আমি পিছু হটব না : আহমেদুর রশীদ চৌধুরী by শেখ সাবিহা আলম
হাসপাতালে আহমেদুর রশীদ টুটুল l প্রথম আলো |
আহত প্রকাশক আহমেদুর রশীদের সাক্ষাৎকার
: ‘হেমন্তের রাতে/ কয়েক হাত দূরে/ মর্গে দীপন/ জরুরি ওয়ার্ডের স্বর্গে
আমরা তিনজন।’ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শুয়ে স্ত্রীর সাহায্যে এই
পঙ্ক্তিগুলো লিখেছেন আহমেদুর রশীদ চৌধুরী (টুটুল)। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক শেখ সাবিহা আলম
প্রথম আলো: কেমন আছেন?
আহমেদুর রশীদ চৌধুরী: আমি আসলে আপনার কথা ঠিক শুনতে পাচ্ছি না। মাথার ডান দিকটায় কোপ। এত রক্ত বেরিয়েছে! কানের ভেতর জমাট বেঁধে আছে এখনো। আপনি একটু জোরে বলুন।
প্রথম আলো: কথা বলতে পারবেন তো? বিছানায় অনেকগুলো কাগজ দেখছি। পত্রিকা পড়তে পারছেন?
আহমেদুর: পড়তে পারছি না এখনো। চোখের সামনে ধরে থাকি।
প্রথম আলো: আবুল কাসেম ফজলুল হক স্যার ছেলে হত্যার বিচার চান না—এ কথার প্রতিক্রিয়ায় কে কী বলেছেন দেখেছেন?
আহমেদুর: বিচার তো আমিও চাই না। কার কাছে চাইব? অভিজিতের হত্যাকাণ্ডের পর ছাত্র-শিক্ষক-বুদ্ধিজীবীদের এক সমাবেশে আমাকে কিছু বলতে বলা হয়েছিল। আমি বলেছিলাম, হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই না। অভিজিৎকে যেখানে খুন করা হয়, সেখানে পুলিশ ছিল। আমি কার কাছে যাব? আমি শুধু বলেছিলাম, আমার যা করার আছে আমি তা-ই করব।
প্রথম আলো: অভিজিৎ রায়ের হত্যার পর থেকেই কি হুমকি পাচ্ছিলেন?
আহমেদুর: ২৬ ফেব্রুয়ারি, মানে অভিজিৎ রায়কে যেদিন কুপিয়ে হত্যা করা হলো, সেদিন আমি সারাটা রাত জেগে ছিলাম। হঠাৎ শ্রাবণের রবিন আহসান আমাকে একটা লিংক পাঠাল। দেখি, সেখানে আমাকে হত্যা করা হবে এমন ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ঘোষণাটা দেওয়া হয়েছে ১৬ ফেব্রুয়ারি। ওই দিনই অভিজিৎ দেশে আসে। আমি স্ক্রিনশট নেওয়ার চেষ্টা করলাম। পারলাম না।
প্রথম আলো: তারপরই কি আপনি থানায় গেলেন?
আহমেদুর: আমি লিংক থেকে ওই বার্তাটুকু কপি-পেস্ট করে নিয়ে মোহাম্মদপুর থানায় একটা জিডি করলাম। অভিজিৎ রায়ের মৃত্যু, ওর বই প্রকাশের জন্য হত্যার হুমকি—এসব কিছু আমার জীবনটাকে অনেকটাই পাল্টে দিয়েছিল। আমি অনেকটাই গুটিয়ে নিয়েছিলাম নিজেকে। আমি বন্ধুবান্ধবের আড্ডায় খুব একটা সময় দিতে পারছিলাম না। কারও সঙ্গে যোগাযোগের প্রয়োজন হলে ফেসবুকে ইনবক্স করে ম্যাসেজ দিতাম। অন্যরাও একইভাবে যোগাযোগ করত আমার সঙ্গে। তবু ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বলে একটা কথা আছে না, আমার মনে হচ্ছিল কেউ একজন আমার ঘাড়ের ওপর শ্বাস ফেলছে। তারপর তো দেখলেনই। ৫ নভেম্বর হেমন্তের বইমেলা হওয়ার কথা। আমি, দীপন মানে আমরাই হেমন্তের বইমেলাটা চালু করেছিলাম। শনিবার বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে বলেছিলাম, বিকেলে শাহবাগে দীপনের ওখানে যাব। হেমন্তের বইমেলা নিয়ে কথাবার্তা বলতে হবে। কথা হলো না।
প্রথম আলো: আপনি তো থানায় জিডি করলেন...
