পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি পর্যালোচনা করা হচ্ছে
পাকিস্তানের
সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশটির সঙ্গে
সম্পর্কের বিষয়ে কী করা দরকার সেটিও সরকার ভাবছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন,
পুরো বিষয়টি একটি চলমান প্রক্রিয়া। গতকাল রাজধানীর ধানমণ্ডিস্থ ডব্লিউভিএ
অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কবিষয়ক এক অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তৃতায় তিনি
এসব কথা বলেন। বাংলাদেশকে ভারতের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির ৪৪তম বার্ষিকী
উপলক্ষে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ‘কালের কষ্টিপাথরে
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক’ শীর্ষক ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বাংলাদেশে
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিশেষ করে জামায়াত নেতা আবদুল
কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের
টানাপড়েন শুরু হয়েছে। ওই দণ্ড কার্যকরের পর দেশটির সংসদে বাংলাদেশবিষয়ক
একটি নিন্দা প্রস্তাব পাস হওয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে বাংলাদেশ জুড়ে।
সর্বশেষ মানবতাবিরোধী অপরাধে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও
জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর
পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে বিবৃতি দিয়ে এ ঘটনায় ক্ষোভ ও
নিন্দা জানায়। বাংলাদেশ অত্যন্ত কড়া ভাষায় এর প্রতিবাদ করে। ঢাকায় নিযুক্ত
দেশটির রাষ্ট্রদূতকে তলব করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য না করতে
পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু তাতে পাকিস্তান উল্টো
প্রতিক্রিয়া দেখায়। এরপর ইসলামাবাদস্থ বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে
তলব করে এবং দ্বিতীয় দফায় বিবৃতি দিয়ে বাংলাদেশ গণহত্যা চালানোর অভিযোগ
অস্বীকার করে। বিবৃতি প্রকাশের পর বাংলাদেশে দলমত নির্বিশেষে সর্বমহলে
নিন্দার ঝড় ওঠে। পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্নের
জন্য সরকারের ওপর চাপ বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় অনেকটা নীরবেই দেশটির সঙ্গে
সম্পর্ক পর্যালোচনা করছিলেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা। গতকাল
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ নিয়ে সরকারের অবস্থান অত্যন্ত খোলাসা করেন। একাত্তরে
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী এবং তাদের অনুগতরা বাংলাদেশে গণহত্যাসহ যেসব
অপরাধ করেছিল তার দায় স্বীকার প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানের সাবেক
প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ একাত্তর সালের অপরাধের জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন।
যদিও তার ভাষাটা অত শক্ত ছিল না, কিন্তু এটা সত্য যে, তিনি ক্ষমা
চেয়েছিলেন। পাকিস্তানের অনেক নাগরিক যেমন আসমা জাহাঙ্গীর এবং হামিদ মীর
১৯৭১ সালে যুদ্ধাপরাধের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। অনুষ্ঠানে একাত্তরের
দুর্দিনে বন্ধু হিসেবে পাশে থাকা ভারতের অবদান বিশেষ করে ৬ই ডিসেম্বর
মুক্তিযুদ্ধরত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়টি গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে
স্মরণ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ওই স্বীকৃতি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর
বিরুদ্ধে মরণপণ যুদ্ধেরত রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশের (অস্থায়ী)
সরকার এবং বাঙালি জাতিকে উজ্জীবিত করেছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন এ স্বীকৃতি
মুক্তিযুদ্ধ এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে
বৈধতা দিয়েছিল, বিজয় ত্বরান্বিত করেছিল। মহান এ দিবসকে প্রতি বছরের ন্যায়
এবারও উদ্যাপনের আয়োজন করায় ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিকে ধন্যবাদ জানান
মন্ত্রী। অনুষ্ঠানে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুনতাসীর
মামুন, সহ-সভাপতি শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী ও হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর
বাংলাদেশ মাইনোরিটির সভাপতি অধ্যাপক অজয় রায় প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
