৬১ বছরের পুরনো রাজউকের ‘টাওয়ার ঘড়ি’ নতুন রূপে ফিরছে by দীন ইসলাম
৬১
বছরের পুরনো রাজউক ভবনের ঐতিহ্যবাহী ‘টাওয়ার ঘড়ি’ নতুন রূপে ফিরছে।
যান্ত্রিক গোলযোগে সঠিক সময় না দেয়ায় বর্তমানে ঘড়িটি বন্ধ রয়েছে। এরই মধ্যে
ঘড়িটিকে নতুন রূপে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ঐতিহাসিক ঘড়িটি মেরামত
বা ডিজিটাল মাস্টার ক্লক স্থাপন করা হবে। বিষয়টি চূড়ান্ত করতে রাজউক চার
সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে। এ কমিটি ঠিক করবে ঘড়িটি মেরামত হবে
নাকি অবয়ব ঠিক রেখে ডিজিটাল ঘড়িতে রূপান্তরিত হবে। সহসাই উচ্চ পর্যায়ের এ
কমিটি রিপোর্ট দেয়ার কথা রয়েছে। রিপোর্ট দিলেই ‘টাওয়ার ঘড়ি’র বিষয়ে চূড়ান্ত
সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। রাজউক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৫৬ সালে রাজউক ভবনে ঘড়িটি
স্থাপন করা হয়। এরপর বিভিন্ন সময় ঘড়িটি মেরামত করা হয়েছে। তবে প্রায় ৬১
বছরের পুরনো ঘড়িটির যন্ত্রাংশ এখন বাজারে পাওয়া যায় না। তাই বারবার মেরামত
করেও ঘড়িটি সচল রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে বিষয়টি নিয়ে রাজউকের
বোর্ডসভায় আলোচনা করা হয়। এর আগে রাজউক ভবনের ঘড়িটি মেরামত বা নতুনভাবে কী
করা যায় এ নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। ওই সব আলোচনায় বলা
হয়, ঘড়ির বাইরের অবয়ব ঠিক রেখে এর ম্যাকানিকেল মুভমেন্ট পরিবর্তন করলে
ঘড়িটি সচল করা যাবে। এজন্য চেইন, স্পোকেট, পারদ সুইচ, সলিনয়েড, মাস্টার
ক্লক, ওয়েট ৪০ কেজিসহ আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন করতে হবে। তাহলে ঘড়িটি
নতুনভাবে সচল হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজউক ভবনে স্থাপিত ঘড়িটি
নিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রস্তাব সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে
একটি প্রস্তাবে ১০ বছরের গ্যারান্টি, ওয়ারেন্টিসহ আনুমানিক ২৮ লাখ টাকার
প্রয়োজন হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আরেকটি প্রস্তাবে নতুনভাবে ডিজিটাল
মাস্টার ক্লকসহ অবয়ব ঠিক রেখে টাওয়ার ঘড়ি স্থাপন করে ১০ বছরের গ্যারান্টি,
ওয়ারেন্টিসহ আনুমানিক ৫২ লাখ টাকার দরকার হতে পারে বলে জানিয়েছে। এদিকে
রাজউকের বোর্ড সভায় টাওয়ার ঘড়িটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় বলা হয়, রাজউক
ভবন রাজধানী ঢাকার একটি ঐতিহ্যবাহী ভবন। ভবনের টাওয়ারে স্থাপিত ঘড়িটি
একদিকে যেমন ভবনের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করছে অন্যদিকে তেমনি শহরের বাসিন্দাদের
সঠিক সময় দেয়ার নিশ্চয়তা দিচ্ছে। ঘড়িটি বঙ্গভবনে বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠানে
অংশগ্রহণকারী দেশি-বিদেশি অতিথিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকে। বর্তমানে ঘড়িটি
সঠিক সময় না দেয়ায় বন্ধ রয়েছে। আলোচনার পর প্রধান প্রকৌশলী (প্রকল্প ও
ডিজাইন)-কে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের কমিটি করা হয়। কমিটিতে পরিচালক
(প্রশাসন), পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-১) এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী
(বৈদ্যুতিক)- কে সদস্য করা হয়েছে। এ কমিটিকে টাওয়ার ঘড়ির বাইরের অবয়ব ঠিক
রেখে ভেতরের যন্ত্রাংশ পরিবর্তনের মাধ্যমে ঘড়িটি চালু বা নতুন ডিজিটাল
টাওয়ার ঘড়ি সরবরাহ ও স্থাপনের জন্য সুপারিশসহ মতামত দিতে বলা হয়েছে।
কমিটি’র মতামত পাওয়ার পর ঘড়িটি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে রাজউক। বিষয়টি সম্পর্কে
জানতে চাইলে রাজউকের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, ঐতিহ্যবাহী
ঘড়িটিকে নতুন রূপে ফিরিয়ে আনা হবে। আশা করছি সহসাই এ বিষয়টি দৃশ্যমান হবে।
No comments