আহমেদুর: মোহাম্মদপুর থানা থেকে কয়েকবারই পুলিশ কিন্তু আমার অফিসে এসেছে। এমনকি ওরা যখন টহল দিত, তখনো আমার অফিস ঘুরে যেত। কিন্তু এভাবে তো চলতে পারে না, না? আমি একজন সাধারণ মানুষ। আমার স্ত্রী, সন্তান, স্বজন আছেন। আমি পথে হাঁটব, রিকশায় চড়ে ঘুরে বেড়াব। পুলিশ কি সারাক্ষণ আমার নিরাপত্তা দিতে পারবে? ঠিক যে জায়গাটায় এখন কাজ করা দরকার, সেই জায়গাটা তো কেউ ধরছে না।
প্রথম আলো: মানে আপনি বুঝতে পারছিলেন, কেউ আপনাকে অনুসরণ করছে?
আহমেদুর: হ্যাঁ। খুব বেশিদিন আগের কথা না। আমি আর আমার স্ত্রী শিল্পকলা একাডেমি থেকে খনা দেখে বাসায় ফিরছিলাম রিকশায়। দেখি আমার পেছনে পেছনে একটা মোটরসাইকেল আসছে। আমরা যেখানে থামছি, মোটরসাইকেলটাও সেখানে থামছে। সার্ক ফোয়ারার কাছে গিয়ে আমি রিকশা ছাড়তে বাধ্য হলাম। ছেলেগুলো আমার চোখে চোখ দিয়ে তাকিয়ে ছিল। প্রায় মধ্যরাতে এক আত্মীয় আমাকে গাড়িতে করে বাসায় পৌঁছে দেন।
প্রথম আলো: আপনি বলছিলেন, যে জায়গাটায় কাজ করা দরকার সেই জায়গাটায় আমরা হাত দিচ্ছি না...
আহমেদুর: দেখুন, আমার অফিসে এসে যখন কুড়ি-পঁচিশ বছর বয়সী যুবক মাথায় চাপাতির কোপ দেয়, তখন সে একটা বিশ্বাস নিয়ে কাজটা করেছে। আমরা কি তৃণমূলে মুক্তমতের ধারণা পৌঁছাতে পেরেছি? ওরা কিন্তু ঠিকই ওর বিশ্বাসের জায়গাটা গড়ে দিয়েছে, যেটা আমরা পারিনি। এভাবে শুধু পুলিশ দিয়ে কি জঙ্গিবাদ দমন করা যাবে? এটা আমাদের সবার ব্যর্থতা। আমরা সবাই ব্যর্থ হয়েছি।
প্রথম আলো: সবার ব্যর্থতা বলতে আপনি কি বোঝাতে চাইছেন ...
আহমেদুর: আমাদের তো একটা হাজার বছরের পুরোনো ঐতিহ্য আছে। আমাদের একটা সংস্কৃতি আছে। বহুকাল আমরা পরাধীন ছিলাম। আমাদের মুক্তিযুদ্ধকালীন কিছু ভুল ছিল, মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়েও কিছু ভুল হয়েছে, দীর্ঘদিন সামরিক শাসন ছিল। মাঝখানে বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছরের শাসনামল ছাড়া বাকি সময়টায় আমাদের সংস্কৃতিটাকে যে কীভাবে ধ্বংসের চেষ্টা হয়েছে! সেই সুযোগটাকেই জঙ্গিবাদের প্রসারে কাজে লাগানো হয়েছে। উচ্ছৃঙ্খলতা, অরাজকতার প্রসার হয়েছে। উন্নয়ন মানে তো শুধু দালান-কোঠা, শক্ত অবকাঠামো গড়া নয়। সুকুমার বৃত্তির বিকাশে কাজ করা। চোখের সামনে যেটাকে আমরা উন্নয়ন বলে ভাবছি, সেটা ভীষণ ফাঁপা।
প্রথম আলো: দোষ বা দায় যা-ই বলি, এটা আসলে কার? ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, সরকার, কার?
