ঝুঁকি থাকে। তা সত্ত্বেও সাক্ষীরা আদালতে এসে সাক্ষী দেয়ার নজির কম নয়। অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ ও প্রসিকিউশন সাক্ষীদের তাদের শেখানো সাক্ষী দিতে বাধ্য করেন। এ কারণে সাক্ষীদের মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়ে।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু মানবজমিনকে বলেছেন, সাক্ষীরা আদালতে আসতে চান না। তারা স্বেচ্ছায় আসতে না চাইলে আদালত সমন জারি করেন। তারপরেও অনেকের ঠিকানা বদল হওয়ায় সমন ফিরে আসে। মামলার বিলম্বিত বিচারের অন্যতম কারণ সাক্ষীদের না আসা।
তৈরি পোশাক কারখানা তাজরিন ফ্যাশনের অগ্নিকাণ্ডের মামলায় সাক্ষীদের বিরুদ্ধে অজামিনযোগ্য পরোয়ানা জারি করেও তাদের আদালতে হাজির করা যায়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পিপি কাজী শাহানারা ইয়াসমিন। এ মামলার অধিকাংশ সাক্ষী তাজরিনের শ্রমিক হওয়ায় অনেকে ঠিকানা বদলেছেন যে কারণে তাদের খুঁজে বের করে আদালতে হাজির করা সম্ভব হচ্ছে না।
No comments