একজন শহীদ জননীর কথা -স্মর্রণ by সেলিনা আখতার
দিন, কাল, মাস ঘুরে আসে। আবার পার হয়ে যায়। এমনি করে দেখতে দেখতে মিলনের অন্তর্ধানের দীর্ঘ ১৯টি বছর কেটে গেল। প্রতিবছর ২৭ নভেম্বর দিনটি যেন অমাবস্যার কালো আঁধারে ঢেকে রাখে আমার হূদয় আকাশ। নভেম্বরের পুরো মাসটি আমাকে স্মরণ করিয়ে দেয় মিলনশূন্য এ পৃথিবীকে। এ ব্যথা প্রকাশ করার নয়, কেবল অনুধাবনের আর অনুভবের। শ্রদ্ধাভাজন প্রয়াত কবি শামসুর রাহমান তাঁর ‘একজন শহীদের মা বলছেন’ কবিতাটির প্রতিটি পঙিক্ত যেন আমার হূদয়ের ভাষার প্রতিধ্বনি। কবি লিখেছেন, ‘মৃত্যু তার বলে ওরা, করেছে আমাকে মহীয়সী,/ আরো কত কথা বলা হয়,/ যা শুনে আমার মাথা গর্বে দূরের আকাশ ছুঁতে পারে লহমায়।/ নির্দয় দুঃখের চেয়ে, গৌরব অনেক বড়,/ এই অলংকৃত ভান নিয়ে দ্রুত ক্ষয়ে যাওয়া কি দুঃসহ,/ আমি ছাড়া বুঝবে কে আর পৃথিবীতে?/ আমার এ শূন্য বুক পোড়োবাড়ি,/ যাতে লক্ষ্মীপ্যাঁচা ডেকে ওঠে ঘোর মধ্যরাতে।/ ক্লান্ত লাগে, দেয় না ঘুমোতে কিছুতেই ফণিমনসার খোঁচা।’
কবি আজ আর আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তাঁর এই অনবদ্য সৃষ্টি প্রত্যেক শহীদ জননীর হূদয়ে ধ্বনিত হবে প্রতিনিয়ত। অবাক হই এই ভেবে যে কবি কেমন করে এক সন্তানহারা মাতৃহূদয়ের ভাষা এমন নিখুঁতরূপে রচনা করতে সক্ষম হলেন।
১৯৫৭ সালের ২১ আগস্ট মিলনের জন্ম, ঢাকার রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে, যা হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল নামে আগে পরিচিত ছিল। মিলনের ছোটবেলার লেখাপড়ায় আমি ওকে সাহায্য করতাম। অষ্টম শ্রেণীতে ওঠার পর আমার বাবা ওর লেখাপড়ায় সাহায্য করতেন। সে সময় আজকের মতো প্রাইভেট টিউটর রাখার প্রবণতা ছিল না। খুব কমসংখ্যক অভিভাবকই তা চিন্তা করতেন। ছেলেবেলা থেকেই মিলন অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিল। খেলাধুলায় ও স্কুল চ্যাম্পিয়ন ছিল। ক্লাসে মেধা তালিকায় ওর প্রথম বা দ্বিতীয় বরাদ্দ থাকত। বর্তমান সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় শিল্পকলা বিভাগ থেকে মেধা তালিকায় দ্বিতীয় স্থান লাভ করে নটর ডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। মেডিকেল কলেজে ভর্তির এক বছর পর, মিলন ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়। বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী ছাত্রলীগ মেডিকেল শাখার মিলন ছিল সাহিত্য সম্পাদক, ক্রীড়া সম্পাদক এবং পরবর্তী ছাত্রলীগ মেডিকেল কলেজ শাখার সভাপতি নির্বাচিত হয়। ছাত্রজীবন থেকেই মিলন বক্তৃতা, স্লোগানসর্বস্ব রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিল না। মিলন বিশ্বাস করত, রাজনৈতিক শিক্ষা গ্রহণ ব্যতীত রাজনীতি বোঝা সম্ভব নয়। দেশকে ভালো না বাসলে, দেশের অর্থনীতি না বুঝে এবং দেশে বিদ্যমান সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করতে না পারলে সমাজ বদলের বিপ্লবসাধন কোনো দিনই সম্ভব হয় না।
