পঞ্চগড়ে কাঁচা চা পাতার দরপতন হুমকির মুখে ক্ষুদ্র চা শিল্প
চা
বাগান নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছে পঞ্চগড় জেলার ৫ হাজার ক্ষুদ্র চা চাষি।
চা পাতার মূল্য বিড়ম্বনায় এ অবস্থার সৃষ্টি হওয়ায় বর্তমানে চাষিদের মধ্যে
অস্থিরতা বিরাজ করছে। এ বিষয়ে কারো কাছ থেকে কোনো সুরাহা না পাওয়ার জন্য
তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা, ক্ষোভ ও অসন্তোষ। তৃতীয় চা অঞ্চল হিসেবে
স্বীকৃতি পাওয়া এ জেলার সুনাম নষ্ট করতে সংশ্লিষ্টরা কৌশলগতভাবে চাপাতার
দরপতন করিয়ে চাষিদের বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেয়ার জন্য এখানকার চা শিল্প এখন
হুমকির মুখে পড়েছে অনেকে মনে করছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ স্মল টি গার্ডেন
অনার্স এসোসিয়েশন আজ বৃহস্পতিবার পঞ্চগড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও প্রধানমন্ত্রী
বরাবরে স্মারকলিপি দেবে। অব্যাহতভাবে চলা মূল্য বঞ্চনার একপর্যায়ে অভিযোগের
পরিপ্রেক্ষিতে সর্বশেষ গত ১৪ই জুলাই জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে কাঁচা
চা পাতার মূল্য নির্ধারণ কমিটির এক সভায় প্রতি কেজি কাঁচা চা পাতার মূল্য
১৬ টাকা ৮০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। এ সভায় চা কারখানার মালিক, চা বাগান
মালিক ও সুধীজন উপস্থিত ছিলেন। এক্ষেত্রে কোনো চাষির পাতার মান ভলো না হলে
১০ শতাংশ হারে কর্তন করে চাষিদের মূল্য পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত হয়।
কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে কাঁচা চা পাতা কেনার জন্য চাষিদের উৎপাদন খরচই উঠছে না। এছাড়া চাপাতা বিক্রির সময় নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে পাতা কেনার পাশাপাশি কারখানা কর্তৃপক্ষ ১০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত কর্তন করছে। কাঁচা চা পাতার এমন দরপতনের জন্য চাষিরা কারখানা মালিকদের সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন। চাষিদের চাপাতার ভাউচারে কর্তনের হিসাব ও প্রতি কেজির মূল্য উল্লেখ না করে শুধুমাত্র মোট টাকা পরিশোধ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে কোনো চাষি আপত্তি জানালে তার চা পাতা কারখানার মালিক নিতে অপরাগতা প্রকাশ করে। এতে চা চাষিরা প্রতিনিয়ত লোকসান গুনলেও কারখানা মালিক কৌশলে কোটি কোটি টাকা উপরি আয় করছে বলে অনেকে জানিয়েছে। ২০১৮ সালে পঞ্চগড় জেলায় কাঁচা চা পাতার মূল্য ছিল কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। কিন্তু এ বছর কমতে কমতে ১৬ টাকা ৮০ পয়সায় এসে দাঁড়িয়েছে। এতে নতুন চাষিরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলায় চায়ের চারাও বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে চারা উৎপাদনকারীরাও ক্ষতির মুখে পড়েছে। বর্তমানে পঞ্চগড় জেলার ১৫টি চা কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রতি কেজি কাঁচা চা পাতার মূল্য মাত্র ১০ থেকে ১২ টাকা দেয়ার জন্য চা বাগান মালিকদের অন্যখাত থেকে চা শ্রমিকদের মজুরি ও সার কিটনাশকের মূল্য পরিশোধ করতে হচ্ছে। অনেকে ক্ষোভে চায়ের গাছ থেকে কাঁচা চা পাতা কেটে ফেলে দিচ্ছে। এ বিষয়ে চা চাষি ও কারখানা মালিকরা পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে। চাষিরা জানায়, কারখানা মালিকরা সিন্ডিকেট করে কাঁচা চা পাতার মূল্য কমিয়েছে। অপরদিকে, কারখানা মালিকরা বলছে ক্ষুদ্র চাষিরা নিয়ম অনুযায়ী কাঁচা পাতা না তুলার কারণে উৎপাদিত চায়ের মান কমে গেছে। তাই অকশন বাজারে তৈরি চায়ের মূল্য কমে যাওয়ায় কাঁচা চা পাতার দাম কমানো হয়েছে। অভিযোগ মতে, ভালো মানের চারা দিয়ে বাগান ও কাঁচা চাপাতা তুলার ব্যাপারে চাষিদের উদ্বুদ্ধ, প্রশিক্ষণ ও সচেতন করার জন্য টি বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কার্যকর তৎপরতা নেই। তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদুর রহমান ডাবলু বলেন, চা চাষিদের অবস্থা অনেকটা তৎকালীন নীল চাষিদের মতো হয়েছে। কারণ চা কারখানার মালিকদের একতরফা সিদ্ধান্তে কাঁচা চাপাতার যে মূল্যে দিচ্ছে তা দিয়ে বাগানের সার-কীটনাশক ও পাতা তোলার কামলা খরচও হয় না। আমি এ বিষয়ে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক ও বিভাগী কমিশনার মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি তারা যেন বাণিজ্যমন্ত্রী মহোদোয়ের সঙ্গে কথা বলে চা বাগান মালিকদের কাঁচা চাপাতার সঠিক মূল্য নির্ধারণের ব্যবস্থা করেন।
