অপরাধে জড়াচ্ছেন কূটনীতিকরা, উদ্বিগ্ন সরকার
চোরাচালান, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে ঢাকায় থাকা ভিনদেশী নাগরিকদের সম্পৃক্ততার খবর নতুন নয়। প্রতি মাসেই একাধিক বিদেশী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ছেন। তাদের বিরুদ্ধে জেল-জরিমানা, বহিষ্কারসহ অপরাধের মাত্রা বিবেচনায় কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তবে সামপ্রতিক সময়ে বিদেশী অপরাধীদের সঙ্গে ঢাকাস্থ বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তা কিংবা পেশাদার কূটনীতিকদের যোগসাজশ কিংবা তাদের সরাসরি সম্পৃক্ততার অভিযোগে উদ্বিগ্ন সরকার। পুলিশি অ্যাকশন কিংবা ঘটনা পরবর্তী সময়ে অপরাধীদের ছাড়িয়ে নিতে কূটনৈতিক তৎপরতা ভাবিয়ে তুলছে সরকারের পদস্থ কর্মকর্তাদের। পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, ঘুরে ফিরে কয়েকটি দেশের নাগরিক এবং দূতাবাসের নাম আসছে। যখন যে অভিযোগ পাওয়া যায় তাৎক্ষণিক কূটনৈতিক চ্যানেলে ওই দেশ এবং দূতাবাসকে সতর্ক করা হয় জানিয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, গুরুতর অভিযোগে ওই নাগরিক, দূতাবাসের স্টাফ বা কূটনীতিককে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রত্যাহারের সময় বেঁধে দেয়া হয়। সেই নির্দেশনা না মানলে বহিষ্কার করা হয়। কারও ক্ষেত্রে কোন শৈথিল্য প্রদর্শন করা হয় না। এছাড়া, ‘কূটনৈতিক শিষ্টাচার’ মেনে চলা এবং তাদের প্রদত্ত সুবিধার সদ্ব্যবহার করতে দূতাবাস এবং কূটনীতিকদের প্রতিনিয়ত (অফিসিয়াল এবং আন-অফিসিয়াল) উৎসাহিত করা হয় বলেও জানায় পররাষ্ট্র দপ্তর। গত মার্চের শুরুর দিকে স্বর্ণ চোরাচালানে হাতেনাতে ধরা পড়ে উত্তর কোরিয়া দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি (ইকোনমিক অ্যান্ড কমার্শিয়াল) সন ইয়াং ন্যাম (৫০)। ঘটনার পরপরই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় সরকার। কোরীয় সরকার অবশ্য বাংলাদেশের বলার আগেই তাকে প্রত্যাহার করে নেয়। গত বৃহস্পতিবার উত্তর কোরীয় এক নাগরিক পরিচালিত বনানীর পিয়ংইয়ং রেস্টুরেন্টে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেখানে মদ ও যৌন উত্তেজক সামগ্রীর ব্যবসা এবং নৃত্যগীতের আসরের আড়ালে অসামাজিক কাজকর্ম চলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে অভিযানে যায় শুল্ক গোয়েন্দা ও ডিবি পুলিশের যৌথ টিম। অভিযানে রেস্টুরেন্টের মালিক উত্তর কোরীয় নাগরিক রায়াগ সুন হয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। রেস্টুরেন্ট থেকে ৪৯ ক্যান বিয়ার, ১০ বোতল হুইস্কি, দুই শতাধিক ভায়াগ্রাসহ বিপুল পরিমাণ যৌন উত্তেজক ক্যাপসুল জব্দ করা হয়। রেস্টুরেন্টটির বৈধ কাগজপত্র না থাকায় তা সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে বনানী থানায় তিনটি মামলা হয়েছে। আটক রেস্টুরেন্ট মালিক বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছেন। অভিযোগ পাওয়া গেছে ওই অভিযান চলাকালে সেখানে উত্তর কোরিয়ার ফার্স্ট সেক্রেটারি মিং হানের নেতৃত্বে দূতাবাসের ১০ কর্মকর্তা উপস্থিত হন। তাদের প্রচণ্ড বাধার মুখে পড়তে হয়েছে অভিযান পরিচালনাকারীদের। রেস্টুরেন্টের মালিককে আটক করে নিতে আসলেও পদে পদে উপস্থিত কূটনীতিকদের বাধার মুখে পড়তে হয়েছে সংশ্লিষ্টদের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বর্ণ চোরাচালানি কূটনীতিক ন্যামের জায়গায় এসেছেন মিং হান। পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, সেদিন স্বর্ণ চোরাচালানে কোরীয় কূটনীতিক আটক হওয়ার পর তাকে ছাড়িয়ে নিতে ৮-১০ জন কূটনীতিক হাজির হয়েছিলেন। তাদের অকূটনৈতিক আচরণ সরকারি কর্মকর্তাদের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছিল। চলতি বছর পাকিস্তান দূতাবাসের এক কর্মকর্তাকে বিভিন্ন অভিযোগে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
মাদক বেচাকেনার সঙ্গে দূতাবাসের কেউ জড়িত রয়েছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে: এদিকে আমাদের অপরাধ বিভাগের এক রিপোর্টার গোয়েন্দা পুলিশের বরাত দিয়ে জানান, কোরিয়ান ওই রেস্টুরেন্টে দূতাবাসের অনেকেরই নিয়মিত যাতায়াত ছিল। এ কারণে অভিযানের সময় দূতাবাস কর্মকর্তাদের বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। মাদক বেচাকেনার সঙ্গে দূতাবাসের কেউ জড়িত রয়েছে কিনা তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আটক রেস্টুরেন্টের মালিক উত্তর কোরীয় নাগরিক রায়াগ সুন হয়া জিজ্ঞাসাবাদে অনেক প্রশ্ন এড়িয়ে যাচ্ছে জানিয়ে গোয়েন্দারা বলেন, ওই নারীর দাবি, গ্রাহকরাই এসব নিয়ে তাদের রেস্টুরেন্টে আসে। তারা শুধু খাবার খাওয়ার শর্তে মাদক গ্রহণ করার জায়গা দেন। তবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদকারী গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, সে কিছু বিষয় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তাকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার রেস্টুরেন্টে কারা আসতো, এসব মাদক কারা যোগান দিতো এসব জানার চেষ্টা চলছে।
মাদক বেচাকেনার সঙ্গে দূতাবাসের কেউ জড়িত রয়েছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে: এদিকে আমাদের অপরাধ বিভাগের এক রিপোর্টার গোয়েন্দা পুলিশের বরাত দিয়ে জানান, কোরিয়ান ওই রেস্টুরেন্টে দূতাবাসের অনেকেরই নিয়মিত যাতায়াত ছিল। এ কারণে অভিযানের সময় দূতাবাস কর্মকর্তাদের বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। মাদক বেচাকেনার সঙ্গে দূতাবাসের কেউ জড়িত রয়েছে কিনা তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আটক রেস্টুরেন্টের মালিক উত্তর কোরীয় নাগরিক রায়াগ সুন হয়া জিজ্ঞাসাবাদে অনেক প্রশ্ন এড়িয়ে যাচ্ছে জানিয়ে গোয়েন্দারা বলেন, ওই নারীর দাবি, গ্রাহকরাই এসব নিয়ে তাদের রেস্টুরেন্টে আসে। তারা শুধু খাবার খাওয়ার শর্তে মাদক গ্রহণ করার জায়গা দেন। তবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদকারী গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, সে কিছু বিষয় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তাকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার রেস্টুরেন্টে কারা আসতো, এসব মাদক কারা যোগান দিতো এসব জানার চেষ্টা চলছে।
No comments