মিলন বিশ্বাস করত, চিকিত্সকদের কেবল রোগীর সেবা দেওয়ার মাধ্যমেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। চিকিত্সক, রোগীর সুসম্পর্ক ও সেবাদানের একটি পূর্বশর্ত। দেশের সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার দায়িত্বও চিকিত্সকদের। তাই সাধারণ মানুষের উপযোগী একটি গণমুখী স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়নের লক্ষ্যেই তত্কালীন স্বৈরাচার এরশাদ সরকার প্রণীত, গণবিরোধী স্বাস্থ্যনীতির বিরুদ্ধে জঙ্গি আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। এই আন্দোলন দীর্ঘদিন চলে। এরশাদ সরকার চিকিত্সকদের জনগণের চোখে হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশে এবং আন্দোলনে ভাঙন ধরানোর অসত্ উপায় অবলম্বন করে নানা অপপ্রচার চালানো আরম্ভ করে। আন্দোলন দীর্ঘায়িত হওয়ায় মাঝে মাঝে মিলনকে বিষণ্ন মনে হতো। সরকারের এই অপপ্রচারে জনসমর্থন হারিয়ে ফেলার একটা আশঙ্কায় ও হয়তো কিছুটা শঙ্কিত হয়ে পড়ত। তবে ওই ভেতরের মানুষটি ছিল অত্যন্ত আশাবাদী, দৃঢ়প্রত্যায়ী, আপন আদর্শের প্রতি আস্থাশীল এবং অসম্ভব সাহসী মনের অধিকারী, যে মানুষটি কখনো হার মানতে জানত না।
নভেম্বর মাসে এরশাদবিরোধী আন্দোলন যখন জোরদার হলো, পেশাজীবী সংগঠনগুলো যখন আন্দোলনে অবতীর্ণ হলো এবং চিকিত্সকদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করল, তখন ও আশাবাদী হয়ে উঠল এবং একদিন আমাকে বলল, ‘দেখবেন, আমাদের এই আন্দোলনই স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতনের আন্দোলনের রূপ নেবে।’ সেদিন বুঝিনি, মিলনের মুখ থেকে নিঃসারিত এই অমোঘ উক্তটি ওর বুকের তাজা রক্ত দিয়ে ও বাস্তবে পরিণত করবে।
আজ দুঃখভারাক্রান্ত মন নিয়ে দেখি ‘রাজা আসে, রাজা যায়’, কিন্তু সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না। মিলনের অন্তর্ধানের পর দেশ স্বৈরশাসনমুক্ত হয়, দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পায়। গত ১৯ বছরে দেশে চারটি নির্বাচিত সরকার দেশ শাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়।
দেশের রাজনীতিবিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েই বলছি, তাঁরা বক্তৃতা-বিবৃতিতে বলে থাকেন, নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের নায়ক শহীদ ডা. মিলন। তার আত্মাহুতির মধ্য দিয়েই দীর্ঘ নয় বছরের সৈরশাসনের পতন ঘটে। কিন্তু ব্যথিত হই, যখন দেখি বিগত ১৯ বছরের চারটি গণতান্ত্রিক সরকার তেমন কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এমনকি তার হত্যার বিচার করার জন্যও কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আশা করছি, স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি, গণতন্ত্র ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এ সরকার মিলন হত্যার পুনর্বিচারে আন্তরিক প্রচেষ্টা নেবে এবং মিলনের স্মৃতি রক্ষার্থে একটি সড়কের নামকরণ করবে।
বর্তমান সরকার কিছু কিছু ক্ষেত্রে অগ্রগতি সাধন করেছে সন্দেহ নেই। কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য—সব ক্ষেত্রেই। ইতিমধ্যে সরকার একটি স্বাস্থ্যনীতির রূপরেখাও করেছে বলে জানতে পেরেছি। সরকারের আন্তরিকতা থাকলে স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং বিশেষ করে নবনির্বাচিত বিএমের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এবার একটি গণমুখী স্বাস্থ্যনীতি প্রবর্তিত হবে বলেই আশা করছি। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত সদস্যরা প্রায় সবাই এরশাদ সরকারের গণবিরোধী স্বাস্থ্যনীতি আন্দোলনে মিলনের সহযোদ্ধা ছিলেন। তাই মিলনের স্বপ্নকে সার্থক করার ব্যাপারে তাদের আন্তরিকতার অভাব হবে না বলেই আমার বিশ্বাস। দুস্থ, অসহায় সাধারণ মানুষের কাছে চিকিত্সাসেবা সহজলভ্য করতে হলে একটি ওষুধনীতিরও প্রয়োজন আছে। আমার প্রত্যাশা, এদিকেও তারা সজাগ দৃষ্টি রাখবে। তারা ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে মিলনের স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিতে আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাবে, গ্রামের দুস্থ মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করে তুলবে—এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি। তাহলেই মিলনের আত্মদান সার্থক হবে। মিলনের স্বপ্ন বাস্তব রূপ লাভ করবে।
