ট্রাম্পের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হচ্ছেন ‘ম্যাড ডগ’ ম্যাটিস
‘ভদ্র থাকুন। পেশাদার থাকুন। তবে যার সঙ্গেই আপনাদের মুখোমুখি হতে হোক না কেন, তাঁকে হত্যা করার জন্য পরিকল্পনা মাথায় রাখবেন।’ ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন মেরিন সেনাদের উদ্দেশে এ কথাগুলো বলেছিলেন ‘ম্যাড ডগ’ (পাগলা কুকুর) হিসেবে পরিচিত জেনারেল জেমস ম্যাটিস। যুদ্ধপ্রীতির জন্য তিনি ‘যুদ্ধবাজ সন্ন্যাসী’ হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছিলেন। তাঁকেই নিজ মন্ত্রিসভায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য মনোনীত করেছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যে ‘ইউএসএ থ্যাংক ইউ ট্যুর ২০১৬’-এর অনুষ্ঠানে জেনারেল জেমস ম্যাটিসকে মনোনয়নের কথা ঘোষণা করেন ট্রাম্প। তাঁকে ‘সবচেয়ে সেরা’ বলে মন্তব্য করে ট্রাম্প বলেন, ম্যাটিস একজন খাঁটি জেনারেল। ওহাইওর সিনসিনাটি এলাকায় থ্যাংক ইউ ট্যুরের অনুষ্ঠানে সমর্থকদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, ‘“ম্যাড ডগ” ম্যাটিসকে আমরা প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিতে যাচ্ছি।’ বিবিসি জানায়, ম্যাটিস ১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধ ও ২০০১ সালে আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা অভিযানের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। ২০১৩ সালে তিনি অবসরে যান।
তাঁর বয়স এখন ৬৬ বছর। নৌবাহিনীর জেনারেল ম্যাটিস যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান ছিলেন। তবে তাঁর নিয়োগ খুব সহজে হবে বলে মনে করার কারণ নেই। কারণ ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্ত সিনেটে পাস হতে হবে। এ ছাড়া সামরিক বাহিনী থেকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হওয়া নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আইনি বিধিনিষেধ আছে। সেটিও তুলে নিতে হবে। ডেমোক্র্যাট সিনেটরা এর বিরোধিতা করবেন বলে মনে করা হচ্ছে। অবশ্য সিনেটে ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠ। ডেমোক্র্যাট সিনেটর ক্রিস্টেন গিলিব্র্যান্ড এক টুইটার বার্তায় ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বেসামরিক ব্যক্তি সামরিক বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করে—এটা মার্কিন গণতন্ত্রের মূলনীতি। ওবামা প্রশাসনের ঘোরতর সমালোচক ম্যাটিস। ওবামার মধ্যপ্রাচ্য নীতি, বিশেষ করে ইরান ইস্যু নিয়ে প্রকাশ্যে তিনি সমালোচনা করেন। মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য ইরানকে তিনি সবচেয়ে বড় হুমকি বলে মনে করেন। ম্যাটিস ২০১০ সালে ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড পরিচালনার দায়িত্ব পান। এই পদে আসীন ব্যক্তির দায়িত্ব হলো মধ্যপ্রাচ্যে নিয়োজিত সব মার্কিন বাহিনীকে পরিচালনা করা। সম্প্রতি জেমস ম্যাটিস ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। তখন তাঁকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বানানোর ব্যাপারে আলোচনা শুরু হয়। অবশেষে তা সত্যি হলো।
No comments