যেভাবে ডিজে সানির উত্থান by মরিয়ম চম্পা
একসময়
কানে দুল, হাতে রাবার ব্যান্ড, চুড়ি পরতেন। অনেকটা ডিজে পার্টির
ছেলেমেয়েদের স্টাইলে করতেন চলাফেরা। সে থেকে তিনি নিজেকে পরিচয় দিতে থাকেন
ডিজে সানি হিসাবে। যদিও তার নাম মোহাম্মদ সানি। শুরুতে বায়তুল মোকাররম
মসজিদের পাশের একটি দোকানে কাজ করতেন। কিছুদিন পর জিপিও ও মুক্তাঙ্গনের
পাশে অবস্থিত পাবলিক টয়লেটের ভেতরে আস্তানা তৈরি করেন। গাঁজা, হেরোইনসহ
বিভিন্ন ধরনের মাদক বিক্রি শুরু করেন। এক পর্যায়ে তার নামে কয়েকটি মামলা
হয়।
মামলা হওয়ায় যেন তার কপাল খুলে যায়। এরপর থেকে তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এলাকায় সুপরিচিতি লাভ করেন। কারণ জেলখানায় বসে শীর্ষ সন্ত্রাসী নাইন ইকবালের সঙ্গে তার সখ্য তৈরি হয়। নাইন ইকবাল মির্জা খোকনের ক্যাডার বাহিনীর একজন সক্রিয় সদস্য ছিলো। যেটা ফাইভ স্টার গ্রুপ নামে পরিচিত। গ্রুপের সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন শফিকুল ইসলাম ইকবাল ওরফে নাইন ইকবাল। নাইন ইকবাল কমলাপুরে একটি মেয়েকে ছয় টুকরো করে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত। মতিঝিলে রাজউক ভবনের পেছনে জঙ্গি বাবু নামে একজনকে খুন করাসহ একাধিক খুনের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলির পর পাঁচ তলা থেকে লাফ দেয়। এভাবেই একসময় তার সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। পল্টনের এক সময়ের শীর্ষ সন্ত্রাসী মোহাম্মদ আলী ও নাইন ইকবাল একই তরিকার লোক। এদিকে ১৯৯৮ সালে জেলখানায় বসে নাইন ইকবালের সঙ্গে ডিজে সানির ভালো সম্পর্ক তৈরির মধ্যে দিয়ে ডিজে সানির কপাল খুলে যায়।
ওই আমলে নাইন ইকবাল ছিলেন কুখ্যাত সন্ত্রাসী। যদিও নাইন ইকবাল নিজেকে মোহাম্মদ আলীর শ্যালক হিসেবে সবার কাছে পরিচয় দেন। জেলখানা থেকে বেরিয়ে ইকবালের হাত ধরে অপরাধ জগতে পা রাখেন ডিজে সানি। এরপর ট্যুর-ট্রাভেলস কোম্পানি, আবাসিক হোটেল থেকে চাঁদা তোলাসহ বিভিন্ন অপরাধে যুক্ত হন। আবাসিক হোটেল থেকে মাসে লাখ লাখ টাকা সংগ্রহ করতেন সানি। সেসময় যুবদল নেতাদের সঙ্গে ছিল তার ওঠাবসা। বিএনপি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ইকবাল গংরা জেলে যায়। পরবর্তীতে জেল থেকে বের হয়ে কাউন্সিলর সাঈদের সঙ্গে ইকবাল যুক্ত হয়। এসময় তারা দুজন মিলে একটি ত্রাস কমিটি তৈরি করে। যেখানে ডিজে সানি পল্টন, সেগুনবাগিচা এলাকায় চাঁদা সংগ্রহের দায়িত্ব পায়। যদিও তারা সবাই বর্তমান যুবলীগ নেতা সম্রাটের লোক। মূলত আরমান নামে আরেক নেতা কাম সন্ত্রাসীর পক্ষে কাজ করতেন ডিজে সানি। এছাড়াও ডিজে সানির একটি নিজস্ব শক্তিশালী সন্ত্রাসী বাহিনী আছে। রাজধানীতে নতুন এবং বড় কোম্পানির অ্যাপার্টমেন্টের মালিকদের অস্ত্র দিয়ে ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায় করাই এ বাহিনীর কাজ। পাশাপাশি পল্টনের বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রিক্রুটিং এজেন্সি ইত্যাদি থেকে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমান