শ্যালিকার ডেটিং ফাঁদ দুলাভাই রিমান্ডে by আশরাফুল ইসলাম
শ্যালিকাকে
দিয়ে প্রেমের ফাঁদ পেতে বেপরোয়া অপহরণ বাণিজ্যে মেতে উঠেছিল হোতা
জাহাঙ্গীর। শ্যালিকা মাছুমার মুঠোফোনে সুললিত কণ্ঠে কাবু হতেন টার্গেট ইউপি
চেয়ারম্যান, প্রবাসীসহ ধনাঢ্য ব্যক্তিরা। ডেটিং-এর নামে তারা মাছুমার
সঙ্গে দেখা করতে এলেই ধরা পড়তেন জাহাঙ্গীরের জালে। শ্যালিকা মাছুমার সঙ্গে
জোরপূর্বক অশ্লীল ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইলিংসহ আটকে রেখে দাবি করা হতো মোটা
অঙ্কের মুক্তিপণ। মুক্তিপণের টাকা দেয়ার পরই কেবল মিলতো মুক্তি। ভয়ঙ্কর এই
প্রতারক চক্রের হোতা জাহাঙ্গীর, সহযোগী সেলিম, এমদাদুর রহমান ও আলাউদ্দিন
এই চারজনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। বুধবার বিকালে কিশোরগঞ্জের চিফ
জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো.
হামিদুল ইসলাম তাদের চারজনের প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের
রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ ছাড়া চক্রের হোতা জাহাঙ্গীরের শ্যালিকা মাছুমাকে
কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। এর আগে বাজিতপুর থানায় করা মামলার সূত্র
ধরে মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) রাজধানীর বাড্ডা এলাকার
একটি বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে চক্রের হোতা জাহাঙ্গীর আলম
(৪২) ইটনার জয়সিদ্ধি গ্রামের হাবিবুর রহমান সিদ্দিকীর পুত্র, সহযোগী মো.
সেলিম (৩২) শরীয়তপুর জেলার সখিপুরের গাড়িকান্দি গ্রামের মৃত আবদুল মালেকের
পুত্র, এমদাদুর রহমান (৩২) হবিগঞ্জের নবীগঞ্জের সর্দারপুর গ্রামের আবদুর
রউফের পুত্র, মো. আলাউদ্দিন (৩৫) আজমিরীগঞ্জের বড়সহিন গ্রামের মৃত তাজুল
ইসলামের পুত্র এবং জাহাঙ্গীরের শ্যালিকা মাছুমা আক্তার (২৭) সুনামগঞ্জের
শাল্লা নয়াহাটির মৃত মর্তুব খাঁর কন্যা।
পুলিশ জানায়, সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রটি অপহরণের একটি তালিকা তৈরি করে কৌশলে এমন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। এ তালিকায় সিলেট, কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান, প্রবাসীসহ ধনাঢ্য ব্যক্তিরা রয়েছেন। তালিকার ওইসব ব্যক্তিদের মুঠোফোন নম্বর জোগাড় করে কয়েক বছর ধরে চক্রটি তালিকা অনুযায়ী অপহরণ ও মুক্তিপণ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। টার্গেট ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ১০ ব্যক্তি অপহরণের পর ছাড়া পেলেও তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।
সূত্র জানায়, মাস দু’য়েক আগে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার কলমা ইউপি চেয়ারম্যান সাধন চন্দ্র দাসের মুঠোফোনে ২০০ টাকা ফ্লেক্সিলোড দেয়। এর কিছুক্ষণ পর চক্রের সদস্য মাছুমা ইউপি চেয়ারম্যানকে ফোন করে ভুলে চেয়ারম্যানের মুঠোফোন নম্বরে টাকা চলে গেছে দাবি করে ফেরত চান। ইউপি চেয়ারম্যান সাধন টাকা ফেরত দেন। একই কায়দায় আবারও মাছুমা ইউপি চেয়ারম্যানকে ৩০০ টাকা ফ্লেক্সিলোড দেন। একই কৌশলে মাছুমা তা ফেরতও নেন। এভাবে দু’জনের মধ্যে মুঠোফোনে সখ্য গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে মাছুমা তার ভাই পরিচয় দিয়ে জাহাঙ্গীর (দুলাভাই), কাজের লোক পরিচয় দিয়ে সেলিম এবং ড্রাইভার পরিচয় দিয়ে আলাউদ্দিনকেও ফোন করাতেন। এভাবে যোগাযোগ রক্ষা করতে গিয়ে তারা সাধন চেয়ারম্যানের আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন। চক্রের সদস্যরা ঢাকায় আসার দাওয়াতও দেয় সাধনকে। ৪ঠা এপ্রিল ইউপি চেয়ারম্যান ঢাকায় আসবেন জানালে মাছুমা নিজের গাড়িতে করে তাকে ঢাকায় নিয়ে আসার আশ্বাস দেয়। পরে মাছুমা, জাহাঙ্গীর ও সেলিম বাজিতপুরে একটি গাড়ি পাঠিয়ে দেন। ওই গাড়িতে ইউপি চেয়ারম্যানকে তুলে পথে তার সঙ্গে ভাল ব্যবহার ও নিজেদের খরচে ভাল রেস্টুরেন্টে তাকে