শীত আসি আসি, এসেছে সবজি by আশীষ-উর-রহমান
শীতের সবজি। গতকাল নিউমার্কেটের কাঁচাবাজার থেকে তোলা l প্রথম আলো |
শীত
আসি আসি করছে। হেমন্তের দ্বিধা জড়ানো তার গায়ে। তবে তার অগ্রদূতেরা চলে
এসেছে সদর্পে। মহানগরের কাঁচাবাজারে তাদের বিপুল সুদৃশ্য সমারোহ। সাজানো
থরে থরে। আঁটি বাঁধা তরতাজা পালংশাক, পুঁইশাক, লালশাক। শিম, কপি, রাঙা
টমেটো, সাদা মুলা, লাউ, বরবটি, রক্তিম বিট আরও অনেক। শীতের আগমনী জানান
দেওয়া এসব সবজির দাম এখনো বেশ চড়া। তবে রোদের তাপ যেমন দিনে দিনে কমছে,
তেমনি কমে আসছে সবজির দামও।
রাজধানীতে শীতের প্রবেশ বরাবরই বিলম্বিত। প্রকৃতিতে ঋতু বদলের যে পরিবর্তন ঘটতে থাকে, মহানগরীর কৃত্রিম পরিবেশে তার প্রকাশ সামান্যই। রোদের উষ্ণতা কমে আসছে। ছোট হয়ে আসছে দিনের দৈর্ঘ্য। শহরে এসব পরিবর্তন টের পাওয়া যায়। কিন্তু ভোরের আলোয় দূর্বার ডগায় জমে থাকা শিশির বিন্দুর দ্যুতি, বিকেলে ফসল কাটা মাঠেরও ওপর জমে থাকা ধোঁয়াশার ভেতর দিয়ে নীড়ে ফেরা পাখপাখালির কলকাকলি, দিগন্ত রাঙিয়ে অস্তাচলে যাওয়া সূর্যের শোভায় মনপ্রাণ ভরে তোলার সুযোগ কোথায় ইট-পাথরের নগরে! হেমন্তের আগামীর প্রকাশ এখানে বাজারে ওঠা নতুন সবজিতেই সীমিত।
গত শনিবার রাজধানীর হাতিরপুল, শান্তিনগরসহ কয়েকটি কাঁচাবাজারে ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে দেখা গেল, প্রায় ৩০ প্রকারের বেশি শাকসবজি উঠেছে ইতিমধ্যেই। শীতের অধিকাংশ বিখ্যাত সবজিই আছে এতে। ফুল ও বাঁধাকপি এসেছে সবচেয়ে আগে। শান্তিনগরের সবজি বিক্রেতা আমির হোসেন জানালেন, শ্রাবণের মাঝামাঝি থেকেই এই দুই জাতের কপি বাজারে মুখ দেখাতে শুরু করে। তখন দাম ছিল বেশ চড়া। প্রতিটি বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। এখন দর নেমে এসেছে আকার অনুসারে ২০ থেকে ৩০ টাকায়।
দেশে কৃষিতে যে বিপুল অগ্রগতি হয়েছে, শীতের সবজির বর্ষায় আগমন তারই সাক্ষী। কপি ছাড়াও পটোল, চিচিঙ্গা, মুলা, ঢ্যাঁড়স এসবও এসেছে প্রায় মাস দুয়েক আগে। সর্বশেষ আগমন আলু আর পাতাসমেত পেঁয়াজগুচ্ছের। এ দুটির দাম অবশ্য অতিশয় চড়া। হাতিরপুল বাজারের বিক্রেতা আবুল হাসানাত নতুন আলুর দাম চাইলেন ১৭০ টাকা আর শান্তিনগরে এর দাম ১৬০ টাকা কেজি। পাতাসমেত পেঁয়াজের কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। অন্যান্য সবজির দাম এখন প্রতিটি বাজারেই কেজিপ্রতি দুই-চার টাকা হেরফেরে প্রায় একই রকম।
