চীনে মুছে যাচ্ছে পশ্চিমা নাম!
কথায়
আছে, ‘নামে কী আসে যায়’। কিন্তু এ নাম নিয়েই খেপেছে চীন সরকার। এবার
বিদেশি নামের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে যাচ্ছে তারা। ইতিমধ্যে দেশটির বিভিন্ন
স্থাপনা, সড়ক ও স্থান থেকে পশ্চিমা ঘরানার নাম মুছে ফেলার সিদ্ধান্ত
নিয়েছে কমিউনিস্ট সরকার। এসব নাম মুছে সেখানে লাগানো হবে চীনের নিজস্ব
সংস্কৃতি ও ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে মানানসই সব নাম। চীনের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত
একটি সংবাদপত্র গতকাল মঙ্গলবার দেশটিতে ব্যাপকভাবে বিদেশি নাম প্রচলনের
সংস্কৃতির বিরুদ্ধে সমালোচনা করে খবর ছেপেছে। দেশটির অর্থনীতি জোরদার হওয়ার
সঙ্গে অনেক নির্মাতার মধ্যে ভবন ও স্থাপনার বিদেশি নামকরণের প্রবণতা বেড়ে
গেছে। যদিও সেই ১৯৯৬ সালে সরকার এই চলন নিষিদ্ধ করে। চায়না ডেইলি পত্রিকায়
প্রকাশিত ওই মন্তব্য প্রতিবেদনে ক্ষোভ ঝেড়ে বলা হয়েছে, চীনের প্রায় সব
শহরে; অন্তত নতুন নির্মাণ করা হয়েছে এমন আবাসিক কমপ্লেক্সের একটির নামকরণ
করা হয়েছে রোম বা ভেনিস শহরের আদলে। উদাহরণ হিসেবে, রাজধানী বেইজিংয়ের
শহরতলির এক কম্পাউন্ডে বাড়ির দাম ন্যূনতম ৩০ লাখ মার্কিন ডলার। এ
কম্পাউন্ডের নাম রাখা হয়েছে ফ্রান্সের শৈল্পিক শহর গ্রাসে টাউনের নামে।
আবার সাংহাই শহরে রয়েছে ‘গোল্ডেন ভিয়েনা’ নামের বিলাসবহুল কমপ্লেক্স।
এখানকার একেকটি বাড়ির বর্গমিটারপ্রতি দাম চীনা মুদ্রায় ৭৮ হাজারের বেশি
ইউয়ান। চীনা বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্র শহরটিতে আরও রয়েছে ‘টেমস টাউন’ নামের
আবাসিক কমপ্লেক্স। আর রাজধানীতে ‘এডিনবরা’ অ্যাপার্টমেন্টের মতো বাহারি
বিদেশি নামের ভবন। মন্তব্য প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিমা নামকরণের এ
লাগামছাড়া প্রবণতা দেশীয় সংস্কৃতির প্রতি একধরনের উদাসীনতা। আর নির্মাতা
প্রতিষ্ঠানগুলো ‘পশ্চিমা দেশগুলো বেশি আধুনিক’ ভোক্তাদের এ ধারণা শক্তপোক্ত
করতে সহায়তা করছে। প্রতিবেদনে ওয়াং ওয়াইকিং বলেন, ‘তিন দশকের বেশি সময় ধরে
চীনে দ্রুতগতিতে চলা অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে দেশটি এখন এক বিশ্বশক্তি হয়ে
উঠেছে। তাই আধুনিক সমাজের নামে পশ্চিমাদের ধ্যানধারণা ও লাইফস্টাইল
অনুকরণের প্রয়োজন নেই এই দেশটির।’ তিনি আরও লেখেন, ‘পশ্চিমাদের নকল করে নয়,
বরং চীনের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ধারণ করে চীনা জনগণের উচিত আধুনিকতার এক নতুন
ধারণা প্রতিষ্ঠা করা।’ এদিকে গত মাসে নাগরিক-বিষয়ক মন্ত্রী লি লিগুয়ো
বলেছেন, সব স্থান থেকে এ রকম অযৌক্তিক, পশ্চিমা-বন্দনার, অদ্ভুত ও নকল নাম
মুছে ফেলতে হবে এবং সেখানে চীনের সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে
সংগতিপূর্ণ নাম বসাতে হবে। এটা করতে হবে আগামী বছরের জুনের মধ্যে।
No comments