জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি চীনা রাষ্ট্রদূত
আনুষ্ঠানিক
বিদায় ছাড়াই আচমকা ঢাকা ছেড়ে যাওয়া চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিং কিয়াংয়ের
বিষয়ে ব্যাপক তথ্যানুসন্ধান করছে বেইজিং। দায়িত্বপালনকালে বাংলাদেশে চীনের
স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তার ‘অনিয়মের’ তদন্তও হচ্ছে ।
কূটনৈতিক সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য মতে, বেইজিংয়ে একটি অনুষ্ঠানে যাওয়ার পর আর ঢাকায় ফেরা হয়নি চীনা দূতের। সেখানেই তাকে আটকে দেয়া হয়। যদিও বেইজিং যাওয়ার আগেই প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে তার বিদায়ী সাক্ষাতের অ্যাপয়েনমেন্ট চাওয়া হয় এবং সে মতে সাক্ষাৎ-সূচিও নির্ধারিত হয়। কিন্তু ততক্ষণে বেইজিংয়ে তিনি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়ে যান। ফলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে দফায় দফায় খোঁজা হলেও ‘রাষ্ট্রদূত বেইজিংয়ে জরুরি কাজে আটকা পড়েছেন’ মর্মে নোট পাঠায় চীনা দূতাবাস।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সূচির আগে চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স সরকারকে জানান- রাষ্ট্রদূত এমন পরিস্থিতিতে আছেন যে তার সঙ্গে যোগাযোগই সম্ভব হচ্ছে না! প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় ঘনিয়ে এলেও প্রায় অভিন্ন বার্তা আসে দূতাবাস থেকে।
সেই সঙ্গে বাড়তি তথ্য হিসাবে ‘তার শ্বশুর অসুস্থ’ বলে জানানো হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, চীনের রাষ্ট্রদূত এবং দূতাবাসের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিদের এমন অদ্ভুত আচরণে বিস্ময় তৈরি হয়। কিন্তু পরবর্তীতে তার বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়া হলে বিষয়টি খোলাসা হয়।
মা মিং কিয়াংয়ের আমলে ঢাকায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং-এর ঐতিহাসিক সফর হয়েছে। রাষ্ট্রদূত হিসাবে এতে তিনি সুনাম কুড়িয়েছেন। তার হাত ধরে বাংলাদেশে চীনের বেশ কিছু কোম্পানি মেগা প্রজেক্টের কাজও পেয়েছে। ঢাকায় থাকাকালে রাষ্ট্রদূত কিয়াং কূটনৈতিক বা রাজনৈতিক সম্পর্কের চেয়ে সুনির্দিষ্টভাবে প্রজেক্ট পাওয়া না পাওয়া বা এর অগ্রগতির খোঁজে ব্যতিব্যস্ত ছিলেন জানিয়ে সরকারের দায়িত্বশীল এক প্রতিনিধি গতকাল মানবজমিনকে বলেন, প্রজেক্ট নিয়ে আলোচনায় প্রায়ই শোনা যেত রাষ্ট্রদূত নাখোশ! তিনি নানা প্রজেক্ট পুশ করতেন, যা চীনের আগের রাষ্ট্রদূতরা কখনই করেন নি। ঢাকায় একটি বিদ্যুৎ কোম্পানির তরফেও রাষ্ট্রদূতকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেয়ার প্রস্তুতি ছিল জানিয়ে ওই প্রতিনিধি বলেন, যেখানে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর প্রধান অতিথি হওয়ার কথা হয়েছিল। রাষ্ট্রদূত না ফেরায় সেই আয়োজনও বাতিল করা হয়।
অন্য এক প্রতিনিধি বলেন, মা মিং কিয়াং সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তাকে ক্লিন হিসাবেই জানতো সরকার। কিন্তু তার বিদায়ের পর ঠিক উল্টো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এ-ও বলা হচ্ছে- রাষ্ট্রদূত বেইজিং থেকে ঢাকায়ই ফিরছিলেন। কিন্তু এয়াপোর্টে আসার আগেই দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের দপ্তর পরিচালিত এন্টি-করাপশন মুভমেন্ট সংশ্লিষ্ট তথ্যানুসন্ধানী দল তাকে আটকে দেয়। চীনা অর্থায়নে বাংলাদেশের বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন প্রকল্পে দেশটির বিদ্যমান আইন লঙ্ঘন ও অন্যায়ভাবে চায়নার নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানকে সুযোগ করে দেয়ার অভিযোগে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