আপ্যায়ন করানো হয়। তাদের ব্যবহারে ইউপি চেয়ারম্যান মুগ্ধ হলেও তখনও তার জানা ছিল না যে, তিনি এক ভয়ঙ্কর চক্রের জালে জড়িয়ে গেছেন। ঢাকায় আসার পর চেয়ারম্যানকে বাড্ডার একটি বাসায় তারা আটকে রাখে। নিজেদের ডিবি পুলিশ সদস্য পরিচয় দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানকে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলার হুমকি দেয় তারা। পরে চেয়ারম্যান সাধনের স্ত্রীকে ফোন করে বিকাশের মাধ্যমে দুই লাখ ২৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। মুক্তি পাওয়ার পর গত ১০ই মে ইউপি চেয়ারম্যান বাজিতপুর থানায় মামলা করেন। মামলা তদন্তে ডিবির সহায়তা চাওয়া হলে ডিবি অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এর আগে গত বছরের মে মাসে এই চক্রের ৬ সদস্যকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অ্যান্টি কিডন্যাপিং স্কোয়াড করে। সে সময় হোতা জাহাঙ্গীরকে আটক করা যায়নি। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, গত বছরের ১১ই মে সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মানিক একইভাবে প্রতারক মাছুমা গ্রুপের হাতে অপহৃত হন। অপহরণের পর একটি নিরিবিলি বাসায় নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। ওই বাসায় নিয়ে চেয়ারম্যানের সঙ্গে মাছুমার আপত্তিকর ছবি তোলা হয়। ছবি তোলার পরে চেয়ারম্যানের কাছে ২২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা। এক পর্যায়ে ৪৬ হাজার টাকা নিয়ে চেয়ারম্যানকে মাছুমার লোকজন ছেড়ে দেয়। মুক্তি পাওয়ার পর গুলশান থানায় চেয়ারম্যান একটি মামলা করেন। গুলশান থানার মামলার সূত্র ধরে অ্যান্টি কিডন্যাপিং স্কোয়াড তাদের গ্রেপ্তার করে। এরও আগে নবীগঞ্জ থানার এক ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের কাছ থেকে তারা ৩ লাখ ১০ হাজার টাকাসহ বেশ কয়েকজন ব্যক্তির কাছ থেকে মুক্তিপণের টাকা আদায় করে। ওই সময় আটক হওয়ার পর জামিনে বেরিয়ে এসে চক্রের সদস্যরা ফের একই অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।
এ ব্যাপারে বাজিতপুর থানার ওসি সুব্রত কুমার সাহা জানান, প্রতারক চক্রের দলনেতা জাহাঙ্গীর। তার শ্যালিকা মাছুমা মুঠোফোনে মিষ্টি কথা বলে প্রেমের ফাঁদ পেতে এ ধরনের ঘটনা ঘটায়। চক্রটির প্রধান টার্গেট বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, নামিদামি ব্যক্তি এবং ধনাঢ্যরা। এ ধরনের ব্যক্তিদের টাকা ও খ্যাতি দু’টোই আছে। এসব ব্যক্তিকে কাবু করা সম্ভব হলে তারা সহজেই বিরাট অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতে পারে। ওসি সুব্রত আরও জানান, আদালতের রিমান্ডাদেশ পাওয়ার পর বুধবার সন্ধ্যায়ই হোতা জাহাঙ্গীরসহ গ্রেপ্তারকৃত চারজনকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে এ ব্যাপারে আরও বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান।
পুলিশ জানায়, সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রটি অপহরণের একটি তালিকা তৈরি করে কৌশলে এমন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। এ তালিকায় সিলেট, কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান, প্রবাসীসহ ধনাঢ্য ব্যক্তিরা রয়েছেন। তালিকার ওইসব ব্যক্তিদের মুঠোফোন নম্বর জোগাড় করে কয়েক বছর ধরে চক্রটি তালিকা অনুযায়ী অপহরণ ও মুক্তিপণ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। টার্গেট ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ১০ ব্যক্তি অপহরণের পর ছাড়া পেলেও তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।
