মৃত্যুর আগেও মায়ের হাতে ভাত খায় শিশু হিমি-হানি
প্রতিদিন
বিকাল সাড়ে ৩টার মধ্যে অফিস থেকে বাসায় ফিরতেন জেসমিন আক্তার। তবে ৩০
এপ্রিল সোমবার দুপুর আড়াইটার মধ্যে বাসায় ফিরেন তিনি। ঘরে এসে ফুটফুটে দুই
মেয়েকে খাটে বসিয়ে নিজ হাতে ভাত খাওয়ান। এরপর তাদের সঙ্গে নিয়ে ঘরের ভেতরে
দরজা লাগিয়ে শুয়ে পড়েন। সন্ধ্যায় দরজা ভেঙে স্ত্রী জেসমিন ও আদরের দুই মেয়ে
হিমি ও হানিকে রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন হাসিবুল
হাসান।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ফ্ল্যাটে প্রবেশের বাম দিকের প্রথম রুমের মেঝেতে জেসমিন আক্তারের এবং খাটের ওপর দুই মেয়ের রক্তাক্ত লাশ পড়েছিল। জেসমিনের গলা ও দুই হাতের কব্জি কাটা। পেটে ৮-১০টি আঘাত আছে। বড় মেয়ে হিমি’র বুকে তিনটি ছুরির আঘাত, হাতের কব্জি কাটা ও গলা জবাই করা। আর ছোট মেয়ে হানি’র পেটে একটাই ছুরির আঘাত। তার নাড়িভুঁড়ি বের হওয়া।
ঘটনাস্থল দারুস সালাম থানার অধীন মিরপুর বাংলা কলেজ সংলগ্ন পাইকপাড়া সি টাইপ সরকারি কোয়ার্টারের ১৩৪ নম্বর ভবনের চারতলার বাম পাশের একটি ফ্ল্যাট। সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ফ্ল্যাট থেকে তিনটি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতরা হচ্ছেন জেসমিন আক্তার (৩৫), তার মেয়ে হাসিবা তাহসিন হিমি (৯) এবং আদিলা তাহসিন হানি (৫)। ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়। আর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ তিনটি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
নিহতের পবিবার ও পুলিশের ধারণা, চাকরি ও সংসার নিয়ে মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে দুই সন্তানকে নৃশংসভাবে হত্যার পর আত্মহত্যা করেন মা জেসমিন আক্তার।
পুলিশ জানায়, ঘটনার সময় তাদের স্বজনদের দুই/তিনজন ওই ফ্ল্যাটেই উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে নিহতের স্বামীর ভাগিনা রওশন জামিল এবং তার স্ত্রী রোমানা পারভীন ও নিহত জেসমিনের এক খালাতো বোন রেহানা উপস্থিত ছিলেন। তারা পাশের ঘরে শুয়ে ছিলেন। কিন্তু কেউই কোনও রকমের চিৎকারের শব্দ শোনেননি বলে জানিয়েছেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) শেখ নাজমুল আলম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মা তার দুই সন্তানকে হত্যার পর নিজেও আত্মহত্যা করেছেন। তবে এই ঘটনায় অন্য কোনও বিষয় জড়িত আছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নিহত জেসমিনের ছোট ভাই শাহিনুর ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তার প্রচণ্ড মাইগ্রেনের সমস্যা ছিল। আপার মনে অনেক কষ্ট ছিল। সে তার চাকরি ও সন্তান লালন-পালনের বিষয়ে খুব চিন্তিত থাকতো। চাকরি করলে বাচ্চাদের দেখবে কে! আর বাচ্চাদের দেখতে হলে চাকরি ছাড়তে হবে।’
তিনি বলেন, ‘মাইগ্রেনের সমস্যা সইতে না পেরে গত মাসে আপা ৩/৪ টি ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। মাইগ্রেনের জন্য আপার চিকিৎসাও চলছিল। এর আগে তাকে ভারতেও চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।’
শাহিনুর ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দুলাভাই বলতো- তুমি চাকরিটা ছেড়ে দাও। কিন্তু আমি আপাকে বলতাম যে, আপা ছাড়তে চান, আর আমি চাকরি খুঁজে পাই না। তখন আমি বলি আপনি চাকরি ছাড়বেন না। প্রয়োজনে আমি বাচ্চাদের দেখাশোনা করবো।’
নিহত জেসমিন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। তার স্বামী হাসিবুল হাসান জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সহকারী লেজিসলেটিভ ড্রাফটসম্যান হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ২০০৮ সালে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। হাসিবুলের গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড়ের ভজনপুর গ্রামে। জেসমিনের বাড়ি ঠাকুরগাঁও। তাদের দুই কন্যাসন্তান হিমি ও হানি। হিমি পাইকপাড়া এলাকার মডেল একাডেমি স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়তো।
হাসিবুল ইসলাম ২০০৬ সালে চাকরিতে যোগ দেন। ২০০৭ সালে সরকারিভাবে এই কোয়ার্টারের ১৩৪ নম্বর ভবনের চারতলার একটি ফ্ল্যাট বরাদ্দ পান। বিয়ের পর থেকে স্ত্রীসহ ওই বাসাতেই বসবাস করতেন।
ভবনের পাশে থাকা মুদি দোকানি আব্দুল আহাদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সোমবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে হিমি আমার দোকানে এসেছিল। পরে আমার মেয়ের সঙ্গে পাশের মসজিদে আরবি পড়তে যায়। হাসিবুল ও জেসমিন খুবই ভালো মানুষ। তারা কোনও ঝগড়া বিবাদে জড়াতো না। প্রায় সময় আমার দোকান থেকে দুই মেয়ের জন্য বিস্কুট নিয়ে যেতো। দুইজনই বাকি খেতেন। মাসের বেতন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টাকা পরিশোধ করে দিতেন।’