সেলিনা আখতার: শহীদ মিলনের মা।
কবি আজ আর আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তাঁর এই অনবদ্য সৃষ্টি প্রত্যেক শহীদ জননীর হূদয়ে ধ্বনিত হবে প্রতিনিয়ত। অবাক হই এই ভেবে যে কবি কেমন করে এক সন্তানহারা মাতৃহূদয়ের ভাষা এমন নিখুঁতরূপে রচনা করতে সক্ষম হলেন।
১৯৫৭ সালের ২১ আগস্ট মিলনের জন্ম, ঢাকার রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে, যা হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল নামে আগে পরিচিত ছিল। মিলনের ছোটবেলার লেখাপড়ায় আমি ওকে সাহায্য করতাম। অষ্টম শ্রেণীতে ওঠার পর আমার বাবা ওর লেখাপড়ায় সাহায্য করতেন। সে সময় আজকের মতো প্রাইভেট টিউটর রাখার প্রবণতা ছিল না। খুব কমসংখ্যক অভিভাবকই তা চিন্তা করতেন। ছেলেবেলা থেকেই মিলন অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিল। খেলাধুলায় ও স্কুল চ্যাম্পিয়ন ছিল। ক্লাসে মেধা তালিকায় ওর প্রথম বা দ্বিতীয় বরাদ্দ থাকত। বর্তমান সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় শিল্পকলা বিভাগ থেকে মেধা তালিকায় দ্বিতীয় স্থান লাভ করে নটর ডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। মেডিকেল কলেজে ভর্তির এক বছর পর, মিলন ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়। বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী ছাত্রলীগ মেডিকেল শাখার মিলন ছিল সাহিত্য সম্পাদক, ক্রীড়া সম্পাদক এবং পরবর্তী ছাত্রলীগ মেডিকেল কলেজ শাখার সভাপতি নির্বাচিত হয়। ছাত্রজীবন থেকেই মিলন বক্তৃতা, স্লোগানসর্বস্ব রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিল না। মিলন বিশ্বাস করত, রাজনৈতিক শিক্ষা গ্রহণ ব্যতীত রাজনীতি বোঝা সম্ভব নয়। দেশকে ভালো না বাসলে, দেশের অর্থনীতি না বুঝে এবং দেশে বিদ্যমান সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করতে না পারলে সমাজ বদলের বিপ্লবসাধন কোনো দিনই সম্ভব হয় না।
মিলন বিশ্বাস করত, চিকিত্সকদের কেবল রোগীর সেবা দেওয়ার মাধ্যমেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। চিকিত্সক, রোগীর সুসম্পর্ক ও সেবাদানের একটি পূর্বশর্ত। দেশের সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার দায়িত্বও চিকিত্সকদের। তাই সাধারণ মানুষের উপযোগী একটি গণমুখী স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়নের লক্ষ্যেই তত্কালীন স্বৈরাচার এরশাদ সরকার প্রণীত, গণবিরোধী স্বাস্থ্যনীতির বিরুদ্ধে জঙ্গি আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। এই আন্দোলন দীর্ঘদিন চলে। এরশাদ সরকার চিকিত্সকদের জনগণের চোখে হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশে এবং আন্দোলনে ভাঙন ধরানোর অসত্ উপায় অবলম্বন করে নানা অপপ্রচার চালানো আরম্ভ করে। আন্দোলন দীর্ঘায়িত হওয়ায় মাঝে মাঝে মিলনকে বিষণ্ন মনে হতো। সরকারের এই অপপ্রচারে জনসমর্থন হারিয়ে ফেলার একটা আশঙ্কায় ও হয়তো কিছুটা শঙ্কিত হয়ে পড়ত। তবে ওই ভেতরের মানুষটি ছিল অত্যন্ত আশাবাদী, দৃঢ়প্রত্যায়ী, আপন আদর্শের প্রতি আস্থাশীল এবং অসম্ভব সাহসী মনের অধিকারী, যে মানুষটি কখনো হার মানতে জানত না।
