ভারি বর্ষণে দুর্বিষহ রোহিঙ্গা জীবন by রাসেল চৌধুরী
উখিয়া-টেকনাফে
আশ্রিত রোহিঙ্গারা দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। ভারি বর্ষণে তাদের জনজীবনে
নেমে এসেছে চরম বিপর্যয়। বৃষ্টির পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসংখ্য বসতঘর।
টানা বর্ষণে ভূমিধসের ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটছে তাদের। ক্যাম্পের বিভিন্ন
স্থানে ছোট ছোট ভূমিধস ও পাহাড়ের মাটি দেবে যাওয়ায় উদ্বেগ ও আতঙ্কের মধ্যে
দিন পার করছে আশ্রিত রোহিঙ্গারা। যদিও প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণহানির
আশঙ্কায় অতি ঝুঁকিপূর্ণ প্রায় ৩৫ হাজার রোহিঙ্গাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে
নেয়া হয়েছে বলে জানান শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল
কালাম। এছাড়াও বর্ষায় সব ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলা প্রস্তুতি নিয়ে এগুচ্ছে
প্রশাসন এবং রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন এনজিও সংস্থাগুলো। এরই মধ্যে
সরিয়ে নেয়া হয়েছে কম ঝুঁকিতে থাকা ৩৪ হাজার এবং অত্যধিক ঝুঁকিতে থাকা সাড়ে
১৯ হাজার শরণার্থীকে। এছাড়া দুর্যোগে ক্ষতি কমাতে ১ লাখ ৮০ হাজার
রোহিঙ্গা পরিবারকে শেল্টার উপকরণ ও দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশিক্ষণ দেয়া
হচ্ছে। এদিকে রোহিঙ্গা শিবিরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ স¤পর্কে ধারণা পেতে চালু
করা হচ্ছে ছয়টি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র।
মিয়ানমারের রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর দেশটির সেনা নির্যাতনের ফলে গত ২৫শে আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। পুরনোসহ উখিয়া ও টেকনাফের ৩০টি ক্যা¤েপ ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। রাস্তার দুই পাশে পাহাড় ও বন কেটে বসতি গড়েছেন এসব রোহিঙ্গারা। এর মধ্যে উখিয়ার বালুখালী, কুতুপালং, হাকিম পাড়া টেংখালী, মধুরছড়া, শূন্য রেখা এবং টেকনাফের পুটুবনিয়া, শালবাগান, জাদিমুড়ায় পাহাড়ের পাদদেশে হাজারো রোহিঙ্গা ঝুঁকি নিয়ে বাস করছেন। বিশেষ করে বর্ষায় দুর্ভোগ বেড়েছে রোহিঙ্গাদের। বর্ষা আসার পর থেকে খুব বেশি ভয় কাজ করছে তাদের। দিনের চেয়ে রাতে ভয়টা বেশি। গত তিনদিন ধরে ভারি বর্ষণ হওয়ায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন রোহিঙ্গারা। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় নেয়া ঘরগুলোও খুবই দুর্বল। বাতাস হলে নড়াচড়া করতে থাকে। এ সময় ছেলেমেয়েদের মধ্যে ভীতি ও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। গত কয়েকদিনে এই শিবিরে ৩০টির বেশি ঘর ভেঙে গেছে।
রোহিঙ্গা নারী সাকেরা খাতুন জানিয়েছেন, ভারি বর্ষণ হলে বৃষ্টির পানি ঘরে ঢুকে স্যাঁতসেঁতে হয়ে যায়। তাই ঘুমানো যায় না, না ঘুমিয়ে বসে থাকতে হয়। আরেক রোহিঙ্গা জব্বার মিয়া জানান, তিনি খুবই বেকায়দায় আছেন। তার বসতি পাহাড়ের নিচের দিকে হওয়ায় বৃষ্টি হলে পানি আটকানো যায় না। ওপর থেকে নিচের দিকে পানি নামলে ঘরের ভেতর দিয়ে পানি চলাচল করে। এ পরিস্থিতিতে রাতে না ঘুমিয়ে বসে থাকতে হয়। পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নুরুল আবছার চৌধুরী বলেন, সম্প্রতি ভারি বৃষ্টিতে বিভিন্ন স্থানে আশ্রিত রোহিঙ্গারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এমনকি অনেকের চাল, ডাল ও ছোলা নষ্ট হয়ে গেছে।
ভারি বর্ষণে দুর্ঘটনা এড়াতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে এগুচ্ছেন বলে জানান উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকারুজ্জামান। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসতিদের নিরাপদ স্থানে চলে আসার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গা শিবিরে যেসব এনজিও সংস্থা রয়েছে তাদের দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। এই ভারি বর্ষণে সব প্রস্তুতির পরও ভয় থেকে যায়, কেননা রোহিঙ্গাদের কোনো দালানকোটা নেই, সবই ঝুপড়িঘর। তাই তাদের ঝুঁকিটা বেশি। চলতি বর্ষায় ৩৭২টি ছোট বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে এরইমধ্যে ক্ষতির মুখে পড়েছে প্রায় ৩৩ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী। খাদ্য-পানীয় সরবরাহের পাশাপাশি প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে বিভিন্ন দাতা সংস্থার প্রতিনিধিরা। রোহিঙ্গাদের নিয়ে বিভিন্ন দাতা সংস্থার সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ-আইএসসিজি বলছে, এ বছরের মে-জুন মাসে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে ১৬৬টি পাহাড়ধস, ১২৮টি ঝড়, ২৪টি স্থানে জলাবদ্ধতা এবং ২৬টি ছোট-বড় বন্যা হয়েছে। এসব দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ৩৩ হাজার রোহিঙ্গার বাইরে ঝুঁকির মুখে আছে আরো অন্তত ২ লাখ ১৫ হাজার রোহিঙ্গা।
