নিয়ম মানে না বিকাশ ১ জনের ৮৭ অ্যাকাউন্ট by হামিদ বিশ্বাস
মোবাইল
ব্যাংকিংয়ে এজেন্টদের একটি মাত্র নম্বরে অ্যাকাউন্ট খুলে ব্যবসা পরিচালনার
কথা। বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন নির্দেশনাও দেয়া আছে মোবাইল ব্যাংকিং
পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতি। কিন্তু বিকাশ এজেন্টরা এর ধার ধারেন না।
অনেক এজেন্টের পকেটে থাকে বিকাশের একাধিক অ্যাকাউন্ট। এমনকি একজন এজেন্টের
কাছ থেকে বিকাশ অ্যাকাউন্ট করা ৮৭টি সিম পর্যন্ত উদ্ধার করেছে আইন
প্রয়োগকারী সংস্থা। আর এক এজেন্টের এমন বহু অ্যাকাউন্ট মানেই তা ব্যবহৃত হয়
প্রতারণা আর নানা অনৈতিক কাজে। বিকাশ ব্যবহার করে আইনশৃঙ্খলা অবনতি ও
প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার বিষয়ে পুলিশের চালানো এক অনুসন্ধান
প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ ধরনের নানা তথ্য।
তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফরিদ নামের একজন বিকাশ এজেন্টকে ৮৭টি সিমসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। ভুয়া রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে সিমগুলো দিয়ে বিকাশের একাউন্ট খুলেন তিনি। যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেয়া কোন নিয়ম পরিপালন করা হতো না। গ্রেপ্তার হওয়া ফরিদ অতিরিক্ত অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে অর্থ আদায় করতো। বিশেষ করে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করতে ব্যবহৃত হয়েছে এসব সিম।
এমন আরও অনেক ঘটনা ঘটেছে বিকাশকে ঘিরে। এজেন্ট গ্রাহকের ক্ষেত্রে নিয়মনীতি না মানায় এমনটি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তদারক প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা। তারা জানিয়েছেন, অনিয়মের অভিযোগ আসছে। অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক তদারকিও করছে।
যদিও বিকাশের ক্ষেত্রে যাচাই-বাছাই ছাড়াই একাউন্ট চালু করার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া বিকাশের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত চার্জ কাটার অভিযোগ রয়েছে গ্রাহকদের পক্ষ থেকে। অসুস্থ প্রতিযোগিতার বিষয়টিও উঠে এসেছে বারবার। অসুস্থ প্রতিযোগিতার নমুনা হিসেবে বলা হচ্ছে- কমিশন শেয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে টেলিফোন অপারেটরদের সঙ্গে যে চুক্তি করা হয় সে ক্ষেত্রে বিকাশ সর্বনিম্ন সুবিধা দিয়ে নিজেদের অবস্থান সুসংহত রেখেছে। এক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় আসতে পারছে না অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের প্রায় ৮০ ভাগ নিয়ন্ত্রণে রাখা বিকাশে তাই অনিময়ম ও প্রতারণার ঘটনাও ঘটছে বেশি।
এদিকে গত বছরের ২৮শে নভেম্বর মোবাইল ব্যাংকিংয়ের হিসাব পরিচালনার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের জন্য বিধিনিষেধ আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন এ নির্দেশনা অনুযায়ী একজন গ্রাহক একের বেশি অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতে পারবেন না। ইতিমধ্যে যেসব গ্রাহকের একাধিক হিসাব রয়েছে, তাদের একটি রেখে বাকিগুলো বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বিভিন্ন অনিয়মের বেড়াজালে আটকে গেছে দেশের মোবাইল ব্যাংকিং। প্রায় প্রতিদিনই এ বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগ আসছে। মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রমের পর থেকে বিভিন্ন অনিয়ম, নিয়ম না মানা, প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের মতো নানা অপকর্ম ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়গুলো নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক রীতিমতো বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। প্রতারণা বন্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নীতিমালা হালনাগাদ করা হয়। কিন্তু এরপরও প্রতারণা বন্ধ হচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতারণা ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে হরহামেশাই অভিযোগ করছেন। এর আগে গত ১লা সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং অপারেটরদের জন্য মোবাইল ব্যাংকের মাধ্যমে জালিয়াতি ও প্রতারণা বন্ধে কঠোর নির্দেশনা জারি করে। কিন্তু প্রতারণা থেমে থাকেনি। বরং প্রতারণা বেড়েই চলেছে দিনের পর দিন। