এক স্কুলশিক্ষিকার কাঠগড়ায় ছাত্রলীগ নেতা by হাফিজ মুহাম্মদ
ফাইল ছবি |
শিক্ষকতা
ছেড়ে ব্যাংকার হওয়ার ইচ্ছা ছিল তার। এজন্য তিনি নির্ভরযোগ্য ঠিকানাও পেয়ে
যান। আর এ ঠিকানা হলো মাগুরা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রেজাউল ইসলাম।
তার আবদারে সাড়াও দেন রেজাউল। চাকরি দিতে নিয়ে যান এক বড় ভাইয়ের দরবারেও।
এভাবে দিন পেরুতে থাকে।
ওই শিক্ষিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে থাকে রেজাউল। একসময় বিবাহিত রেজাউল ওই শিক্ষিকার কাছে তার স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের কথা জানায়। এভাবে শিক্ষিকা দুর্বল হয়ে পড়ে ছাত্রলীগ সভাপতির প্রতি। দু’জনের মধ্যে গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়। রেজাউল দেয় বিয়ের প্রলোভন। এভাবেই সম্পর্ক গিয়ে ঠেকে বিছানা পর্যন্ত। একসময় অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন ওই শিক্ষিকা। তখনই রেজাউলের রূপ বদলাতে থাকে। মানুষ জানাজানি হলে তার সম্মান যাবে- এ কথা বলে তার গর্ভপাত ঘটায়।
কিন্তু নাছোড়বান্দা রেজাউল ওই শিক্ষিকার পিছু ছাড়ে না। আবারও গড়ে তোলে দৈহিক সম্পর্ক। আবারো অন্তঃসত্ত্বা। এবার বিয়ের জন্য চাপ দেয় ওই শিক্ষিকা। কিন্তু কৌশলে রেজাউল আবারো গর্ভপাত করায়। বিয়ে এবং চাকরি কোনোটাই না পেয়ে ক্ষিপ্ত শিক্ষিকা আদালতে ধর্ষণ মামলা করেন। আর এ মামলার কথা শুনে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন রেজাউল। এরপরই ঘটনা ফাঁস হয়ে পড়ে সর্বত্র। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে রেজাউলের বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ আরো একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে। আদালত মামলাটির তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। অপরদিকে রেজাউল গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টার সময় পরিবারের লোকজন টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে সেখান থেকে ঢাকার একটি সরকারি হাসপাতালে এনে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে রেজাউল সম্পূর্ণ সুস্থ নন বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী মমতাজ বেগম মম। অন্যদিকে রেজাউল কর্তৃক প্রতারিত স্কুলশিক্ষিকা জানান, তিনি ব্যাংকের চাকরি প্রার্থী হয়ে রেজাউলের কাছে যান। ছাত্রলীগের সাবেক এ সভাপতি তাকে চাকরি দেয়ার আশ্বাস দেন। বড় ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগও করিয়ে দেন। পরে তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। রেজাউলের বউয়ের সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পর্ক নাই জানিয়ে তাকে বিভিন্নভাবে বিয়ের প্রলোভন দেখান। বিয়ের প্রতিশ্রুতি পেয়ে তিনি রেজাউলের কথায় সাড়া দেন। তিনি বলেন, সে সুযোগে রেজাউল দিনের পর দিন শারীরিক চাহিদা মেটান। একসময় অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন তিনি। রেজাউল তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওষুধ প্রয়োগে প্রথমবার গর্ভপাত করান। দ্বিতীয়বার যখন অন্তঃসত্ত্বা হন তখন মাথায় ভাঁজ পড়ে। আসলেই তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য লোক দিয়ে পরপর দুইবার পরীক্ষা করান রেজাউল। স্কুলশিক্ষিকা যে অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন তা রেজাউল জানার পরে তাকে গর্ভপাত করাতে নানাভাবে চাপ দেন। গর্ভপাত না করালে একপর্যায়ে মেরে ফেলারও হুমকি দেন। কোন কিছুতে কাজ না হওয়ায় নিজের সহকারীর বাসায় ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক তাকে ওষুধ খাইয়ে গর্ভপাত করান। এরপরে বন্ধ করে দেন যোগাযোগ। রেজাউল চলে যান আত্মগোপনে। সম্পর্কের শুরু থেকে শিক্ষিকা বারবার বিয়ের চাপ দিলেও পরে বিয়ে করবেন