সেনারা যখন ক্ষমতা নেয়, গণতন্ত্রের মৃত্যু ঘটে by পিটার জোনস
জিম্বাবুয়ে
চালাচ্ছে সেনাবাহিনী। যতদিন বা যতক্ষণ তারা দেশ নিয়ন্ত্রণ করবে ততদিন
কার্যকর গণতন্ত্র টিকে থাকার কোনো আশাই করা যায় না, যদিও ৩৭ বছর পরে বিদায়
দেয়া হয়েছে অত্যাচারী রবার্ট মুগাবেকে। তবে এক্ষেত্রে কিছুটা স্বস্তি আছে।
তা হলো, জিম্বাবুয়ের সেনাবাহিনী দৃশ্যত ঐক্যবদ্ধ আছে।
যখন সম্পদশালীরা প্রাইভেট আর্মির সমর্থনে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তাদের আকাঙ্খাকে আরোপ করেছিল তখন রোমান প্রজাতন্ত্রের পতন দৃষ্টিগোচর হয়। এ প্রক্রিয়ায় ৮৭ খিস্ট্র পূর্বাব্দে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে রোম আক্রমণ করেছিলেন সুলা।
তারপর ৮৩ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে নিজেকে স্বৈরাচারে পরিণত করেন। একবার যখন এই নজির স্থাপন হয়ে গেল তখন তা অন্যদের চেষ্টা করার জন্য ক্ষেত্রে উন্মুক্ত করে দিলো। ইতিহাসের নির্মম সত্য যে, সুলা’র গুন্ডাবাহিনীর হাতে ‘গুম’ হয়েছিলেন এমন একজন মানুষ হলেন জুলিয়াস সিজার। ওই সময়ে সুলা সতর্ক করেছিলেন যে, জুলিয়াস সিজার তার জন্য বড় একটি সমস্যার কারণ হতে পারেন। ৪৯ খিষ্ট্র পূর্বাব্দে গৃহযুদ্ধে পম্পেইকে পরাজিত করেন সিজার এবং নিজেকে স্বৈরাচারে পরিণত হরেন। এর পরিণাম হিসেবে ৪৪ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে হত্যা করা হয় জুলিয়াস সিজারকে। আরো গৃহযুদ্ধ দেখা দেয়। উত্থান ঘটে সিজারের উত্তরাধিকারী অক্টাভিয়ানের। তিনি প্রথম রোমান স¤্রাট অগাস্টাস (২৭ খ্রিস্ট পূর্বাব্দ)।
অগাস্টাস ক্ষমতায় এসে যেসব কাজে হাত দেন তার মধ্যে প্রথম চোখ পড়ে সেনাবাহিনীর দিকে। তিনি শৃংখলা ফেরানোর চেষ্টা করেন। সেনাবাহিনীতে পেশাদারিত্ব আনার চেষ্টা করেন তার নিজস্ব কমান্ডের অধীনে। সেনাদেরকে যথাযথ ক্যারিয়ার তৈরি করাতে চেষ্টা করেন। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়েছিল কি? উত্তর হলো ‘না’। তাহলে অগাস্টাস যখন মারা যাবেন তখন কি ঘটবে? ক্ষমতায় তার উত্তরাধিকারীকে কি মেনে নেবে সেনাবাহিনী?
দেশটির উত্তরাঞ্চলের সেনাদের একটি অংশ সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য বিদ্রোহ করে বসে। তবে তাদেরকে দমন করা হয়। সতর্ক সংকেতটা কিন্তু এখানেই। যখন মানসিক বিকারগ্রস্ত ক্যালিগুলা’কে হত্যা করা হলো তখন ক্ষমতার কোনো উত্তরাধিকারি ছিল না। সিনেটে অস্বস্তি দেখা দিল। তার প্রাইটোরিয়ান গার্ড কোনো জটিলতায় না গিয়ে ক্লাউডিয়াসকে নিয়োগ করলো। এতে কেউই আপত্তি তুললো না।
এরপরেই আসতে থাকে প্রতিকূলতা। ৬৮ খিস্ট্রাব্দে আত্মহত্যা করেন নিরো। এবার তিনিও কোনো উত্তরসূরি রেখে যান নি। ফলে ক্ষমতার চেয়ারে চোখ পড়ে রোমান আর্মির। তাদের কমান্ডিং জেনারেলরা দেখতে পেল তাদের সামনে সুযোগ এসেছে।
৬৯ খ্রিস্টাব্দে সিরিজ গৃহযুদ্ধ চলতে লাগলো। এ সময়ে রোমানরা তিনজন স¤্রাট সিংহাসনে বসালো। কিন্তু ক্ষমতায় যাওয়ার পর পরই তাদেরকে সরিয়ে দেয়া হলো। এরপর ক্ষমতা নেয়া হলো ভেসপাসিয়ানকে।
যখন সিংহাসনের আড়ালে ক্ষমতা থাকে সেনাবাহিনীর হাতে, তখন কোনো একটি শাসনযন্ত্র সব সময়ই এমন সমস্যায় পড়তে থাকে। সম্ভবত মুগাবে পদত্যাগে অস্বীকৃতি জানাচ্ছিলেন এ কারণে যে, তিনি চাইছিলেন সেনাবাহিনী বিভক্ত হয়ে পড়–ক এবং দেশে গৃহযুদ্ধ শুরু হোক।
