৩০ বছর জেল খাটার পর ‘নির্দোষ’ প্রমাণিত ২ ভাই by কাজী আরিফ আহমেদ
যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনার একটি
কারাগারে ১১ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত
হয়ে জীবনের সুদীর্ঘ ৩০টি বছর জেল খেটেছেন মানসিক প্রতিবন্ধী দুই সৎ ভাই। এর
মধ্যে এক ভাইকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ায়, কারাগারের একটি বিশেষ সেলে এতগুলো বছর
রাখা হয়েছিল তাকে। অবিশ্বাস্য হলেও এটাই সত্যি যে, সম্প্রতি ডিএনএ পরীক্ষা
করার পর তারা নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন। স্থানীয় একটি কাউন্টি আদালতের
বিচারক ওই দুই জনকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার রায় দিয়েছেন। এ খবর দিয়েছে
অনলাইন বিবিসি। নর্থ ক্যারোলাইনায় ১৯৮৪ সালে ১১ বছরের কিশোরী সাবরিনা
বুউয়িকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে মানসিক প্রতিবন্ধী দুই সৎ ভাই হেনরি
ম্যাককলাম (৫০) ও লিওন ব্রাউন (৪৬) দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। বড় ভাই হেনরির
বয়স ৫০ বছর হলেও, তার মানসিক গঠন এখনও ৯ বছরের শিশুর মতোই। গ্রেপ্তারের সময়
তাদের বয়স ছিল যথাক্রমে ১৯ ও ১৫ বছর। এতোগুলো বছর পর অপরাধস্থল থেকে
সংগৃহীত ডিএনএ’র নমুনা পরীক্ষা অপর এক ব্যক্তির দিকেই অঙ্গুলি নির্দেশ
করছে। প্রকৃত অপরাধী ওই ব্যক্তিও একই ধরনের আরেকটি ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে
জেল খাটছে। নর্থ ক্যারোলাইনা ইনোসেন্স ইনকোয়্যারি কমিশন এ তদন্ত পরিচালনা
করে ও ডিএনএ পরীক্ষা করে। ১৯৮৪ সালে যখন এ ঘটনা ঘটে, অপরাধস্থলে তাদের
বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে চাক্ষুষ প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সন্দেহের জেরেই তাদের
দু’ জনকে কয়েক সপ্তাহ পর গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৫ ঘণ্টা টানা জিজ্ঞাসাবাদের
পর হেনরি তার দোষ স্বীকার করেছিলেন। সেখানে তার পক্ষে কোন আইনজীবী বা
পরিবারের সদস্য উপস্থিত ছিলেন না। তার ছোট ভাইও একরকম বাধ্য হয়ে
স্বীকারোক্তি দেন। পরে তাদের যখন আদালতে তোলা হয়, তারা বলেছিলেন যে মিথ্যা
স্বীকারোক্তিতে তাদের বাধ্য করা হয়েছে। দুর্বল মামলা সত্ত্বেও দুই ভাইকে
মৃত্যুদ- দেয় আদালত। ব্রাউনের শাস্তি লাঘব করে পরবর্তীতে যাবজ্জীবন কারাদ-
দেয়া হয় এবং তার বিরুদ্ধে শুধু ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়। অন্যদিকে হেনরি
ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে ৩০টি বছর ছিলেন মৃত্যুর প্রতীক্ষায়। মিথ্যা
স্বীকারোক্তির পরও তারা নিজেদের বারবার নির্দোষ দাবি করেছিলেন ও বেশ
কয়েকবার আপিল করেছিলেন। কিন্তু, কোন ফল হয়নি। অবশেষে, ২০১০ সালে নর্থ
ক্যারোলাইনা ইনোসেন্স ইনকোয়্যারি কমিশন মামলাটি হাতে নেয় এবং তাদের তদন্তে
প্রকৃত সত্য উন্মোচিত হয়।
No comments