বলে এড়িয়ে যান তিনি। স্কুলশিক্ষিকা বলেন, তিনি বিবাহিত ছিলেন। তার এক ছেলে সন্তানও আছে। অন্যদিকে রেজাউলও বিবাহিত এবং তারও দু’টি মেয়ে রয়েছে। তবে তার স্বামী মাদকাসক্ত হওয়ায় তার থেকে আলাদা বসবাস করতেন। পরিবারের মান-সম্মানের কথা চিন্তা করে স্বামীকে কখনো ডিভোর্স দেননি। একপর্যায়ে রেজাউল তাকে দিয়ে পূর্বের স্বামীকে ডিভোর্স করাতেও বাধ্য করেন। যদিও রেজাউল তার স্ত্রীকে ডিভোর্স দিতে চাইলে তিনি তাকে বারণ করেন। তার সঙ্গে সম্পর্ক রেখেই তিনি তার বিয়ের দাবিটুকু দিতে বলেন। কিন্তু তিনি বারবার তা সময় চেয়ে বিয়ের কথা এড়িয়ে যান।
মামলার বাদী স্কুলশিক্ষিকা জানান, যেদিন তিনি মামলা করছেন সেদিন তার বাড়িতে ছাত্রলীগের কর্মীরা এসে ঘরে তালা লাগিয়ে দিয়ে যায়। তার বাবা-মা যশোরে ছেলের বাসায় থাকায় সেদিন বাড়িতে কেউ ছিলেন না। বাড়িতে তার চাচাকে পেয়ে মামাল তুলে নেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে যায় রেজাউলের কর্মীরা। মামলার দিন থেকে ভুক্তভোগী এ নারী বাড়ি ছাড়া। স্কুল থেকে তিনি ছুটি নিলেও তা শেষ হয়ে গেছে। একেকদিন একেক জনের বাড়িতে কাটাচ্ছেন। এখন ভয়ে আর কারো বাড়িতে থাকতে পারছেন না।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগ নেতা রেজাউলের প্রভাব থাকায় ২০১৫ সালের ১৮ এপ্রিল ‘বেসিক ব্যাংকে’ চাকরির সুপারিশের জন্য তার বাড়িতে যান ওই শিক্ষিকা। পরবর্তীতে রেজাউল চাকরি দেয়ার কথা বলে তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে ডেকে নেন। তারপরে মাঝে-মধ্যে তাকে ডেকে নিতেন। তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার জন্য বিয়ের প্রলোভন এবং পূর্বের স্বামী সন্তানকে দেখভাল করার দায়িত্ব নেয়ার কথা বলেন। পরবর্তীতে তার সুন্দর ভবিষ্যতের লক্ষ্যে তার সঙ্গে মিলিত হওয়ার চেষ্টা করেন। এরপরে রেজাউল তার বন্ধু সেন সুমন এবং অমিতাভ শিকদার বাপির সঙ্গেও পরিচয় করিয়ে দেন। প্রথম ঘটনার দিন ওই বছরের ৫ই মে তার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানে ডেকে নেন। তখন সেখানে রেজাউল ছাড়া অন্য কোন লোক না ছিল না। ওই দিন ভয় দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন। এবং এগুলো বাহিরে জানালে তার এবং তার সন্তানের ক্ষতি হবে বলেও জানান। ২০১৭ সালে দ্বিতীয়বার তিনি অন্তঃসত্ত্বা হন। এবারও রেজাউলকে জানালে তিনি দ্রুত গর্ভপাত করাতে বলেন। এবং এক মাসের মধ্যে তাকে বিবাহ করার আশ্বাস দেন। কিন্তু মামলার বাদী শিক্ষিকা গর্ভপাতে রাজি না হওয়ায় রেজাউল তার সহকারী শাহিনের ভাড়া বাসায় ডেকে নেন। দ্বিতীয়বার জোর করে গর্ভপাত করান। এসবের সাক্ষী ছিলেন শাহিন। তারপরে এ স্কুল শিক্ষিকা অসুস্থ হয়ে পড়লে তার সঙ্গে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বন্ধ করে দেন এবং মেরে ফেলার হুমকি দেন লোক দিয়ে। মামলার বাদী কোনো উপায়ন্ত না পেয়ে থানায় মামলা করার জন্য গেলেও তারা তাকে ফিরিয়ে দেন। পরবর্তীতে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন। রেজাউলের স্ত্রী মমতাজ বেগম মম জানান, তার স্বামীর সম্মান, সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন করার চক্রান্ত করছেন এক স্কুলশিক্ষিকা। সে তার স্বামীর কাছ থেকে অর্থনৈতিক সুবিধা নেয়ার জন্য ব্ল্যাকমেইল করছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার মামলা করেন। এদিকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। মমতাজ বেগম আরও বলেন, তার স্বামী একমাস আগে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বাড়িতে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা। এদিকে মমতাজের অভিযোগের কথা ভিত্তিহীন এবং বানোয়াট বলে দাবি করেন ভুক্তভোগী এ স্কুল শিক্ষিকা। তিনি বলেন, রেজাউল যদি অপরাধ না করে থাকে তাহলে আত্মহত্যার চেষ্টা কেন করেবেন। স্কুল শিক্ষিকা বলেন, আমি তো রেজাউলের কাছে টাকা-পয়সা কিংবা প্রথম স্ত্রীকে বাদ দিতেও বলছি না। সে শুধু আমাকে স্ত্রীর মর্যাদাটুক দিলেই চলবে। আমি তার কাছ আর কিছু চাই না।
