নজরদারিতে ধর্মভিত্তিক ৪০ দল, অভিযোগ জঙ্গি সম্পৃক্ততার by ইমরান আলী ও নূর মোহাম্মদ
জঙ্গি
সম্পৃক্ততার অভিযোগে দেশের ধর্মভিত্তিক অন্তত ৪০টি দল গোয়েন্দা নজরদারিতে
রয়েছে। এসব দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা জনসাধারণকে ভুল তথ্য দিয়ে উত্তেজিত
করছে, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
রাজধানীর বায়তুল মোকাররম ও চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক এই সব দলের কর্মকাণ্ড নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহিদুল হক বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘ধর্মভিত্তিক দলগুলোর ব্যাপারে গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে তাদের কর্মকাণ্ড সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হয়ে থাকে। এখনো করা হচ্ছে। তারা যেন সংগঠিত হয়ে কোনো ধরনের নাশকতা করতে না পরে সে ব্যাপারে পুলিশ বাহিনী সচেষ্ট রয়েছে।’’
গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মভিত্তিক অন্তত ৪০টি দল গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছে। এই সব দল সাধারণ মানুষদের নানাভাবে ভুল তথ্য জনগণের কাছে উপস্থাপন করে বিভ্রান্ত করছে। একই সঙ্গে তারা জনগণকে উস্কে দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে উৎসাহিত করছে।
যে ৪০টি দল গোয়েন্দা নজরদারিতে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- ইন্টারন্যাশনাল খতমে নবুয়াত মুভমেন্ট, আরাকান রোহিঙ্গা ফোর্স, ইসলামিক সলিডারিটি ফ্রন্ট, আরাকান পিপলস আর্মি, লিবারেশন মিয়ানমার ফোর্স, আরাকান মুজাহিদ পার্টি, রোহিঙ্গা ইনডিপেডেন্স ফোর্স, রোহিঙ্গা ইনডিপেন্ডেন্স আর্মি, রোহিঙ্গা প্যাট্রিয়টিক ফ্রন্ট আল হারাত আল ইসলামিয়া, তাওহিদী জনতা, বিশ্ব ইসলামী ফ্রন্ট, জুম্মাতুল আল সাদাত, শাহাদাৎ-ই নবুয়াত, আল্লাহর দল, ইসলামিক ফ্রন্ট, জামাত আস সাদাত, আল খিদমাত, হিজুবুল্লাহ ইসলামী সমাজ, মুসলিম মিল্লাত, শরিয়া কাউন্সিল, আহলে হাদিস আন্দোলন বাংলাদেশ, দাওয়াতী কাফেলা, হিজবুল মাহদি, বাংলাদেশ সন্ত্রাস বিরোধী দল, আল ইসলাম মর্টিয়ার্স ব্রিগেড, জমিয়তে আহলে হাদিস আন্দোলন, জামিয়াতুল এহজিয়া উতরাজ, হায়াতুর ইলাহা, সত্যবাদ, আনজুমানে তালামিজে ইসলামিয়া, কালেমার জামাত, তানজীর বাংলাদেশ, ফোরকান মুভমেন্ট, সাহাবা পরিষদ, কেতাল বাহিনী, এসহার বাহিনী, আল ফাহাদ, হরকাতুল মুজাহিদীন, মুজাহিদীন-ই তাজিম, জাদিদ আল-কায়দা, আল মারকাজুল আল ইসলামী এবং জামাতুল ফালাইয়া।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, এই দলগুলোর অবস্থান বিশেষ করে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম ও চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক। বর্তমানে চট্টগ্রামে হেফাজতে ইসলাম নামের যে দলটি আন্দোলন করছে এই দলে সেখানকার কিছু অন্যান্য দলও অংশ নিয়েছে। এই দলগুলো লোকজনের কাছে নানা ভুল তথ্য উপস্থাপন করে জনগণকে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে প্ররোচিত করছে।
দেশে জামায়াতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) ও হরকাতুল জিহাদের চেয়েও উগ্রপন্থী আরেকটি গোষ্ঠী সক্রিয় হয়েছে। ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’ নামের এই গোষ্ঠী বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে পরিচিত আল-কায়েদার মতাদর্শ অনুসরণ করে।
সম্প্রতি ঢাকায় ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির পাঁচ ছাত্র এই গোষ্ঠীর অনুসারী। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তাঁদের দেওয়া তথ্য থেকেই কট্টরপন্থী এই গোষ্ঠীর বিষয়ে প্রথম জানতে পারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাদের বিষয়েও সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে গোয়েন্দাদের।
র্যাবের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বাংলানিউজকে জানায়, র্যাবের জঙ্গি দমন সংক্রান্ত পৃথক একটি সেল রয়েছে। ওই সেলের মাধ্যমে সারাদেশে জঙ্গী তৎপরতার খবর সংগ্রহ করা হয়। বর্তমানে বায়তুল মোকাররম ও চট্টগ্রামের কিছু ধর্মভিত্তিক দলের কর্মকাণ্ড নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
No comments