শরণার্থী ফেরত পাঠানো নিয়ে ক্ষোভ
ইউরোপীয়
ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে তুরস্কের করা চুক্তি অনুযায়ী শরণার্থীদের ফেরত
পাঠানোর প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের বিক্ষোভ
অব্যাহত আছে। গ্রিসে আটকে পড়া শরণার্থীদের একটি ছোট দল গতকাল সোমবার
তুরস্কে পৌঁছেছে। স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ২০ মিনিটে গ্রিসের লেসবস দ্বীপ থেকে
তুরস্কের দিকিলি বন্দরে পৌঁছে শরণার্থীবাহী জাহাজ নেজলি জেল। ইইউ-তুরস্কের
চুক্তি অনুযায়ী, গ্রিসে থাকা প্রায় এক লাখ শরণার্থীকে তুরস্কে পাঠানো হবে।
আগামী বুধবার পর্যন্ত প্রথম দফায় তুরস্কে ৭৫০ জন শরণার্থীকে পাঠানোর কথা।
শুরু থেকেই এ বিতর্কিত চুক্তি নিয়ে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন
তাদের আপত্তি জানিয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, সাগর পাড়ি দিয়ে যে শরণার্থীরা ইইউর
সদস্যদেশ গ্রিসে প্রবেশ করেছে, তাদের গ্রহণ করবে তুরস্ক। গ্রিস থেকে ফেরত
নেওয়া প্রতিজন সিরিয়ার শরণার্থীর বিপরীতে ইতিমধ্যে তুরস্কে থাকা আরেকজন
শরণার্থীকে ইইউভুক্ত দেশে পুনর্বাসিত করা হবে। ইইউর সীমান্ত সংস্থা
ফ্রন্টেস্ক জানায়, গতকাল প্রথম দফায় ১৩৬ জনকে তুরস্কে ফেরত পাঠানো হয়। এদের
মধ্যে কোনো সিরিয়ার নাগরিক ছিল না। তবে এর বিপরীতে তুরস্ক থেকে ১৬ জন
সিরিয়া নাগরিক জার্মানিতে যান। লেসবস দ্বীপের ফেরিঘাটে ফ্রন্টেস্কের
মুখপাত্র এওয়া মনকিওর বলেন, এখানে পর্যাপ্ত পুলিশ ও দাঙ্গা
নিয়ন্ত্রণকর্মীরা ছিলেন। তবে পরিস্থিতি ছিল খুব শান্ত। সবকিছু যথানিয়মে
হয়েছে। লেসবসে কোনো বিক্ষোভ না হলেও কিওস দ্বীপে বিক্ষোভ করে মানবাধিকার
সংগঠনগুলো। গতকালই গ্রিসের কিওস দ্বীপ থেকে আরেকটি জাহাজ তুরস্কে যায়। তবে
সেখানে কত শরণার্থী ছিল বা তারা কোন দেশের, এ বিষয়ে কর্মকর্তারা নিশ্চিত
করে কিছু বলতে পারেননি। কিওস থেকে জাহাজ ছাড়ার আগে বেশ কয়েকজন মানবাধিকার
কর্মী এভাবে শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোয় বিক্ষোভ জানায়। ‘এই নোংরা চুক্তি
বাতিল করো’, ‘শরণার্থীদের পাঠানো বন্ধ করো’ বা ‘ইউরোপ জেগে ওঠো’—এমন
স্লোগান লেখা ব্যানার বহন করে বিক্ষোভকারীরা। গ্রিস থেকে শরণার্থীদের
পাঠানোর এই প্রক্রিয়া নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক
হাইকমিশন। সংস্থাটির কর্মকর্তা পিটার সাদারল্যান্ড বলেন, ‘আসলে ফেরত
পাঠানোর নামে কী হচ্ছে, আমরা জানি না। ইচ্ছার বিরুদ্ধে যদি কাউকে ফেরত
পাঠানো হয়, তবে তা অন্যায়।’
No comments