দুটি স্বপ্নের মৃত্যু: মানিকগঞ্জে আতঙ্কের নাম হ্যালোবাইক by রিপন আনসারী
মানিকগঞ্জে
এখন আতঙ্কের নাম হ্যালোবাইক। কাগজপত্রবিহীন অবৈধ এই হ্যালোবাইকের তাণ্ডবে
একদিকে শহরে তীব্র যানজট। অন্যদিকে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। পৌরসভার
তালিকা অনুযায়ী প্রায় সাড়ে ৫শ’ হ্যালোবাইকের বৈধতা থাকলেও মূল হ্যালোবাইকের
সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫ হাজার। বাকিরা টাকার বিনিময়ে দাবড়ে বেড়াচ্ছে। গত
চারদিনে জেলা শহরের দুটি স্কুলের কোমল দুই শিক্ষার্থী ঈশিতা ও সোয়েব
হ্যালোবাইকের চাপায় নিহত হয়েছে। দুজনেই প্লে গ্রুপের শিক্ষার্থী। অকালে ঝরে
যাওয়া এই দুই শিশুর মৃত্যুতে শহরের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোমলমতি
শিক্ষার্থীদের নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা। শুধু শিক্ষার্থী
নিহতের ঘটনায় সীমাবদ্ধ নেই। এর আগে হ্যালোবাইকের আঘাতে কয়েক বছর আগে মারা
গেছেন মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু তাহের। মানিকগঞ্জ
বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু করে জেলা শহরের শেষ মাথা এবং বেওথা ঘাট পর্যন্ত
কুইন্স স্কুল, হলি ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, হলি চাইল্ড, বালিকা উচ্চ
বিদ্যালয়, বালক উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ,
খান বাহাদুর উচ্চ বিদ্যালয়, খান বাহাদুর আওলাদ হোসেন খান কলেজ, ৮৮ নং
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আফরোজা রমজান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মডেল
হাইস্কুল, তীতুমীর একাডেমিসহ আরো বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রায়
সবগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই সড়কঘেঁষা। প্রতিষ্ঠানগুলোর সামনে দিয়ে দিনের
বেলায় তিন চাকার ব্যাটারিচালিত হ্যালোবাইকের তাণ্ডব এতই বেশি যার ফলে
শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসা-যাওয়া করতে হয় চরম ঝুঁকির মধ্যে। তার মধ্যে শহরের
রাস্তাঘাটের বেহালদশা। রাস্তার প্রশস্ততা এতই কম যার কারণে দুটো ছোট
যানবাহন পাশাপাশি যেতে হিমশিম খেতে হয়। মানুষ চলাচলের তিল পরিমাণ জায়গা
থাকে না রাস্তার পাশে। ফলে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। অভিযোগ আছে, টাকার
বিনিময়ে শহরের হ্যালোবাইক চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়। চালকদের নেই কোনো
দক্ষতা, নেই ড্রাইভিং লাইসেন্স আর বৈধ কাগজপত্র। শুধু শহরেই নয় ঢাকা-আরিচা
মহাসড়কেও চলছে হ্যালোবাইক। কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই ছোট এই যানবাহন চলাচলে।
এছাড়া হ্যালোবাইকের পাশাপাশি আরেকটা আতঙ্কের নাম হচ্ছে ব্যাটারিচালিত
রিকশা। অহরহ এই রিকশায় ঘটছে দুর্ঘটনা। মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার উকিয়ারা
গ্রামের সোহেল মিয়ার কন্যা ঈশিতা আক্তার। সে শহরের বেওথা রোডের হলি
ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্লে গ্রুপের শিক্ষার্থী। শনিবার মা নিপা
বেগমের সঙ্গে হ্যালোবাইকে করে যাচ্ছিলেন স্কুলের পুরস্কার বিতরণী
