সবজির দাম কমেছে বেড়েছে তেল চিনির
শীতের
শেষ দিকে এসে ঢাকার বাজারে শীতকালীন সবজির দাম কমেছে। বিশেষ করে আলু,
টমেটো এবং বিভিন্ন ধরনের শাকের দাম এখন অনেক কম। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৫
থেকে ২০ টাকা কেজিদরে। আলুর দাম নেমে এসেছে ১৫ টাকায়। ফুলকপি, পাতাকপি,
মুলা, গাজর, বেগুন, শিমসহ বেশির ভাগ সবজিও পাওয়া যাচ্ছে সহনীয় দামে। যদিও
ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, বরবটি, কচুরলতি, পটোল প্রভৃতির দাম এখনো বেশি। নতুন করে
দাম বেড়েছে আদা, রসুন, ভোজ্যতেল, মাছ ও চিনির। গতকাল রাজধানী ঢাকার কয়েকটি
পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দ্রব্যমূল্যের এ চিত্র পাওয়া যায়। খুচরা বাজারে
গতকাল পাকা টমেটো মানভেদে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হতে দেখা যায়।
এক সপ্তাহ আগেও টমটোর কেজি ছিল ৩০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন টমেটোর ভরা
মওসুম। আড়তেও পর্যাপ্ত টমেটো কোনো সঙ্কট নেই। তাই দাম কম। একই অবস্থা আলুর
ক্ষেত্রেও। অবশ্য পরিবহন সঙ্কটে এবং দাম না পাওয়ায় দেশের কোথাও কোথাও টমেটো
ফেলে দেয়ার কিংবা গরুকে খাওয়ানোর সংবাদও গণমাধ্যমে আসছে। এক সপ্তাহের
ব্যবধানে কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা কমিয়ে ডায়মন্ড আলু ১৫ থেকে ১৬ টাকা ও
গ্রানুলা ১২ থেকে ১৪ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। খুচরা বাজারে গতকাল
প্রতিটি ফুলকপি ও পাতাকপি আকারভেদে ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৪০
টাকা, পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, শিম ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা,
চিচিঙ্গা ৪০ থেকে ৬০ টাকা, ঝিঙ্গা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, করলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা
এবং মটরশুঁটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। লাউ বিক্রি হয় প্রতিটি
৩০ থেকে ৫০ টাকায়। লালশাক, পালংশাক, লাউশাকসহ অন্যান্য সবজিও গত সপ্তাহের
তুলনায় কিছুটা কম দামে বিক্রি করতে দেখা যায়। তবে মাছ ব্যবসায়ীদের দেয়া
তথ্যানুযায়ী, গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় সব জাতের মাছের দামই কেজিপ্রতি ২০
থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। বাজারে গতকাল প্রতি কেজি রুই মাছ ২৩০ থেকে ২৮০, কাতল
২২০ থেকে ২৫০ টাকা, পাঙ্গাশ ১২০ থেকে ১৫০, সিলভারকার্প ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা,
তেলাপিয়া ১৬০ থেকে ১৮০, শিং ও মাগুর মাছ বিক্রি হয় ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি
দরে।
তবে দেশী মাছের দাম অনেক বেশি। বিক্রেতারা জানান, বাজারে দেশী মাছের
চাহিদা বেশি, তাই এর দামও বেশি। প্রতি কেজি টেংরা বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ থেকে
৪৫০ টাকায়। শোল মাছের কেজি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। বাটা মাছ কেজিপ্রতি ৩২০ থেকে
৪০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। এ ছাড়া সাগরের মাছের মধ্যে ৭০০ থেকে ৮০০
গ্রাম সাইজের প্রতি কেজি ইলিশ ৮০০ টাকা, কোরাল প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৫০০,
রূপচান্দা আকারভেদে ৫৫০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়। ভোজ্যতেলের দাম
বেড়েছে লিটারে ২ থেকে ৩ টাকা। তীর ও রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের সয়াবিন তেল প্রতি
পাঁচ লিটারের বোতলে লেখা সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৫১০ টাকা। আগেও এই দর লেখা
থাকলেও খুচরায় বিক্রি হয় ৪৯০ টাকায়, যা এখন ৫১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্য
সব ব্র্যান্ডের প্রতি লিটার আগে ১০৩ থেকে ১০৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন তা
বেড়ে ১০৫ থেকে ১০৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, কোম্পানিগুলো আগে
প্রতি লিটারে দুই টাকা ছাড় দিতো। কিন্তু এখন ছাড় তুলে নিয়েছে। এ কারণে
বোতলের গায়ে লেখা সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যে বিক্রি করতে হচ্ছে। চিনির দাম
বেড়েছে কেজিতে দুই টাকা। বর্তমানে খুচরায় প্রতি কেজি চিনি ৫৫ থেকে ৫৬ টাকায়
বিক্রি হচ্ছে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৫৩ থেকে ৫৪ টাকা। এ ছাড়া প্যাকেটজাত
আখের চিনি ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়েছে চালেরও। প্রতি কেজি মিনিকেট
গতকাল ৬০ থেকে ৬৩ টাকায় বিক্রি হয়। মাঝারি মানের চাল বিআর-২৮ বিক্রি হচ্ছে
৫১ থেকে ৫৩ টাকায়। অন্যান্য চালের মধ্যে নাজিরশাইল এখনো ৬৪ থেকে ৬৮ টাকা।
ভালো মানের নাজিরশাইল ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোটা চাল স্বর্ণা ৪২
থেকে ৪৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। বাজারে গতকাল পেঁয়াজের দর কিছুটা কমেছে। দেশী
পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ এবং আমদানি করা পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
যদিও গত বছরে এই সময়ে ছিল দেশী পেঁয়াজ ২২ থেকে ২৮ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ
২০ থেকে ২৪ টাকা। দুই সপ্তাহ ধরে বাড়ছে রসুন ও আদার দাম। এখন প্রতি কেজি
দেশী রসুন ৫০ থেকে ৮০ টাকা এবং আমদানি করা রসুন ৯০ থেকে ১২০ টাকা হয়েছে। আর
আদা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়। এখন লবণের মওসুম থাকলেও দাম কমছে না।
সুপার লবণ ৩৮ থেকে ৪০ ও সাধারণ লবণ ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
No comments