বিক্রেতারা জানালেন, বাজারে প্রতিদিনই সবজির সরবরাহ বাড়ছে। তাই দামও প্রায় প্রতিদিনই নেমে আসছে। গত সপ্তাহে শিমের দাম ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, এখন ৫০ টাকা কেজি। ঢ্যাঁড়সের কেজি ৬০ টাকা থেকে ৪৫ টাকায় নেমেছে। অন্য সবজিগুলোর দাম নেমেছে—পটোল ৪৫ থেকে ৩৫ টাকা, মুলা ৪০ থেকে ৩০। করলার দাম ৬০ থেকে ৫০-৪৫ টাকায় এসেছে। বরবটি ৮০ থেকে ৬০, ঝিঙা ৬০ থেকে ৪০, ধুন্দুল ৫০ থেকে ৩৫, চিচিঙ্গা ৫০ থেকে ৪০, গফরগাঁওয়ের গোল বেগুন ৭০ থেকে ৫৫, লম্বা বেগুন ৪০ টাকা। ওলকপি ৪০ থেকে ৩০-২৫, বিট ২০০ থেকে ১৫০, টমেটো ১২০ থেকে ১০০। লাউ ৬০ থেকে আকার অনুসারে ৩০-৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২৫-৩০ টাকা। কমেনি কেবল গাজরের দাম—১১০ টাকায় অপরিবর্তিত আছে।
বাজারে শাকের চোখজুড়ানো প্রাচুর্য। শান্তিনগরের বিক্রেতা মো. মঈনুদ্দিনের কাছে জানা গেল এক মজার তথ্য। বেলা যত চড়তে থাকে, শাকের দাম তত কমতে থাকে। সকালে যে লালশাকের আঁটি ১০ টাকার ১০ পয়সা কমেও মেলে না, দুপুরে তার দুই আঁটি পাওয়া যায় ১৫ টাকায়। সন্ধ্যার দিকে কখনো কখনো ১০ টাকাতেও। কারণ হলো, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শাকের তরতাজা ভাবটি মলিন হয়ে আসে। এখন প্রতিদিনই প্রচুর তরতাজা শাক আসছে বাজারে। তাই আগের দিনের শুকনো মলিন শাক পরের দিনে বিকোয় না। দিনে দিনে বিক্রি করার তাড়া থাকে। মোটামুটিভাবে এখন পালং, লাল, মুলা, পাট, পুঁই, সরিষা, লাউ—এসব শাক পাওয়া যাচ্ছে প্রতি আঁটি সর্বোচ্চ ১০ টাকায়।
আর হ্যাঁ, ডবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ট্রিপলের পথে ২৫০-এর মাইলফলক স্পর্শ করা কাঁচা মরিচের প্রতি কেজি নেমে এসেছে ১২০ টাকায়। সবজির দাম তো কমবেই, তবে মরিচের তেজ কমিয়ে দেওয়াটাই বোধকরি এবারের শীতের প্রধান কীর্তি হয়ে থাকবে।
রাজধানীতে শীতের প্রবেশ বরাবরই বিলম্বিত। প্রকৃতিতে ঋতু বদলের যে পরিবর্তন ঘটতে থাকে, মহানগরীর কৃত্রিম পরিবেশে তার প্রকাশ সামান্যই। রোদের উষ্ণতা কমে আসছে। ছোট হয়ে আসছে দিনের দৈর্ঘ্য। শহরে এসব পরিবর্তন টের পাওয়া যায়। কিন্তু ভোরের আলোয় দূর্বার ডগায় জমে থাকা শিশির বিন্দুর দ্যুতি, বিকেলে ফসল কাটা মাঠেরও ওপর জমে থাকা ধোঁয়াশার ভেতর দিয়ে নীড়ে ফেরা পাখপাখালির কলকাকলি, দিগন্ত রাঙিয়ে অস্তাচলে যাওয়া সূর্যের শোভায় মনপ্রাণ ভরে তোলার সুযোগ কোথায় ইট-পাথরের নগরে! হেমন্তের আগামীর প্রকাশ এখানে বাজারে ওঠা নতুন সবজিতেই সীমিত।
গত শনিবার রাজধানীর হাতিরপুল, শান্তিনগরসহ কয়েকটি কাঁচাবাজারে ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে দেখা গেল, প্রায় ৩০ প্রকারের বেশি শাকসবজি উঠেছে ইতিমধ্যেই। শীতের অধিকাংশ বিখ্যাত সবজিই আছে এতে। ফুল ও বাঁধাকপি এসেছে সবচেয়ে আগে। শান্তিনগরের সবজি বিক্রেতা আমির হোসেন জানালেন, শ্রাবণের মাঝামাঝি থেকেই এই দুই জাতের কপি বাজারে মুখ দেখাতে শুরু করে। তখন দাম ছিল বেশ চড়া। প্রতিটি বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। এখন দর নেমে এসেছে আকার অনুসারে ২০ থেকে ৩০ টাকায়।
