ভয়ঙ্কর কিশোর নিলয় by আশরাফুল ইসলাম
হঠাৎ
করেই কিশোরগঞ্জ শহরে আলোচনায় চলে আসে দুর্ধর্ষ কিশোর গ্যাং। শান্ত
কিশোরগঞ্জে নেমে আসে অস্থিরতার পদধ্বনি। মুখোশধারী সশস্ত্র কিশোর
সন্ত্রাসীরা নেমে আসে শহরের রাস্তা আর অলিগলিতে। এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রাস্তার
পাশের বাসাবাড়ি-দোকানপাট শহরজুড়ে চালায় একের পর তাণ্ডব। আতঙ্ক ভর করে
শহরবাসীর মাঝে। একাধিক সন্ত্রাসী ঘটনার পরও অধরাই রয়ে গিয়েছিল কিশোর
গ্যাংটির হোতাসহ সদস্যরা। অবশেষে পুলিশের তৎপরতায় ধরা পড়েছে দুর্ধর্ষ এই
কিশোর গ্যাংটির হোতা সামাউল হক নিলয় (১৯)। গত ১১ই সেপ্টেম্বর শোলাকিয়া
ঈদগাহ রোড রেলক্রসিং থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার
পুলিশ। নিলয়ের গ্রেপ্তারের পরই বেরিয়ে আসে আরো এক ভয়ঙ্কর তথ্য। কেবল
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডই নয় এই গ্রুপটি জড়িত ছিল কিলিংয়েও। নিলয়ের নেতৃত্বেই
গত ৯ই এপ্রিল রাতে কিশোরগঞ্জ শহরের বড়বাজার তেরিপট্টি এলাকায় নৃশংস হামলায়
প্রাণ হারায় কলেজছাত্র রাজা। কিশোর গ্যাং হোতা সামাউল হক নিলয় কিশোরগঞ্জ
শহরের নীলগঞ্জ মোড়ের লালু বাড়ির গলির মো. কাজল মিয়ার ছেলে। সে শহরের আজিম
উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। গ্রেপ্তারের পর আদালতের আদেশে
সামাউল হক নিলয়কে দুই দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রিমান্ডে পুলিশের
জিজ্ঞাসাবাদে নিলয় জানায়, তার গ্রুপে সমবয়সী একশ’র বেশি কিশোর নেশাগ্রস্ত
হয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি হামলা চালায়। মানুষ ভয় পেলে তাদের
আনন্দ বেড়ে যায়। নেশার টাকা বাবা-মার কাছ থেকে কৌশলে নিয়ে আসে এবং বিভিন্ন
সময় বিভিন্ন এলাকায় কোনো উদ্দেশ্য ছাড়াই ভয়ঙ্কর অ্যাকশনে যায়। কখনো তার
বন্ধুদের সঙ্গে কারো কোনো ঝগড়া-ঝাটি হলে সবাই সংঘবদ্ধভাবে হামলা চালায়।
সিসি ফুটেজে দেখা যায়, বড়বাজার তেরিপট্টি মোড়ে রাজা হত্যার সময় ১৬/১৭ জন
কিশোর মুখোশ পরে আনন্দের সঙ্গে কোপাচ্ছে। রাজা হত্যার পর তাদের সাহস আরো
বেড়ে যায়। তারা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা আবু শামা মো. ইকবাল হায়াত জানান, পুলিশ সাধ্যমত সন্ত্রাস নির্মূল
ও কিশোর অপরাধীদের ধরার চেষ্টা করছে। পুলিশের একাধিক অভিযান পরিচালনা করে
ইতিমধ্যে নিলয়ের পাঁচ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা বর্তমানে জেলহাজতে
আছে। এছাড়া কিশোর অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অভিভাবকদেরও সচেতন হওয়া
দরকার বলে মন্তব্য করেন ওসি আবু শামা মো. ইকবাল হায়াত।
No comments