সবই বদলায় কেবল ভোটের চেহারা বদলায় না
কেন্দ্র
দখল। জাল ভোট। ব্যালক বাক্স ছিনতাই। গুলি। লাশ। সেই একই ছবি। বাংলাদেশ
রাষ্ট্রের জন্মের পর থেকেই চলে আসছে তা। তত্ত্বাবধায়ক শাসনে অনুষ্ঠিত
নির্বাচনগুলোর চিত্র হয়তো কিছুটা আলাদা ছিলো। তবে রক্তের দাগ আছে ওই সব
নির্বাচনের ব্যালটেও। জোর যার ভোট তার-বহু এলাকাতে সে সময়ও এমন চিত্র দেখা
গেছে। দুনিয়া অনেক বদলে গেছে। রাষ্ট্রের চেহারাও পালটে গেছে। আমরা এখন
উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। জনগণের জীবনযাত্রায় ইতিবাচক বদল হয়েছে অনেক।
কিন্তু ভোটের চেহারার কোন বদল হয়নি।
বৃহস্পতিবার দেশের ১৩৩টি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনের চিত্র এরইমধ্যে সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। পুরোটা অবশ্য পত্রিকায় আসেনি। এ নির্বাচনে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়ার ঘটনা ঘটেছে। গুলিতে প্রাণ গেছে একজনের। পুলিশসহ আহত হয়েছেন অনেকে। যথারীতি কেন্দ্র দখল আর ব্যালক পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। জাল ভোটতো এখন ডাল-ভাত। বহু জায়গায় বিরোধী প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাঝপথে ভোট বর্জনের ঘটনাও ঘটেছে অনেক। কোথাও যে ভোট শান্তিপূর্ণ হয়নি তা নয়। কোন কোন এলাকার চিত্র মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ছিলো। কোথাও কোথাও ভোট হয়েছে গোলযোগ ছাড়া। কিন্তু মোটাদাগে জোর-জবর দস্তির আরেকটি স্থানীয় নির্বাচন প্রত্যক্ষ করলো বাংলাদেশের মানুষ।
ভোটের এই হাঙ্গামার চিত্র অবশ্য বিশেষ কোন রাজনৈতিক দলের ক্ষমতায় থাকার সময়কার নয়। যে দলই ক্ষমতায় থাকুক ভোটের ছবি ওই একটাই। রাতের বেলাতেই এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করে প্রভাবশালী প্রার্থীরা। চলে ভোটের কেনা-বেচা। ইদানীং অবশ্য সকাল সকাল ব্যালট পেপার ছিনতাইয়েরও চল হয়েছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের পেছনে ব্যালট পেপারের ঐতিহাসিক ভূমিকা ছিলো। ’৭০ এর নির্বাচনে এ অঞ্চলের জনগণ নিরঙ্কুশভাবে বঙ্গবন্ধুকে এবং আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়। ওই নির্বাচনে মূলত পাকিস্তান রাষ্ট্রের মৃত্যুই ঘোষণা করা হয়েছিলো।
স্বাধীন বাংলাদেশের শুরুর দিকে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলো ছিলো বিতর্কিত। সামরিক শাসনামলে নির্বাচনের নামে নানা তামাশা হয়েছে। ‘হ্যাঁ,’ ‘না’ ভোটের নাটকও দেখেছে এদেশের মানুষ। এরশাদের পতনের পর প্রথমবারের মতো জাতীয় নির্বাচন ছিল মোটামুটি বিতর্ক মুক্ত। সে নির্বাচনে সামান্য ব্যবধানে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে বিএনপি। ওই সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার আর উপ-নির্বাচনগুলোতে দেখা যায় সে একই দৃশ্য। জোর জবরদস্তি আর সহিংসতার নির্বাচন। মাগুরার উপ-নির্বাচনের জাল-জালিয়াতিতো সে সময়কার সব রেকর্ডই ভেঙে দিয়েছিল। এরই ধারবাহিকতায় যেন অনুষ্ঠিত হয় ১৫ই ফেব্রুয়ারির ভোট। ৫ই জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনেও ছিল একই দৃশ্য পুনরায় মঞ্চায়ন। এর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচন ছিল মোটামুটি গ্রহণযোগ্য। এর একটিতে বিএনপি এবং দু’টিতে আওয়ামী লীগ জয়ী হয়। পরাজিত পক্ষ এসব নির্বাচন নিয়ে টুকটাক প্রশ্ন তুললেও আন্তর্জাতিক মহল এবং সাধারণভাবে জনগণ এসব নির্বাচনকে গ্রহণ করেছে।
স্থানীয় নির্বাচনে বারবারই হাঙ্গামার একই দৃশ্য দেখা গেছে। আগে স্থানীয় নির্বাচনগুলো দলীয় প্রতীক ছাড়াই হতো। কিন্তু কয় বছর ধরে দলীয় প্রতীকে এসব নির্বাচন হচ্ছে। ধারণা করা হয়েছিলো, দলীয় প্রতীক বিশেষ করে সরকারি দল সমর্থিত প্রার্থীদের কোন্দল নিরসনে ভূমিকা রাখবে। আখেরে অবশ্য তাতে তেমন কোনো লাভ হয়নি। বহু জায়গাতেই প্রতীকের বাইরে সরকারি দলের অনেক নেতা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। যেখানে ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত একাধিক প্রভাবশালী প্রার্থী ছিলেন সেসব এলাকায় সহিংসতার মাত্রা বরাবরই বেশি ছিলো। স্থানীয় প্রশাসনকেও নানা ঝক্কি-ঝামেলা মোকাবিলা করতে হয়েছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে বহু কিছুরই ইতিবাচক বদল হয়েছে। কিন্তু ভোটের চেহারার তেমন কোনো বদল হয়নি। বদল যতটুকু হয়েছে তা আরো খারাপ পরিস্থিতিরই ইঙ্গিত দেয়।