চাঁদা তোলেন তারা। এছাড়া বিভিন্ন অ্যাপার্টমেন্টে তারা ফ্ল্যাট দাবি করেন। পরবর্তীতে ফ্ল্যাটগুলো বিক্রি করে দেন। কোনো উচ্চবৃত্ত পরিবারে ভাই বোনের মধ্যে ফ্ল্যাট কিংবা বাড়ি নিয়ে দ্বন্দ্ব। খবর পেয়ে গায়ে পরে তারা বিচার করতে যান। বিচারের মীমাংসা হিসেবে দুই পক্ষের কাউকেই বাড়িতে প্রবেশ করতে দিতেন না তারা। মিডলম্যান হিসেবে লোক ঠিক করে তাকে দিয়ে বাসার ভাড়া উঠিয়ে বাসার মালিক পক্ষকে নির্দিষ্ট পরিমাণ একটি টাকা দিয়ে বাকিটা তারা নিয়ে যান। এছাড়া রাজধানীতে নাইন ইকবালের নিজস্ব একটি বড় ইয়াবার ডিলার আছে। সানি ওরফে ডিজে গ্রুপের সবচেয়ে বড় ব্যবসা হচ্ছে বিয়ার, মদ, ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সরবরাহ করা। ইকবালের কাছ থেকেই মূলত ইয়াবা সংগ্রহ করে সেগুলো বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করতেন সানি। সন্ত্রাসী জগতে সানির বস হচ্ছে নাইন ইকবাল ওরফে শফিকুল ইসলাম ইকবাল। যুবলীগের নেতা আরমান পরবর্তীতে ডিজে সানিকে মৌখিক ভাবে যুবলীগে একটি পদ দেন। সানি যেটাকে পল্টন থানা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক দাবি করে পরিচয় দিতে থাকেন। ডিজে সানির গ্রামের বাড়ি নিয়ে রয়েছে দ্বিধা। ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে বলা হলেও অন্য সূত্র জানায় তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালি। দুই সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়ে একসময় তার বাসা ছিল পল্টন। পরবর্তীতে গুলবাগে বাসা স্থানান্তর করেন। সম্প্রতি যুবলীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের ধরপাকড় শুরু হলে সে নাইন ইকবালের ছত্রছায়ায় আত্মগোপনে চলে যায়। এদিকে ইকবাল বর্তমানে কমিশনার সাঈদের অবৈধ বাণিজ্যের পাহারা দিচ্ছেন। বিজয় নগর পানির ট্যাঙ্কির পেছনের একটি ভবনে মাঝারি আকারের ক্যাসিনোর আসর বসাতেন সানি। এখানেই মূলত তার প্রকৃত আস্তানা ছিল। যেখানে সন্ধার পরই জুয়ার আসর বসতো। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য হতো তার জুয়ার আসরে। বর্তমানে সেখানে তালা ঝুলছে। যুবলীগ নেতা খালেদকে গ্রেফতারের পর দুই দিন সে প্রকাশ্যে মোটরসাইকেল নিয়ে শোডাউন করেন। আরামবাগের একাধিক ক্যাসিনোতে ব্যারেব অভিযানের পর থেকে তাকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায় নি। এদিকে নাইন ইকবাল অপরাধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
পল্টনের একজন ব্যবসায়ী বলেন, গত সোমবারও ইকবালকে মোটরসাইকেল নিয়ে এলাকায় ঘুরতে দেখেছি। তার নামে অসংখ্য খুনের মামলা থাকা সত্বেও পুলিশ কেনো ধরছে না বুঝতে পারছি না। শুদ্ধি অভিজানের ভেতরে সে কিভাবে প্রকাশ্যে চলাফেরা করছে। যদিও কোথাও এখন সে অবস্থান করছেন না। আরেক ব্যবসায়ী বলেন, বড় ভাইদের আশির্বাদে সেগুন বাগিচা স্কুল এলাকার পুরোটাই ডিজে সানির দখলে। নাইন ইকবালই মূলত বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রের যোগান দিয়ে তাকে এ সকল অবৈধ কাজে সহায়তা করেন। নাইন ইকবাল ও সানি অনেক মারাত্মক লোক। আমরা পল্টনে ব্যবসা করি প্রায় ৪০ বছর। ছোট খাটো ব্যবসা করলেও তাদের ম্যানেজ করেই আমাদের টিকে থাকতে হয়। তাদের মাসোহারা না দিলে যে কোনো সময় আমাদের ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