অনুষ্ঠানে। শহরের নিরাময় ক্লিনিকের সামনে নামার পরপরই পেছন থেকে বেপোরোয়া
গতিতে আসা আরেকটি হ্যালোবাইক ঈশিতাকে ধাক্কা দেয়। মায়ের হাত থেকে ছিটকে পড়ে
যায় রাস্তায়। সেই সঙ্গেই নিভে যায় জীবন প্রদীপ। ঈশিতাকে বাঁচানোর জন্য
মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানকার কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত
ঘোষণা করে। স্কুলের পুরস্কার আর নেয়া হয়নি ঈশিতার।
এই দুর্ঘটনার তিন দিন যেতে না যেতেই হ্যালোবাইকের চাপায় নিভে যায় আরেকটি স্বপ্ন। মঙ্গলবার সকালে প্রতিদিনের মতোই মানিকগঞ্জ শহরের পশ্চিম দাশড়া এলাকার বাসিন্দা ওমর ফারুকের শিশুপুত্র তিতুমীর একাডেমির প্লে গ্রুপের শিক্ষার্থী শোয়েব হোসেন স্কুলে যায়। স্কুল ছুটি শেষে খালার সঙ্গে রাস্তা পার হতে গেলে দ্রুতগামী একটি হ্যালোবাইক শিশুটিকে পেছন থেকে চাপা দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় শোয়েবকে নিয়ে যাওয়া হয় মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে। ঘণ্টাখানেক পর সকলকে কাঁদিয়ে চলে যায় না ফেরার দেশে। নিহত শোয়েবের বাবা ওমর ফারুক ঢাকায় গোয়েন্দা বিভাগে কর্মরত আছেন। আর মা সোমা আক্তার মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের সেবিকা। দুর্ঘটনায় দুটি স্বপ্নের অকাল মৃত্যুতে এখন হ্যালোবাইক আতঙ্কে রয়েছে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। হলি ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. আকরাম হোসেন বলেন, মানিকগঞ্জ শহরে হ্যালোবাইকের উৎপাত অনেক বেড়ে গেছে। বাচ্চাদের নিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে এই ক্ষুদে যানবাহন খুবই বিরক্তকর। স্কুলের সামনে দিয়ে যেভাবে দ্রুতগতিতে এই যানগুলো চলাচল করে এতে বাচ্চাদের নিয়ে সবসময়ই আতঙ্কে থাকতে হয়। এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ করা খুবই জরুরি বলে আমি মনে করি।
মানিকগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক লাভলু খান বলেন, স্কুল আর রাস্তার দূরত্ব জিরো মিটার। রাস্তার সঙ্গে স্কুল তারপরও হ্যালোবাইক যেভাবে বেপোরোয়া ভাবে চলাচল করে তা দেখার কেউ নেই। মানিকগঞ্জ শহরের বাসিন্দা সিনিয়র সাংবাদিক খোন্দকার আশরাফুন নবী বলেন, পর পর দুটি দুর্ঘটনায় দুই কোমলমতি শিশু নিহত হওয়ায় হ্যালোবাইক এখন শহরবাসীর কাছে আতঙ্কের নাম। অবৈধ এই যানবাহন শহরে যানজটের পাশাপাশি প্রায় দুর্ঘটনা ঘটিয়ে নাগরিক জীবন বিষিয়ে তুলেছে। গায়ে গায়ে লেগে থাকা হ্যালোবাইকের জন্য রাস্তায় হাঁটাচলা করাটাই এখন রীতিমতো বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হলিফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, আমার স্কুলের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর থেকে হ্যালোবাইক আমাদের কাছে একটি আতঙ্কের বিষয়। স্কুলের সামনে এবং শহরের মধ্য দিয়ে যেভাবে বেপরোয়াগতিতে হ্যালোবাইক চলাচল করছে তা নিয়ন্ত্রণে আনা জরুরি। এদিকে গত কয়েক দিনে হ্যালোবাইকের চাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় টনক নড়েছে পৌর কর্তৃপক্ষের। তারা শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে তল্লাশি চালাচ্ছে অবৈধ হ্যালোবাইক শনাক্তে। জানিয়েছেন, পৌরসভার তালিকায় সাড়ে ৫শ’ হ্যালোবাইক অনুমোদন দেয়া আছে। কিন্তু অনুমোদন ছাড়া এখনো অনেক হ্যালোবাইক রোডে চলছে বলে জানিয়েছেন এক পৌর কর্মকর্তা। সেগুলো শনাক্ত করা হচ্ছে।
