‘ওবামাকে কি হত্যা করা উচিত?’ -খোলা চোখে by হাসান ফেরদৌস
ইন্টারনেট-ভিত্তিক জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ সাইট ‘ফেসবুক’-এ এই রকম একটি প্রশ্ন রাখা হয়েছে। উদ্দেশ্য, জনমত জরিপ করে দেখা কত লোক এই প্রশ্নের পক্ষে বা বিপক্ষে। অন্য যেকোনো সময় হলে চমকে উঠতাম, কিন্তু এখন বিন্দুমাত্র অবাক হইনি এমন খবরে। ঘটনাটা ফাঁস হওয়ামাত্রই ইন্টারনেট থেকে অবশ্য সে প্রশ্ন সরিয়ে ফেলা হয়। এই প্রশ্ন কে রেখেছে বা কেন তাও এখনো জানা যায়নি। তবে আমেরিকার অতি দক্ষিণপন্থী কোনো কোনো মহলে যে এমন সম্ভাবনা নিয়ে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে, সে তো রাখঢাকের কোনো ব্যাপার নয়। এবার তার খোলামেলা প্রমাণ মিলল।
প্রমাণ অবশ্য অনেক আগে থেকেই পাচ্ছি আমরা। গত বছর নির্বাচনী প্রচারণার সময়ই ‘কিল ওবামা’ চিত্কার শুনেছিলাম। তিনি আরব ও মুসলমান, এমন কথা তো রিপাবলিকান প্রার্থী ম্যাককেইনের মুখের ওপর করা হয়, টিভির পর্দায় তা আমরা সবাই-ই দেখেছি। ম্যাককেইনের ‘রানিং মেট’ সারাহ পেলিন সরাসরি অভিযোগ করেছিলেন, সন্ত্রাসীদের সঙ্গে ওবামার ওঠাবসা আছে। এখনো সুযোগ পেলেই সে কথা তিনি বলে যাচ্ছেন। উল্লেখযোগ্য সংখ্যাগরিষ্ঠতায় নির্বাচিত হওয়ার পরও ওবামার ওপর সাদা মানুষদের রাগ কমেনি, বরং বেড়েছে। এ দেশের সাদা মানুষদের একাংশ যে রাগে ফুঁসছে, আগস্ট মাসে তার ঢের প্রমাণ মেলে। ওবামা প্রশাসন স্বাস্থ্যবীমা প্রশ্নে যে প্রস্তাব রেখেছে, তার প্রতিবাদে সে সময় দেশের বিভিন্ন অংশে রিপাবলিকান দল বেশ কয়েকটি টাউনহল মিটিংয়ের আয়োজন করে। কিন্তু রাগটা শুধু স্বাস্থ্যবীমা নিয়ে নয়, ওবামাকে নিয়ে। তিনি যা যা করছেন, তার সব কিছুর বিরুদ্ধে। সেসব মিটিংয়ে ওবামাকে হিটলার বলা হয়েছে, স্তালিন ও কাস্ত্রোর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে; এমনকি বাঁদরের মতো ছবি এঁকে আফ্রিকায় ফিরে যেতে বলা হয়েছে। দুই সপ্তাহ আগে ওয়াশিংটনে যে ওবামাবিরোধী জমায়েত হয়, তাতেও সেসব কথাই চেঁচিয়ে বলা হয়। লাখখানেক মানুষ সে জমায়েতে অংশ নেয়, ফক্স নিউজ চ্যানেল থেকে তা সরাসরি দেখানো হয়। সেখানে উপস্থিত অনেকে তথ্যমাধ্যমের কাছে সাক্ষাত্কারে আমেরিকার ফেডারেল ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার হুমকি দেন। কেউ কেউ এমন কথাও বলেন, ওবামার হাত থেকে বাঁচার জন্য সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করতে হবে।
শুধু কথার কথা নয়, এসব রাগী মানুষের কেউ কেউ এখন লুকিয়ে বন্দুক সঙ্গে রাখছেন। ওবামা ভাষণ দেবেন বলে কথা আছে, এমন একাধিক সভায় তাঁরা বন্দুক বয়ে এনেছেন, এমন প্রমাণও পাওয়া গেছে। প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলসি সপ্তাহখানেক আগে এই বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে চড়া গলায় ও কুিসত ভাষায় ওবামাকে আক্রমণ করা হচ্ছে, তার ফলে একটা রক্তারক্তি কাণ্ড হয়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। তেমন ঘটনা ঘটাতে খুব বেশি লোকের দরকার নেই। কেনেডির ওপর কজন মানুষ গুলি চালিয়েছিল? মার্টিন লুথার কিং-কে গুলি করেছিল কে? সানফ্রান্সিসকোর প্রথম সমকামী নির্বাচিত প্রতিনিধি হার্ভে মিল্ককে হত্যার জন্য কটা বন্দুক লেগেছিল?