যে কোনো দেশে চীনের অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দরদাতা নির্বাচনে সুনির্দিষ্ট গাইড লাইন মানা বাধ্যতামূলক। বাংলাদেশ ও চীন সরকারের মধ্যে সমঝোতা মতে, এখানে চীনা অর্থায়নের প্রকল্পগুলোতে চীনা দরদাতাদের মধ্যে উন্মুক্ত টেন্ডার হওয়ার কথা। অভিযোগ আছে, রাষ্ট্রদূত এবং সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশে এটি অনেক ক্ষেত্রেই মানা হয়নি। এতে ব্যক্তিগতভাবে অনেকে লাভবান হলেও প্রাথমিক প্রস্তাবনার দ্বিগুণ/তিনগুণ বেশি অর্থে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হয়েছে। সূত্র বলছে রাষ্ট্রদূতকে আসিয়ানের একটি দেশে নিয়োগের প্রস্তাব ছিল। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেটিও আটকে গেছে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, গত ডিসেম্বরে বেইজিং যাওয়া রাষ্ট্রদূত মা মিং কিয়াংয়ের নতুন বছরে ঢাকায় ফিরে আনুষ্ঠানিক বিদায় এবং ব্যবহার্য জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। সে মতেই রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানসহ চীনা দূতাবাসের চাহিদা মতো অ্যাপয়েন্টমেন্ট, বিদ্যুৎ কোম্পানির সংবর্ধনা এবং অন্য প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু না ফেরায় সব কিছুই শেষ মুহূর্তে বাতিল করতে হয়। এমনকি বাহক মারফত তার জরুরি জিনিসপত্রও পাঠাতে হয়েছে। দূতাবাসের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, রাষ্ট্রদূত মা মিং কিয়াং গত ১৪ই ডিসেম্বর আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে এবং ২১শে ডিসেম্বর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বিদায়ী বৈঠক করেন। এরপর থেকে প্রায় দু’মাস ধরে চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হিসাবে চেন উই দায়িত্বপালন করছেন। সর্বশেষ তথ্য মতে, ঢাকায় চীনের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসাবে আগেই নিয়োগ পাওয়া ঝাং জু এখন ঢাকায়। তিনি এরই মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন। প্রেসিডেন্টের কাছে আনুষ্ঠানিক পরিচয়পত্র পেশের আপেক্ষায় রয়েছেন।
কূটনৈতিক সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য মতে, বেইজিংয়ে একটি অনুষ্ঠানে যাওয়ার পর আর ঢাকায় ফেরা হয়নি চীনা দূতের। সেখানেই তাকে আটকে দেয়া হয়। যদিও বেইজিং যাওয়ার আগেই প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে তার বিদায়ী সাক্ষাতের অ্যাপয়েনমেন্ট চাওয়া হয় এবং সে মতে সাক্ষাৎ-সূচিও নির্ধারিত হয়। কিন্তু ততক্ষণে বেইজিংয়ে তিনি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়ে যান। ফলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে দফায় দফায় খোঁজা হলেও ‘রাষ্ট্রদূত বেইজিংয়ে জরুরি কাজে আটকা পড়েছেন’ মর্মে নোট পাঠায় চীনা দূতাবাস।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সূচির আগে চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স সরকারকে জানান- রাষ্ট্রদূত এমন পরিস্থিতিতে আছেন যে তার সঙ্গে যোগাযোগই সম্ভব হচ্ছে না! প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় ঘনিয়ে এলেও প্রায় অভিন্ন বার্তা আসে দূতাবাস থেকে।
সেই সঙ্গে বাড়তি তথ্য হিসাবে ‘তার শ্বশুর অসুস্থ’ বলে জানানো হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, চীনের রাষ্ট্রদূত এবং দূতাবাসের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিদের এমন অদ্ভুত আচরণে বিস্ময় তৈরি হয়। কিন্তু পরবর্তীতে তার বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়া হলে বিষয়টি খোলাসা হয়।
