মিসরের অস্থিরতা যুক্তরাষ্ট্রের দুর্বলতা প্রকাশ করে দিয়েছে
মিসরসহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য এলাকা ও উত্তর আফ্রিকার কয়েকটি দেশের সাম্প্রতিক অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্টতই ব্যর্থ হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁরা বলছেন, এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিমত্তার খোলস খসে পড়ছে। ওই সব এলাকায় জনরোষ থেকে মিত্রদের রক্ষা করার ক্ষমতা যে যুক্তরাষ্ট্র হারিয়ে ফেলছে, ক্রমশ তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের একটা বড় অংশ মনে করেন, ১৯৯০-এর দশকে ইরাকের সেনাবাহিনী কুয়েত দখল করার পর মার্কিন বাহিনী তাদের যেভাবে কুয়েত থেকে বিতাড়িত করেছিল এবং আরব দেশগুলোকে ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসতে বাধ্য করেছিল, সেই দাপট এখন আর যুক্তরাষ্ট্রের নেই। ৯/১১-এর ঘটনার জের ধরে ইরাক ও আফগানিস্তানে হামলা করার পর থেকেই ওয়াশিংটনের শক্তিমত্তা কমতে থাকে। যতই দিন যাচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যে তার প্রভাব ততই কমছে।
মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তিউনিসিয়া, মিসর, ইয়েমেন ও জর্ডানের সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে সাধারণ জনগণ। এ চার দেশের সরকারপ্রধানই ওয়াশিংটনের সমর্থনপুষ্ট। অন্য দিকে ইরান ও সিরিয়াপন্থীদের অনাস্থার কারণে লেবাননে মার্কিনপন্থী সরকার ভেঙে গেছে।
গত এক দশকে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনার প্রধান মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ওয়াশিংটন কাজ করে আসছে। এত দিন যুক্তরাষ্ট্রকে পাশ কাটিয়ে ফিলিস্তিন এ বিষয়ে এক পা-ও এগোনোর সাহস করেনি। অথচ গত বছর শান্তি আলোচনা ভেঙে যাওয়ার পর থেকে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ওয়াশিংটনের দ্বারস্থ না হয়ে সরাসরি জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে আলোচনা করছেন। এ বিষয়কেও বিশ্লেষকেরা যুক্তরাষ্ট্রের দুর্বলতার একটি বড় ধরনের লক্ষণ বলে মনে করছেন।
মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ শিবলি তেলহামি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব কমার ফলে সেখানে যে কর্তৃত্বশূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে তুরস্ক, কাতার ও সৌদি আরবের মতো দেশগুলো তা পূরণ করার চেষ্টা করছে। এসব দেশ সেখানে তাদের প্রভাব বাড়ানোর জন্য জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তেলহামি বলেন, ৯/১১-এর পর দৃশ্যপট দ্রুত বদলাতে শুরু করে। ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধ করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হাজার হাজার সেনার প্রাণহানি ঘটে এবং কোটি কোটি ডলার ব্যয় হয়। জনবল ও অর্থবল কমে যাওয়ার পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে আমেরিকা-বিদ্বেষ। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ববাসীর নৈতিক সমর্থন হারিয়ে ফেলে। আর এ সুযোগ সবচেয়ে ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে ইরান। ইরানের ব্যাপারে খোদ যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, ইরাক ও আফগানিস্তানের রাজনৈতিক ব্যাপারে ইরানের বড় ধরনের হস্তক্ষেপ রয়েছে। লেবাননের সরকারবিরোধী হিজবুল্লাহ এবং ফিলিস্তিনের হামাস ও ইসলামিক জিহাদকে ইরান মদদ জুগিয়ে যাচ্ছে।
কার্নেগি এনডোমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের গবেষক ম্যারিনা ওয়াট্টাওয়ে বলেন, তিনি মনে করেন, এ মুহূর্তে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের যতটা প্রভাব আছে, ইরানের ঠিক ততটাই রয়েছে।
ওয়াট্টাওয়ে বলেন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ শুধু যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব প্রদর্শনের জন্য লেবানন থেকে সিরিয়ার সেনাবাহিনী তাড়িয়েছিলেন। তাঁর মতে, ওই ঘটনা সেখানকার পরিস্থিতিকে এখনো জটিল করে রেখেছে। সিরিয়া আবার লেবাননের এলাকা দখল করা চেষ্টা চালাচ্ছে।
১২ জানুয়ারি ইরানপন্থী হিজবুল্লাহ ও কয়েকটি দল অনাস্থা দেওয়ার কারণে লেবাননের মার্কিনপন্থী সাদ হারিরির সরকার ভেঙে যায়। এ ক্ষেত্রে নিজের মিত্রকে রক্ষা করার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের তেমন কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি।