কেন তিনি তা চাইবেন না? তিনি তো অত্যাচারী। আফ্রিকার বাকি অঞ্চলগুলোর দিকে তাকান। এক্ষেত্রে জিম্বাবুয়ে ও প্রাচীন রোমের মধ্যে এক ধরণের সমতা রয়েছে।
(বৃটেনের অনলাইন দ্য স্পেক্ট্রা’য় প্রকাশিত লেখার অনুবাদ)
যখন সম্পদশালীরা প্রাইভেট আর্মির সমর্থনে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তাদের আকাঙ্খাকে আরোপ করেছিল তখন রোমান প্রজাতন্ত্রের পতন দৃষ্টিগোচর হয়। এ প্রক্রিয়ায় ৮৭ খিস্ট্র পূর্বাব্দে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে রোম আক্রমণ করেছিলেন সুলা।
তারপর ৮৩ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে নিজেকে স্বৈরাচারে পরিণত করেন। একবার যখন এই নজির স্থাপন হয়ে গেল তখন তা অন্যদের চেষ্টা করার জন্য ক্ষেত্রে উন্মুক্ত করে দিলো। ইতিহাসের নির্মম সত্য যে, সুলা’র গুন্ডাবাহিনীর হাতে ‘গুম’ হয়েছিলেন এমন একজন মানুষ হলেন জুলিয়াস সিজার। ওই সময়ে সুলা সতর্ক করেছিলেন যে, জুলিয়াস সিজার তার জন্য বড় একটি সমস্যার কারণ হতে পারেন। ৪৯ খিষ্ট্র পূর্বাব্দে গৃহযুদ্ধে পম্পেইকে পরাজিত করেন সিজার এবং নিজেকে স্বৈরাচারে পরিণত হরেন। এর পরিণাম হিসেবে ৪৪ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে হত্যা করা হয় জুলিয়াস সিজারকে। আরো গৃহযুদ্ধ দেখা দেয়। উত্থান ঘটে সিজারের উত্তরাধিকারী অক্টাভিয়ানের। তিনি প্রথম রোমান স¤্রাট অগাস্টাস (২৭ খ্রিস্ট পূর্বাব্দ)।
অগাস্টাস ক্ষমতায় এসে যেসব কাজে হাত দেন তার মধ্যে প্রথম চোখ পড়ে সেনাবাহিনীর দিকে। তিনি শৃংখলা ফেরানোর চেষ্টা করেন। সেনাবাহিনীতে পেশাদারিত্ব আনার চেষ্টা করেন তার নিজস্ব কমান্ডের অধীনে। সেনাদেরকে যথাযথ ক্যারিয়ার তৈরি করাতে চেষ্টা করেন। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়েছিল কি? উত্তর হলো ‘না’। তাহলে অগাস্টাস যখন মারা যাবেন তখন কি ঘটবে? ক্ষমতায় তার উত্তরাধিকারীকে কি মেনে নেবে সেনাবাহিনী?
দেশটির উত্তরাঞ্চলের সেনাদের একটি অংশ সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য বিদ্রোহ করে বসে। তবে তাদেরকে দমন করা হয়। সতর্ক সংকেতটা কিন্তু এখানেই। যখন মানসিক বিকারগ্রস্ত ক্যালিগুলা’কে হত্যা করা হলো তখন ক্ষমতার কোনো উত্তরাধিকারি ছিল না। সিনেটে অস্বস্তি দেখা দিল। তার প্রাইটোরিয়ান গার্ড কোনো জটিলতায় না গিয়ে ক্লাউডিয়াসকে নিয়োগ করলো। এতে কেউই আপত্তি তুললো না।
এরপরেই আসতে থাকে প্রতিকূলতা। ৬৮ খিস্ট্রাব্দে আত্মহত্যা করেন নিরো। এবার তিনিও কোনো উত্তরসূরি রেখে যান নি। ফলে ক্ষমতার চেয়ারে চোখ পড়ে রোমান আর্মির। তাদের কমান্ডিং জেনারেলরা দেখতে পেল তাদের সামনে সুযোগ এসেছে।
৬৯ খ্রিস্টাব্দে সিরিজ গৃহযুদ্ধ চলতে লাগলো। এ সময়ে রোমানরা তিনজন স¤্রাট সিংহাসনে বসালো। কিন্তু ক্ষমতায় যাওয়ার পর পরই তাদেরকে সরিয়ে দেয়া হলো। এরপর ক্ষমতা নেয়া হলো ভেসপাসিয়ানকে।
যখন সিংহাসনের আড়ালে ক্ষমতা থাকে সেনাবাহিনীর হাতে, তখন কোনো একটি শাসনযন্ত্র সব সময়ই এমন সমস্যায় পড়তে থাকে। সম্ভবত মুগাবে পদত্যাগে অস্বীকৃতি জানাচ্ছিলেন এ কারণে যে, তিনি চাইছিলেন সেনাবাহিনী বিভক্ত হয়ে পড়–ক এবং দেশে গৃহযুদ্ধ শুরু হোক।
কেন তিনি তা চাইবেন না? তিনি তো অত্যাচারী। আফ্রিকার বাকি অঞ্চলগুলোর দিকে তাকান। এক্ষেত্রে জিম্বাবুয়ে ও প্রাচীন রোমের মধ্যে এক ধরণের সমতা রয়েছে।
(বৃটেনের অনলাইন দ্য স্পেক্ট্রা’য় প্রকাশিত লেখার অনুবাদ)
No comments