মা মিং কিয়াংয়ের আমলে ঢাকায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং-এর ঐতিহাসিক সফর হয়েছে। রাষ্ট্রদূত হিসাবে এতে তিনি সুনাম কুড়িয়েছেন। তার হাত ধরে বাংলাদেশে চীনের বেশ কিছু কোম্পানি মেগা প্রজেক্টের কাজও পেয়েছে। ঢাকায় থাকাকালে রাষ্ট্রদূত কিয়াং কূটনৈতিক বা রাজনৈতিক সম্পর্কের চেয়ে সুনির্দিষ্টভাবে প্রজেক্ট পাওয়া না পাওয়া বা এর অগ্রগতির খোঁজে ব্যতিব্যস্ত ছিলেন জানিয়ে সরকারের দায়িত্বশীল এক প্রতিনিধি গতকাল মানবজমিনকে বলেন, প্রজেক্ট নিয়ে আলোচনায় প্রায়ই শোনা যেত রাষ্ট্রদূত নাখোশ! তিনি নানা প্রজেক্ট পুশ করতেন, যা চীনের আগের রাষ্ট্রদূতরা কখনই করেন নি। ঢাকায় একটি বিদ্যুৎ কোম্পানির তরফেও রাষ্ট্রদূতকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেয়ার প্রস্তুতি ছিল জানিয়ে ওই প্রতিনিধি বলেন, যেখানে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর প্রধান অতিথি হওয়ার কথা হয়েছিল। রাষ্ট্রদূত না ফেরায় সেই আয়োজনও বাতিল করা হয়।
অন্য এক প্রতিনিধি বলেন, মা মিং কিয়াং সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তাকে ক্লিন হিসাবেই জানতো সরকার। কিন্তু তার বিদায়ের পর ঠিক উল্টো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এ-ও বলা হচ্ছে- রাষ্ট্রদূত বেইজিং থেকে ঢাকায়ই ফিরছিলেন। কিন্তু এয়াপোর্টে আসার আগেই দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের দপ্তর পরিচালিত এন্টি-করাপশন মুভমেন্ট সংশ্লিষ্ট তথ্যানুসন্ধানী দল তাকে আটকে দেয়। চীনা অর্থায়নে বাংলাদেশের বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন প্রকল্পে দেশটির বিদ্যমান আইন লঙ্ঘন ও অন্যায়ভাবে চায়নার নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানকে সুযোগ করে দেয়ার অভিযোগে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
যে কোনো দেশে চীনের অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দরদাতা নির্বাচনে সুনির্দিষ্ট গাইড লাইন মানা বাধ্যতামূলক। বাংলাদেশ ও চীন সরকারের মধ্যে সমঝোতা মতে, এখানে চীনা অর্থায়নের প্রকল্পগুলোতে চীনা দরদাতাদের মধ্যে উন্মুক্ত টেন্ডার হওয়ার কথা। অভিযোগ আছে, রাষ্ট্রদূত এবং সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশে এটি অনেক ক্ষেত্রেই মানা হয়নি। এতে ব্যক্তিগতভাবে অনেকে লাভবান হলেও প্রাথমিক প্রস্তাবনার দ্বিগুণ/তিনগুণ বেশি অর্থে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হয়েছে। সূত্র বলছে রাষ্ট্রদূতকে আসিয়ানের একটি দেশে নিয়োগের প্রস্তাব ছিল। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেটিও আটকে গেছে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, গত ডিসেম্বরে বেইজিং যাওয়া রাষ্ট্রদূত মা মিং কিয়াংয়ের নতুন বছরে ঢাকায় ফিরে আনুষ্ঠানিক বিদায় এবং ব্যবহার্য জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। সে মতেই রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানসহ চীনা দূতাবাসের চাহিদা মতো অ্যাপয়েন্টমেন্ট, বিদ্যুৎ কোম্পানির সংবর্ধনা এবং অন্য প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু না ফেরায় সব কিছুই শেষ মুহূর্তে বাতিল করতে হয়। এমনকি বাহক মারফত তার জরুরি জিনিসপত্রও পাঠাতে হয়েছে। দূতাবাসের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, রাষ্ট্রদূত মা মিং কিয়াং গত ১৪ই ডিসেম্বর আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে এবং ২১শে ডিসেম্বর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বিদায়ী বৈঠক করেন। এরপর থেকে প্রায় দু’মাস ধরে চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হিসাবে চেন উই দায়িত্বপালন করছেন। সর্বশেষ তথ্য মতে, ঢাকায় চীনের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসাবে আগেই নিয়োগ পাওয়া ঝাং জু এখন ঢাকায়। তিনি এরই মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন। প্রেসিডেন্টের কাছে আনুষ্ঠানিক পরিচয়পত্র পেশের আপেক্ষায় রয়েছেন।
No comments