সীমান্ত হত্যা মানা যায় না: এদিকে ‘কালের কষ্টিপাথরে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুনতাসীর মামুন সীমান্ত হত্যার বিষয়টি তুলে ধরেন। বলেন, সীমান্ত হত্যাকাণ্ড মেনে নেয়া যায় না। তিনি দু’দেশের মানুষে মানুষে যোগাযোগ বাড়ানোর তাগিদ দেন। বলেন, এটি সম্পর্ক উন্নয়নে অপরিহার্য। অনুষ্ঠানে ভারতীয় ভিসা বিক্রি হয়- এমন অভিযোগও করেন তিনি। বিভিন্ন কম্পিউটারের দোকানে অর্থের বিনিময়ে ভারতীয় ভিসার ই-টোকেন দেয়ার বিষয়টি সামনে এনে তিনি বলেন, এখন ৬,০০০ টাকাতেও এটি পাওয়া যায় না। পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিষয়ে তিনি বিষয়টি নিয়ে এখনই আন্তর্জাতিক ফোরামে দাবি তোলার আহ্বান জানান।
হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিজের সভাপতি, নিহত ব্লগার অভিজিৎ রায়ের বাবা বলেন, কান্তজির মন্দিরের ওপর যখন হামলা হয় তখন প্রশ্ন জাগে আমরা কি একটি উদারনৈতিক, ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ গড়তে পেরেছি? সেখানে আইএস প্রসঙ্গেও কথা বলেন তিনি। আইএসের কোনো সাংগঠনিক অঙ্গ-সংগঠন হয়তো এখানে নেই কিন্তু আদর্শিক উদ্দীপ্ত সংগঠন এখানে যথেষ্ট তৈরি হয়েছে মন্তব্য করে এই সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দেন তিনি।
ত্রিপুরায় সহকারী হাইকমিশনের কার্যক্রম শুরু: এদিকে গতকাল থেকে ত্রিপুরায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অনুষ্ঠানে জানান, আসামের গুয়াহাটিতে বাংলাদেশ আরেকটি সহকারী হাইকমিশন খুলছে। দিল্লি, কলকাতা, মুম্বইয়ের পর ত্রিপুরায় মিশন (কনস্যুলেট থেকে সহকারী হাইকমিশনে উন্নীত করা) খোলা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ত্রিপুরা বাংলাদেশের এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিল। ত্রিপুরার পালাটানা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভারী মালামাল পাঠানোর সময় বাংলাদেশও সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিল। পরে খাদ্য সংকটের সময়ও বাংলাদেশ ভূখণ্ড ব্যবহার করে ত্রিপুরাতে মালামাল পাঠানো হয়েছে। পালাটানা প্রকল্প থেকে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আসবে বলে জানান মন্ত্রী। নিজেকে সীমান্ত এলাকার একজন হিসেবে অভিহিত করে মন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেন, সীমান্তে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়, সেগুলো স্থানীয়ভাবে সমাধান করা উচিত। এখন ডেপুটি কমিশনার পর্যায়ে বৈঠক করে সীমান্ত সংক্রান্ত স্থানীয় সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সীমান্ত হত্যা মানা যায় না: এদিকে ‘কালের কষ্টিপাথরে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুনতাসীর মামুন সীমান্ত হত্যার বিষয়টি তুলে ধরেন। বলেন, সীমান্ত হত্যাকাণ্ড মেনে নেয়া যায় না। তিনি দু’দেশের মানুষে মানুষে যোগাযোগ বাড়ানোর তাগিদ দেন। বলেন, এটি সম্পর্ক উন্নয়নে অপরিহার্য। অনুষ্ঠানে ভারতীয় ভিসা বিক্রি হয়- এমন অভিযোগও করেন তিনি। বিভিন্ন কম্পিউটারের দোকানে অর্থের বিনিময়ে ভারতীয় ভিসার ই-টোকেন দেয়ার বিষয়টি সামনে এনে তিনি বলেন, এখন ৬,০০০ টাকাতেও এটি পাওয়া যায় না। পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিষয়ে তিনি বিষয়টি নিয়ে এখনই আন্তর্জাতিক ফোরামে দাবি তোলার আহ্বান জানান।
হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিজের সভাপতি, নিহত ব্লগার অভিজিৎ রায়ের বাবা বলেন, কান্তজির মন্দিরের ওপর যখন হামলা হয় তখন প্রশ্ন জাগে আমরা কি একটি উদারনৈতিক, ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ গড়তে পেরেছি? সেখানে আইএস প্রসঙ্গেও কথা বলেন তিনি। আইএসের কোনো সাংগঠনিক অঙ্গ-সংগঠন হয়তো এখানে নেই কিন্তু আদর্শিক উদ্দীপ্ত সংগঠন এখানে যথেষ্ট তৈরি হয়েছে মন্তব্য করে এই সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দেন তিনি।
ত্রিপুরায় সহকারী হাইকমিশনের কার্যক্রম শুরু: এদিকে গতকাল থেকে ত্রিপুরায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অনুষ্ঠানে জানান, আসামের গুয়াহাটিতে বাংলাদেশ আরেকটি সহকারী হাইকমিশন খুলছে। দিল্লি, কলকাতা, মুম্বইয়ের পর ত্রিপুরায় মিশন (কনস্যুলেট থেকে সহকারী হাইকমিশনে উন্নীত করা) খোলা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ত্রিপুরা বাংলাদেশের এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিল। ত্রিপুরার পালাটানা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভারী মালামাল পাঠানোর সময় বাংলাদেশও সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিল। পরে খাদ্য সংকটের সময়ও বাংলাদেশ ভূখণ্ড ব্যবহার করে ত্রিপুরাতে মালামাল পাঠানো হয়েছে। পালাটানা প্রকল্প থেকে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আসবে বলে জানান মন্ত্রী। নিজেকে সীমান্ত এলাকার একজন হিসেবে অভিহিত করে মন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেন, সীমান্তে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়, সেগুলো স্থানীয়ভাবে সমাধান করা উচিত। এখন ডেপুটি কমিশনার পর্যায়ে বৈঠক করে সীমান্ত সংক্রান্ত স্থানীয় সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
No comments