রোহিঙ্গা রিফিউজি রেসপন্সের সিনিয়র কো-অর্ডিনেটর সুমবুল রিজভী বলেন, এখন সামান্য বৃষ্টিতেই ভূমিধসের পাশাপাশি আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হচ্ছে। টানা বৃষ্টি হলে নিয়মিতভাবে বন্যাও হবে। এখানে শরণার্থী ক্যা¤পগুলোর অবস্থান খুবই কাছাকাছি। জায়গার সংকটের কারণে তাদের গাদাগাদি করে থাকতে হয়। ফলে একটি ছোট আকারের ভূমিধসেও বহু শরণার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
মিয়ানমারের রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর দেশটির সেনা নির্যাতনের ফলে গত ২৫শে আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। পুরনোসহ উখিয়া ও টেকনাফের ৩০টি ক্যা¤েপ ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। রাস্তার দুই পাশে পাহাড় ও বন কেটে বসতি গড়েছেন এসব রোহিঙ্গারা। এর মধ্যে উখিয়ার বালুখালী, কুতুপালং, হাকিম পাড়া টেংখালী, মধুরছড়া, শূন্য রেখা এবং টেকনাফের পুটুবনিয়া, শালবাগান, জাদিমুড়ায় পাহাড়ের পাদদেশে হাজারো রোহিঙ্গা ঝুঁকি নিয়ে বাস করছেন। বিশেষ করে বর্ষায় দুর্ভোগ বেড়েছে রোহিঙ্গাদের। বর্ষা আসার পর থেকে খুব বেশি ভয় কাজ করছে তাদের। দিনের চেয়ে রাতে ভয়টা বেশি। গত তিনদিন ধরে ভারি বর্ষণ হওয়ায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন রোহিঙ্গারা। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় নেয়া ঘরগুলোও খুবই দুর্বল। বাতাস হলে নড়াচড়া করতে থাকে। এ সময় ছেলেমেয়েদের মধ্যে ভীতি ও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। গত কয়েকদিনে এই শিবিরে ৩০টির বেশি ঘর ভেঙে গেছে।
রোহিঙ্গা নারী সাকেরা খাতুন জানিয়েছেন, ভারি বর্ষণ হলে বৃষ্টির পানি ঘরে ঢুকে স্যাঁতসেঁতে হয়ে যায়। তাই ঘুমানো যায় না, না ঘুমিয়ে বসে থাকতে হয়। আরেক রোহিঙ্গা জব্বার মিয়া জানান, তিনি খুবই বেকায়দায় আছেন। তার বসতি পাহাড়ের নিচের দিকে হওয়ায় বৃষ্টি হলে পানি আটকানো যায় না। ওপর থেকে নিচের দিকে পানি নামলে ঘরের ভেতর দিয়ে পানি চলাচল করে। এ পরিস্থিতিতে রাতে না ঘুমিয়ে বসে থাকতে হয়। পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নুরুল আবছার চৌধুরী বলেন, সম্প্রতি ভারি বৃষ্টিতে বিভিন্ন স্থানে আশ্রিত রোহিঙ্গারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এমনকি অনেকের চাল, ডাল ও ছোলা নষ্ট হয়ে গেছে।
ভারি বর্ষণে দুর্ঘটনা এড়াতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে এগুচ্ছেন বলে জানান উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকারুজ্জামান। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসতিদের নিরাপদ স্থানে চলে আসার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গা শিবিরে যেসব এনজিও সংস্থা রয়েছে তাদের দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। এই ভারি বর্ষণে সব প্রস্তুতির পরও ভয় থেকে যায়, কেননা রোহিঙ্গাদের কোনো দালানকোটা নেই, সবই ঝুপড়িঘর। তাই তাদের ঝুঁকিটা বেশি। চলতি বর্ষায় ৩৭২টি ছোট বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে এরইমধ্যে ক্ষতির মুখে পড়েছে প্রায় ৩৩ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী। খাদ্য-পানীয় সরবরাহের পাশাপাশি প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে বিভিন্ন দাতা সংস্থার প্রতিনিধিরা। রোহিঙ্গাদের নিয়ে বিভিন্ন দাতা সংস্থার সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ-আইএসসিজি বলছে, এ বছরের মে-জুন মাসে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে ১৬৬টি পাহাড়ধস, ১২৮টি ঝড়, ২৪টি স্থানে জলাবদ্ধতা এবং ২৬টি ছোট-বড় বন্যা হয়েছে। এসব দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ৩৩ হাজার রোহিঙ্গার বাইরে ঝুঁকির মুখে আছে আরো অন্তত ২ লাখ ১৫ হাজার রোহিঙ্গা।
রোহিঙ্গা রিফিউজি রেসপন্সের সিনিয়র কো-অর্ডিনেটর সুমবুল রিজভী বলেন, এখন সামান্য বৃষ্টিতেই ভূমিধসের পাশাপাশি আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হচ্ছে। টানা বৃষ্টি হলে নিয়মিতভাবে বন্যাও হবে। এখানে শরণার্থী ক্যা¤পগুলোর অবস্থান খুবই কাছাকাছি। জায়গার সংকটের কারণে তাদের গাদাগাদি করে থাকতে হয়। ফলে একটি ছোট আকারের ভূমিধসেও বহু শরণার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
No comments