এখনো ম্যারাডোনায় আস্থার সংকট
ফুটবলার ম্যারাডোনা অবিসংবাদিত কিংবদন্তির মর্যাদা পান। চিরকালই পাবেন। কিন্তু কোচ ম্যারাডোনার আসন অতটা শক্তপোক্ত নয়। বরং আর্জেন্টাইনরা কিছুটা সংশয়ের মধ্যেই আছে, তূণে আর্জেন্টিনার সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে প্রতিভাধর দল, ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সেরা ফর্মে থাকা লিওনেল মেসি থাকার পরও ম্যারাডোনা কি পারবেন ২৪ বছরের অপেক্ষা ঘোচাতে! ১৯৯৪ বিশ্বকাপে ডোপ পাপের কলঙ্ক নিয়ে মাথা হেঁট করে বেরিয়ে যাওয়া ম্যারাডোনা কি পারবেন উন্নত শিরে নিজের বিশ্বকাপ প্রত্যাবর্তন স্মরণীয় করে রাখতে?
আর্জেন্টিনায় এ মুহূর্তে জরিপ হলে ম্যারাডোনার ওপর আস্থাশীলের চেয়ে আস্থার সংকটে ভোগা মানুষের সংখ্যাই হবে বেশি। আস্থাহীনতার মূল কারণ অবশ্যই ক্ষতবিক্ষত হয়ে আর্জেন্টিনার বাছাইপর্বের লড়াই পেরোনো। ম্যারাডোনার সবচেয়ে বড় সমালোচক সিজার লুই মেনোত্তি। আর্জেন্টিনাকে প্রথম জয়ের স্বাদ এনে দিয়েছিলেন এই মেনোত্তিই, ১৯৭৮ বিশ্বকাপে। সেবার ম্যারাডোনাকে বাদও দিয়েছিলেন তিনি দল থেকে।
সেই থেকে ম্যারাডোনা-মেনোত্তির বনিবনা নেই। ৩২ বছর আগে ম্যারাডোনার ওপর আস্থা রাখতে পারেননি। মেনোত্তি আজও রাখতে পারছেন না, ‘আর্জেন্টিনা দলটাকে দেখে মনে হচ্ছে, কী করতে হবে এ সম্পর্কে ওদের কোনো ধারণাই নেই। বিভ্রান্ত এবং বিশৃঙ্খল।’
মেনোত্তি পাশে পাচ্ছেন দেশটির মিডিয়াকেও, যাদের সঙ্গে ম্যারাডোনার সম্পর্কটাও অম্লমধুর। অবশ্য সবাই যে ম্যারাডোনার বিরুদ্ধে, এমন নয়। আর্জেন্টাইন ক্রীড়া দৈনিক ওলে যেমন আশার আলো দেখছে সুড়ঙ্গের শেষ প্রান্তে, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপসংহার হলো, দলটা অবশেষে খেলার একটা দর্শন খুঁজে পেয়েছে। হয়তো তর্কসাপেক্ষ, কিন্তু নিশ্চিতভাবে নির্দিষ্ট একটা দর্শন তারা পেয়েছে।’
এই দলের মধ্যে ম্যারাডোনা সবচেয়ে বেশি ভরসা রাখেন; না মেসি নন, হুয়ান সেবাস্তিয়ান ভেরনের ওপর। ভেরনের অভিজ্ঞতা আর প্রজ্ঞাকে সব সময়ই সমীহ করেছেন। সেই ভেরনও বলছেন, ‘আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে। প্রতিটি বিষয়ে, প্রতিটি ক্ষেত্রে। গভীরভাবে বিশ্লেষণ করতে হবে, কারণ এমন অনেক কিছুই আছে, যেগুলো ঠিকমতো ফল দেয়নি।’
বাছাইপর্বের সংকট যে ম্যারাডোনার হাতে তৈরি, তা কিন্তু নয়। পূর্বসূরি আলফিও বাসিলেই দলের ফাটল উপহার দিয়ে গেছেন ম্যারাডোনাকে। ম্যারাডোনার হাতে দায়িত্বভার দিয়েও সেই সংকট থেকে মুক্তি মেলেনি। তবে বাছাইপর্ব বাদে প্রীতি ম্যাচগুলোয় কিন্তু দারুণ খেলেছে আর্জেন্টিনা। ফ্রান্স-জার্মানির মতো দলকে তাদের মাঠে গিয়ে হারিয়ে এসেছে। সামগ্রিকভাবে দেখলে কোচ ম্যারাডোনার সাফল্যের হারও কম নয়। ১৮ ম্যাচের ১৩টিই জিতিয়েছেন, হেরেছেন ৫টিতে। সাফল্যের হার ৭২.২২ শতাংশ।
আর তাই অন্তত ম্যারাডোনা নিজের ওপর থেকে আস্থা হারাচ্ছেন না, ‘আমি আত্মবিশ্বাসী, না হলে আমি এই দায়িত্ব নিতামই না। এত কিছুর পরও আমি বলছি, সামনে আমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ।’
‘এত কিছুর পরও’ মানে বাছাইপর্বের সংগ্রাম। ম্যারাডোনা চাইলে এই উদাহরণও দিতে পারতেন, বাছাইপর্বের ফলাফলের নিরিখে মূল আসরের সাফল্য-ব্যর্থতার বিচার অন্তত আর্জেন্টিনাকে দিয়ে চলে না। ২০০২ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে কী দুর্দান্তই না খেলল (১৮ ম্যাচে মাত্র এক পরাজয়)। অথচ সেবার বিশ্বকাপে তারা বাদ পড়ে গেল গ্রুপ পর্বেই! আর ১৯৮৬ বিশ্বকাপের কথা ধরুন। সেবারও এমন হামাগুড়ি দিয়ে চূড়ান্ত পর্বের টিকিট পেয়েছিল দল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ট্রফি উঠল আর্জেন্টিনার হাতেই।
বলতে পারেন, সেবার যে একজন ডিয়েগো ম্যারাডোনা ছিল দলে। যিনি একাই জেতাতে পারতেন ম্যাচ। ‘আমারও একজন ম্যারাডোনা আছে, নাম তার লিওনেল মেসি’—উত্তরটা কোচ ম্যারাডোনার!
