কোটায় পিষ্ট মেধা by মুসা বিন মোহাম্মদ
কোটা
পদ্ধতিতে পিষ্ট মেধাবীরা। কোটার কারণে বঞ্চিত মেধাবীরা হয় বিদেশ পাড়ি
জমাচ্ছেন আর না হয় হতাশায় মুষড়ে পড়ছেন। এক গবেষণায় দেখা গেছে, সরকারি
চাকরিতে প্রায় ২৫৮ ধরনের কোটা রয়েছে। পৃথিবীর কোথাও চিরস্থায়ীভাবে
কোটাপদ্ধতি নেই বলেও ওই গবেষণায় প্রকাশ। মেধাবীদের চাকরিতে আনতে কোটা
পদ্ধতি বাতিল বা সংস্কারের পক্ষে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সাবেক
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান তার এক গবেষণায় কোটা
ব্যবস্থার বিস্তারিত তুলে এনেছেন।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, স্থায়ী কোটা ব্যবস্থা কোথাও নেই। এটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য করা যেতো। সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. সা’দত হুসাইন কোটাব্যবস্থা সংস্কারের পক্ষে মত দিয়েছেন। তিনি বলেন, জেলা কোটা অবিলম্বে তুলে দেয়া উচিত। বিদ্যমান ব্যবস্থা অনুযায়ী কোনো পরীক্ষার মাধ্যমে পিএসসি যদি ১০০ জন লোক নিয়োগ দেয় তাহলে মাত্র ৪৪ জন নিয়োগ পাবেন মেধার ভিত্তিতে। বাকিদের মধ্যে ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা কোটায়, ১০ জন নারী কোটায়, ১০ জন জেলা কোটায়, ৫ জন উপজাতি কোটায় নিয়োগ পাবেন। এক শতাংশ নিয়োগ পাবেন প্রতিবন্ধী কোটায়। প্রতিবন্ধী না পাওয়া গেলে মেধার ভিত্তিতে ওই শূন্য পদ পূরণ করার বিধান রয়েছে। কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ার কারণে বিসিএস-এ অনেক সময়ই পদ খালি থাকছে। ৩৫তম বিসিএস-এ ৩৩৮টি পদ শূন্য ছিল। ৩১তম বিসিএস-এ শূন্য ছিল ৭৭৩টি পদ। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে বর্তমানে কোটা সংস্কারসহ ছয় দফা দাবিতে আন্দোলন চলছে। এ আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারুক হাসান বলেন, আমাদের এই আন্দোলন কোটার বিরুদ্ধে নয়, এটা কোটা সংস্কারের আন্দোলন। বঙ্গবন্ধু যে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থা এর অন্তরায়। আমরা চাই কোটা সংস্কারের মাধ্যমে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়া হোক।
আন্দোলনকারীদের দাবি সরকারি চাকরিতে আড়াই শতাংশ লোকের জন্য রয়েছে ৫৬ শতাংশ কোটা। আর বাকি ৯৮ শতাংশ লোকের জন্য রয়েছে মাত্র ৪৪ শতাংশ। তাদের দাবি এ কোটা ১০ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া যাবে না, পাশাপাশি কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা করা যাবে না। এমনকি সবার জন্য অভিন্ন বয়সসীমা চালু করতে হবে আর কোটায় যোগ্য প্রার্থী না থাকলে শূন্য পদে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। ড. আকবর আলি খান বলেন, পৃথিবীর কোথাও চিরস্থায়ী কোটা ব্যবস্থা করা হয়নি। একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কোটা করা হয়। যেমন বাংলাদেশের পার্লামেন্টে মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। এগুলো চিরস্থায়ী না। দরকার হলে রিভিউ ও চালু রাখা হয়। বাংলাদেশে কোটা ব্যবস্থা ’৪২ ও ’৭২ সালে চালু হয়। প্রায় ৪৫ বছর হয়ে গেছে এখনো কোটা ব্যবস্থার রিভিউ করা হয়নি। কোন্ কোটা দরকার, কী কাজ করছে, কতটুকু পরিবর্তন করা দরকার। এটা করা সরকারের নৈতিক ও সাংবিধানিক দায়িত্ব। তিনি বলেন, পৃথিবীর দ্বিতীয় কোনো দেশে এমন জটিল কোটা ব্যবস্থা নেই। এই জটিলতার কারণে মেধাবী ছাত্ররা পরীক্ষা দিয়েও চাকরি পায় না। এই জটিল কোটা ব্যবস্থার দরুন মেধাবীরা দেশের বাইরে চলে যায়। সরকারি কাজে যায় না। এভাবে চললে সরকার মেধাশূন্য হয়ে পড়বে।