সূত্র জানায়, মাস দু’য়েক আগে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার কলমা ইউপি চেয়ারম্যান সাধন চন্দ্র দাসের মুঠোফোনে ২০০ টাকা ফ্লেক্সিলোড দেয়। এর কিছুক্ষণ পর চক্রের সদস্য মাছুমা ইউপি চেয়ারম্যানকে ফোন করে ভুলে চেয়ারম্যানের মুঠোফোন নম্বরে টাকা চলে গেছে দাবি করে ফেরত চান। ইউপি চেয়ারম্যান সাধন টাকা ফেরত দেন। একই কায়দায় আবারও মাছুমা ইউপি চেয়ারম্যানকে ৩০০ টাকা ফ্লেক্সিলোড দেন। একই কৌশলে মাছুমা তা ফেরতও নেন। এভাবে দু’জনের মধ্যে মুঠোফোনে সখ্য গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে মাছুমা তার ভাই পরিচয় দিয়ে জাহাঙ্গীর (দুলাভাই), কাজের লোক পরিচয় দিয়ে সেলিম এবং ড্রাইভার পরিচয় দিয়ে আলাউদ্দিনকেও ফোন করাতেন। এভাবে যোগাযোগ রক্ষা করতে গিয়ে তারা সাধন চেয়ারম্যানের আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন। চক্রের সদস্যরা ঢাকায় আসার দাওয়াতও দেয় সাধনকে। ৪ঠা এপ্রিল ইউপি চেয়ারম্যান ঢাকায় আসবেন জানালে মাছুমা নিজের গাড়িতে করে তাকে ঢাকায় নিয়ে আসার আশ্বাস দেয়। পরে মাছুমা, জাহাঙ্গীর ও সেলিম বাজিতপুরে একটি গাড়ি পাঠিয়ে দেন। ওই গাড়িতে ইউপি চেয়ারম্যানকে তুলে পথে তার সঙ্গে ভাল ব্যবহার ও নিজেদের খরচে ভাল রেস্টুরেন্টে তাকে আপ্যায়ন করানো হয়। তাদের ব্যবহারে ইউপি চেয়ারম্যান মুগ্ধ হলেও তখনও তার জানা ছিল না যে, তিনি এক ভয়ঙ্কর চক্রের জালে জড়িয়ে গেছেন। ঢাকায় আসার পর চেয়ারম্যানকে বাড্ডার একটি বাসায় তারা আটকে রাখে। নিজেদের ডিবি পুলিশ সদস্য পরিচয় দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানকে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলার হুমকি দেয় তারা। পরে চেয়ারম্যান সাধনের স্ত্রীকে ফোন করে বিকাশের মাধ্যমে দুই লাখ ২৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। মুক্তি পাওয়ার পর গত ১০ই মে ইউপি চেয়ারম্যান বাজিতপুর থানায় মামলা করেন। মামলা তদন্তে ডিবির সহায়তা চাওয়া হলে ডিবি অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এর আগে গত বছরের মে মাসে এই চক্রের ৬ সদস্যকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অ্যান্টি কিডন্যাপিং স্কোয়াড করে। সে সময় হোতা জাহাঙ্গীরকে আটক করা যায়নি। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, গত বছরের ১১ই মে সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মানিক একইভাবে প্রতারক মাছুমা গ্রুপের হাতে অপহৃত হন। অপহরণের পর একটি নিরিবিলি বাসায় নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। ওই বাসায় নিয়ে চেয়ারম্যানের সঙ্গে মাছুমার আপত্তিকর ছবি তোলা হয়। ছবি তোলার পরে চেয়ারম্যানের কাছে ২২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা। এক পর্যায়ে ৪৬ হাজার টাকা নিয়ে চেয়ারম্যানকে মাছুমার লোকজন ছেড়ে দেয়। মুক্তি পাওয়ার পর গুলশান থানায় চেয়ারম্যান একটি মামলা করেন। গুলশান থানার মামলার সূত্র ধরে অ্যান্টি কিডন্যাপিং স্কোয়াড তাদের গ্রেপ্তার করে। এরও আগে নবীগঞ্জ থানার এক ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের কাছ থেকে তারা ৩ লাখ ১০ হাজার টাকাসহ বেশ কয়েকজন ব্যক্তির কাছ থেকে মুক্তিপণের টাকা আদায় করে। ওই সময় আটক হওয়ার পর জামিনে বেরিয়ে এসে চক্রের সদস্যরা ফের একই অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।
এ ব্যাপারে বাজিতপুর থানার ওসি সুব্রত কুমার সাহা জানান, প্রতারক চক্রের দলনেতা জাহাঙ্গীর। তার শ্যালিকা মাছুমা মুঠোফোনে মিষ্টি কথা বলে প্রেমের ফাঁদ পেতে এ ধরনের ঘটনা ঘটায়। চক্রটির প্রধান টার্গেট বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, নামিদামি ব্যক্তি এবং ধনাঢ্যরা। এ ধরনের ব্যক্তিদের টাকা ও খ্যাতি দু’টোই আছে। এসব ব্যক্তিকে কাবু করা সম্ভব হলে তারা সহজেই বিরাট অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতে পারে। ওসি সুব্রত আরও জানান, আদালতের রিমান্ডাদেশ পাওয়ার পর বুধবার সন্ধ্যায়ই হোতা জাহাঙ্গীরসহ গ্রেপ্তারকৃত চারজনকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে এ ব্যাপারে আরও বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান।
No comments