অথচ ওবামা যে কী এমন মহা অপরাধ করেছেন, যার জন্য তাঁকে হত্যার কথা বলা হতে পারে, তা বুঝে ওঠা যাচ্ছে না। এ পর্যন্ত তিনি এমন একটি কাজও করেননি, যা থেকে মনে হয় আমেরিকার শ্বেত সভ্যতা ধসে পড়ার উপক্রম। এমনকি স্বাস্থ্যবীমা প্রশ্নেও তিনি যা চান, ব্যক্তিগত বীমা কোম্পানির পাশাপাশি একটি সরকার পরিচালিত স্বাস্থ্য পরিচর্যাব্যবস্থা চালু করা, তাও যে কীভাবে শ্বেত সভ্যতার জন্য হুমকি হতে পারে, তা বোঝা সুস্থ মানুষের পক্ষে অসম্ভব। ওবামা নিজেও ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না। গত সপ্তাহে পিটসবার্গে যে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন হয়ে গেল, তাতে এক রাষ্ট্রপ্রধান ওবামাকে একান্তে ডেকে নিয়ে প্রশ্ন করেন, ‘ব্যাপারটা কী, একটু বুঝিয়ে বলুন তো? আপনি চাইছেন সবার যেন স্বাস্থ্যবীমা থাকে, আর সে জন্য ওরা আপনার ছবির ওপর হিটলারের মতো গোঁফ লাগাচ্ছে?’ উত্তরে ওবামা নিরীহের মতো বলেন, ‘ভাই, ব্যাপারটা তো আমার কাছেও পরিষ্কার নয়।’
আসলে ব্যাপারটা খুবই পরিষ্কার। সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার সে কথাই খোলাসা করে বলেছেন। এখন ওবামাবিরোধী যে হট্টগোল হচ্ছে, তার একটি বর্ণবাদী চেহারা রয়েছে। শ্বেত সভ্যতার শ্রেষ্ঠত্বে বিশ্বাসী একদল লোক একজন কালো মানুষ হোয়াইট হাউসে আসন গেড়ে বসুক, তা মানতে এখনো প্রস্তুত নয়। আর সে কারণেই ওবামার জন্ম কোথায় তা নিয়ে সন্দেহ ছড়ানো হচ্ছে, তাঁকে মুসলমান ও আরব বলে প্রচার করা হচ্ছে। তাঁকে যে কমিউনিস্ট ও টেররিস্ট বলা হচ্ছে, তার কারণও ওই একটা। যেভাবেই হোক প্রেসিডেন্ট হিসেবে ওবামার ‘লেজিটিমেসি’ বা গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা, মানুষের মনে এমন সন্দেহ ঢুকিয়ে দেওয়া যে ওবামা সাদা আমেরিকানদের মতো মানুষ নন। তিনি ভিনদেশি, একজন ‘আউটসাইডার’, মিথ্যা বলে ক্ষমতা দখল করে বসেছেন।
কার্টারের কথা শুনে একদল সাদা মানুষ অবশ্য হা হা করে খেঁকিয়ে উঠেছে। তাদের মধ্যে দু-চারজন বুদ্ধিমান বলে পরিচিত মানুষজনও আছে। যেমন, নিউইয়র্ক টাইমসের কলামলেখক ডেভিড ব্রুকস। নিজেকে মধ্যপন্থী বলে পরিচিত করাতে ভালোবাসেন এই রক্ষণশীল সাংবাদিক-ভাষ্যকার। তাঁর বক্তব্য, আসলে এতে বর্ণবাদের কিছু নেই। আমেরিকান নাগরিকেরা সরকারের ক্রমবর্ধমান ভূমিকায় আতঙ্কিত। সরকারের ভূমিকা বাড়া মানে সাধারণ নাগরিকের ব্যক্তিস্বাধীনতা খর্ব হওয়া। হতে পারে কিছুটা কর্কশ গলায় প্রতিবাদ হয়েছে, কিন্তু তার কারণ মানুষজন সত্যি সত্যি ক্ষিপ্ত। রাজনৈতিক মতভেদের জন্য জর্জ বুশকে গাল দেওয়া হয়েছে, ক্লিনটনও কম আক্রমণের সম্মুখীন হননি। নিজের দেশের প্রেসিডেন্টকে সমালোচনা করা আমেরিকার গণতন্ত্রের এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য বা ‘হলমার্ক’। ওবামাও সে নিয়মের ব্যতিক্রম নন।