কোটা ব্যবস্থার সংস্কার দাবির যৌক্তিকতা বিষয়ে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, কোটা সংস্কার ন্যায্য দাবি। কোটা উঠিয়ে দেয়ার দাবি করছি না। তবে কোটা পদ্ধতির সংস্কার যৌক্তিক দাবি। কারণ বর্তমান ব্যবস্থায় যারা কোনো কোটার মধ্যে নেই, তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। একই সঙ্গে সংবিধানে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির কথা বলা হলেও সেই অনগ্রসর জনগোষ্ঠী কারা এবং কতদিন ধরে তাদের কোটা দেয়া যেতে পারে তা নতুন করে ভাবতে হবে বলেও মনে করেন তিনি।
এদিকে কোটা সংস্কার দাবির বিরোধিতা করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মেহেদী হাসান বলেন, কোটা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। এ সুবিধা আমাদের রাষ্ট্র দিয়েছে।
কোটা ব্যবস্থা বিষয়ে সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেন, সংবিধানে অনগ্রসরদের জন্য কোটা ব্যবস্থার কথা উল্লেখ আছে। শিশু, নারী ও ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠীর জন্য রাষ্ট্রকে এ কোটা সুবিধা দেয়ার কথা সুস্পষ্টভাবে বলা আছে। সংবিধানে জেলাভিত্তিক কোনো কোটার উল্লেখ নেই বলেও জানান তিনি।
কোটা সংস্কারের ৫ দফা দাবিতে আন্দোলনকারীরা বলেন, ২৮ থেকে ৩১ ও ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় কোটায় সংরক্ষিত পদসমূহ পূরণ না হওয়ায় মোট ৩৫০০ আসন ফাঁকা পড়ে থাকে। এই সব শূন্য আসনে দেশে প্রচণ্ড বেকার সমস্যা থাকার পরও সাধারণ বেকার শিক্ষার্থীদের নিয়োগ দেয়া হয়নি। এছাড়াও বিপুল বেকার সাধারণ চাকরি প্রার্থীদের কথা বিবেচনা না করে কোটায় বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা নেয়ায় আরো বেশি হতাশা বেড়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। দীর্ঘদিন এই কোটার বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তেমন সোচ্চার না হলেও ইদানীং বেশ জোরালো হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ঘোষণা করছে একের পর এক কর্মসূচি।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, স্থায়ী কোটা ব্যবস্থা কোথাও নেই। এটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য করা যেতো। সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. সা’দত হুসাইন কোটাব্যবস্থা সংস্কারের পক্ষে মত দিয়েছেন। তিনি বলেন, জেলা কোটা অবিলম্বে তুলে দেয়া উচিত। বিদ্যমান ব্যবস্থা অনুযায়ী কোনো পরীক্ষার মাধ্যমে পিএসসি যদি ১০০ জন লোক নিয়োগ দেয় তাহলে মাত্র ৪৪ জন নিয়োগ পাবেন মেধার ভিত্তিতে। বাকিদের মধ্যে ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা কোটায়, ১০ জন নারী কোটায়, ১০ জন জেলা কোটায়, ৫ জন উপজাতি কোটায় নিয়োগ পাবেন। এক শতাংশ নিয়োগ পাবেন প্রতিবন্ধী কোটায়। প্রতিবন্ধী না পাওয়া গেলে মেধার ভিত্তিতে ওই শূন্য পদ পূরণ করার বিধান রয়েছে। কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ার কারণে বিসিএস-এ অনেক সময়ই পদ খালি থাকছে। ৩৫তম বিসিএস-এ ৩৩৮টি পদ শূন্য ছিল। ৩১তম বিসিএস-এ শূন্য ছিল ৭৭৩টি পদ। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে বর্তমানে কোটা সংস্কারসহ ছয় দফা দাবিতে আন্দোলন চলছে। এ আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারুক হাসান বলেন, আমাদের এই আন্দোলন কোটার বিরুদ্ধে নয়, এটা কোটা সংস্কারের আন্দোলন। বঙ্গবন্ধু যে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থা এর অন্তরায়। আমরা চাই কোটা সংস্কারের মাধ্যমে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়া হোক।