ওই শিক্ষিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে থাকে রেজাউল। একসময় বিবাহিত রেজাউল ওই শিক্ষিকার কাছে তার স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের কথা জানায়। এভাবে শিক্ষিকা দুর্বল হয়ে পড়ে ছাত্রলীগ সভাপতির প্রতি। দু’জনের মধ্যে গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়। রেজাউল দেয় বিয়ের প্রলোভন। এভাবেই সম্পর্ক গিয়ে ঠেকে বিছানা পর্যন্ত। একসময় অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন ওই শিক্ষিকা। তখনই রেজাউলের রূপ বদলাতে থাকে। মানুষ জানাজানি হলে তার সম্মান যাবে- এ কথা বলে তার গর্ভপাত ঘটায়।
কিন্তু নাছোড়বান্দা রেজাউল ওই শিক্ষিকার পিছু ছাড়ে না। আবারও গড়ে তোলে দৈহিক সম্পর্ক। আবারো অন্তঃসত্ত্বা। এবার বিয়ের জন্য চাপ দেয় ওই শিক্ষিকা। কিন্তু কৌশলে রেজাউল আবারো গর্ভপাত করায়। বিয়ে এবং চাকরি কোনোটাই না পেয়ে ক্ষিপ্ত শিক্ষিকা আদালতে ধর্ষণ মামলা করেন। আর এ মামলার কথা শুনে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন রেজাউল। এরপরই ঘটনা ফাঁস হয়ে পড়ে সর্বত্র। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে রেজাউলের বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ আরো একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে। আদালত মামলাটির তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। অপরদিকে রেজাউল গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টার সময় পরিবারের লোকজন টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে সেখান থেকে ঢাকার একটি সরকারি হাসপাতালে এনে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে রেজাউল সম্পূর্ণ সুস্থ নন বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী মমতাজ বেগম মম। অন্যদিকে রেজাউল কর্তৃক প্রতারিত স্কুলশিক্ষিকা জানান, তিনি ব্যাংকের চাকরি প্রার্থী হয়ে রেজাউলের কাছে যান। ছাত্রলীগের সাবেক এ সভাপতি তাকে চাকরি দেয়ার আশ্বাস দেন। বড় ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগও করিয়ে দেন। পরে তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। রেজাউলের বউয়ের সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পর্ক নাই জানিয়ে তাকে বিভিন্নভাবে বিয়ের প্রলোভন দেখান। বিয়ের প্রতিশ্রুতি পেয়ে তিনি রেজাউলের কথায় সাড়া দেন। তিনি বলেন, সে সুযোগে রেজাউল দিনের পর দিন শারীরিক চাহিদা মেটান। একসময় অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন তিনি। রেজাউল তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওষুধ প্রয়োগে প্রথমবার গর্ভপাত করান। দ্বিতীয়বার যখন অন্তঃসত্ত্বা হন তখন মাথায় ভাঁজ পড়ে। আসলেই তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য লোক দিয়ে পরপর দুইবার পরীক্ষা করান রেজাউল। স্কুলশিক্ষিকা যে অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন তা রেজাউল জানার পরে তাকে গর্ভপাত করাতে নানাভাবে চাপ দেন। গর্ভপাত না করালে একপর্যায়ে মেরে ফেলারও হুমকি দেন। কোন কিছুতে কাজ না হওয়ায় নিজের সহকারীর বাসায় ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক তাকে ওষুধ খাইয়ে গর্ভপাত করান। এরপরে বন্ধ করে দেন যোগাযোগ। রেজাউল চলে যান আত্মগোপনে। সম্পর্কের শুরু থেকে শিক্ষিকা বারবার বিয়ের চাপ দিলেও পরে বিয়ে করবেন বলে এড়িয়ে যান তিনি। স্কুলশিক্ষিকা বলেন, তিনি বিবাহিত ছিলেন। তার এক ছেলে সন্তানও আছে। অন্যদিকে রেজাউলও বিবাহিত এবং তারও দু’টি মেয়ে রয়েছে। তবে তার স্বামী মাদকাসক্ত হওয়ায় তার থেকে আলাদা বসবাস করতেন। পরিবারের মান-সম্মানের কথা চিন্তা করে স্বামীকে কখনো ডিভোর্স দেননি। একপর্যায়ে রেজাউল তাকে দিয়ে পূর্বের স্বামীকে ডিভোর্স করাতেও বাধ্য করেন। যদিও রেজাউল তার স্ত্রীকে ডিভোর্স দিতে চাইলে তিনি তাকে বারণ করেন। তার সঙ্গে সম্পর্ক রেখেই তিনি তার বিয়ের দাবিটুকু দিতে বলেন। কিন্তু তিনি বারবার তা সময় চেয়ে বিয়ের কথা এড়িয়ে যান।