ডেভিড ব্রুকসের কথাটা এক কথায় উড়িয়ে দেওয়া ঠিক নয়। সম্মানিত কলামলেখক তিনি, দু-চারটে বইও তিনি লিখেছেন রাজনীতি ও ইতিহাস নিয়ে। কিন্তু ডেভিড যে কথা জেনেও না জানার ভান করছেন তা হলো, এর আগে অন্য কোনো প্রেসিডেন্ট—কার্টার বা ক্লিনটন—তাঁর গাত্রবর্ণের জন্য আলাদাভাবে চিহ্নিত হননি বা বর্ণগত কারণে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের বৈধতা বা গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হননি। ওপরে ওয়াশিংটন ডিসির যে ওবামাবিরোধী সভার কথা উল্লেখ করেছি, তাতে একটি পোস্টারের ভাষা ছিল এই রকম—‘চিড়িয়াখানায় আফ্রিকার সিংহ আছে আর হোয়াইট হাউসে আছে একজন মিথ্যুক আফ্রিকান।’ কিছুদিন আগে দক্ষিণ ক্যারোলাইনার এক চিড়িয়াখানা থেকে একটি গরিলা পালিয়ে গেলে সেখানকার এক রিপাবলিকান নেতা মন্তব্য করেন, মিশেল ওবামার এক আত্মীয় পালিয়েছে। এই দুটি উদাহরণ উল্লেখ করে নিউইয়র্ক টাইমসের আরেক কলামলেখক বব হার্বার্ট মন্তব্য করেছেন, এসব কথাবার্তার পেছনে যে বর্ণবাদী মনোভাব আছে, তা বোঝার জন্য কি আমাদের কার্টারের বকবকানি শোনার জন্য অপেক্ষা করতে হবে? এই সাধারণ সত্যিটা কি খোলাচোখেই ধরা পড়ে না? ‘হতে পারে বর্ণগত ভারসাম্য অর্জনে এ দেশ অনেকটা এগিয়েছে, কিন্তু যারা এ দেশে বর্ণবাদ নেই বলে দাবি করে, তারা আসলে চোখ বন্ধ করে পথ হাঁটে।’ হার্বার্টের এই মন্তব্য সম্ভবত তাঁর সতীর্থ ডেভিডের প্রতিই নিক্ষিপ্ত।
শুধু যদি অতি ডান বা অতি বাম গ্রুপগুলো ওবামার বিরুদ্ধে এই বর্ণভিত্তিক সমালোচনা করত, তাহলে উদ্বেগের কিছু থাকত না। সব দেশে সব সময়ই দু-চারটি ‘নাট কেস’ থাকে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এসব সমালোচনা ও ক্রুদ্ধ চিত্কার আসছে দেশের কোনো কোনো দায়িত্বসম্পন্ন রিপাবলিকান নেতাদের কাছ থেকে। যেসব রেডিও বা টিভিতে যে টক শোগুলো রিপাবলিকান সমর্থিত বলে পরিচিত, তারাই উগ্রপন্থী দলগুলোকে পেছনে থেকে সমর্থন জোগাচ্ছে। তাদের সবাই মূলধারার বলেই পরিচিত। যেমন, ওয়াশিংটনের ওবামাবিরোধী সমাবেশটি আয়োজন করে এ দেশের একটি প্রধান টিভি নেটওয়ার্ক ফক্সের এ সময়ের অত্যন্ত জনপ্রিয় উপস্থাপক গ্লেন বেক। হতে পারে বেক অতি দক্ষিণপন্থীদের মধ্যে নিজের জনপ্রিয়তা বাড়াতে নরম-গরম কথা বলছেন, কিন্তু তাঁর পেছনে ছাতা ধরে বসে আছেন খোদ রিপাবলিকান দলের প্রথম সারির নেতারা। অস্বীকার করি কী করে যে তাঁরাই এই বর্ণবাদী আগ্রাসনকে বৈধতা পেতে সাহায্য করছেন। ভয়টা সে কারণেই।
রিপাবলিকানরা কেন এমন বর্ণবাদী পথ বেছে নেবে, তার কারণ বোঝা খুব কঠিন নয়। দল হিসেবে রিপাবলিকান পার্টি এখন ছ্যাড়াব্যাড়া অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। দলের কোনো স্বীকৃত নেতা নেই। একমাত্র দক্ষিণের কৃষিপ্রধান ও অতি রক্ষণশীল রাজ্যসমূহ ছাড়া সারা দেশে কোথাও এই দলের শক্ত খুঁটিও নেই। টিকে থাকার জন্য দলের অবশিষ্ট নেতৃত্ব আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে নিজেদের ভিত বা ‘বেইস’-কে চাঙা করতে। রিপাবলিকানদের ‘বেইস’ মানে মূলত সাদা ও পুরুষ মানুষ, যাদের অধিকাংশের বয়স ৪০-এর ওপরে। ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান এসব লোকজন গর্ভপাত, সমকাম ও বহিরাগত কালো মানুষকে সমানভাবে ঘৃণা করে। রিপাবলিকানদের চোখে তাঁরা হলেন ‘ভ্যালুজ ভোটারস’। অর্থাত্ অন্য সবকিছুর ওপর তাঁরা নৈতিক মূল্যবোধের প্রশ্নগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন। ওবামা ও তাঁর প্রশাসনকে যদি গর্ভপাত ও সমকামের সমর্থক এবং বহিরাগতদের রক্ষক বলে প্রচার করা যায়, এসব মানুষ বিনা প্রশ্নেই সে কথায় বিশ্বাস করবে এবং তাঁর বিরুদ্ধে খেপে উঠবে। হয়েছেও তা-ই। স্বাস্থ্যবীমা প্রশ্নে ওবামা যে প্রস্তাব রেখেছেন তা বাস্তবায়িত হলে এখন বীমা নেই এমন প্রায় চার কোটি মানুষ উপকৃত হবে। এই চার কোটি মানুষের সিংহভাগই যে হয় কালো বা বহিরাগত, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। মুখে না বললেও যে যুক্তিটা রিপাবলিকানরা ফিসফিসে গলায় বলে বেড়াচ্ছে তা হলো, আমাদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে ওবামা এখন তাঁর এসব বন্ধু ও সমর্থকদের স্বাস্থ্য বীমার সুযোগ করে দিতে চাইছেন। আর তাতেই এই সাদা ভাইয়েরা রেগে টং।
মিথ্যা ও বিদ্বেষপূর্ণ প্রচারণা চালিয়ে রিপাবলিকানরা হয়তো স্বল্পমেয়াদি ফায়দা কিছু পাবে, কিন্তু আখেরে এতে তাদের লাভ কিছুই হবে না। শুধু সাদাদের ভোটে এ দেশে ক্ষমতা ধরে রাখা অসম্ভব। কারণ আমেরিকার জনসংখ্যার চিত্র বা ‘ডেমোগ্রাফি’ বদলে গেছে। কৃষ্ণকায় ও বহিরাগতদের, বিশেষত হিস্পানিকদের সমর্থন ছাড়া জাতীয় পর্যায়ে ক্ষমতা পুনরুদ্ধার কার্যত অসম্ভব। এই সহজ সত্যটা যে রিপাবলিকানরা নিজেরাও বোঝে না তা নয়। কিন্তু মুখ ফুটে সে কথা বলার মতো লোক এখন দলে আর নেই। যাঁরাও বা আছেন, ওবামাবিরোধী মারমুখো কর্মীদের সামনে তাঁরা ফুটো বেলুনের মতো চুপসে আছেন।
আমেরিকার গণতন্ত্রের তাজা অবস্থা দেখে এক সময় পৃথিবীর মানুষ বিস্মিত হতো। ওবামার বিজয়ের মধ্যে সেই তাজা গণতন্ত্রের এক বিজয়-উল্লম্ফন তারা দেখেছিল। এখন সেই গণতন্ত্রের যে হাল, তা দেখে এ দেশের চিন্তাশীল মানুষ উদ্বিগ্ন, ভীত। সন্দেহ নেই, খুব অল্পসংখ্যক মানুষ এবং রাজনৈতিক নেতা কথায় ও কাজে চূড়ান্তবাদী পথ অনুসরণে উত্সাহ জোগাচ্ছেন। তাঁদের যদি এখনই না ঠেকানো হয়, খুব বড় ধরনের এক সর্বনাশ হয়ে যাবে। আর সেটাই হবে আমেরিকার জন্য আসল ট্র্যাজেডি।
[পুনশ্চ: রক্ষণশীল ওয়েব পত্রিকা নিউজ ম্যাক্স—এ সুপরিচিত ভাষ্যকার জন এল পেরি ৩০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এক নিবন্ধে প্রস্তাব করেছেন, আমেরিকার ‘ওবামা সমস্যা’ সমাধানের একটা পথ হতে পারে সামরিক অভ্যুত্থান। পেরি প্রস্তাব করেছেন, ‘রক্তপাতহীন ও সভ্য’ এই সামরিক অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকবেন একজন দেশপ্রেমিক জেনারেল। ওবামার সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমেই তিনি নির্বাহী ক্ষমতা নিজের হাতে নেবেন। অবশ্য বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিবাদ ওঠায় নিউজ ম্যাক্স পরে ওই লেখাটি ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে নিয়েছে।]
২৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯, নিউইয়র্ক
হাসান ফেরদৌস: প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক।
প্রমাণ অবশ্য অনেক আগে থেকেই পাচ্ছি আমরা। গত বছর নির্বাচনী প্রচারণার সময়ই ‘কিল ওবামা’ চিত্কার শুনেছিলাম। তিনি আরব ও মুসলমান, এমন কথা তো রিপাবলিকান প্রার্থী ম্যাককেইনের মুখের ওপর করা হয়, টিভির পর্দায় তা আমরা সবাই-ই দেখেছি। ম্যাককেইনের ‘রানিং মেট’ সারাহ পেলিন সরাসরি অভিযোগ করেছিলেন, সন্ত্রাসীদের সঙ্গে ওবামার ওঠাবসা আছে। এখনো সুযোগ পেলেই সে কথা তিনি বলে যাচ্ছেন। উল্লেখযোগ্য সংখ্যাগরিষ্ঠতায় নির্বাচিত হওয়ার পরও ওবামার ওপর সাদা মানুষদের রাগ কমেনি, বরং বেড়েছে। এ দেশের সাদা মানুষদের একাংশ যে রাগে ফুঁসছে, আগস্ট মাসে তার ঢের প্রমাণ মেলে। ওবামা প্রশাসন স্বাস্থ্যবীমা প্রশ্নে যে প্রস্তাব রেখেছে, তার প্রতিবাদে সে সময় দেশের বিভিন্ন অংশে রিপাবলিকান দল বেশ কয়েকটি টাউনহল মিটিংয়ের আয়োজন করে। কিন্তু রাগটা শুধু স্বাস্থ্যবীমা নিয়ে নয়, ওবামাকে নিয়ে। তিনি যা যা করছেন, তার সব কিছুর বিরুদ্ধে। সেসব মিটিংয়ে ওবামাকে হিটলার বলা হয়েছে, স্তালিন ও কাস্ত্রোর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে; এমনকি বাঁদরের মতো ছবি এঁকে আফ্রিকায় ফিরে যেতে বলা হয়েছে। দুই সপ্তাহ আগে ওয়াশিংটনে যে ওবামাবিরোধী জমায়েত হয়, তাতেও সেসব কথাই চেঁচিয়ে বলা হয়। লাখখানেক মানুষ সে জমায়েতে অংশ নেয়, ফক্স নিউজ চ্যানেল থেকে তা সরাসরি দেখানো হয়। সেখানে উপস্থিত অনেকে তথ্যমাধ্যমের কাছে সাক্ষাত্কারে আমেরিকার ফেডারেল ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার হুমকি দেন। কেউ কেউ এমন কথাও বলেন, ওবামার হাত থেকে বাঁচার জন্য সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করতে হবে।
শুধু কথার কথা নয়, এসব রাগী মানুষের কেউ কেউ এখন লুকিয়ে বন্দুক সঙ্গে রাখছেন। ওবামা ভাষণ দেবেন বলে কথা আছে, এমন একাধিক সভায় তাঁরা বন্দুক বয়ে এনেছেন, এমন প্রমাণও পাওয়া গেছে। প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলসি সপ্তাহখানেক আগে এই বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে চড়া গলায় ও কুিসত ভাষায় ওবামাকে আক্রমণ করা হচ্ছে, তার ফলে একটা রক্তারক্তি কাণ্ড হয়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। তেমন ঘটনা ঘটাতে খুব বেশি লোকের দরকার নেই। কেনেডির ওপর কজন মানুষ গুলি চালিয়েছিল? মার্টিন লুথার কিং-কে গুলি করেছিল কে? সানফ্রান্সিসকোর প্রথম সমকামী নির্বাচিত প্রতিনিধি হার্ভে মিল্ককে হত্যার জন্য কটা বন্দুক লেগেছিল?