আহমেদুর: সম্মিলিতভাবে সবার। যদি ছাত্র আন্দোলনের কথাই বলেন, যা চলছে সেটাকে কী বলব? ছাত্র রাজনীতিতে এখন কারা আছে? এই দায় তো রাজনীতিবিদেরা অস্বীকার করতে পারেন না। শুধু সভা-সমাবেশে বক্তৃতা করলে আর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে কাগজ পত্রিকা অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া কি রাজনীতি? আমি আমার ছোটবেলার কথা বলতে পারি। আমরা তখন বই পড়তাম বা সংস্কৃতির যে চর্চাটা ছিল, সেটা পরবর্তীতে পাল্টে গেল। ভোগবাদী, পুঁজিবাদী জীবনব্যবস্থায় এই চর্চাটা পিছিয়ে গেল। সংস্কৃতিকর্মীদের দায়িত্ব সংস্কৃতি বিকাশের দায়িত্বটা নেওয়া। আর অনুকূল পরিবেশ তৈরির দায়িত্ব সরকারের।
প্রথম আলো: হেমন্তের বইমেলা তো হলো না, এরপর খুন-হত্যা এসব একুশের বইমেলায় প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন?
আহমেদুর: প্রভাব হয়তো ফেলবে। তবে আমি পিছু হটব না। বই প্রকাশনার কাজটা আমি ব্যবসা হিসেবে নিইনি। আমার একটা দর্শন আছে। হাজার বছরের মুক্তবাক, মুক্তবুদ্ধি চর্চার যে ঐতিহ্য আছে বাংলাদেশের, সেটা বিকাশের কাজে কেউ আমাকে আটকাতে পারবে না।
প্রথম আলো: ভালো থাকবেন। দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন।
আহমেদুর: আপনারাও ভালো থাকবেন।
প্রথম আলো: কেমন আছেন?
আহমেদুর রশীদ চৌধুরী: আমি আসলে আপনার কথা ঠিক শুনতে পাচ্ছি না। মাথার ডান দিকটায় কোপ। এত রক্ত বেরিয়েছে! কানের ভেতর জমাট বেঁধে আছে এখনো। আপনি একটু জোরে বলুন।
প্রথম আলো: কথা বলতে পারবেন তো? বিছানায় অনেকগুলো কাগজ দেখছি। পত্রিকা পড়তে পারছেন?
আহমেদুর: পড়তে পারছি না এখনো। চোখের সামনে ধরে থাকি।
প্রথম আলো: আবুল কাসেম ফজলুল হক স্যার ছেলে হত্যার বিচার চান না—এ কথার প্রতিক্রিয়ায় কে কী বলেছেন দেখেছেন?
আহমেদুর: বিচার তো আমিও চাই না। কার কাছে চাইব? অভিজিতের হত্যাকাণ্ডের পর ছাত্র-শিক্ষক-বুদ্ধিজীবীদের এক সমাবেশে আমাকে কিছু বলতে বলা হয়েছিল। আমি বলেছিলাম, হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই না। অভিজিৎকে যেখানে খুন করা হয়, সেখানে পুলিশ ছিল। আমি কার কাছে যাব? আমি শুধু বলেছিলাম, আমার যা করার আছে আমি তা-ই করব।
প্রথম আলো: অভিজিৎ রায়ের হত্যার পর থেকেই কি হুমকি পাচ্ছিলেন?