মামলার বাদী স্কুলশিক্ষিকা জানান, যেদিন তিনি মামলা করছেন সেদিন তার বাড়িতে ছাত্রলীগের কর্মীরা এসে ঘরে তালা লাগিয়ে দিয়ে যায়। তার বাবা-মা যশোরে ছেলের বাসায় থাকায় সেদিন বাড়িতে কেউ ছিলেন না। বাড়িতে তার চাচাকে পেয়ে মামাল তুলে নেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে যায় রেজাউলের কর্মীরা। মামলার দিন থেকে ভুক্তভোগী এ নারী বাড়ি ছাড়া। স্কুল থেকে তিনি ছুটি নিলেও তা শেষ হয়ে গেছে। একেকদিন একেক জনের বাড়িতে কাটাচ্ছেন। এখন ভয়ে আর কারো বাড়িতে থাকতে পারছেন না।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগ নেতা রেজাউলের প্রভাব থাকায় ২০১৫ সালের ১৮ এপ্রিল ‘বেসিক ব্যাংকে’ চাকরির সুপারিশের জন্য তার বাড়িতে যান ওই শিক্ষিকা। পরবর্তীতে রেজাউল চাকরি দেয়ার কথা বলে তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে ডেকে নেন। তারপরে মাঝে-মধ্যে তাকে ডেকে নিতেন। তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার জন্য বিয়ের প্রলোভন এবং পূর্বের স্বামী সন্তানকে দেখভাল করার দায়িত্ব নেয়ার কথা বলেন। পরবর্তীতে তার সুন্দর ভবিষ্যতের লক্ষ্যে তার সঙ্গে মিলিত হওয়ার চেষ্টা করেন। এরপরে রেজাউল তার বন্ধু সেন সুমন এবং অমিতাভ শিকদার বাপির সঙ্গেও পরিচয় করিয়ে দেন। প্রথম ঘটনার দিন ওই বছরের ৫ই মে তার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানে ডেকে নেন। তখন সেখানে রেজাউল ছাড়া অন্য কোন লোক না ছিল না। ওই দিন ভয় দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন। এবং এগুলো বাহিরে জানালে তার এবং তার সন্তানের ক্ষতি হবে বলেও জানান। ২০১৭ সালে দ্বিতীয়বার তিনি অন্তঃসত্ত্বা হন। এবারও রেজাউলকে জানালে তিনি দ্রুত গর্ভপাত করাতে বলেন। এবং এক মাসের মধ্যে তাকে বিবাহ করার আশ্বাস দেন। কিন্তু মামলার বাদী শিক্ষিকা গর্ভপাতে রাজি না হওয়ায় রেজাউল তার সহকারী শাহিনের ভাড়া বাসায় ডেকে নেন। দ্বিতীয়বার জোর করে গর্ভপাত করান। এসবের সাক্ষী ছিলেন শাহিন। তারপরে এ স্কুল শিক্ষিকা অসুস্থ হয়ে পড়লে তার সঙ্গে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বন্ধ করে দেন এবং মেরে ফেলার হুমকি দেন লোক দিয়ে। মামলার বাদী কোনো উপায়ন্ত না পেয়ে থানায় মামলা করার জন্য গেলেও তারা তাকে ফিরিয়ে দেন। পরবর্তীতে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন। রেজাউলের স্ত্রী মমতাজ বেগম মম জানান, তার স্বামীর সম্মান, সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন করার চক্রান্ত করছেন এক স্কুলশিক্ষিকা। সে তার স্বামীর কাছ থেকে অর্থনৈতিক সুবিধা নেয়ার জন্য ব্ল্যাকমেইল করছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার মামলা করেন। এদিকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। মমতাজ বেগম আরও বলেন, তার স্বামী একমাস আগে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বাড়িতে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা। এদিকে মমতাজের অভিযোগের কথা ভিত্তিহীন এবং বানোয়াট বলে দাবি করেন ভুক্তভোগী এ স্কুল শিক্ষিকা। তিনি বলেন, রেজাউল যদি অপরাধ না করে থাকে তাহলে আত্মহত্যার চেষ্টা কেন করেবেন। স্কুল শিক্ষিকা বলেন, আমি তো রেজাউলের কাছে টাকা-পয়সা কিংবা প্রথম স্ত্রীকে বাদ দিতেও বলছি না। সে শুধু আমাকে স্ত্রীর মর্যাদাটুক দিলেই চলবে। আমি তার কাছ আর কিছু চাই না।
No comments