মধ্যপ্রাচ্য শান্তিপ্রক্রিয়ার সাবেক মধ্যস্থতাকারী ডেভিড মিলার বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্য শান্তিপ্রক্রিয়া নিজেদের অনুকূলে রাখতে যুক্তরাষ্ট্র মিসরের বর্তমান প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারককে সব সময়ই কাজে লাগিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের মদদ দেওয়ার কথা। কিন্তু পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, মিসরে যা ঘটছে, তার মূল নিয়ন্তা যুক্তরাষ্ট্র নয়। তিনি মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা সম্পর্কে জনমনে যে বিশাল ধারণা রয়েছে, ধীরে ধীরে তা খর্ব হচ্ছে। বিশ্ববাসীর কাছে ওয়াশিংটনের দুর্বলতা ক্রমশই স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের একটা বড় অংশ মনে করেন, ১৯৯০-এর দশকে ইরাকের সেনাবাহিনী কুয়েত দখল করার পর মার্কিন বাহিনী তাদের যেভাবে কুয়েত থেকে বিতাড়িত করেছিল এবং আরব দেশগুলোকে ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসতে বাধ্য করেছিল, সেই দাপট এখন আর যুক্তরাষ্ট্রের নেই। ৯/১১-এর ঘটনার জের ধরে ইরাক ও আফগানিস্তানে হামলা করার পর থেকেই ওয়াশিংটনের শক্তিমত্তা কমতে থাকে। যতই দিন যাচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যে তার প্রভাব ততই কমছে।
মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তিউনিসিয়া, মিসর, ইয়েমেন ও জর্ডানের সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে সাধারণ জনগণ। এ চার দেশের সরকারপ্রধানই ওয়াশিংটনের সমর্থনপুষ্ট। অন্য দিকে ইরান ও সিরিয়াপন্থীদের অনাস্থার কারণে লেবাননে মার্কিনপন্থী সরকার ভেঙে গেছে।
গত এক দশকে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনার প্রধান মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ওয়াশিংটন কাজ করে আসছে। এত দিন যুক্তরাষ্ট্রকে পাশ কাটিয়ে ফিলিস্তিন এ বিষয়ে এক পা-ও এগোনোর সাহস করেনি। অথচ গত বছর শান্তি আলোচনা ভেঙে যাওয়ার পর থেকে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ওয়াশিংটনের দ্বারস্থ না হয়ে সরাসরি জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে আলোচনা করছেন। এ বিষয়কেও বিশ্লেষকেরা যুক্তরাষ্ট্রের দুর্বলতার একটি বড় ধরনের লক্ষণ বলে মনে করছেন।
মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ শিবলি তেলহামি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব কমার ফলে সেখানে যে কর্তৃত্বশূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে তুরস্ক, কাতার ও সৌদি আরবের মতো দেশগুলো তা পূরণ করার চেষ্টা করছে। এসব দেশ সেখানে তাদের প্রভাব বাড়ানোর জন্য জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তেলহামি বলেন, ৯/১১-এর পর দৃশ্যপট দ্রুত বদলাতে শুরু করে। ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধ করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হাজার হাজার সেনার প্রাণহানি ঘটে এবং কোটি কোটি ডলার ব্যয় হয়। জনবল ও অর্থবল কমে যাওয়ার পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে আমেরিকা-বিদ্বেষ। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ববাসীর নৈতিক সমর্থন হারিয়ে ফেলে। আর এ সুযোগ সবচেয়ে ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে ইরান। ইরানের ব্যাপারে খোদ যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, ইরাক ও আফগানিস্তানের রাজনৈতিক ব্যাপারে ইরানের বড় ধরনের হস্তক্ষেপ রয়েছে। লেবাননের সরকারবিরোধী হিজবুল্লাহ এবং ফিলিস্তিনের হামাস ও ইসলামিক জিহাদকে ইরান মদদ জুগিয়ে যাচ্ছে।
কার্নেগি এনডোমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের গবেষক ম্যারিনা ওয়াট্টাওয়ে বলেন, তিনি মনে করেন, এ মুহূর্তে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের যতটা প্রভাব আছে, ইরানের ঠিক ততটাই রয়েছে।
ওয়াট্টাওয়ে বলেন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ শুধু যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব প্রদর্শনের জন্য লেবানন থেকে সিরিয়ার সেনাবাহিনী তাড়িয়েছিলেন। তাঁর মতে, ওই ঘটনা সেখানকার পরিস্থিতিকে এখনো জটিল করে রেখেছে। সিরিয়া আবার লেবাননের এলাকা দখল করা চেষ্টা চালাচ্ছে।
১২ জানুয়ারি ইরানপন্থী হিজবুল্লাহ ও কয়েকটি দল অনাস্থা দেওয়ার কারণে লেবাননের মার্কিনপন্থী সাদ হারিরির সরকার ভেঙে যায়। এ ক্ষেত্রে নিজের মিত্রকে রক্ষা করার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের তেমন কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি।
মধ্যপ্রাচ্য শান্তিপ্রক্রিয়ার সাবেক মধ্যস্থতাকারী ডেভিড মিলার বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্য শান্তিপ্রক্রিয়া নিজেদের অনুকূলে রাখতে যুক্তরাষ্ট্র মিসরের বর্তমান প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারককে সব সময়ই কাজে লাগিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের মদদ দেওয়ার কথা। কিন্তু পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, মিসরে যা ঘটছে, তার মূল নিয়ন্তা যুক্তরাষ্ট্র নয়। তিনি মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা সম্পর্কে জনমনে যে বিশাল ধারণা রয়েছে, ধীরে ধীরে তা খর্ব হচ্ছে। বিশ্ববাসীর কাছে ওয়াশিংটনের দুর্বলতা ক্রমশই স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
No comments