ইসলামী ব্যাংকের কার্যক্রম ঢেলে সাজানো সম্ভব নয়: অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, সরকারের শেয়ারের অংশ সামান্য পরিমাণ থাকায় ইসলামী ব্যাংকের কার্যক্রমকে ঢেলে সাজানো সম্ভব নয়। জাতীয় পার্টির সেলিম উদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান। এ বিষয়ে সেলিম উদ্দিনের প্রশ্ন ছিল, ইসলামী ব্যাংককে ঢেলে সাজানোর কোনো পদক্ষেপ বা কর্মসূচি সরকার গ্রহণ করেছে কি না?
এর জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, সরকারের শেয়ারের অংশ সামান্য পরিমাণ থাকায় ইসলামী ব্যাংকের কার্যক্রমকে ঢেলে সাজানো সম্ভব নয়। ইসলামী ব্যাংক বেসরকারি খাতের একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি। ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডাররা কোম্পানিটির মালিক। শেয়ারহোল্ডারদের দ্বারা নির্বাচিত পরিচালকেরা তাঁদের পক্ষে ব্যাংকের স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা আনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে থাকেন। ইসলামী ব্যাংকে সরকারের শেয়ারের পরিমাণ মাত্র শূন্য দশমিক শূন্য শূন্য ১৩ শতাংশ (০.০০১৩%)। তাই ঢেলে সাজানোর জন্য সরকারের পক্ষে কোনো বিশেষ পদক্ষেপ বা কর্মসূচি নেওয়া সম্ভব নয়। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল রোববার বিকেল পাঁচটার পর সংসদের অধিবেশন শুরু হলে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়। সরকারি দলের নুরুন্নবী চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ট্রানজিট সুবিধায় কোনো দেশকে পণ্য পরিবহনের সুযোগ এখনো দেওয়া হয়নি। কোনো দেশকে ট্রানজিট সুবিধা দেওয়া না হলেও বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেডের (পিআইডব্লিউটিটি) আওতায় ট্রানশিপমেন্ট সুবিধায় ভারত থেকে পণ্য পরিবাহিত হয়। আ ফ ম বাহাউদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ব্যাংকের মাধ্যমে ১৬ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকার রেমিট্যান্স এসেছে। এই অঙ্ক আগের বছরের তুলনায় ২ হাজার ১৩৬ কোটি টাকা কম। মুঠোফোন অপারেটর কোম্পানিগুলো থেকে সরকার গত ১৬ বছরে ২৪ হাজার ৫৯৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করেছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। নুরুন্নবী চৌধুরীর এ-সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, মুঠোফোন অপারেটরদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১১ হাজার ৩৬০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা রাজস্ব এসেছে গ্রামীণফোন থেকে।
সবচেয়ে কম ৪৬০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা এসেছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন টেলিটক থেকে। এ ছাড়া রবি আজিয়াটা থেকে ৫ হাজার ২৭৩ কোটি ৭৩ লাখ, বাংলালিংক থেকে ৫ হাজার ২০৮ কোটি ৩ লাখ, এয়ারটেলের কাছ থেকে ১ হাজার ৫৯৫ কোটি ৬৯ লাখ এবং সিটিসেল থেকে ৬৯৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা রাজস্ব এসেছে। চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মুঠোফোন কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ৫৮২ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ধার্য করা হয়েছে। হোসনে আরা লুৎফার প্রশ্নের জবাবে তারানা হালিম জানান, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ সাধন ও সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় বর্তমানে দেশের প্রায় ৯৯ শতাংশ জনগোষ্ঠী এবং ৯৭ শতাংশ ভৌগোলিক এলাকায় মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক বিস্তার করেছে। বর্তমানে দেশে প্রায় ১২ কোটি ৮৩ লাখ সক্রিয় মোবাইল ফোন গ্রাহক রয়েছে, যা দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭০ শতাংশ। পার্বত্য অঞ্চল ও দ্বীপসহ দেশের যেসব এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই, সেখানে অপারেটরদের টাওয়ার শেয়ার করে নেটওয়ার্ক বিস্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে তারানা হালিম জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত দেশে ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা ৬ কোটি ৬৭ লাখ। আয়েন উদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বর্তমানে মোবাইল ফোনে সর্বনিম্ন কলরেট মিনিটে ২৫ পয়সা এবং সর্বোচ্চ ২ টাকা। পাশের দেশের তুলনায় এই রেট কম বলে বিবেচিত। ভবিষ্যতে প্রয়োজনে কলরেট পুনর্নির্ধারণ করা হবে।
No comments