বৃহস্পতিবার দেশের ১৩৩টি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনের চিত্র এরইমধ্যে সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। পুরোটা অবশ্য পত্রিকায় আসেনি। এ নির্বাচনে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়ার ঘটনা ঘটেছে। গুলিতে প্রাণ গেছে একজনের। পুলিশসহ আহত হয়েছেন অনেকে। যথারীতি কেন্দ্র দখল আর ব্যালক পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। জাল ভোটতো এখন ডাল-ভাত। বহু জায়গায় বিরোধী প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাঝপথে ভোট বর্জনের ঘটনাও ঘটেছে অনেক। কোথাও যে ভোট শান্তিপূর্ণ হয়নি তা নয়। কোন কোন এলাকার চিত্র মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ছিলো। কোথাও কোথাও ভোট হয়েছে গোলযোগ ছাড়া। কিন্তু মোটাদাগে জোর-জবর দস্তির আরেকটি স্থানীয় নির্বাচন প্রত্যক্ষ করলো বাংলাদেশের মানুষ।
ভোটের এই হাঙ্গামার চিত্র অবশ্য বিশেষ কোন রাজনৈতিক দলের ক্ষমতায় থাকার সময়কার নয়। যে দলই ক্ষমতায় থাকুক ভোটের ছবি ওই একটাই। রাতের বেলাতেই এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করে প্রভাবশালী প্রার্থীরা। চলে ভোটের কেনা-বেচা। ইদানীং অবশ্য সকাল সকাল ব্যালট পেপার ছিনতাইয়েরও চল হয়েছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের পেছনে ব্যালট পেপারের ঐতিহাসিক ভূমিকা ছিলো। ’৭০ এর নির্বাচনে এ অঞ্চলের জনগণ নিরঙ্কুশভাবে বঙ্গবন্ধুকে এবং আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়। ওই নির্বাচনে মূলত পাকিস্তান রাষ্ট্রের মৃত্যুই ঘোষণা করা হয়েছিলো।
স্বাধীন বাংলাদেশের শুরুর দিকে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলো ছিলো বিতর্কিত। সামরিক শাসনামলে নির্বাচনের নামে নানা তামাশা হয়েছে। ‘হ্যাঁ,’ ‘না’ ভোটের নাটকও দেখেছে এদেশের মানুষ। এরশাদের পতনের পর প্রথমবারের মতো জাতীয় নির্বাচন ছিল মোটামুটি বিতর্ক মুক্ত। সে নির্বাচনে সামান্য ব্যবধানে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে বিএনপি। ওই সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার আর উপ-নির্বাচনগুলোতে দেখা যায় সে একই দৃশ্য। জোর জবরদস্তি আর সহিংসতার নির্বাচন। মাগুরার উপ-নির্বাচনের জাল-জালিয়াতিতো সে সময়কার সব রেকর্ডই ভেঙে দিয়েছিল। এরই ধারবাহিকতায় যেন অনুষ্ঠিত হয় ১৫ই ফেব্রুয়ারির ভোট। ৫ই জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনেও ছিল একই দৃশ্য পুনরায় মঞ্চায়ন। এর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচন ছিল মোটামুটি গ্রহণযোগ্য। এর একটিতে বিএনপি এবং দু’টিতে আওয়ামী লীগ জয়ী হয়। পরাজিত পক্ষ এসব নির্বাচন নিয়ে টুকটাক প্রশ্ন তুললেও আন্তর্জাতিক মহল এবং সাধারণভাবে জনগণ এসব নির্বাচনকে গ্রহণ করেছে।
স্থানীয় নির্বাচনে বারবারই হাঙ্গামার একই দৃশ্য দেখা গেছে। আগে স্থানীয় নির্বাচনগুলো দলীয় প্রতীক ছাড়াই হতো। কিন্তু কয় বছর ধরে দলীয় প্রতীকে এসব নির্বাচন হচ্ছে। ধারণা করা হয়েছিলো, দলীয় প্রতীক বিশেষ করে সরকারি দল সমর্থিত প্রার্থীদের কোন্দল নিরসনে ভূমিকা রাখবে। আখেরে অবশ্য তাতে তেমন কোনো লাভ হয়নি। বহু জায়গাতেই প্রতীকের বাইরে সরকারি দলের অনেক নেতা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। যেখানে ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত একাধিক প্রভাবশালী প্রার্থী ছিলেন সেসব এলাকায় সহিংসতার মাত্রা বরাবরই বেশি ছিলো। স্থানীয় প্রশাসনকেও নানা ঝক্কি-ঝামেলা মোকাবিলা করতে হয়েছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে বহু কিছুরই ইতিবাচক বদল হয়েছে। কিন্তু ভোটের চেহারার তেমন কোনো বদল হয়নি। বদল যতটুকু হয়েছে তা আরো খারাপ পরিস্থিতিরই ইঙ্গিত দেয়।
No comments