অথচ ওবামা যে কী এমন মহা অপরাধ করেছেন, যার জন্য তাঁকে হত্যার কথা বলা হতে পারে, তা বুঝে ওঠা যাচ্ছে না। এ পর্যন্ত তিনি এমন একটি কাজও করেননি, যা থেকে মনে হয় আমেরিকার শ্বেত সভ্যতা ধসে পড়ার উপক্রম। এমনকি স্বাস্থ্যবীমা প্রশ্নেও তিনি যা চান, ব্যক্তিগত বীমা কোম্পানির পাশাপাশি একটি সরকার পরিচালিত স্বাস্থ্য পরিচর্যাব্যবস্থা চালু করা, তাও যে কীভাবে শ্বেত সভ্যতার জন্য হুমকি হতে পারে, তা বোঝা সুস্থ মানুষের পক্ষে অসম্ভব। ওবামা নিজেও ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না। গত সপ্তাহে পিটসবার্গে যে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন হয়ে গেল, তাতে এক রাষ্ট্রপ্রধান ওবামাকে একান্তে ডেকে নিয়ে প্রশ্ন করেন, ‘ব্যাপারটা কী, একটু বুঝিয়ে বলুন তো? আপনি চাইছেন সবার যেন স্বাস্থ্যবীমা থাকে, আর সে জন্য ওরা আপনার ছবির ওপর হিটলারের মতো গোঁফ লাগাচ্ছে?’ উত্তরে ওবামা নিরীহের মতো বলেন, ‘ভাই, ব্যাপারটা তো আমার কাছেও পরিষ্কার নয়।’
আসলে ব্যাপারটা খুবই পরিষ্কার। সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার সে কথাই খোলাসা করে বলেছেন। এখন ওবামাবিরোধী যে হট্টগোল হচ্ছে, তার একটি বর্ণবাদী চেহারা রয়েছে। শ্বেত সভ্যতার শ্রেষ্ঠত্বে বিশ্বাসী একদল লোক একজন কালো মানুষ হোয়াইট হাউসে আসন গেড়ে বসুক, তা মানতে এখনো প্রস্তুত নয়। আর সে কারণেই ওবামার জন্ম কোথায় তা নিয়ে সন্দেহ ছড়ানো হচ্ছে, তাঁকে মুসলমান ও আরব বলে প্রচার করা হচ্ছে। তাঁকে যে কমিউনিস্ট ও টেররিস্ট বলা হচ্ছে, তার কারণও ওই একটা। যেভাবেই হোক প্রেসিডেন্ট হিসেবে ওবামার ‘লেজিটিমেসি’ বা গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা, মানুষের মনে এমন সন্দেহ ঢুকিয়ে দেওয়া যে ওবামা সাদা আমেরিকানদের মতো মানুষ নন। তিনি ভিনদেশি, একজন ‘আউটসাইডার’, মিথ্যা বলে ক্ষমতা দখল করে বসেছেন।
কার্টারের কথা শুনে একদল সাদা মানুষ অবশ্য হা হা করে খেঁকিয়ে উঠেছে। তাদের মধ্যে দু-চারজন বুদ্ধিমান বলে পরিচিত মানুষজনও আছে। যেমন, নিউইয়র্ক টাইমসের কলামলেখক ডেভিড ব্রুকস। নিজেকে মধ্যপন্থী বলে পরিচিত করাতে ভালোবাসেন এই রক্ষণশীল সাংবাদিক-ভাষ্যকার। তাঁর বক্তব্য, আসলে এতে বর্ণবাদের কিছু নেই। আমেরিকান নাগরিকেরা সরকারের ক্রমবর্ধমান ভূমিকায় আতঙ্কিত। সরকারের ভূমিকা বাড়া মানে সাধারণ নাগরিকের ব্যক্তিস্বাধীনতা খর্ব হওয়া। হতে পারে কিছুটা কর্কশ গলায় প্রতিবাদ হয়েছে, কিন্তু তার কারণ মানুষজন সত্যি সত্যি ক্ষিপ্ত। রাজনৈতিক মতভেদের জন্য জর্জ বুশকে গাল দেওয়া হয়েছে, ক্লিনটনও কম আক্রমণের সম্মুখীন হননি। নিজের দেশের প্রেসিডেন্টকে সমালোচনা করা আমেরিকার গণতন্ত্রের এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য বা ‘হলমার্ক’। ওবামাও সে নিয়মের ব্যতিক্রম নন।