আর্জেন্টিনায় এ মুহূর্তে জরিপ হলে ম্যারাডোনার ওপর আস্থাশীলের চেয়ে আস্থার সংকটে ভোগা মানুষের সংখ্যাই হবে বেশি। আস্থাহীনতার মূল কারণ অবশ্যই ক্ষতবিক্ষত হয়ে আর্জেন্টিনার বাছাইপর্বের লড়াই পেরোনো। ম্যারাডোনার সবচেয়ে বড় সমালোচক সিজার লুই মেনোত্তি। আর্জেন্টিনাকে প্রথম জয়ের স্বাদ এনে দিয়েছিলেন এই মেনোত্তিই, ১৯৭৮ বিশ্বকাপে। সেবার ম্যারাডোনাকে বাদও দিয়েছিলেন তিনি দল থেকে।
সেই থেকে ম্যারাডোনা-মেনোত্তির বনিবনা নেই। ৩২ বছর আগে ম্যারাডোনার ওপর আস্থা রাখতে পারেননি। মেনোত্তি আজও রাখতে পারছেন না, ‘আর্জেন্টিনা দলটাকে দেখে মনে হচ্ছে, কী করতে হবে এ সম্পর্কে ওদের কোনো ধারণাই নেই। বিভ্রান্ত এবং বিশৃঙ্খল।’
মেনোত্তি পাশে পাচ্ছেন দেশটির মিডিয়াকেও, যাদের সঙ্গে ম্যারাডোনার সম্পর্কটাও অম্লমধুর। অবশ্য সবাই যে ম্যারাডোনার বিরুদ্ধে, এমন নয়। আর্জেন্টাইন ক্রীড়া দৈনিক ওলে যেমন আশার আলো দেখছে সুড়ঙ্গের শেষ প্রান্তে, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপসংহার হলো, দলটা অবশেষে খেলার একটা দর্শন খুঁজে পেয়েছে। হয়তো তর্কসাপেক্ষ, কিন্তু নিশ্চিতভাবে নির্দিষ্ট একটা দর্শন তারা পেয়েছে।’
এই দলের মধ্যে ম্যারাডোনা সবচেয়ে বেশি ভরসা রাখেন; না মেসি নন, হুয়ান সেবাস্তিয়ান ভেরনের ওপর। ভেরনের অভিজ্ঞতা আর প্রজ্ঞাকে সব সময়ই সমীহ করেছেন। সেই ভেরনও বলছেন, ‘আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে। প্রতিটি বিষয়ে, প্রতিটি ক্ষেত্রে। গভীরভাবে বিশ্লেষণ করতে হবে, কারণ এমন অনেক কিছুই আছে, যেগুলো ঠিকমতো ফল দেয়নি।’
বাছাইপর্বের সংকট যে ম্যারাডোনার হাতে তৈরি, তা কিন্তু নয়। পূর্বসূরি আলফিও বাসিলেই দলের ফাটল উপহার দিয়ে গেছেন ম্যারাডোনাকে। ম্যারাডোনার হাতে দায়িত্বভার দিয়েও সেই সংকট থেকে মুক্তি মেলেনি। তবে বাছাইপর্ব বাদে প্রীতি ম্যাচগুলোয় কিন্তু দারুণ খেলেছে আর্জেন্টিনা। ফ্রান্স-জার্মানির মতো দলকে তাদের মাঠে গিয়ে হারিয়ে এসেছে। সামগ্রিকভাবে দেখলে কোচ ম্যারাডোনার সাফল্যের হারও কম নয়। ১৮ ম্যাচের ১৩টিই জিতিয়েছেন, হেরেছেন ৫টিতে। সাফল্যের হার ৭২.২২ শতাংশ।
আর তাই অন্তত ম্যারাডোনা নিজের ওপর থেকে আস্থা হারাচ্ছেন না, ‘আমি আত্মবিশ্বাসী, না হলে আমি এই দায়িত্ব নিতামই না। এত কিছুর পরও আমি বলছি, সামনে আমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ।’
‘এত কিছুর পরও’ মানে বাছাইপর্বের সংগ্রাম। ম্যারাডোনা চাইলে এই উদাহরণও দিতে পারতেন, বাছাইপর্বের ফলাফলের নিরিখে মূল আসরের সাফল্য-ব্যর্থতার বিচার অন্তত আর্জেন্টিনাকে দিয়ে চলে না। ২০০২ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে কী দুর্দান্তই না খেলল (১৮ ম্যাচে মাত্র এক পরাজয়)। অথচ সেবার বিশ্বকাপে তারা বাদ পড়ে গেল গ্রুপ পর্বেই! আর ১৯৮৬ বিশ্বকাপের কথা ধরুন। সেবারও এমন হামাগুড়ি দিয়ে চূড়ান্ত পর্বের টিকিট পেয়েছিল দল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ট্রফি উঠল আর্জেন্টিনার হাতেই।
বলতে পারেন, সেবার যে একজন ডিয়েগো ম্যারাডোনা ছিল দলে। যিনি একাই জেতাতে পারতেন ম্যাচ। ‘আমারও একজন ম্যারাডোনা আছে, নাম তার লিওনেল মেসি’—উত্তরটা কোচ ম্যারাডোনার!
No comments