করবিনের বক্তব্যে আরও চাপে থেরেসা
ইউরোপীয়
ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ (ব্রেক্সিট নামে পরিচিত) কার্যকর করা
নিয়ে এমনিতে নানামুখী চাপে আছেন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। সোমবার বিরোধী দল
লেবার পার্টির নেতা জেরিমি করবিন ঘোষিত বিকল্প ব্রেক্সিট পরিকল্পনা সেই
চাপ আরও বাড়িয়ে দিল। করবিন বলেন, ‘কাস্টমস ইউনিয়ন’-এর সুবিধা বজায় রেখেই
ব্রেক্সিট কার্যকর করতে হবে। এ জন্য ইইউ-যুক্তরাজ্যের নতুন একটি ‘কাস্টমস
ইউনিয়ন’ চায় লেবার পার্টি। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে আগেই ঘোষণা
দিয়েছেন যে যুক্তরাজ্য কাস্টমস ইউনিয়ন ত্যাগ করবে। সরকার ও বিরোধী দলের
পরস্পরবিরোধী অবস্থানের কারণে জটিল হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি। মূলত সংসদে
ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় করবিনের ভাষণ
এতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কাস্টমস ইউনিয়ন প্রশ্নে সরকারের অবস্থান নিয়ে
ক্ষমতাসীন দলের ব্রেক্সিট-বিরোধী এমপিদের অসন্তোষ আছে। এসব বিরোধীরা লেবার
পার্টির অবস্থানকে সমর্থন দিলে থেরেসার জন্য ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন অসম্ভব
হয়ে পড়বে। কারণ, ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের বিষয়টি কেবল যুক্তরাজ্য সরকার ও
ইইউর মধ্যে সমঝোতার বিষয় নয়।
এ ক্ষেত্রে পার্লামেন্টের ভূমিকা অনেক।
পার্লামেন্টে পাস হলেই কেবল ব্রেক্সিট চুক্তি কার্যকর হবে। কাস্টমস
ইউনিয়নের মাধ্যমে জোটভুক্ত দেশগুলো নিজেদের মধ্যে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য করে। এ
ছাড়া জোটবহির্ভূত দেশের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে একই শুল্কনীতি মেনে চলে।
যুক্তরাজ্যের অংশ নর্দান আয়ারল্যান্ড এবং ইইউর সদস্য স্বাধীন
আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার বিদ্যমান শান্তিচুক্তি টিকিয়ে রাখতে কাস্টমস ইউনিয়নে
সদস্যপদ ধরে রাখা যুক্তরাজ্যের জন্য জরুরি। ব্রেক্সিট বিষয়ে করবিন এতটা
খোলাসা করে আগে কথা বলেননি। এখন হঠাৎ ব্রেক্সিট বিষয়ে আলাদা করে করবিনের
ভাষণ নানা কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। ক্ষমতাসীনদের আরও বিভক্ত ও দুর্বল করতে
করবিন এই কৌশল নিয়েছেন বলে কারও কারও ধারণা। ইইউ অভিবাসন, সিঙ্গেল
মার্কেটের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো নিয়ে কিছুই বলেননি করবিন। নতুন
কাস্টমস ইউনিয়ন কতটা বাস্তবসম্মত, সেটিরও ব্যাখ্যা নেই তাঁর ভাষণে। তাই
রাজনীতি বিশ্লেষকেরা বলছেন, ব্রেক্সিট বিষয়ে লেবার পার্টির অবস্থান নিয়ে
আরও অনেক কিছু জানার রয়ে গেছে। কাস্টমস ইউনিয়ন প্রশ্নে করবিনের অবস্থানকে
‘অবাস্তব’ আখ্যা দিয়েছেন ব্রেক্সিট-বিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড ডেভিস। এটিকে সাপের
তেল বিক্রির সঙ্গে তুলনা করেন তিনি।
No comments