রাখাইনে গিয়ে বৌদ্ধদের বিক্ষোভের মুখে কফি আনান
জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের গাড়িবহর গতকাল মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিত্তি বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে আসার পর স্থানীয় বৌদ্ধদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে। রয়টার্স |
জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বিক্ষোভের মুখে গতকাল শুক্রবার মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইন সফর করেছেন। সেখানে কফি আনানের নেতৃত্বে একটি দল সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের অবস্থা যাচাই করে দেখে। কফি আনান যে কমিশনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাতে মিয়ানমারের ছয়জন ও বিদেশি তিন সদস্য রয়েছেন। রাখাইনের মুখ্যমন্ত্রী নি পু গতকাল তাঁদের বিমানবন্দরে স্বাগত জানালেও বিমানবন্দরের বাইরে প্রায় ১০০ জন বিক্ষোভকারী অবস্থান নেন। তাঁরা ‘কফি আনানের কমিশন নিষিদ্ধ করো’ লেখা ব্যানার বহন করেন। আর স্লোগান দেন, ‘আমরা কফি আনান কমিশন চাই না।’ রাখাইনে এক সামরিক অভিযানে প্রায় ১০০ মুসলিম নিহত হয়েছে। আর প্রাণে বাঁচতে পালিয়ে বাংলাদেশে গেছে ১০ হাজার মানুষ। রাখাইনের রাজধানী সিত্তি শহর পরিদর্শনের পর আনানের আজ শনিবার দেশটির উত্তর অংশের দিকে যাওয়ার কথা।
সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে অঞ্চলটি অবরুদ্ধ রয়েছে। সীমান্তচৌকিতে গত ৯ অক্টোবর এক জঙ্গি হামলার পর সেনাবাহিনী ওই অভিযান চালায়। মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি গোলযোগপূর্ণ রাখাইন রাজ্যের বর্তমান অবস্থা শুরুর আগেই ওই নয় সদস্যের কমিশনকে পরামর্শের জন্য নিয়োগ করেছিলেন। রাখাইনের বৌদ্ধ ও রোহিঙ্গা মুসলমানরা ২০১২ সালের সহিংসতার পর থেকে আলাদা থাকছেন। সর্বশেষ সহিংসতার ঘটনায় মিয়ানমারে সু চির রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে আট মাস বয়সী সরকার বেশ চাপের মুখে পড়েছে। রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের সহায়তায় সু চি খুব সামান্যই ভূমিকা রেখেছেন বলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। অথচ তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী হিসেবে খ্যাত। আর তাঁর দেশেই রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব নেই। এমনকি মৌলিক সেবাগুলোও তারা পায় না। রোহিঙ্গা নারীরা সেনা অভিযানের সময় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে মিয়ানমারের অনেক বাসিন্দা ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো অভিযোগ করলেও সরকার ও সামরিক বাহিনী তা অস্বীকার করছে। জাতিসংঘের কর্মকর্তারা চলতি সপ্তাহে বলেছেন, গত কয়েক সপ্তাহে ১০ হাজারের বেশি মানুষ রাখাইন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে গেছে।
No comments