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতারণা বন্ধে প্রতিদিন লেনদেনের সীমা নির্ধারণ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। নিয়ম অনুযায়ী মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতিদিন তিন বারের বেশি টাকা উত্তোলন করতে পারবেন না গ্রাহক। আর প্রতিবার ২৫ হাজার টাকার বেশি লেনদেন করা যাবে না। একই সঙ্গে গ্রাহকের মোবাইল হিসাব থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তার সঙ্গে লেনদেন করতে হবে। কিন্তু বিকাশ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি। বরং নতুন নিয়মটি তুলে নেয়ারও দাবি আসে বিকাশের পক্ষ থেকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গ্রাহকের লেনদেনের সীমা নির্ধারণ করে দেয়া হলেও গ্রাহকের একাউন্ট সংখ্যার ক্ষেত্রে নির্ধারিত কোন সীমারেখা ছিল না। গ্রাহক প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে একই ব্যক্তি একাধিক অ্যাকাউন্ট খুলছেন এবং নিবন্ধনহীন গ্রাহকের মাধ্যমে লেনদেন করছেন, যা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতারণাকে আরও উৎসাহিত করছে। কেননা নিবন্ধনহীন গ্রাহকের মাধ্যমে লেনদেন সংঘটিত হলে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করা সম্ভব হবে না। এ অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংকের তরফে নতুন নির্দেশনা দেয়া হয়। পাশাপাশি ইতিমধ্যে যেসব গ্রাহক একাধিক অ্যাকাউন্ট খুলেছেন তার মধ্যে একটি রেখে বাকিগুলো অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এ নির্দেশনা অবিলম্বে বাস্তবায়ন না করলে ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কড়াকড়ি আরোপ ও পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন উভয় প্রতিষ্ঠানের সদিচ্ছার ইঙ্গিত বহন করলেও একটি অজানা কারণে সব কিছু বারবার ভেস্তে যাচ্ছে, এমনটিই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট তদারক কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, দুই উপায়ে বিকাশের মাধ্যমে জালিয়াতি করা হচ্ছে। সিম রিপ্লেস ও ভুয়া ন্যাশনাল আইডি কার্ড। তিনি বলেন, সিমের দায়িত্ব বিটিআরসিকে নিতে হবে। আর আইডি কার্ডের দায়িত্ব নিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এ ছাড়া অতিরিক্ত চার্জ কাটার বিষয়ে বিকাশের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। ক্ষেত্র বিশেষে উভয় দিক থেকে যে টাকা পাঠায় আর যে গ্রহণ করে দুদিকেই চার্জ কাটা হচ্ছে। কোন এজেন্ট হাজারে নিচ্ছে ২০ টাকা। আবার কোন এজেন্ট নিচ্ছে ১৯ টাকা। কেউ নিচ্ছে ১৮.৫০ টাকা। এ বিষয়ে এজেন্ট আবদুল বারেক জানান, মোবাইল ব্যাংকিংয়ে সবচেয়ে কম চার্জ কাটে আইএফআইসি ব্যাংক। হাজারে মাত্র ১৬ টাকা। আর বিকাশ নেয় সর্বোচ্চ ১৮ টাকা পঞ্চাশ পয়সা থেকে ২০ টাকা। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ১৮ টাকা, ইসলামী ব্যাংক ১৮ ও ইউসিবিএল নেয় ১৮ টাকা করে। বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে বিকাশের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক দাশগুপ্ত অসীম কুমার জানিয়েছেন, যেসব অভিযোগ তাদের কাছে আসছে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিচ্ছে বিকাশ কর্তৃপক্ষ।
বিকাশের অনিয়মের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক, ম. মাহফুজুর রহমান বলেন, আগের চেয়ে এখন সমস্যা কমেছে। বিকাশ কর্তৃপক্ষও সমস্যা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছে, এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকও তদারকি করছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফরিদ নামের একজন বিকাশ এজেন্টকে ৮৭টি সিমসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। ভুয়া রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে সিমগুলো দিয়ে বিকাশের একাউন্ট খুলেন তিনি। যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেয়া কোন নিয়ম পরিপালন করা হতো না। গ্রেপ্তার হওয়া ফরিদ অতিরিক্ত অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে অর্থ আদায় করতো। বিশেষ করে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করতে ব্যবহৃত হয়েছে এসব সিম।
এমন আরও অনেক ঘটনা ঘটেছে বিকাশকে ঘিরে। এজেন্ট গ্রাহকের ক্ষেত্রে নিয়মনীতি না মানায় এমনটি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তদারক প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা। তারা জানিয়েছেন, অনিয়মের অভিযোগ আসছে। অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক তদারকিও করছে।
যদিও বিকাশের ক্ষেত্রে যাচাই-বাছাই ছাড়াই একাউন্ট চালু করার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া বিকাশের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত চার্জ কাটার অভিযোগ রয়েছে গ্রাহকদের পক্ষ থেকে। অসুস্থ প্রতিযোগিতার বিষয়টিও উঠে এসেছে বারবার। অসুস্থ প্রতিযোগিতার নমুনা হিসেবে বলা হচ্ছে- কমিশন শেয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে টেলিফোন অপারেটরদের সঙ্গে যে চুক্তি করা হয় সে ক্ষেত্রে বিকাশ সর্বনিম্ন সুবিধা দিয়ে নিজেদের অবস্থান সুসংহত রেখেছে। এক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় আসতে পারছে না অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের প্রায় ৮০ ভাগ নিয়ন্ত্রণে রাখা বিকাশে তাই অনিময়ম ও প্রতারণার ঘটনাও ঘটছে বেশি।
