বাংলা ভাষা বাংলাদেশের মাধ্যমেই বেঁচে থাকবে: শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
ছায়ানট সংস্কৃতি ভবন মিলনায়তনে ‘সাধের নাগর’ এর প্রকাশনা উৎসবে শিল্পী এবং অতিথিরা |
দুই
বাংলার জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেছেন, বিশ্বে বাংলা
ভাষা এত সমাদৃত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বাংলাভাষীদের জন্য নয়, বাংলাদেশের
বাংলাভাষীদের জন্য। তিনি আরও বলেন, বাংলা ভাষা বাংলাদেশের মাধ্যমেই বেঁচে
থাকবে। এটিই সত্য। শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি ভবন
মিলনায়তনে বাংলা ফিউশন ফোক গানের অ্যালবাম ‘সাধের নাগর’ এর প্রকাশনা উৎসবে
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন শীর্ষেন্দু। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি
ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। সাবেক
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে প্রকাশনা
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবেদ খান,
অ্যালবামটির গীতিকার সহিদ রহমান, সুরকার মিল্টন খন্দকার, কণ্ঠশিল্পী দিনাত
জাহান ও শফি মণ্ডল এবং প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জি-সিরিজ ও অগ্নিবীণা
স্বত্বাধিকারী নাজমুল হক ভূঁইয়া খালিদ। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন,
‘বাংলাদেশে আসলে মনে হয় না দেশের বাইরে এসেছি। পুরো পরিবেশটা এত আন্তরিক যা
এক কথায় অনবদ্য। বিমান থেকে নেমে সোজা অনুষ্ঠানে চলে এসেছি। এখানকার
সবকিছুর সঙ্গে ভীষণ একাত্মবোধ করি। রাজনীতির কারণে আমরা ভাগাভাগির মধ্যে
পড়ে যাই ঠিকই। গঙ্গা ভাগ হয়, পদ্মা ভাগ হয় কিন্তু জন্মের পরিচয়তো ভাগ করা
যায় না। মেলবন্ধন থেকেই যায়। আমি এখনো গর্ববোধ করি বলতে যে, আমার জন্ম
ঢাকার বিক্রমপুরে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওপার বাংলায় বসে আমরা যতটা আশঙ্কা বোধ
করি বাংলা ভাষা হারিয়ে যাচ্ছে ভেবে, বাংলাদেশে এসে বুঝতে পারি বাংলা হারিয়ে
যাবার নয়। বিদেশে গিয়ে দেখি সেখানেও বাংলাদেশিরা অনেক জমাট বেঁধে আছেন।
তারা বাংলা সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রেখেছেন নানা ভাবে। সে নিউইয়র্ক হোক আর
প্যারিস।’ প্রধান অতিথি ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ‘অপশক্তিকে দমন করতে
পারে একমাত্র সংস্কৃতি। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্জন সংস্কৃতির মাধ্যমে
অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো।’ অনুষ্ঠানের সভাপতি সুলতানা কামাল বলেন,
‘বাংলাদেশ বাঁচাতে হলে সংস্কৃতিকে সজীব রাখতে হবে। এ দেশের মানুষ নদী থেকে
উত্থিত মানুষ। প্রকৃতির মধ্যে এ দেশের মানুষ। রাজনীতি কখনো সংস্কৃতি
বিবর্জিত, সংস্কৃতি কখনো রাজনৈতিক চেতনার বাইরে যাবে না।’ ‘সাধের নাগর’ টি
অ্যালবামটি সাজানো ৯টি গান দিয়ে। এতে কণ্ঠ দিয়েছেন কুমার বিশ্বজিৎ, মমতাজ,
শফি মণ্ডল, ফকির শাহাবুদ্দীন, দিনাত জাহান, সন্দীপন, প্রতীক হাসান, আশিক,
নিশীথা, পুলক, সাব্বির ও ঐশী। সুর দিয়েছেন মকসুদ জামিল মিন্টু, মিল্টন
খন্দকার, বিনোদ রায় এবং মান্নান মোহাম্মদ।
No comments