অনলাইন থেকে-জাপানের ঈর্ষা
ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে প্রচারিত একটি চীনা
নিবন্ধে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে ওবামা এবং শি জিংপিংয়ের মধ্যে আলোচনায়
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ঈর্ষান্বিত হয়েছেন।
কমিউনিস্ট
পার্টির মুখপত্র পিপলস ডেইলিতে প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট
শি জিংপিং ওবামার সঙ্গে দুই দিন বৈঠক করেছেন। অথচ ফেব্রুয়ারিতে জাপানি
প্রধানমন্ত্রী আবের সফরের সময় মাত্র মধ্যাহ্নভোজের অভ্যর্থনা জুটেছে। শুধু
যে পিপলস ডেইলি বলেছে তা-ই নয়, প্রখ্যাত চীনা নিবন্ধকার দু পিং হংকংয়ের
ফিনিক্স টিভিকে বলেছেন, ক্যালিফোর্নিয়ার বৈঠক জাপানি প্রধানমন্ত্রীকে
উদ্বিগ্ন করেছে। তিনি মনে করছেন, ওবামা ও শির মাঝে একটি গোপন সমঝোতা হয়ে
থাকতে পারে পূর্ব চীনে অবস্থিত বিতর্কিত দ্বীপটির ভবিষ্যৎ নিয়ে, যেটি
জাপানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, চীন কিন্তু তাকে তার নিজের অঞ্চল বলে দাবি করে
আসছে। চায়নিজ ওয়েবসাইটের একটি নিবন্ধে বলা হয়েছে, 'জাপান মনে করছে যে
যুক্তরাষ্ট্র তাদের সঙ্গে বেইমানি করতে পারে এবং দ্বীপটি নিয়ে তাদের
অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে।'
ওবামা-শির বৈঠক থেকে জাপানের উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে, এটি জাপানের প্রতি আমেরিকার সমর্থনকে দুর্বল করতে পারে, বিশেষ করে ওই ছোট্ট দ্বীপ ইস্যুতে।
বেইজিং দক্ষিণ চীন সাগরে বিস্তৃত অঞ্চল নিজেদের বলে দাবি করছে। এর মধ্যে রয়েছে জলসীমা এবং স্থল এলাকা, যার ওপর তাইওয়ান এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার পাঁচটি দেশের দাবি রয়েছে।
আলোচনায় অনেক প্রশ্ন উঠেছে। জাপানের প্রতি সমর্থন কি অন্য আঞ্চলিক স্বার্থের প্রতি তুরুপ হিসেবে কাজ করবে? যুক্তরাষ্ট্র কি জাপানের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে?
দুই নেতার আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা টমাস ডোনিলোন রিপোর্টারদের কাছে বলেছেন, 'ওবামা চীনা নেতাকে পূর্ব চীন সাগরে উত্তেজনা প্রশমনের জন্য চাপ দিয়েছেন। বলেছেন, উভয় পক্ষের কূটনৈতিক চ্যানেলের মধ্য দিয়ে আলোচনা চালানো উচিত, কোনো অ্যাকশনে না গিয়ে।'
আমেরিকার প্রচারমাধ্যমের মতোই চীনের প্রচারমাধ্যম এই সম্মেলনকে কাজে লাগিয়েছে দুই দেশের মধ্যে অতীতের আলোচনার বিষয়গুলো তুলে আনতে। যেমন- ১৯৭২ সালে রিচার্ড নিক্সন চীন সফরে গিয়েছিলেন। ১৯৭৯ সালে দেং জিয়াও পিং যুক্তরাষ্ট্রে সৌজন্য সফর করেছিলেন।
যদি চীন দিয়াউ দ্বীপটি দখল করে নেয়, তাহলে এটাই সাম্প্রতিক ইতিহাসের প্রথম বিষয় হবে না যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জোটবদ্ধ একটি দেশের কাছ থেকে অঞ্চল দখল করে নেওয়া। চীন অলিখিতভাবে ম্যানিলা থেকে ২০০ মাইল দূরের স্কোরবোরোতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। এটি ২০১২ সাল পর্যন্ত ফিলিপাইনেরই ছিল। দুই মাস স্থবির অবস্থা থাকার পর ওয়াশিংটন মধ্যস্থতা করেছিল যে দুই পক্ষই সরে আসবে। কিন্তু চীন এ মধ্যস্থতার কথা রাখেনি।
গত সপ্তাহে আমি প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তাকে একটি সাক্ষাৎকারে জিজ্ঞেস করেছিলাম, চীন আক্রমণ করলে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসবে কি না। তিনি উত্তরে বলেছেন, 'সেটাই তাদের জন্য বিশ্বাস করাটা ভালো।' তিনি বললেন, 'অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, যুক্তরাষ্ট্র এমন সম্পর্ক বজায় রাখছে, যাতে অবস্থা ওই পর্যায়ে না যায়।'
চীন যদি জাপানের ওই দ্বীপ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়, তাহলে তা ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধের ঝুঁকি নেবে কি?