আহমেদুর: ২৬ ফেব্রুয়ারি, মানে অভিজিৎ রায়কে যেদিন কুপিয়ে হত্যা করা হলো, সেদিন আমি সারাটা রাত জেগে ছিলাম। হঠাৎ শ্রাবণের রবিন আহসান আমাকে একটা লিংক পাঠাল। দেখি, সেখানে আমাকে হত্যা করা হবে এমন ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ঘোষণাটা দেওয়া হয়েছে ১৬ ফেব্রুয়ারি। ওই দিনই অভিজিৎ দেশে আসে। আমি স্ক্রিনশট নেওয়ার চেষ্টা করলাম। পারলাম না।
প্রথম আলো: তারপরই কি আপনি থানায় গেলেন?
আহমেদুর: আমি লিংক থেকে ওই বার্তাটুকু কপি-পেস্ট করে নিয়ে মোহাম্মদপুর থানায় একটা জিডি করলাম। অভিজিৎ রায়ের মৃত্যু, ওর বই প্রকাশের জন্য হত্যার হুমকি—এসব কিছু আমার জীবনটাকে অনেকটাই পাল্টে দিয়েছিল। আমি অনেকটাই গুটিয়ে নিয়েছিলাম নিজেকে। আমি বন্ধুবান্ধবের আড্ডায় খুব একটা সময় দিতে পারছিলাম না। কারও সঙ্গে যোগাযোগের প্রয়োজন হলে ফেসবুকে ইনবক্স করে ম্যাসেজ দিতাম। অন্যরাও একইভাবে যোগাযোগ করত আমার সঙ্গে। তবু ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বলে একটা কথা আছে না, আমার মনে হচ্ছিল কেউ একজন আমার ঘাড়ের ওপর শ্বাস ফেলছে। তারপর তো দেখলেনই। ৫ নভেম্বর হেমন্তের বইমেলা হওয়ার কথা। আমি, দীপন মানে আমরাই হেমন্তের বইমেলাটা চালু করেছিলাম। শনিবার বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে বলেছিলাম, বিকেলে শাহবাগে দীপনের ওখানে যাব। হেমন্তের বইমেলা নিয়ে কথাবার্তা বলতে হবে। কথা হলো না।
প্রথম আলো: আপনি তো থানায় জিডি করলেন...
আহমেদুর: মোহাম্মদপুর থানা থেকে কয়েকবারই পুলিশ কিন্তু আমার অফিসে এসেছে। এমনকি ওরা যখন টহল দিত, তখনো আমার অফিস ঘুরে যেত। কিন্তু এভাবে তো চলতে পারে না, না? আমি একজন সাধারণ মানুষ। আমার স্ত্রী, সন্তান, স্বজন আছেন। আমি পথে হাঁটব, রিকশায় চড়ে ঘুরে বেড়াব। পুলিশ কি সারাক্ষণ আমার নিরাপত্তা দিতে পারবে? ঠিক যে জায়গাটায় এখন কাজ করা দরকার, সেই জায়গাটা তো কেউ ধরছে না।
প্রথম আলো: মানে আপনি বুঝতে পারছিলেন, কেউ আপনাকে অনুসরণ করছে?
আহমেদুর: হ্যাঁ। খুব বেশিদিন আগের কথা না। আমি আর আমার স্ত্রী শিল্পকলা একাডেমি থেকে খনা দেখে বাসায় ফিরছিলাম রিকশায়। দেখি আমার পেছনে পেছনে একটা মোটরসাইকেল আসছে। আমরা যেখানে থামছি, মোটরসাইকেলটাও সেখানে থামছে। সার্ক ফোয়ারার কাছে গিয়ে আমি রিকশা ছাড়তে বাধ্য হলাম। ছেলেগুলো আমার চোখে চোখ দিয়ে তাকিয়ে ছিল। প্রায় মধ্যরাতে এক আত্মীয় আমাকে গাড়িতে করে বাসায় পৌঁছে দেন।
প্রথম আলো: আপনি বলছিলেন, যে জায়গাটায় কাজ করা দরকার সেই জায়গাটায় আমরা হাত দিচ্ছি না...
