দুই সপ্তাহে কিয়েভ দখল করতে পারি
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, তাঁর দেশ চাইলে দুই সপ্তাহে কিয়েভ দখল করতে পারে। ইতালির লা রিপাবলিক পত্রিকার ভাষ্য অনুযায়ী, ইউরোপীয় কমিশনের চেয়ারম্যান হোসে মানুয়েল বারোসোর কাছে এ দম্ভোক্তি করেছেন পুতিন। তবে রাশিয়ার সরকারি দপ্তরগুলো পুতিনের কথিত এ উক্তির কথা কার্যত অস্বীকার করেছে। এদিকে রাশিয়া গতকাল মঙ্গলবার জানিয়েছে, ইউক্রেন পরিস্থিতি ও পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর উপস্থিতি বাড়ানোর পরিকল্পনার পরিপ্রেক্ষিতে তারা নিজেদের সামরিক নীতি বদলাবে। পত্রিকার খবর অনুযায়ী, ইউরোপীয় কমিশনের চেয়ারম্যান হোসে মানুয়েল বারাসো বলেছেন, পুতিন তাঁকে কিয়েভ দখল করে নেওয়ার ক্ষমতার কথা বলেছিলেন গত ২৯ আগস্ট। এ সময় তিনি টেলিফোন আলাপে ইউক্রেনের রুশপন্থী বিদ্রোহীদের সামরিক সহযোগিতা করার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করেছিলেন। বারোসো বলেন, তখন পুতিন তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘বিষয় সেটি নয়। আমি যদি চাই, তবে দুই সপ্তাহে কিয়েভ দখল করতে পারি।’ পুতিনের এ কথিত মন্তব্য নিয়ে ক্রেমলিন বলেছে, বারাসো গোপনীয়তা ফাঁস করেছেন। প্রেসিডেন্ট পুতিনের ওই উক্তিকে খণ্ডিতভাবে নেওয়া হয়েছে। এর অর্থও ভিন্ন। এদিকে গতকাল রাশিয়া বলেছে, ইউক্রেন সমস্যা ও পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর উপস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে দেশটি তার সামরিক নীতি বদলাবে।
রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সহকারী সচিব মিখাইল পোপভ বলেছেন, নতুন সামরিক নীতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সঙ্গে ক্রমাবনতিশীল সম্পর্কের প্রতিফলন ঘটবে। রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা আরআইএকে পোপভ বলেন, ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অস্ত্র-সরঞ্জাম অনেক বর্ধিত আকারে রাশিয়ার সীমান্তের কাছাকাছি চলে এসেছে। ন্যাটোর কার্যকলাপ রাশিয়ার প্রধান বৈদেশিক হুমকি। ক্রেমলিনের এ উপদেষ্টা মন্তব্য করেন, ন্যাটোর নতুন পরিকল্পনা প্রমাণ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর নেতারা রাশিয়ায় উত্তেজনা ছড়িয়ে এর আরও অবনতি দেখতে চায়। তবে রাশিয়ার এ নতুন সামরিক নীতি কী হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি পোপভ। ইউক্রেনে অব্যাহত যুদ্ধাবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো জানায়, ‘রাশিয়ার সম্ভাব্য আগ্রাসনের’ হাত থেকে সংস্থার পূর্ব ইউরোপীয় সদস্যদের নিরাপত্তা দিতে কয়েক হাজার সেনার একটি বাহিনী মোতায়েনের কথা ভাবা হচ্ছে। ন্যাটোর মহাসচিব অ্যান্ডারস ফগ রাসমুসেন বলেছেন, জোটের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সমন্বয়ে তৈরি সেই সম্ভাব্য বাহিনী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মোতায়েন করা যাবে। তিনি দাবি করেন, এটি ১৯৯৭ সালে ন্যাটো-রাশিয়া সমঝোতার ব্যত্যয় ঘটাবে না। ওই সমঝোতায় পূর্ব ও মধ্য ইউরোপে স্থায়ী সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে। ন্যাটোর ওই নতুন পরিকল্পনা এ সপ্তাহে ওয়েলসে অনুষ্ঠেয় শীর্ষ বৈঠকে অনুমোদিত হতে পারে।
No comments