ইস্তাম্বুলের বিপণিকেন্দ্রের প্রকল্প স্থগিত ঘোষণা
তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান গতকাল শুক্রবার ইস্তাম্বুলে
পার্ক ধ্বংস করে বিপণিকেন্দ্র নির্মাণের বিতর্কিত প্রকল্প স্থগিত করার
ঘোষণা দিয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা তাঁর এই পদক্ষেপকে ‘ইতিবাচক’ বলে স্বাগত
জানিয়েছে। দুই সপ্তাহ আগে ইস্তাম্বুলের তাকসিম স্কয়ারের গেজি পার্ক ধ্বংস
করে ওই বিপণিকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হয়।
পরে তা সরকারবিরোধী বিক্ষোভে রূপ নেয়। প্রধানমন্ত্রী এরদোয়ান
বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন। পুলিশ কঠোরভাবে বিক্ষোভকারীদের
মোকাবিলা করে এবং একপর্যায়ে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে তাদের হটিয়ে দেয়।
গতকালও প্রধানমন্ত্রী এরদোয়ান বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি
উচ্চারণ করেন। তবে এর কয়েক ঘণ্টা পরই তিনি বিক্ষোভের নেতৃত্বে থাকা তাকসিম
সলিডারিটি গ্রুপের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। চার ঘণ্টার বৈঠকে এরদোয়ান
সরকারের পরিকল্পনা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখতে সম্মত হন। তাকসিম সলিডারিটি
গ্রুপের মুখপাত্র তেইফুন কাহরামান বলেন, ‘আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার
আগ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পটি স্থগিত রাখার বিষয়ে রাজি হয়েছেন। এটা
খুবই ইতিবাচক পদক্ষেপ।’ বৈঠকের পর উপপ্রধানমন্ত্রী হুসেইন সেলিক
সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে সরকার প্রকল্প স্থগিত
রাখবে। একই সঙ্গে পার্কের ভাগ্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে সরকার গণভোটের ওপর জোর
দিয়েছে। তিনি বলেন, আদালতের সিদ্ধান্ত আসতে কয়েক মাস লেগে যাওয়ার কথা।
বিক্ষোভকারীদের হটাতে গিয়ে পুলিশ বাড়াবাড়ি করেছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে
এরই মধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। কঠোর হাতে বিক্ষোভ দমনের ঘটনায়
যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানিসহ পশ্চিমা দেশগুলো তুরস্কের সমালোচনা করেছে। তারা
সংলাপের মাধ্যমে সংকট নিরসনের আহ্বান জানায়। গত ৩১ মে ইস্তাম্বুলের গেজি
পার্কের ৬০০ গাছ কেটে সেখানে বিপণিকেন্দ্র নির্মাণের সরকারি পরিকল্পনার
বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভ ক্রমে রাজধানী আঙ্কারাসহ দেশের বিভিন্ন
স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবাদকারীরা প্রধানমন্ত্রী এরদোয়ান ও তাঁর
জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একেপি) বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ প্রদর্শন
করে। বৃহস্পতিবার একেপির ডেপুটি চেয়ারম্যান হুসেইন সেলিক বলেছেন, গেজি
পার্ক ধ্বংস করে ওই বিপণিকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনার বিষয়ে গণভোট হলে
সরকারের সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটবে এবং বিক্ষোভকারীরাও ঘরে ফিরে যাবেন। এএফপি।
No comments