মামলা হওয়ায় যেন তার কপাল খুলে যায়। এরপর থেকে তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এলাকায় সুপরিচিতি লাভ করেন। কারণ জেলখানায় বসে শীর্ষ সন্ত্রাসী নাইন ইকবালের সঙ্গে তার সখ্য তৈরি হয়। নাইন ইকবাল মির্জা খোকনের ক্যাডার বাহিনীর একজন সক্রিয় সদস্য ছিলো। যেটা ফাইভ স্টার গ্রুপ নামে পরিচিত। গ্রুপের সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন শফিকুল ইসলাম ইকবাল ওরফে নাইন ইকবাল। নাইন ইকবাল কমলাপুরে একটি মেয়েকে ছয় টুকরো করে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত। মতিঝিলে রাজউক ভবনের পেছনে জঙ্গি বাবু নামে একজনকে খুন করাসহ একাধিক খুনের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলির পর পাঁচ তলা থেকে লাফ দেয়। এভাবেই একসময় তার সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। পল্টনের এক সময়ের শীর্ষ সন্ত্রাসী মোহাম্মদ আলী ও নাইন ইকবাল একই তরিকার লোক। এদিকে ১৯৯৮ সালে জেলখানায় বসে নাইন ইকবালের সঙ্গে ডিজে সানির ভালো সম্পর্ক তৈরির মধ্যে দিয়ে ডিজে সানির কপাল খুলে যায়।
ওই আমলে নাইন ইকবাল ছিলেন কুখ্যাত সন্ত্রাসী। যদিও নাইন ইকবাল নিজেকে মোহাম্মদ আলীর শ্যালক হিসেবে সবার কাছে পরিচয় দেন। জেলখানা থেকে বেরিয়ে ইকবালের হাত ধরে অপরাধ জগতে পা রাখেন ডিজে সানি। এরপর ট্যুর-ট্রাভেলস কোম্পানি, আবাসিক হোটেল থেকে চাঁদা তোলাসহ বিভিন্ন অপরাধে যুক্ত হন। আবাসিক হোটেল থেকে মাসে লাখ লাখ টাকা সংগ্রহ করতেন সানি। সেসময় যুবদল নেতাদের সঙ্গে ছিল তার ওঠাবসা। বিএনপি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ইকবাল গংরা জেলে যায়। পরবর্তীতে জেল থেকে বের হয়ে কাউন্সিলর সাঈদের সঙ্গে ইকবাল যুক্ত হয়। এসময় তারা দুজন মিলে একটি ত্রাস কমিটি তৈরি করে। যেখানে ডিজে সানি পল্টন, সেগুনবাগিচা এলাকায় চাঁদা সংগ্রহের দায়িত্ব পায়। যদিও তারা সবাই বর্তমান যুবলীগ নেতা সম্রাটের লোক। মূলত আরমান নামে আরেক নেতা কাম সন্ত্রাসীর পক্ষে কাজ করতেন ডিজে সানি। এছাড়াও ডিজে সানির একটি নিজস্ব শক্তিশালী সন্ত্রাসী বাহিনী আছে। রাজধানীতে নতুন এবং বড় কোম্পানির অ্যাপার্টমেন্টের মালিকদের অস্ত্র দিয়ে ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায় করাই এ বাহিনীর কাজ। পাশাপাশি পল্টনের বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রিক্রুটিং এজেন্সি ইত্যাদি থেকে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমান চাঁদা তোলেন তারা। এছাড়া বিভিন্ন অ্যাপার্টমেন্টে তারা ফ্ল্যাট দাবি করেন। পরবর্তীতে ফ্ল্যাটগুলো বিক্রি করে দেন। কোনো উচ্চবৃত্ত পরিবারে ভাই বোনের মধ্যে ফ্ল্যাট কিংবা বাড়ি নিয়ে দ্বন্দ্ব। খবর পেয়ে গায়ে পরে তারা বিচার করতে যান। বিচারের