পরামর্শকের পকেটেই ৬৭ কোটি!
দাতাদের
বেঁধে দেয়া শর্তের কারণে ঋণ ও অনুদানের একটি বড় অংশ যে তাদের নিজেদের
পকেটেই চলে যায়, তার একটি উদাহরণ গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত ‘পরামর্শকের
পকেটে ৬৭ কোটি টাকা’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি। এতে জানা যায়, গ্রামীণ ও
নগরাঞ্চলের, বিশেষত উপকূলীয় অঞ্চলের জনগণের জীবনের মানোন্নয়ন,
দারিদ্র্যবিমোচন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে সুরক্ষার জন্য সরকার,
গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড (জিসিএফ) ও আন্তর্জাতিক সংস্থা কেএফডব্লিউর যৌথ
অর্থায়নে ‘জলবায়ু সহিষ্ণু অবকাঠামো প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ’ নামের প্রকল্পের
প্রস্তাব করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) মাধ্যমে
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৮৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে
সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ২৪৮ কোটি টাকা এবং জিসিএফ ও কেএফডব্লিউর অনুদান
থেকে ৪৪০ কোটি টাকা ব্যয় করার কথা। অর্থের ৬৭ কোটি ৪ লাখ টাকা ব্যয় হবে
পরামর্শকের পেছনে।
এ প্রেক্ষাপটে প্রকল্পটির বাস্তবায়নে দেশি ও আন্তর্জাতিক
পরামর্শকের যৌক্তিকতা এবং এ খাতে ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা
কমিশন। আমরাও মনে করি, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে আদৌ পরামর্শক নিয়োগের প্রয়োজন
আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা উচিত। প্রকল্পের অর্থের একটি বড় অংশ যদি
অপ্রয়োজনীয় খাতে চলে যায়, তাহলে স্বভাবতই প্রকল্পটির যথাযথ বাস্তবায়নে এর
প্রভাব পড়বে। এতে প্রকল্পের উদ্দেশ্য হবে ব্যাহত। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত
কারণে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলো রয়েছে ঝুঁকিতে। এসব এলাকায় জলবায়ু সহিষ্ণু
অবকাঠামো নির্মাণ শুধু প্রয়োজন নয়, জরুরি। জলবায়ু সহনশীল গ্রামীণ অবকাঠামো
বাস্তবায়িত হলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলবেষ্টিত গ্রামীণ জনপদের মানুষ
জলবায়ু সহিষ্ণু মানের টেকসই যোগাযোগ ব্যবস্থার আওতায় আসবে। এতে ব্যাপক
জনগোষ্ঠী উপকৃত হবে এবং এসব এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড
গতিশীল হবে। কাজেই এ প্রকল্পের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। সে
ক্ষেত্রে প্রকল্পের অর্থের অপচয় ও নয়ছয় রোধ করতে হবে কঠোরভাবে। এ ব্যাপারে
সরকারের বিশেষ দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।
No comments