আহমেদুর: দেখুন, আমার অফিসে এসে যখন কুড়ি-পঁচিশ বছর বয়সী যুবক মাথায় চাপাতির কোপ দেয়, তখন সে একটা বিশ্বাস নিয়ে কাজটা করেছে। আমরা কি তৃণমূলে মুক্তমতের ধারণা পৌঁছাতে পেরেছি? ওরা কিন্তু ঠিকই ওর বিশ্বাসের জায়গাটা গড়ে দিয়েছে, যেটা আমরা পারিনি। এভাবে শুধু পুলিশ দিয়ে কি জঙ্গিবাদ দমন করা যাবে? এটা আমাদের সবার ব্যর্থতা। আমরা সবাই ব্যর্থ হয়েছি।
প্রথম আলো: সবার ব্যর্থতা বলতে আপনি কি বোঝাতে চাইছেন ...
আহমেদুর: আমাদের তো একটা হাজার বছরের পুরোনো ঐতিহ্য আছে। আমাদের একটা সংস্কৃতি আছে। বহুকাল আমরা পরাধীন ছিলাম। আমাদের মুক্তিযুদ্ধকালীন কিছু ভুল ছিল, মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়েও কিছু ভুল হয়েছে, দীর্ঘদিন সামরিক শাসন ছিল। মাঝখানে বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছরের শাসনামল ছাড়া বাকি সময়টায় আমাদের সংস্কৃতিটাকে যে কীভাবে ধ্বংসের চেষ্টা হয়েছে! সেই সুযোগটাকেই জঙ্গিবাদের প্রসারে কাজে লাগানো হয়েছে। উচ্ছৃঙ্খলতা, অরাজকতার প্রসার হয়েছে। উন্নয়ন মানে তো শুধু দালান-কোঠা, শক্ত অবকাঠামো গড়া নয়। সুকুমার বৃত্তির বিকাশে কাজ করা। চোখের সামনে যেটাকে আমরা উন্নয়ন বলে ভাবছি, সেটা ভীষণ ফাঁপা।
প্রথম আলো: দোষ বা দায় যা-ই বলি, এটা আসলে কার? ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, সরকার, কার?
আহমেদুর: সম্মিলিতভাবে সবার। যদি ছাত্র আন্দোলনের কথাই বলেন, যা চলছে সেটাকে কী বলব? ছাত্র রাজনীতিতে এখন কারা আছে? এই দায় তো রাজনীতিবিদেরা অস্বীকার করতে পারেন না। শুধু সভা-সমাবেশে বক্তৃতা করলে আর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে কাগজ পত্রিকা অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া কি রাজনীতি? আমি আমার ছোটবেলার কথা বলতে পারি। আমরা তখন বই পড়তাম বা সংস্কৃতির যে চর্চাটা ছিল, সেটা পরবর্তীতে পাল্টে গেল। ভোগবাদী, পুঁজিবাদী জীবনব্যবস্থায় এই চর্চাটা পিছিয়ে গেল। সংস্কৃতিকর্মীদের দায়িত্ব সংস্কৃতি বিকাশের দায়িত্বটা নেওয়া। আর অনুকূল পরিবেশ তৈরির দায়িত্ব সরকারের।
প্রথম আলো: হেমন্তের বইমেলা তো হলো না, এরপর খুন-হত্যা এসব একুশের বইমেলায় প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন?
আহমেদুর: প্রভাব হয়তো ফেলবে। তবে আমি পিছু হটব না। বই প্রকাশনার কাজটা আমি ব্যবসা হিসেবে নিইনি। আমার একটা দর্শন আছে। হাজার বছরের মুক্তবাক, মুক্তবুদ্ধি চর্চার যে ঐতিহ্য আছে বাংলাদেশের, সেটা বিকাশের কাজে কেউ আমাকে আটকাতে পারবে না।
প্রথম আলো: ভালো থাকবেন। দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন।
আহমেদুর: আপনারাও ভালো থাকবেন।
No comments