ফেক নিউজ গণতান্ত্রিক সঙ্কট
ফেক
নিউজ বা ভুয়া খবর একটি গণতান্ত্রিক সঙ্কট। এতে ক্ষতিকর দৃষ্টিভঙ্গির
প্রসার ঘটে। বৃটিশ পার্লামেন্টের দ্য ডিজিটাল, কালচারাল, মিডিয়া এন্ড
স্পোর্ট (ডিসিএমএস) কমিটি এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছে। কেমব্রিজ এনালাইটিকা
স্ক্যান্ডালের পর এ কমিটি ভুল তথ্য ও ভুল খবরের বিষয়ে অনুসন্ধান করছে। এ
বিষয়ে তারা তাড়াতাড়িই প্রথম রিপোর্ট প্রকাশ করবে। তাতে বলা হবে, সামাজিক
যোগাযোগ কোম্পানিগুলোকে আরো কঠোর নিয়মনীতির আওতায় আসতে হবে। নির্বাচনে
হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার কথাও এতে প্রস্তাব করা হবে। ওই
রিপোর্টে বলা হচ্ছে, অবিরামভাবে বহু-পক্ষীয় দৃষ্টিভঙ্গি লোজনের মধ্যে আতঙ্ক
ও কুসংস্কার সৃষ্টি করে। এতে তাদের ভোট দেয়ার পরিকল্পনায় প্রভাব পড়ে। এটা
গণতন্ত্রের জন্য একটি হুমকি। এই কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার কথা রয়েছে
রোববার। কিন্তু তার আগেই তার একটি কপি প্রকাশ করেছেন ব্রেক্সিট বিষয়ক ভোট
লিভ পক্ষের ডমিনিক কামিংস। তিনি শুক্রবার তার নিজের ব্লগে ওই রিপোর্টের
একটি কপি প্রকাশ করেছেন। তাতে বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে,
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে যেসব ক্ষতিকর (হার্মফুল) কন্টেন্ট থাকবে
তাদেরকে তার দায় বহন করতে হবে। এক্ষেত্রে ফেসবুক ও ইউটিউব বার বার বলেছে,
তারা কোনো প্রকাশকের চেয়ে শুধু একটি প্লাটফরম। তারা যুক্তি দেখান যে, তাদের
সার্ভিসে ব্যবহারকারীরা যেসব উপাদান পোস্ট করেন তার জন্য তারা দায়ী নন।
কিন্তু ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, নিজেদেরকে শুধু একটি প্লাটফরম হিসেবে ঘোষণা
করে দায় এড়াতে পারে না সামাজিক যোগাযোগ বিষয়ক কোম্পানিগুলো। তারা প্রযুক্তি
বিষয়ক কোম্পানি। তাদের সাইটে যেসব কন্টেন্ট আছে তাতে তাদের নিয়ন্ত্রণ নেই
এমন ভূমিকা তাদের হতে পারে না। তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনছে
অ্যালগোরিদম ব্যবস্থায়। তাই কমিটি সুপারিশ করেছে একটি প্রযুক্তি বিষয়ক একটি
নতুন ক্যাটেগরি সৃষ্টি করতে হবে। যা শুধু প্লাটফরম অথবা পাবলিশার হবে না,
তা হবে এই দুয়ের মাঝামাঝি। ডিজিটাল এই যুগে রাজনৈতিক প্রচারণা বিষয়ক
পরিবর্তন আনতে হবে নিয়মে। কোম্পানির প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আধুনিকায়ন করতে
হবে। এতে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনের জন্য একটি পাবলিক রেজিস্টার
সৃষ্টি করতে হবে, যাতে যেকোনো মানুষ দেখতে পায় কি বার্তা ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে।
অনলাইনে যেসব রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন প্রচার করা হবে তাতে ডিজিটাল ইমপ্রিন্ট
থাকতে হবে, যাতে বোঝা যায় কে এই বিজ্ঞাপনের জন্য দায়ী। এমনটা কিন্তু ছাপানো
লিফলেটে এবং বিজ্ঞাপনে থাকে। ম্যালিসিয়াস এক্টর বা দুর্বৃত্ত চক্রের
নির্বাচনে হস্তক্ষেপের দায় নিতে হবে সামাজিক যোগাযোগ মিডিয়াকে। নির্বাচন
নিয়ে এমন প্রতারণার জন্য জরিমানা সর্বোচ্চ ২০ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত করার
প্রস্তাব করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ কোম্পানিতে অডিট করার প্রস্তাব করা
হয়েছে। কমিটি সতর্ক করে বলেছে, ফেসবুক অথবা টুইটারে ভুয়া একাউন্ট শুধু
ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতাকে ক্ষতিগ্রস্তই করছে না। একই সঙ্গে তা বিজ্ঞাপনদাতার
সঙ্গে প্রতারণাও। সুপারিশ করা হয়েছে কমপিটিশন অ্যান্ড মার্কেটস অথরিটি’র
মতো একটি স্বতন্ত্র কর্তৃপক্ষ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ বিষয়ক কোম্পানিগুলোর
অডিট করাতে হবে। কমিটির রিপোর্টে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কড়া সমালোচনা করা
হয়েছে। কেমব্রিজ এনালাইটিকা স্ক্যান্ডালের পরে এই মাধ্যমটি অত্যন্ত কড়া
নজরদারিতে রয়েছে। কমিটি তার রিপোর্টে বলেছে, এই রিপোর্টের অনুসন্ধানকালে
আমাদেরকে তথ্য দেয়ার ক্ষেত্রে ভীষণ ভুগিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।
No comments