বিদ্যুৎ-ভাইয়া, আপনার আবার কি হইলো? by সাহস রতন
বছরখানেক তো ভালই কাটছিল। তবে বাঙালির কপালে সুখ বেশি দিন সয় না। হঠাৎ আবার কি যেন হয়ে গেল? গত কয়েক দিন ধরে আমার অফিস এলাকায় দিনে ৩-৪ বার লোডশেডিং হচ্ছে। প্রতিবারে ঘণ্টাখানেকের বিরতি। অন্য অনেক এলাকায়ও প্রায় একই অবস্থা। ঘটনা কি? পত্রিকা কিংবা টেলিভিশনে কেউ কিছু বলছেও না। রাজধানীতেই যদি হয় এই হাল, তাহলে গ্রামের অবস্থা যে কতটা শোচনীয় তা সহজেই আন্দাজ করা যাচ্ছে। ১০ হাজার মেগাওয়াটের আলোক উৎসবের পরও এখনও বেশির ভাগ গ্রামকে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন কাটাতে হচ্ছে। অন্য গ্রামের কথা বলতে পারবো না, কিন্তু আমাদের গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ এখনও দুঃসহ যন্ত্রণার পর্যায়েই আছে। সাধুবাদ বর্তমান সরকারকে। তাদের আমলে প্রায় সাত হাজার মেগাওয়াট নতুন বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে। আরও নতুন নতুন বিশাল আকারের একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে বিদ্যুতের হাহাকার বন্ধ হবে। উন্নয়ন বিবেচনায় একটি রাষ্ট্রের অগ্রধিকার বিষয়ে থাকে বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ। স্বাধীনতার ৪০ বছর পরও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত হলো না। আজকের জামানায় এটা অকল্পনীয়। কিন্তু আমাদের দেশে এটা বাস্তবেই ঘটছে। কারণ এটা বাংলাদেশ। সৌরজগতের কোথাও যা ঘটে না, সে সব ঘটনা কিন্তু বাংলাদেশে ঘটে অহরহ। সে সবের ফিরিস্তি সবাই জানেন। এখানে জনগণের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে জনগণকে অন্ধকারে রেখে বড় বড় দুর্নীতিবাজদের জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়। এ দেশে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা ব্যবহৃত বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করে না। এবং এর জন্য জবাবদিহিও করতে হয় না। কারণ এটা আমার সোনার বাংলা। এখানে সব কিছুতে গণতন্ত্র বিদ্যমান। বিদ্যুৎ বিল না দেয়াও গণতান্ত্রিক অধিকার, যদি ব্যবহারকারী হন ‘জাম পাবলিক’।
বর্তমানে ব্যক্তি উদ্যোগে দেশব্যাপী যে হারে নানা ধরনের প্রকল্প শুরু হচ্ছে তাতে ২০২৫ সাল নাগাদ বিদ্যুতের প্রকৃত চাহিদা হবে আনুমানিক ৫০ হাজার মেগাওয়াট। চাহিদার হিসাব যখন করা হয় তখন ইজিবাইক কিংবা আইপিএস-এর ব্যাটারি চার্জের জন্য ব্যবহৃত বিদ্যুৎ থেকে যায় হিসাবের বাইরে। এখনই আমাদের চাহিদা যদিও ২০ হাজার মেগাওয়াট কিন্তু বাস্তবিক এটা দাঁড়াবে আরও বেশি। ভবিষ্যতে চাহিদা মাফিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে এ সংখ্যাটাই মাথায় রাখা উচিত বলে আমি মনে করি। মোটামুটি ৫০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত না হওয়া পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাওয়া মুশকিল হবে। শুধু বড় শহরগুলো নয় বাংলাদেশের ৬৮ হাজার গ্রামে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের কথা বলছি আমি। গ্রামভিত্তিক বাংলাদেশে গ্রামকেন্দ্রিক বড় কোন পরিকল্পনা নেই। সেটা সব ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। বিদ্যুতের ক্ষেত্রে তা আরও বেশি। শ’ শ’ কিলোমিটার দূরে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে তা সরবরাহ করা হচ্ছে দেশের আনাচে-কানাচে। এইডা কিছু হইলো? প্রতিটি উপজেলায় একটা করে ছোট আকারের জেনারেটার বসিয়ে তা দিয়ে শুধু সেই এলাকাটিকে বিদ্যুতের জ্বালা থেকে মুক্তি দেয়া যায় না? পুরো প্রক্রিয়াটি হবে সাময়িক। বড় বড় প্রকল্পগুলো পূর্ণাঙ্গভাবে চালু না হওয়া পর্যন্ত এগুলো দিয়ে ঠেকা কাজ চলবে। বিদ্যমান সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করেই এটা করা যায়। প্রয়োজন শুধু সরকারি সিদ্ধান্ত ও সমন্বিত উদ্যোগ। আমি যদ্দূর জেনেছি, কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ (চান্দিনা)-এর বর্তমান চাহিদা মাত্র ৫ মেগাওয়াট। মাঝারি সাইজের একটা গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রিতে এর চেয়ে বেশি মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন পড়ে। বেশির ভাগ গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি লোডশেডিংয়ের সময় এই জেনারেটর দিয়ে কাজ চালায়। আমার নিজ উপজেলা বরুড়ায় অন্তত ১০ জন বড় মাপের শিল্পমালিক আছেন যাদের বাৎসরিক টার্নওভার হাজার কোটি টাকার বেশি। বড় বড় শিল্প মালিকদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে যাতে তারা নিজ এলাকায় বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ করেন। নানা ধরনের ইনসেনটিভ প্যাকেজ ঘোষণা করেও এটা করা যেতে পারে। যেমন, কোন শিল্পমালিক নিজ এলাকায় ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বিনিয়োগ করলে তার অন্য কোন প্রকল্পে ২০ বছরের জন্য ট্যাক্স হলিডে। এরকম অনেক কিছুই হতে পারে। ১৯৯৭ সাল থেকে আয়কর দিচ্ছি। আমার মতো লাখ লাখ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রদত্ত আয়কর ও ট্যাক্সের টাকা দিয়ে বাৎসরিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ খাত একটি। আমাদের অর্থে উৎপাদিত বিদ্যুৎ দুর্নীতিবাজগুলো সার্বক্ষণিকভাবে ব্যবহার করে আয়েশি জীবন কাটাবে- আর আমরা অন্ধকারে বসে ঘেমে একাকার হবো। এটা আর কত যুগ সহ্য করতে হবে?
