দখলে দখলে সড়ক উজাড়
সময়মতো কাজ শুরু না হওয়ায় কচুক্ষেত থেকে মিরপুর আনসার ক্যাম্প পর্যন্ত ১০০ ফুট সড়কের নির্ধারিত জায়গার অনেকাংশ দখল হয়ে গেছে। সেখানে উঠেছে অনেক ঘরবাড়ি-দোকানপাট। আবার কিছু ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গা রয়েছে, যেখানে বাড়িঘর করবেন কি না, তা নিয়ে মালিকেরা দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন। রাস্তার প্রয়োজনে এসব জায়গা অধিগ্রহণ হতে পারে। কচুক্ষেত পুলপাড়ে তামান্না কমপ্লেক্সের বিপরীত দিকে সড়কটির পূর্ব প্রান্ত। পশ্চিম দিকে গেছে শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া হয়ে মিরপুর ১ নম্বরে আনসার ক্যাম্প পর্যন্ত। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) সূত্র বলেছে, ২০১১ সালে সিটি করপোরেশন দুই ভাগ হওয়ার অনেক আগে থেকেই সড়কটি হওয়ার কথা। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে তা বারবার পিছিয়ে যায়। ২০১৫ সালে ডিএনসিসি নির্বাচনের সময় এলাকাবাসীর দাবি ছিল, দখল অংশ উদ্ধার করে ১০০ ফুট চওড়া করে সড়কটি নির্মাণ করা হোক। ওই বছরই সড়ক নির্মাণের প্রস্তাবটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় গেলেও তা স্থগিত করা হয়। এর কারণ হিসেবে বলা হয়, জনস্বার্থ ও এলাকার যাবতীয় বিষয়ে সমীক্ষা ও জোরালো তথ্য ছাড়াই এটি উপস্থাপন করা হয়েছিল। ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ কুদরত উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, এবার সঠিক ও তথ্যবহুল সমীক্ষার জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বুয়েট মাটি পরীক্ষাসহ যাবতীয় বিষয় খতিয়ে দেখছে।
তিনি বলেন, সময় লাগলেও ভবিষ্যতে এই সড়ক হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এটি আবারও একনেকে পাঠানো হবে। অনুমোদন হলেই পুরোদমে কাজ শুরু হবে। অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আরও বলেন, শেওড়াপাড়া পর্যন্ত ১০০ ফুট সড়ক হওয়ার পর পশ্চিম প্রান্তে ওভারপাস করতে হতে পারে। এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এখন যে সড়কটি দৃশ্যমান সেখানে কোথাও ২০ ফুট, কোথাও তার খানিকটা বেশি জায়গা আছে। আবার কোথাও মাঠের মতো খালি জায়গা। পড়ে থাকার কারণে অস্থায়ী স্থাপনা গড়ে উঠেছে। কচুক্ষেত প্রান্তে তামান্না কমপ্লেক্স থেকে শেওড়াপাড়া পর্যন্ত রাস্তাটি অনেক স্থানেই সংকুচিত। কাফরুল, ইব্রাহিমপুর বাজার এলাকায় বিশাল খালি জায়গা দখল হয়ে গেছে। সড়কের কিছু অংশের পাশে মূল ভবনের সামনে টেনে দেওয়া হয়েছে টিনের ছাউনি। গড়ে উঠেছে অস্থায়ী স্থাপনা। মনিহারি দোকান থেকে শুরু করে মোবাইল ফোনের সামগ্রী, লন্ড্রি থেকে সেলুন—সবই রয়েছে। আবার অনেক স্থানে এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে। তবে সেগুলোর বেশির ভাগই ব্যক্তিমালিকদের জায়গা বলে জানা যায়। একাধিক মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তাঁদের নিজস্ব জায়গাতেও পাকা বহুতল ভবন করতে পারছেন না। কারণ, অনেক দিন থেকেই শুনতে পাচ্ছেন, এখানে ১০০ ফুট সড়ক হবে। ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ কুদরত উল্লাহ বলেন, ১০০ ফুট সড়কের জন্য অবশ্যই ব্যক্তিমালিকানাধীন কিছু জায়গা অধিগ্রহণ করতে হবে। জেলা প্রশাসন ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করলে সে অনুযায়ীই জায়গার মালিকদের এ বাবদ অর্থ দেওয়া হবে।
No comments