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ফ্ল্যাটে প্রবেশের বাম দিকের প্রথম রুমের মেঝেতে জেসমিন আক্তারের এবং খাটের ওপর দুই মেয়ের রক্তাক্ত লাশ পড়েছিল। জেসমিনের গলা ও দুই হাতের কব্জি কাটা। পেটে ৮-১০টি আঘাত আছে। বড় মেয়ে হিমি’র বুকে তিনটি ছুরির আঘাত, হাতের কব্জি কাটা ও গলা জবাই করা। আর ছোট মেয়ে হানি’র পেটে একটাই ছুরির আঘাত। তার নাড়িভুঁড়ি বের হওয়া।
ঘটনাস্থল দারুস সালাম থানার অধীন মিরপুর বাংলা কলেজ সংলগ্ন পাইকপাড়া সি টাইপ সরকারি কোয়ার্টারের ১৩৪ নম্বর ভবনের চারতলার বাম পাশের একটি ফ্ল্যাট। সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ফ্ল্যাট থেকে তিনটি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতরা হচ্ছেন জেসমিন আক্তার (৩৫), তার মেয়ে হাসিবা তাহসিন হিমি (৯) এবং আদিলা তাহসিন হানি (৫)। ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়। আর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ তিনটি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
নিহতের পবিবার ও পুলিশের ধারণা, চাকরি ও সংসার নিয়ে মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে দুই সন্তানকে নৃশংসভাবে হত্যার পর আত্মহত্যা করেন মা জেসমিন আক্তার।
পুলিশ জানায়, ঘটনার সময় তাদের স্বজনদের দুই/তিনজন ওই ফ্ল্যাটেই উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে নিহতের স্বামীর ভাগিনা রওশন জামিল এবং তার স্ত্রী রোমানা পারভীন ও নিহত জেসমিনের এক খালাতো বোন রেহানা উপস্থিত ছিলেন। তারা পাশের ঘরে শুয়ে ছিলেন। কিন্তু কেউই কোনও রকমের চিৎকারের শব্দ শোনেননি বলে জানিয়েছেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) শেখ নাজমুল আলম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মা তার দুই সন্তানকে হত্যার পর নিজেও আত্মহত্যা করেছেন। তবে এই ঘটনায় অন্য কোনও বিষয় জড়িত আছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নিহত জেসমিনের ছোট ভাই শাহিনুর ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তার প্রচণ্ড মাইগ্রেনের সমস্যা ছিল। আপার মনে অনেক কষ্ট ছিল। সে তার চাকরি ও সন্তান লালন-পালনের বিষয়ে খুব চিন্তিত থাকতো। চাকরি করলে বাচ্চাদের দেখবে কে! আর বাচ্চাদের দেখতে হলে চাকরি ছাড়তে হবে।’
তিনি বলেন, ‘মাইগ্রেনের সমস্যা সইতে না পেরে গত মাসে আপা ৩/৪ টি ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। মাইগ্রেনের জন্য আপার চিকিৎসাও চলছিল। এর আগে তাকে ভারতেও চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।’
শাহিনুর ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দুলাভাই বলতো- তুমি চাকরিটা ছেড়ে দাও। কিন্তু আমি আপাকে বলতাম যে, আপা ছাড়তে চান, আর আমি চাকরি খুঁজে পাই না। তখন আমি বলি আপনি চাকরি ছাড়বেন না। প্রয়োজনে আমি বাচ্চাদের দেখাশোনা করবো।’
নিহত জেসমিন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। তার স্বামী হাসিবুল হাসান জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সহকারী লেজিসলেটিভ ড্রাফটসম্যান হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ২০০৮ সালে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। হাসিবুলের গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড়ের ভজনপুর গ্রামে। জেসমিনের বাড়ি ঠাকুরগাঁও। তাদের দুই কন্যাসন্তান হিমি ও হানি। হিমি পাইকপাড়া এলাকার মডেল একাডেমি স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়তো।
হাসিবুল ইসলাম ২০০৬ সালে চাকরিতে যোগ দেন। ২০০৭ সালে সরকারিভাবে এই কোয়ার্টারের ১৩৪ নম্বর ভবনের চারতলার একটি ফ্ল্যাট বরাদ্দ পান। বিয়ের পর থেকে স্ত্রীসহ ওই বাসাতেই বসবাস করতেন।
ভবনের পাশে থাকা মুদি দোকানি আব্দুল আহাদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সোমবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে হিমি আমার দোকানে এসেছিল। পরে আমার মেয়ের সঙ্গে পাশের মসজিদে আরবি পড়তে যায়। হাসিবুল ও জেসমিন খুবই ভালো মানুষ। তারা কোনও ঝগড়া বিবাদে জড়াতো না। প্রায় সময় আমার দোকান থেকে দুই মেয়ের জন্য বিস্কুট নিয়ে যেতো। দুইজনই বাকি খেতেন। মাসের বেতন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টাকা পরিশোধ করে দিতেন।’
No comments