বর্তমানে ব্যক্তি উদ্যোগে দেশব্যাপী যে হারে নানা ধরনের প্রকল্প শুরু হচ্ছে তাতে ২০২৫ সাল নাগাদ বিদ্যুতের প্রকৃত চাহিদা হবে আনুমানিক ৫০ হাজার মেগাওয়াট। চাহিদার হিসাব যখন করা হয় তখন ইজিবাইক কিংবা আইপিএস-এর ব্যাটারি চার্জের জন্য ব্যবহৃত বিদ্যুৎ থেকে যায় হিসাবের বাইরে। এখনই আমাদের চাহিদা যদিও ২০ হাজার মেগাওয়াট কিন্তু বাস্তবিক এটা দাঁড়াবে আরও বেশি। ভবিষ্যতে চাহিদা মাফিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে এ সংখ্যাটাই মাথায় রাখা উচিত বলে আমি মনে করি। মোটামুটি ৫০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত না হওয়া পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাওয়া মুশকিল হবে। শুধু বড় শহরগুলো নয় বাংলাদেশের ৬৮ হাজার গ্রামে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের কথা বলছি আমি। গ্রামভিত্তিক বাংলাদেশে গ্রামকেন্দ্রিক বড় কোন পরিকল্পনা নেই। সেটা সব ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। বিদ্যুতের ক্ষেত্রে তা আরও বেশি। শ’ শ’ কিলোমিটার দূরে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে তা সরবরাহ করা হচ্ছে দেশের আনাচে-কানাচে। এইডা কিছু হইলো? প্রতিটি উপজেলায় একটা করে ছোট আকারের জেনারেটার বসিয়ে তা দিয়ে শুধু সেই এলাকাটিকে বিদ্যুতের জ্বালা থেকে মুক্তি দেয়া যায় না? পুরো প্রক্রিয়াটি হবে সাময়িক। বড় বড় প্রকল্পগুলো পূর্ণাঙ্গভাবে চালু না হওয়া পর্যন্ত এগুলো দিয়ে ঠেকা কাজ চলবে। বিদ্যমান সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করেই এটা করা যায়। প্রয়োজন শুধু সরকারি সিদ্ধান্ত ও সমন্বিত উদ্যোগ। আমি যদ্দূর জেনেছি, কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ (চান্দিনা)-এর বর্তমান চাহিদা মাত্র ৫ মেগাওয়াট। মাঝারি সাইজের একটা গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রিতে এর চেয়ে বেশি মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন পড়ে। বেশির ভাগ গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি লোডশেডিংয়ের সময় এই জেনারেটর দিয়ে কাজ চালায়। আমার নিজ উপজেলা বরুড়ায় অন্তত ১০ জন বড় মাপের শিল্পমালিক আছেন যাদের বাৎসরিক টার্নওভার হাজার কোটি টাকার বেশি। বড় বড় শিল্প মালিকদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে যাতে তারা নিজ এলাকায় বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ করেন। নানা ধরনের ইনসেনটিভ প্যাকেজ ঘোষণা করেও এটা করা যেতে পারে। যেমন, কোন শিল্পমালিক নিজ এলাকায় ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বিনিয়োগ করলে তার অন্য কোন প্রকল্পে ২০ বছরের জন্য ট্যাক্স হলিডে। এরকম অনেক কিছুই হতে পারে। ১৯৯৭ সাল থেকে আয়কর দিচ্ছি। আমার মতো লাখ লাখ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রদত্ত আয়কর ও ট্যাক্সের টাকা দিয়ে বাৎসরিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ খাত একটি। আমাদের অর্থে উৎপাদিত বিদ্যুৎ দুর্নীতিবাজগুলো সার্বক্ষণিকভাবে ব্যবহার করে আয়েশি জীবন কাটাবে- আর আমরা অন্ধকারে বসে ঘেমে একাকার হবো। এটা আর কত যুগ সহ্য করতে হবে?
No comments