এদিকে গত বছরের ২৮শে নভেম্বর মোবাইল ব্যাংকিংয়ের হিসাব পরিচালনার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের জন্য বিধিনিষেধ আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন এ নির্দেশনা অনুযায়ী একজন গ্রাহক একের বেশি অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতে পারবেন না। ইতিমধ্যে যেসব গ্রাহকের একাধিক হিসাব রয়েছে, তাদের একটি রেখে বাকিগুলো বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বিভিন্ন অনিয়মের বেড়াজালে আটকে গেছে দেশের মোবাইল ব্যাংকিং। প্রায় প্রতিদিনই এ বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগ আসছে। মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রমের পর থেকে বিভিন্ন অনিয়ম, নিয়ম না মানা, প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের মতো নানা অপকর্ম ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়গুলো নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক রীতিমতো বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। প্রতারণা বন্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নীতিমালা হালনাগাদ করা হয়। কিন্তু এরপরও প্রতারণা বন্ধ হচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতারণা ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে হরহামেশাই অভিযোগ করছেন। এর আগে গত ১লা সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং অপারেটরদের জন্য মোবাইল ব্যাংকের মাধ্যমে জালিয়াতি ও প্রতারণা বন্ধে কঠোর নির্দেশনা জারি করে। কিন্তু প্রতারণা থেমে থাকেনি। বরং প্রতারণা বেড়েই চলেছে দিনের পর দিন। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতারণা বন্ধে প্রতিদিন লেনদেনের সীমা নির্ধারণ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। নিয়ম অনুযায়ী মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতিদিন তিন বারের বেশি টাকা উত্তোলন করতে পারবেন না গ্রাহক। আর প্রতিবার ২৫ হাজার টাকার বেশি লেনদেন করা যাবে না। একই সঙ্গে গ্রাহকের মোবাইল হিসাব থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তার সঙ্গে লেনদেন করতে হবে। কিন্তু বিকাশ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি। বরং নতুন নিয়মটি তুলে নেয়ারও দাবি আসে বিকাশের পক্ষ থেকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গ্রাহকের লেনদেনের সীমা নির্ধারণ করে দেয়া হলেও গ্রাহকের একাউন্ট সংখ্যার ক্ষেত্রে নির্ধারিত কোন সীমারেখা ছিল না। গ্রাহক প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে একই ব্যক্তি একাধিক অ্যাকাউন্ট খুলছেন এবং নিবন্ধনহীন গ্রাহকের মাধ্যমে লেনদেন করছেন, যা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতারণাকে আরও উৎসাহিত করছে। কেননা নিবন্ধনহীন গ্রাহকের মাধ্যমে লেনদেন সংঘটিত হলে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করা সম্ভব হবে না। এ অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংকের তরফে নতুন নির্দেশনা দেয়া হয়। পাশাপাশি ইতিমধ্যে যেসব গ্রাহক একাধিক অ্যাকাউন্ট খুলেছেন তার মধ্যে একটি রেখে বাকিগুলো অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এ নির্দেশনা অবিলম্বে বাস্তবায়ন না করলে ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কড়াকড়ি আরোপ ও পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন উভয় প্রতিষ্ঠানের সদিচ্ছার ইঙ্গিত বহন করলেও একটি অজানা কারণে সব কিছু বারবার ভেস্তে যাচ্ছে, এমনটিই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট তদারক কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, দুই উপায়ে বিকাশের মাধ্যমে জালিয়াতি করা হচ্ছে। সিম রিপ্লেস ও ভুয়া ন্যাশনাল আইডি কার্ড। তিনি বলেন, সিমের দায়িত্ব বিটিআরসিকে নিতে হবে। আর আইডি কার্ডের দায়িত্ব নিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এ ছাড়া অতিরিক্ত চার্জ কাটার বিষয়ে বিকাশের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। ক্ষেত্র বিশেষে উভয় দিক থেকে যে টাকা পাঠায় আর যে গ্রহণ করে দুদিকেই চার্জ কাটা হচ্ছে। কোন এজেন্ট হাজারে নিচ্ছে ২০ টাকা। আবার কোন এজেন্ট নিচ্ছে ১৯ টাকা। কেউ নিচ্ছে ১৮.৫০ টাকা। এ বিষয়ে এজেন্ট আবদুল বারেক জানান, মোবাইল ব্যাংকিংয়ে সবচেয়ে কম চার্জ কাটে আইএফআইসি ব্যাংক। হাজারে মাত্র ১৬ টাকা। আর বিকাশ নেয় সর্বোচ্চ ১৮ টাকা পঞ্চাশ পয়সা থেকে ২০ টাকা। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ১৮ টাকা, ইসলামী ব্যাংক ১৮ ও ইউসিবিএল নেয় ১৮ টাকা করে। বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে বিকাশের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক দাশগুপ্ত অসীম কুমার জানিয়েছেন, যেসব অভিযোগ তাদের কাছে আসছে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিচ্ছে বিকাশ কর্তৃপক্ষ।
বিকাশের অনিয়মের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক, ম. মাহফুজুর রহমান বলেন, আগের চেয়ে এখন সমস্যা কমেছে। বিকাশ কর্তৃপক্ষও সমস্যা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছে, এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকও তদারকি করছে।
No comments