মীমাংসা হিসেবে দুই পক্ষের কাউকেই বাড়িতে প্রবেশ করতে দিতেন না তারা। মিডলম্যান হিসেবে লোক ঠিক করে তাকে দিয়ে বাসার ভাড়া উঠিয়ে বাসার মালিক পক্ষকে নির্দিষ্ট পরিমাণ একটি টাকা দিয়ে বাকিটা তারা নিয়ে যান। এছাড়া রাজধানীতে নাইন ইকবালের নিজস্ব একটি বড় ইয়াবার ডিলার আছে। সানি ওরফে ডিজে গ্রুপের সবচেয়ে বড় ব্যবসা হচ্ছে বিয়ার, মদ, ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সরবরাহ করা। ইকবালের কাছ থেকেই মূলত ইয়াবা সংগ্রহ করে সেগুলো বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করতেন সানি। সন্ত্রাসী জগতে সানির বস হচ্ছে নাইন ইকবাল ওরফে শফিকুল ইসলাম ইকবাল। যুবলীগের নেতা আরমান পরবর্তীতে ডিজে সানিকে মৌখিক ভাবে যুবলীগে একটি পদ দেন। সানি যেটাকে পল্টন থানা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক দাবি করে পরিচয় দিতে থাকেন। ডিজে সানির গ্রামের বাড়ি নিয়ে রয়েছে দ্বিধা। ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে বলা হলেও অন্য সূত্র জানায় তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালি। দুই সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়ে একসময় তার বাসা ছিল পল্টন। পরবর্তীতে গুলবাগে বাসা স্থানান্তর করেন। সম্প্রতি যুবলীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের ধরপাকড় শুরু হলে সে নাইন ইকবালের ছত্রছায়ায় আত্মগোপনে চলে যায়। এদিকে ইকবাল বর্তমানে কমিশনার সাঈদের অবৈধ বাণিজ্যের পাহারা দিচ্ছেন। বিজয় নগর পানির ট্যাঙ্কির পেছনের একটি ভবনে মাঝারি আকারের ক্যাসিনোর আসর বসাতেন সানি। এখানেই মূলত তার প্রকৃত আস্তানা ছিল। যেখানে সন্ধার পরই জুয়ার আসর বসতো। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য হতো তার জুয়ার আসরে। বর্তমানে সেখানে তালা ঝুলছে। যুবলীগ নেতা খালেদকে গ্রেফতারের পর দুই দিন সে প্রকাশ্যে মোটরসাইকেল নিয়ে শোডাউন করেন। আরামবাগের একাধিক ক্যাসিনোতে ব্যারেব অভিযানের পর থেকে তাকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায় নি। এদিকে নাইন ইকবাল অপরাধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
পল্টনের একজন ব্যবসায়ী বলেন, গত সোমবারও ইকবালকে মোটরসাইকেল নিয়ে এলাকায় ঘুরতে দেখেছি। তার নামে অসংখ্য খুনের মামলা থাকা সত্বেও পুলিশ কেনো ধরছে না বুঝতে পারছি না। শুদ্ধি অভিজানের ভেতরে সে কিভাবে প্রকাশ্যে চলাফেরা করছে। যদিও কোথাও এখন সে অবস্থান করছেন না। আরেক ব্যবসায়ী বলেন, বড় ভাইদের আশির্বাদে সেগুন বাগিচা স্কুল এলাকার পুরোটাই ডিজে সানির দখলে। নাইন ইকবালই মূলত বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রের যোগান দিয়ে তাকে এ সকল অবৈধ কাজে সহায়তা করেন। নাইন ইকবাল ও সানি অনেক মারাত্মক লোক। আমরা পল্টনে ব্যবসা করি প্রায় ৪০ বছর। ছোট খাটো ব্যবসা করলেও তাদের ম্যানেজ করেই আমাদের টিকে থাকতে হয়। তাদের মাসোহারা না দিলে যে কোনো সময় আমাদের ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
No comments