ডেভিড ব্রুকসের কথাটা এক কথায় উড়িয়ে দেওয়া ঠিক নয়। সম্মানিত কলামলেখক তিনি, দু-চারটে বইও তিনি লিখেছেন রাজনীতি ও ইতিহাস নিয়ে। কিন্তু ডেভিড যে কথা জেনেও না জানার ভান করছেন তা হলো, এর আগে অন্য কোনো প্রেসিডেন্ট—কার্টার বা ক্লিনটন—তাঁর গাত্রবর্ণের জন্য আলাদাভাবে চিহ্নিত হননি বা বর্ণগত কারণে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের বৈধতা বা গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হননি। ওপরে ওয়াশিংটন ডিসির যে ওবামাবিরোধী সভার কথা উল্লেখ করেছি, তাতে একটি পোস্টারের ভাষা ছিল এই রকম—‘চিড়িয়াখানায় আফ্রিকার সিংহ আছে আর হোয়াইট হাউসে আছে একজন মিথ্যুক আফ্রিকান।’ কিছুদিন আগে দক্ষিণ ক্যারোলাইনার এক চিড়িয়াখানা থেকে একটি গরিলা পালিয়ে গেলে সেখানকার এক রিপাবলিকান নেতা মন্তব্য করেন, মিশেল ওবামার এক আত্মীয় পালিয়েছে। এই দুটি উদাহরণ উল্লেখ করে নিউইয়র্ক টাইমসের আরেক কলামলেখক বব হার্বার্ট মন্তব্য করেছেন, এসব কথাবার্তার পেছনে যে বর্ণবাদী মনোভাব আছে, তা বোঝার জন্য কি আমাদের কার্টারের বকবকানি শোনার জন্য অপেক্ষা করতে হবে? এই সাধারণ সত্যিটা কি খোলাচোখেই ধরা পড়ে না? ‘হতে পারে বর্ণগত ভারসাম্য অর্জনে এ দেশ অনেকটা এগিয়েছে, কিন্তু যারা এ দেশে বর্ণবাদ নেই বলে দাবি করে, তারা আসলে চোখ বন্ধ করে পথ হাঁটে।’ হার্বার্টের এই মন্তব্য সম্ভবত তাঁর সতীর্থ ডেভিডের প্রতিই নিক্ষিপ্ত।
শুধু যদি অতি ডান বা অতি বাম গ্রুপগুলো ওবামার বিরুদ্ধে এই বর্ণভিত্তিক সমালোচনা করত, তাহলে উদ্বেগের কিছু থাকত না। সব দেশে সব সময়ই দু-চারটি ‘নাট কেস’ থাকে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এসব সমালোচনা ও ক্রুদ্ধ চিত্কার আসছে দেশের কোনো কোনো দায়িত্বসম্পন্ন রিপাবলিকান নেতাদের কাছ থেকে। যেসব রেডিও বা টিভিতে যে টক শোগুলো রিপাবলিকান সমর্থিত বলে পরিচিত, তারাই উগ্রপন্থী দলগুলোকে পেছনে থেকে সমর্থন জোগাচ্ছে। তাদের সবাই মূলধারার বলেই পরিচিত। যেমন, ওয়াশিংটনের ওবামাবিরোধী সমাবেশটি আয়োজন করে এ দেশের একটি প্রধান টিভি নেটওয়ার্ক ফক্সের এ সময়ের অত্যন্ত জনপ্রিয় উপস্থাপক গ্লেন বেক। হতে পারে বেক অতি দক্ষিণপন্থীদের মধ্যে নিজের জনপ্রিয়তা বাড়াতে নরম-গরম কথা বলছেন, কিন্তু তাঁর পেছনে ছাতা ধরে বসে আছেন খোদ রিপাবলিকান দলের প্রথম সারির নেতারা। অস্বীকার করি কী করে যে তাঁরাই এই বর্ণবাদী আগ্রাসনকে বৈধতা পেতে সাহায্য করছেন। ভয়টা সে কারণেই।
রিপাবলিকানরা কেন এমন বর্ণবাদী পথ বেছে নেবে, তার কারণ বোঝা খুব কঠিন নয়। দল হিসেবে রিপাবলিকান পার্টি এখন ছ্যাড়াব্যাড়া অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। দলের কোনো স্বীকৃত নেতা নেই। একমাত্র দক্ষিণের কৃষিপ্রধান ও অতি রক্ষণশীল রাজ্যসমূহ ছাড়া সারা দেশে কোথাও এই দলের শক্ত খুঁটিও নেই। টিকে থাকার জন্য দলের অবশিষ্ট নেতৃত্ব আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে নিজেদের ভিত বা ‘বেইস’-কে চাঙা করতে। রিপাবলিকানদের ‘বেইস’ মানে মূলত সাদা ও পুরুষ মানুষ, যাদের অধিকাংশের বয়স ৪০-এর ওপরে। ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান এসব লোকজন গর্ভপাত, সমকাম ও বহিরাগত কালো মানুষকে সমানভাবে ঘৃণা করে। রিপাবলিকানদের চোখে তাঁরা হলেন ‘ভ্যালুজ ভোটারস’। অর্থাত্ অন্য সবকিছুর ওপর তাঁরা নৈতিক মূল্যবোধের প্রশ্নগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন। ওবামা ও তাঁর প্রশাসনকে যদি গর্ভপাত ও সমকামের সমর্থক এবং বহিরাগতদের রক্ষক বলে প্রচার করা যায়, এসব মানুষ বিনা প্রশ্নেই সে কথায় বিশ্বাস করবে এবং তাঁর বিরুদ্ধে খেপে উঠবে। হয়েছেও তা-ই। স্বাস্থ্যবীমা প্রশ্নে ওবামা যে প্রস্তাব রেখেছেন তা বাস্তবায়িত হলে এখন বীমা নেই এমন প্রায় চার কোটি মানুষ উপকৃত হবে। এই চার কোটি মানুষের সিংহভাগই যে হয় কালো বা বহিরাগত, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। মুখে না বললেও যে যুক্তিটা রিপাবলিকানরা ফিসফিসে গলায় বলে বেড়াচ্ছে তা হলো, আমাদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে ওবামা এখন তাঁর এসব বন্ধু ও সমর্থকদের স্বাস্থ্য বীমার সুযোগ করে দিতে চাইছেন। আর তাতেই এই সাদা ভাইয়েরা রেগে টং।
মিথ্যা ও বিদ্বেষপূর্ণ প্রচারণা চালিয়ে রিপাবলিকানরা হয়তো স্বল্পমেয়াদি ফায়দা কিছু পাবে, কিন্তু আখেরে এতে তাদের লাভ কিছুই হবে না। শুধু সাদাদের ভোটে এ দেশে ক্ষমতা ধরে রাখা অসম্ভব। কারণ আমেরিকার জনসংখ্যার চিত্র বা ‘ডেমোগ্রাফি’ বদলে গেছে। কৃষ্ণকায় ও বহিরাগতদের, বিশেষত হিস্পানিকদের সমর্থন ছাড়া জাতীয় পর্যায়ে ক্ষমতা পুনরুদ্ধার কার্যত অসম্ভব। এই সহজ সত্যটা যে রিপাবলিকানরা নিজেরাও বোঝে না তা নয়। কিন্তু মুখ ফুটে সে কথা বলার মতো লোক এখন দলে আর নেই। যাঁরাও বা আছেন, ওবামাবিরোধী মারমুখো কর্মীদের সামনে তাঁরা ফুটো বেলুনের মতো চুপসে আছেন।
আমেরিকার গণতন্ত্রের তাজা অবস্থা দেখে এক সময় পৃথিবীর মানুষ বিস্মিত হতো। ওবামার বিজয়ের মধ্যে সেই তাজা গণতন্ত্রের এক বিজয়-উল্লম্ফন তারা দেখেছিল। এখন সেই গণতন্ত্রের যে হাল, তা দেখে এ দেশের চিন্তাশীল মানুষ উদ্বিগ্ন, ভীত। সন্দেহ নেই, খুব অল্পসংখ্যক মানুষ এবং রাজনৈতিক নেতা কথায় ও কাজে চূড়ান্তবাদী পথ অনুসরণে উত্সাহ জোগাচ্ছেন। তাঁদের যদি এখনই না ঠেকানো হয়, খুব বড় ধরনের এক সর্বনাশ হয়ে যাবে। আর সেটাই হবে আমেরিকার জন্য আসল ট্র্যাজেডি।
[পুনশ্চ: রক্ষণশীল ওয়েব পত্রিকা নিউজ ম্যাক্স—এ সুপরিচিত ভাষ্যকার জন এল পেরি ৩০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এক নিবন্ধে প্রস্তাব করেছেন, আমেরিকার ‘ওবামা সমস্যা’ সমাধানের একটা পথ হতে পারে সামরিক অভ্যুত্থান। পেরি প্রস্তাব করেছেন, ‘রক্তপাতহীন ও সভ্য’ এই সামরিক অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকবেন একজন দেশপ্রেমিক জেনারেল। ওবামার সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমেই তিনি নির্বাহী ক্ষমতা নিজের হাতে নেবেন। অবশ্য বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিবাদ ওঠায় নিউজ ম্যাক্স পরে ওই লেখাটি ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে নিয়েছে।]
২৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯, নিউইয়র্ক
হাসান ফেরদৌস: প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক।
No comments