ভূস্বর্গে পানির নিচে ৩০০ গ্রাম
ভারতীয় কাশ্মীরে ৬০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় আটকা পড়া হাজার হাজার লোককে উদ্ধারে সৈন্যরা রোববার ব্যাপক প্রচেষ্টা চালিয়েছে। সেখানে বন্যায় কমপক্ষে ১৬০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। শ্রীনগরের প্রধান নগরী পানিতে তলিয়ে গেছে। সরকারি কর্মকর্তারা জানান, প্রবল বর্ষণের ফলে সৃষ্ট বন্যায় সেখানে প্রায় সাড়ে ৩০০ গ্রাম তলিয়ে গেছে। এছাড়া বন্যার কারণে জম্মু ও কাশ্মীরের পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিধসের ঘটনা ঘটছে। প্রবল বর্ষণে ঝিলাম নদীর পানি অনেক বেড়ে যাওয়ায় রোববার শ্রীনগরের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে স্থানীয় লোকজন বাধ্য হয়ে ঘরবাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছে। জানা গেছে, বন্যায় একটি শিশু হাসপাতালের একতলা পর্যন্ত ডুবে গেছে। আটকে পড়া এসব লোকজনকে উদ্ধারে রাজ্যে হাজার হাজার সৈন্য, পুলিশ ও অন্যান্য জরুরি বিভাগের কর্মীদের মোতায়েন করা হয়েছে। বন্যায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১৪ হাজার ৮০০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। জম্মু অঞ্চলের পুলিশ মহাপরিদর্শক রাজেশ কুমার এএফপিকে বলেন, 'এখনো সেখানে হাজার হাজার লোক আটকা পড়া অবস্থায় রয়েছে এবং আমরা কয়েক হাজার লোককে ইতোমধ্যে উ"ার করেছি।' তিনি আরো বলেন, বন্যায় এ পর্যন্ত দেড় শতাধিক লাশ উ"ার করা হয়েছে। সেখানে উ"ার তৎপরতা অব্যাহত থাকায় এতে কত লোকের প্রাণহানি ঘটেছে তার সঠিক সংখ্যা এখন বলা যাচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বন্যা কবলিত অঞ্চল পরিদর্শন করেন এবং এব্যাপারে শীর্ষ ত্রাণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে দিক নির্দেশনা দেন।
তিনি বন্যা পরিস্থিতিকে 'জাতীয় দুর্যোগ' হিসেবে অভিহিত করেন। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ভারতীয় কাশ্মীরে ব্যাপক বন্যায় লোকজনকে গলা পর্যন্ত পানি ভেঙে তাদের মালামাল নিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া অনেক লোক তাদের বাড়ির ছাদে আটকা পড়া অবস্থায় থাকতে এবং সেনাবাহিনীর নৌকায় নিরাপদ স্থানে চলে যেতে দেখা গেছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বলেন, সেখানে এ ধরনের বন্যা নজিরবিহীন। তবে তিনি লোকজনকে আতংকিত না হতে বলেন। উদ্ধার কর্মীরা পর্যায়ক্রমে তাদের সাহায্য করবে বলে তিনি জানান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, ‘আমরা এক দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি। তিনি জানান, শ্রীনগরের পুলিশ সদর দফতর প্লাবিত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এতে অনেক লোক ঘরবাড়ি ধসে মারা গেলেও অনেক ক্ষেত্রে আমরা এসবের তথ্য পাচ্ছি না।’ এছাড়া শ্রীনগরের একটি সেনা সদর দফতরও পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় অনেক সরকারি ভবন তলিয়ে গেছে। এএফপি। এদিকে, বন্যা পরিস্থিতি সরজমিনে খতিয়ে দেখতে রোববার জম্মু-কাশ্মীরে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গত ৬০ বছরের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৬০ জনের। বিমানবন্দরে মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্ধারকাজের অবস্থা নিয়ে খোঁজখবর নেন তিনি। সেখান থেকে বিমান পথে বন্যা প্রভাবিত এলাকা ঘুরে দেখেন। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছে স্থলসেনা ও বিমানসেনারা। ৭৫ থেকে ১০০ জনের বাহিনী করে ১৮৪টি দল নিযুক্ত রয়েছে উদ্ধারের কাজে। শ্রীনগরে লাল চক এলাকায় পানির স্তর ৮ ফুট উঁচুতে বইছে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
No comments