‘হলমার্ক নিয়ে বুদ্ধিজীবীদের মতামত রাবিশ’
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন,
হলমার্ক নিয়ে বুদ্ধিজীবীরা হৈচৈ শুরু করেছেন। ওইসব বুদ্ধিজীবিদের চরিত্রই
হৈচৈ করা। যারা এ চিৎকার-চেচামেচি করেন তারা দেশের মঙ্গল চান না। এরা দেশের
শত্রু।
বুদ্ধিজীবী ও ব্যাংকারদের এসব কথাবার্তা ‘রাবিশ’ ও
‘বোগাস’ উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, যে যাই বলুক বাংলাদেশের ইতিহাসে
এটাই সবচেয়ে ভাল সময়। এ সময় তিনি বলেন, দুষ্টু প্রতিষ্ঠান হলমার্ক
জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করেছে। হলমার্কের এমডি জেলে
রয়েছে, তার শাস্তি হবেই। তিনি বলেন, বিরোধীদলীয় নেত্রী যা যা করছেন তা
দেশের স্বার্থে নয়, এটা পুরোপুরি দেশের সঙ্গে শত্রুতা। খালেদা জিয়া জঙ্গি
হিংস্র, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জামায়াত-শিবিরের পৃষ্ঠপোষক, রক্ষাকর্তা ও
আশ্রয়দাতা হিসেবে কাজ করছেন। গতকাল সকালে সিলেটের মদিনা মার্কেটে রূপালী
ব্যাংকের ৫১৩তম শাখা উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, হেফাজতে ইসলামকে কাজে লাগিয়ে জামায়াত-শিবির তাদের
উদ্দেশ্য হাসিল করছে। তাদের আমরা ধর্ম ব্যবসায়ী বলছি না, তবে তারা
জামায়াতের পথে হাঁটছে। অর্থমন্ত্রী হেফাজতে ইসলামকে সতর্ক থাকার আহ্বান
জানান। একদিনের সংক্ষিপ্ত সফরে এসে অর্থমন্ত্রী পরে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে
সিলেট জেলা প্রশাসন আয়োজিত দুর্নীতি বিরোধী সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে
যোগদান করেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সিলেট সিটি
কর্পোরেশনের মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, অর্থমন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং ও
আর্থিক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব অমলেন্দু মুখার্জি, রূপালী ব্যাংকের
চেয়ারম্যান ড. আহমদ আল কবির, রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম ফরিদ
আহমদ প্রমুখ। রূপালী ব্যাংকের ৫১৩তম ও সিলেটে ৪৫তম এ শাখাটি উদ্বোধন করা হয়
নগরীর মদীনা মার্কেট এলাকায়। অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী সম্প্রতি সন্ত্রাসী
হামলায় নিহত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য জগৎজ্যোতি তালুকদারের
স্ত্রী সুবিতা রাণী ধরকে রূপালী ব্যাংকের উদ্বোধন হওয়া মদীনা মার্কেট
শাখার মার্কেটিং অফিসার হিসেবে নিয়োগপত্র প্রদান করেন। পরে মন্ত্রী
দুর্নীতি প্রতিরোধ সপ্তাহ উপলক্ষে সিলেট জেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভায়
প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। এ সময় তিনি বলেন, উচ্চ পর্যায়ে দুর্নীতি
প্রতিরোধে সরকার যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছে। তবে নিচ লেভেলে এখনও দুর্নীতি
হয়। অর্থমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি সবসময়ই হয়ে থাকে। মুগল আমল, বৃটিশ আমলেও
কমবেশি দুর্নীতি হয়েছে। তবে সেবার পরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতির হারও
বেড়েছে। তিনি বলেন, উচ্চ পর্যায়ে দুর্নীতি কমলেও নিচ লেভেলে এখনও দুর্নীতি
হয়ে থাকে। এজন্য তিনি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেন,
দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদককে জনশ্রতিতে বিচার করতে হবে। এছাড়া সর্বক্ষেত্রে
ই-গভর্নেন্স চালু করতে পারলে সব ধরনের দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব হবে। দুদকের
সহযোগিতা জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা
প্রশাসক খান মোহাম্মদ বিলাল। বক্তব্য রাখেন দুদকের মহাপরিচালক কামরুল ইসলাম
মোল্লা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিটি করপোরেশনের মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ
কামরান, সিলেট জেলা পরিষদ প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুজ জহির
চৌধুরী সুফিয়ান, মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী এমপি, শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি,
সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, দুদক সিলেটের উপ-পরিচালক জালাল
উদ্দিন আহমদ, সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেন প্রমুখসহ দুদকের সংশ্লিষ্ট
কর্মকর্তা ও প্রশাসনের নেতৃবৃন্দ। অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, সারা পৃথিবীতে
ব্যাংকিং খাতে জালিয়াতি ও দুষ্টামি হয়। বাংলাদেশেও হয়েছে। তবে এটা ভয়ঙ্কর
তেমন কিছু নয়।
No comments