দেশে কৃষিতে যে বিপুল অগ্রগতি হয়েছে, শীতের সবজির বর্ষায় আগমন তারই সাক্ষী। কপি ছাড়াও পটোল, চিচিঙ্গা, মুলা, ঢ্যাঁড়স এসবও এসেছে প্রায় মাস দুয়েক আগে। সর্বশেষ আগমন আলু আর পাতাসমেত পেঁয়াজগুচ্ছের। এ দুটির দাম অবশ্য অতিশয় চড়া। হাতিরপুল বাজারের বিক্রেতা আবুল হাসানাত নতুন আলুর দাম চাইলেন ১৭০ টাকা আর শান্তিনগরে এর দাম ১৬০ টাকা কেজি। পাতাসমেত পেঁয়াজের কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। অন্যান্য সবজির দাম এখন প্রতিটি বাজারেই কেজিপ্রতি দুই-চার টাকা হেরফেরে প্রায় একই রকম।
বিক্রেতারা জানালেন, বাজারে প্রতিদিনই সবজির সরবরাহ বাড়ছে। তাই দামও প্রায় প্রতিদিনই নেমে আসছে। গত সপ্তাহে শিমের দাম ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, এখন ৫০ টাকা কেজি। ঢ্যাঁড়সের কেজি ৬০ টাকা থেকে ৪৫ টাকায় নেমেছে। অন্য সবজিগুলোর দাম নেমেছে—পটোল ৪৫ থেকে ৩৫ টাকা, মুলা ৪০ থেকে ৩০। করলার দাম ৬০ থেকে ৫০-৪৫ টাকায় এসেছে। বরবটি ৮০ থেকে ৬০, ঝিঙা ৬০ থেকে ৪০, ধুন্দুল ৫০ থেকে ৩৫, চিচিঙ্গা ৫০ থেকে ৪০, গফরগাঁওয়ের গোল বেগুন ৭০ থেকে ৫৫, লম্বা বেগুন ৪০ টাকা। ওলকপি ৪০ থেকে ৩০-২৫, বিট ২০০ থেকে ১৫০, টমেটো ১২০ থেকে ১০০। লাউ ৬০ থেকে আকার অনুসারে ৩০-৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২৫-৩০ টাকা। কমেনি কেবল গাজরের দাম—১১০ টাকায় অপরিবর্তিত আছে।
বাজারে শাকের চোখজুড়ানো প্রাচুর্য। শান্তিনগরের বিক্রেতা মো. মঈনুদ্দিনের কাছে জানা গেল এক মজার তথ্য। বেলা যত চড়তে থাকে, শাকের দাম তত কমতে থাকে। সকালে যে লালশাকের আঁটি ১০ টাকার ১০ পয়সা কমেও মেলে না, দুপুরে তার দুই আঁটি পাওয়া যায় ১৫ টাকায়। সন্ধ্যার দিকে কখনো কখনো ১০ টাকাতেও। কারণ হলো, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শাকের তরতাজা ভাবটি মলিন হয়ে আসে। এখন প্রতিদিনই প্রচুর তরতাজা শাক আসছে বাজারে। তাই আগের দিনের শুকনো মলিন শাক পরের দিনে বিকোয় না। দিনে দিনে বিক্রি করার তাড়া থাকে। মোটামুটিভাবে এখন পালং, লাল, মুলা, পাট, পুঁই, সরিষা, লাউ—এসব শাক পাওয়া যাচ্ছে প্রতি আঁটি সর্বোচ্চ ১০ টাকায়।
আর হ্যাঁ, ডবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ট্রিপলের পথে ২৫০-এর মাইলফলক স্পর্শ করা কাঁচা মরিচের প্রতি কেজি নেমে এসেছে ১২০ টাকায়। সবজির দাম তো কমবেই, তবে মরিচের তেজ কমিয়ে দেওয়াটাই বোধকরি এবারের শীতের প্রধান কীর্তি হয়ে থাকবে।
No comments