এই দুর্ঘটনার তিন দিন যেতে না যেতেই হ্যালোবাইকের চাপায় নিভে যায় আরেকটি স্বপ্ন। মঙ্গলবার সকালে প্রতিদিনের মতোই মানিকগঞ্জ শহরের পশ্চিম দাশড়া এলাকার বাসিন্দা ওমর ফারুকের শিশুপুত্র তিতুমীর একাডেমির প্লে গ্রুপের শিক্ষার্থী শোয়েব হোসেন স্কুলে যায়। স্কুল ছুটি শেষে খালার সঙ্গে রাস্তা পার হতে গেলে দ্রুতগামী একটি হ্যালোবাইক শিশুটিকে পেছন থেকে চাপা দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় শোয়েবকে নিয়ে যাওয়া হয় মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে। ঘণ্টাখানেক পর সকলকে কাঁদিয়ে চলে যায় না ফেরার দেশে। নিহত শোয়েবের বাবা ওমর ফারুক ঢাকায় গোয়েন্দা বিভাগে কর্মরত আছেন। আর মা সোমা আক্তার মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের সেবিকা। দুর্ঘটনায় দুটি স্বপ্নের অকাল মৃত্যুতে এখন হ্যালোবাইক আতঙ্কে রয়েছে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। হলি ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. আকরাম হোসেন বলেন, মানিকগঞ্জ শহরে হ্যালোবাইকের উৎপাত অনেক বেড়ে গেছে। বাচ্চাদের নিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে এই ক্ষুদে যানবাহন খুবই বিরক্তকর। স্কুলের সামনে দিয়ে যেভাবে দ্রুতগতিতে এই যানগুলো চলাচল করে এতে বাচ্চাদের নিয়ে সবসময়ই আতঙ্কে থাকতে হয়। এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ করা খুবই জরুরি বলে আমি মনে করি।
মানিকগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক লাভলু খান বলেন, স্কুল আর রাস্তার দূরত্ব জিরো মিটার। রাস্তার সঙ্গে স্কুল তারপরও হ্যালোবাইক যেভাবে বেপোরোয়া ভাবে চলাচল করে তা দেখার কেউ নেই। মানিকগঞ্জ শহরের বাসিন্দা সিনিয়র সাংবাদিক খোন্দকার আশরাফুন নবী বলেন, পর পর দুটি দুর্ঘটনায় দুই কোমলমতি শিশু নিহত হওয়ায় হ্যালোবাইক এখন শহরবাসীর কাছে আতঙ্কের নাম। অবৈধ এই যানবাহন শহরে যানজটের পাশাপাশি প্রায় দুর্ঘটনা ঘটিয়ে নাগরিক জীবন বিষিয়ে তুলেছে। গায়ে গায়ে লেগে থাকা হ্যালোবাইকের জন্য রাস্তায় হাঁটাচলা করাটাই এখন রীতিমতো বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হলিফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, আমার স্কুলের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর থেকে হ্যালোবাইক আমাদের কাছে একটি আতঙ্কের বিষয়। স্কুলের সামনে এবং শহরের মধ্য দিয়ে যেভাবে বেপরোয়াগতিতে হ্যালোবাইক চলাচল করছে তা নিয়ন্ত্রণে আনা জরুরি। এদিকে গত কয়েক দিনে হ্যালোবাইকের চাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় টনক নড়েছে পৌর কর্তৃপক্ষের। তারা শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে তল্লাশি চালাচ্ছে অবৈধ হ্যালোবাইক শনাক্তে। জানিয়েছেন, পৌরসভার তালিকায় সাড়ে ৫শ’ হ্যালোবাইক অনুমোদন দেয়া আছে। কিন্তু অনুমোদন ছাড়া এখনো অনেক হ্যালোবাইক রোডে চলছে বলে জানিয়েছেন এক পৌর কর্মকর্তা। সেগুলো শনাক্ত করা হচ্ছে।
No comments