আন্দোলনকারীদের দাবি সরকারি চাকরিতে আড়াই শতাংশ লোকের জন্য রয়েছে ৫৬ শতাংশ কোটা। আর বাকি ৯৮ শতাংশ লোকের জন্য রয়েছে মাত্র ৪৪ শতাংশ। তাদের দাবি এ কোটা ১০ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া যাবে না, পাশাপাশি কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা করা যাবে না। এমনকি সবার জন্য অভিন্ন বয়সসীমা চালু করতে হবে আর কোটায় যোগ্য প্রার্থী না থাকলে শূন্য পদে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। ড. আকবর আলি খান বলেন, পৃথিবীর কোথাও চিরস্থায়ী কোটা ব্যবস্থা করা হয়নি। একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কোটা করা হয়। যেমন বাংলাদেশের পার্লামেন্টে মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। এগুলো চিরস্থায়ী না। দরকার হলে রিভিউ ও চালু রাখা হয়। বাংলাদেশে কোটা ব্যবস্থা ’৪২ ও ’৭২ সালে চালু হয়। প্রায় ৪৫ বছর হয়ে গেছে এখনো কোটা ব্যবস্থার রিভিউ করা হয়নি। কোন্ কোটা দরকার, কী কাজ করছে, কতটুকু পরিবর্তন করা দরকার। এটা করা সরকারের নৈতিক ও সাংবিধানিক দায়িত্ব। তিনি বলেন, পৃথিবীর দ্বিতীয় কোনো দেশে এমন জটিল কোটা ব্যবস্থা নেই। এই জটিলতার কারণে মেধাবী ছাত্ররা পরীক্ষা দিয়েও চাকরি পায় না। এই জটিল কোটা ব্যবস্থার দরুন মেধাবীরা দেশের বাইরে চলে যায়। সরকারি কাজে যায় না। এভাবে চললে সরকার মেধাশূন্য হয়ে পড়বে।
কোটা ব্যবস্থার সংস্কার দাবির যৌক্তিকতা বিষয়ে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, কোটা সংস্কার ন্যায্য দাবি। কোটা উঠিয়ে দেয়ার দাবি করছি না। তবে কোটা পদ্ধতির সংস্কার যৌক্তিক দাবি। কারণ বর্তমান ব্যবস্থায় যারা কোনো কোটার মধ্যে নেই, তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। একই সঙ্গে সংবিধানে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির কথা বলা হলেও সেই অনগ্রসর জনগোষ্ঠী কারা এবং কতদিন ধরে তাদের কোটা দেয়া যেতে পারে তা নতুন করে ভাবতে হবে বলেও মনে করেন তিনি।
এদিকে কোটা সংস্কার দাবির বিরোধিতা করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মেহেদী হাসান বলেন, কোটা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। এ সুবিধা আমাদের রাষ্ট্র দিয়েছে।
কোটা ব্যবস্থা বিষয়ে সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেন, সংবিধানে অনগ্রসরদের জন্য কোটা ব্যবস্থার কথা উল্লেখ আছে। শিশু, নারী ও ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠীর জন্য রাষ্ট্রকে এ কোটা সুবিধা দেয়ার কথা সুস্পষ্টভাবে বলা আছে। সংবিধানে জেলাভিত্তিক কোনো কোটার উল্লেখ নেই বলেও জানান তিনি।
কোটা সংস্কারের ৫ দফা দাবিতে আন্দোলনকারীরা বলেন, ২৮ থেকে ৩১ ও ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় কোটায় সংরক্ষিত পদসমূহ পূরণ না হওয়ায় মোট ৩৫০০ আসন ফাঁকা পড়ে থাকে। এই সব শূন্য আসনে দেশে প্রচণ্ড বেকার সমস্যা থাকার পরও সাধারণ বেকার শিক্ষার্থীদের নিয়োগ দেয়া হয়নি। এছাড়াও বিপুল বেকার সাধারণ চাকরি প্রার্থীদের কথা বিবেচনা না করে কোটায় বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা নেয়ায় আরো বেশি হতাশা বেড়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। দীর্ঘদিন এই কোটার বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তেমন সোচ্চার না হলেও ইদানীং বেশ জোরালো হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ঘোষণা করছে একের পর এক কর্মসূচি।
No comments