সিরিয়ায় যুদ্ধ বন্ধে ব্যর্থ জাতিসংঘ
সিরিয়ায়
যুদ্ধবিরতি আনতে জাতিসংঘে যে প্রস্তাব আনা হয়েছিল তা বাস্তবায়নে রীতিমতো
সংগ্রাম করছে নিরাপত্তা পরিষদ। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের
বৈঠকে এ বিষয়ে কোনো ঐকমত্য হয়নি। সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের প্রস্তাবে
ভোটে দিয়েছে রাশিয়া। স্থানীয় সময় শুক্রবার নিরাপত্তা পরিষদে এ নিয়ে
ভোটাভুটি হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানেও রাশিয়া ভেটো দিতে পারে। খবর এএফপির।
সিরিয়ার পূর্ব ঘৌটায় টানা ছয় দিনের সহিসংতায় ৪২৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত
হয়েছেন দুই সহস্রাধিক মানুষ। ২০১৩ সালের পর সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর এটি
সর্বোচ্চ প্রাণঘাতীর বিমান হামলা। ভয়াবহ এ পরিস্থিতিতে ঘৌটায় ৩০ দিনের
অস্ত্রবিরতির প্রস্তাব আনা হয়। অস্ত্রবিরতি নিয়ে বৃহস্পতিবারের নিরাপত্তা
পরিষদের বৈঠকে কোনো ঐকমত্য হয়নি। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো খবর দিয়েছে,
বৃষ্টির মতো করে সেখানে বোমা পড়ছে এখনও। বেসামরিক মানুষ তীব্রতর মানসিক
বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ঘৌটার এ ভয়াবহ বিপর্যয় রুখতে দেশটিতে মানবিক
সহায়তা ও জরুরি ওষুধপত্র সরবরাহের জন্য বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা পরিষদে
প্রস্তাব তোলা হয়।
নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য সুইডেন ও কুয়েত এ
প্রস্তাব উত্থাপন করে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সেই চুক্তির
ব্যাপারে ঐকমত্য হয়নি। রাশিয়াই বাকিদের সঙ্গে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবে
ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি। বিবিসির খবরে বলা হয়, ৩০ দিনের জন্য প্রস্তাবিত
অস্ত্রবিরতির খসড়ায় বলা ছিল, চুক্তির ৭২ ঘণ্টা থেকে এটি কার্যকর হবে। ১২৪৪
সম্প্রদায়ের ৬৫ লাখ মানুষের মানবিক প্রয়োজনের বিবেচনার কথা বলা হয়েছিল ওই
প্রস্তাবে। আইএস, আল কায়দা ও নুসরা ফ্রন্ট অস্ত্রবিরতির আওতায় পড়বে না বলে
উল্লেখ ছিল ওই প্রস্তাবে। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ঘৌটায় সক্রিয়
হায়াত তাহরির আল শামস নামের এক গোষ্ঠীকে আল কায়দা সংশ্লিষ্ট দাবি করেন।
তাদেরকেও অস্ত্রবিরতির আওতায় না নেয়ার আহ্বান জানান তিনি। তবুও এ নিয়ে
সমঝোতা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য-ফ্রান্সের প্রবল আগ্রহ সত্ত্বেও এ
প্রস্তাব পাস করা যায়নি রাশিয়ার ভেটো ক্ষমতার কারণে। শুক্রবার নিরাপত্তা
পরিষদে যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে ভোটাভুটি হবে। ২০১৩ সাল থেকে এলাকাটি
বিদ্রোহীদের দখলে রয়েছে। রাজধানী দামেস্কের কাছে অবস্থিত এটিই সর্বশেষ
এলাকা, যেটি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকাটির পুনর্দখল নিতে চলতি
মাসের শুরুর দিকে অভিযান জোরালো করে সরকারি বাহিনী। এতে শত শত মানুষ হতাহত
হয়। পরে বেসামরিকদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিতে এক বিরল অস্ত্রবিরতিতে সম্মত
হয় দুই পক্ষ।
No comments