নভেম্বর মাসে এরশাদবিরোধী আন্দোলন যখন জোরদার হলো, পেশাজীবী সংগঠনগুলো যখন আন্দোলনে অবতীর্ণ হলো এবং চিকিত্সকদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করল, তখন ও আশাবাদী হয়ে উঠল এবং একদিন আমাকে বলল, ‘দেখবেন, আমাদের এই আন্দোলনই স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতনের আন্দোলনের রূপ নেবে।’ সেদিন বুঝিনি, মিলনের মুখ থেকে নিঃসারিত এই অমোঘ উক্তটি ওর বুকের তাজা রক্ত দিয়ে ও বাস্তবে পরিণত করবে।
আজ দুঃখভারাক্রান্ত মন নিয়ে দেখি ‘রাজা আসে, রাজা যায়’, কিন্তু সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না। মিলনের অন্তর্ধানের পর দেশ স্বৈরশাসনমুক্ত হয়, দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পায়। গত ১৯ বছরে দেশে চারটি নির্বাচিত সরকার দেশ শাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়।
দেশের রাজনীতিবিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েই বলছি, তাঁরা বক্তৃতা-বিবৃতিতে বলে থাকেন, নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের নায়ক শহীদ ডা. মিলন। তার আত্মাহুতির মধ্য দিয়েই দীর্ঘ নয় বছরের সৈরশাসনের পতন ঘটে। কিন্তু ব্যথিত হই, যখন দেখি বিগত ১৯ বছরের চারটি গণতান্ত্রিক সরকার তেমন কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এমনকি তার হত্যার বিচার করার জন্যও কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আশা করছি, স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি, গণতন্ত্র ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এ সরকার মিলন হত্যার পুনর্বিচারে আন্তরিক প্রচেষ্টা নেবে এবং মিলনের স্মৃতি রক্ষার্থে একটি সড়কের নামকরণ করবে।
বর্তমান সরকার কিছু কিছু ক্ষেত্রে অগ্রগতি সাধন করেছে সন্দেহ নেই। কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য—সব ক্ষেত্রেই। ইতিমধ্যে সরকার একটি স্বাস্থ্যনীতির রূপরেখাও করেছে বলে জানতে পেরেছি। সরকারের আন্তরিকতা থাকলে স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং বিশেষ করে নবনির্বাচিত বিএমের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এবার একটি গণমুখী স্বাস্থ্যনীতি প্রবর্তিত হবে বলেই আশা করছি। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত সদস্যরা প্রায় সবাই এরশাদ সরকারের গণবিরোধী স্বাস্থ্যনীতি আন্দোলনে মিলনের সহযোদ্ধা ছিলেন। তাই মিলনের স্বপ্নকে সার্থক করার ব্যাপারে তাদের আন্তরিকতার অভাব হবে না বলেই আমার বিশ্বাস। দুস্থ, অসহায় সাধারণ মানুষের কাছে চিকিত্সাসেবা সহজলভ্য করতে হলে একটি ওষুধনীতিরও প্রয়োজন আছে। আমার প্রত্যাশা, এদিকেও তারা সজাগ দৃষ্টি রাখবে। তারা ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে মিলনের স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিতে আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাবে, গ্রামের দুস্থ মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করে তুলবে—এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি। তাহলেই মিলনের আত্মদান সার্থক হবে। মিলনের স্বপ্ন বাস্তব রূপ লাভ করবে।
সেলিনা আখতার: শহীদ মিলনের মা।
No comments