লেখক : আইজ্যাক স্টোন ফিস। নিউ ইয়র্ক টাইমস থেকে ঈষৎ সংক্ষেপিত
ভাষান্তর : মহসীন হাবিব
ওবামা-শির বৈঠক থেকে জাপানের উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে, এটি জাপানের প্রতি আমেরিকার সমর্থনকে দুর্বল করতে পারে, বিশেষ করে ওই ছোট্ট দ্বীপ ইস্যুতে।
বেইজিং দক্ষিণ চীন সাগরে বিস্তৃত অঞ্চল নিজেদের বলে দাবি করছে। এর মধ্যে রয়েছে জলসীমা এবং স্থল এলাকা, যার ওপর তাইওয়ান এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার পাঁচটি দেশের দাবি রয়েছে।
আলোচনায় অনেক প্রশ্ন উঠেছে। জাপানের প্রতি সমর্থন কি অন্য আঞ্চলিক স্বার্থের প্রতি তুরুপ হিসেবে কাজ করবে? যুক্তরাষ্ট্র কি জাপানের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে?
দুই নেতার আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা টমাস ডোনিলোন রিপোর্টারদের কাছে বলেছেন, 'ওবামা চীনা নেতাকে পূর্ব চীন সাগরে উত্তেজনা প্রশমনের জন্য চাপ দিয়েছেন। বলেছেন, উভয় পক্ষের কূটনৈতিক চ্যানেলের মধ্য দিয়ে আলোচনা চালানো উচিত, কোনো অ্যাকশনে না গিয়ে।'
আমেরিকার প্রচারমাধ্যমের মতোই চীনের প্রচারমাধ্যম এই সম্মেলনকে কাজে লাগিয়েছে দুই দেশের মধ্যে অতীতের আলোচনার বিষয়গুলো তুলে আনতে। যেমন- ১৯৭২ সালে রিচার্ড নিক্সন চীন সফরে গিয়েছিলেন। ১৯৭৯ সালে দেং জিয়াও পিং যুক্তরাষ্ট্রে সৌজন্য সফর করেছিলেন।
যদি চীন দিয়াউ দ্বীপটি দখল করে নেয়, তাহলে এটাই সাম্প্রতিক ইতিহাসের প্রথম বিষয় হবে না যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জোটবদ্ধ একটি দেশের কাছ থেকে অঞ্চল দখল করে নেওয়া। চীন অলিখিতভাবে ম্যানিলা থেকে ২০০ মাইল দূরের স্কোরবোরোতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। এটি ২০১২ সাল পর্যন্ত ফিলিপাইনেরই ছিল। দুই মাস স্থবির অবস্থা থাকার পর ওয়াশিংটন মধ্যস্থতা করেছিল যে দুই পক্ষই সরে আসবে। কিন্তু চীন এ মধ্যস্থতার কথা রাখেনি।
গত সপ্তাহে আমি প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তাকে একটি সাক্ষাৎকারে জিজ্ঞেস করেছিলাম, চীন আক্রমণ করলে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসবে কি না। তিনি উত্তরে বলেছেন, 'সেটাই তাদের জন্য বিশ্বাস করাটা ভালো।' তিনি বললেন, 'অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, যুক্তরাষ্ট্র এমন সম্পর্ক বজায় রাখছে, যাতে অবস্থা ওই পর্যায়ে না যায়।'
চীন যদি জাপানের ওই দ্বীপ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়, তাহলে তা ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধের ঝুঁকি নেবে কি?
লেখক : আইজ্যাক স্টোন ফিস। নিউ ইয়র্ক টাইমস থেকে ঈষৎ সংক্ষেপিত
ভাষান্তর : মহসীন হাবিব
No comments