তেঁতুলিয়া উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়নের ব্রম্মতল এলাকার চা চাষি আমিরুল ইসলাম বলেন, আমি ১৫ একর জমিতে চা চাষ করেছি। এখন চা নিয়ে আমাদের নাজেহাল অবস্থা। সময়মতো বিক্রি করতে না পারলে চায়ের পাতা বৃদ্ধি পেয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেকেই দা দিয়ে অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়া চা পাতা কেটে ফেলে দিচ্ছে। এছাড়া কারখানাগুলো ১২ টাকা কেজি দরের উপর কিনছে না। এক কেজি চা পাতা তুলতেই তো ৪ থেকে ৫ টাকা খরচ হয়। সেখানে লাভের আশা কিভাবে করবো। সে আশা আর স্বপ্ন নিয়ে চা চাষ শুরু করেছিলাম সব স্বপ্নই আমাদের ভঙ্গ হয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ টি ফ্যাক্টরি অনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ট্রেজারার ও তেঁতুলিয়ার বাংলা টি ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রির স্বত্বাধিকারী শেখ মো. শাহ আলম বলেন, আমরা বর্তমানে নির্ধারিত প্রতি কেজি ১৬ টাকা ৮০ পয়সা দরেই কাঁচা চা পাতা ক্রয় করছি। তবে ভেজাপাতা থাকলে সেক্ষেত্রে ১০ শতাংশ কর্তন করা হয়। কাঁচা চা পাতার মূল্য কমে যাওয়ার পেছনে কোনো সিন্ডিকেটের প্রভাব নেই। বাংলাদেশ চা বোর্ড পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ে কর্মরত নর্দান বাংলাদেশ প্রকল্পের পরিচালক ড. মোহাম্মদ শামীম আল মামুন বলেন, নিলাম বাজারে পঞ্চগড় জেলার চায়ের মূল্য হ্রাস পাওয়ায় কাঁচা পাতার দামে প্রভাব পড়েছে। চা উৎপাদনে গুণগতমান রক্ষা করতে পারলে এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ হতে পারে। তবে কারখানা মালিকদেরও সচেতন হতে হবে। এছাড়া ইচ্ছেমতো যখন তখন কারখানা বন্ধ করা হলে চাষিরা বিপদে পড়তে পারেন। নির্ধারিত মূল্যে যাতে কারখানাগুলো চাষিদের কাছ থেকে চা পাতা ক্রয় করেন সেজন্য কাঁচা চাপাতার মূল্য নির্ধারণ ও তদারকি কমিটির তদারকি অব্যাহত আছে। তবে এই সমস্যা অল্পদিনের মধ্যে কেটে যাবে।
কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে কাঁচা চা পাতা কেনার জন্য চাষিদের উৎপাদন খরচই উঠছে না। এছাড়া চাপাতা বিক্রির সময় নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে পাতা কেনার পাশাপাশি কারখানা কর্তৃপক্ষ ১০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত কর্তন করছে। কাঁচা চা পাতার এমন দরপতনের জন্য চাষিরা কারখানা মালিকদের সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন। চাষিদের চাপাতার ভাউচারে কর্তনের হিসাব ও প্রতি কেজির মূল্য উল্লেখ না করে শুধুমাত্র মোট টাকা পরিশোধ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে কোনো চাষি আপত্তি জানালে তার চা পাতা কারখানার মালিক নিতে অপরাগতা প্রকাশ করে। এতে চা চাষিরা প্রতিনিয়ত লোকসান গুনলেও কারখানা মালিক কৌশলে কোটি কোটি টাকা উপরি আয় করছে বলে অনেকে জানিয়েছে। ২০১৮ সালে পঞ্চগড় জেলায় কাঁচা চা পাতার মূল্য ছিল কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। কিন্তু এ বছর কমতে কমতে ১৬ টাকা ৮০ পয়সায় এসে দাঁড়িয়েছে। এতে নতুন চাষিরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলায় চায়ের চারাও বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে চারা উৎপাদনকারীরাও ক্ষতির মুখে পড়েছে। বর্তমানে পঞ্চগড় জেলার ১৫টি চা কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রতি কেজি কাঁচা চা পাতার মূল্য মাত্র ১০ থেকে ১২ টাকা দেয়ার জন্য চা বাগান মালিকদের অন্যখাত থেকে চা শ্রমিকদের মজুরি ও সার কিটনাশকের মূল্য পরিশোধ করতে হচ্ছে। অনেকে ক্ষোভে চায়ের গাছ থেকে কাঁচা চা পাতা কেটে ফেলে দিচ্ছে। এ বিষয়ে চা চাষি ও কারখানা মালিকরা পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে। চাষিরা জানায়, কারখানা মালিকরা সিন্ডিকেট করে কাঁচা চা পাতার মূল্য কমিয়েছে। অপরদিকে, কারখানা মালিকরা বলছে ক্ষুদ্র চাষিরা নিয়ম অনুযায়ী কাঁচা পাতা না তুলার কারণে উৎপাদিত চায়ের মান কমে গেছে। তাই অকশন বাজারে তৈরি চায়ের মূল্য কমে যাওয়ায় কাঁচা চা পাতার দাম কমানো হয়েছে। অভিযোগ মতে, ভালো মানের চারা দিয়ে বাগান ও কাঁচা চাপাতা তুলার ব্যাপারে চাষিদের উদ্বুদ্ধ, প্রশিক্ষণ ও সচেতন করার জন্য টি বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কার্যকর তৎপরতা নেই। তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদুর রহমান ডাবলু বলেন, চা চাষিদের অবস্থা অনেকটা তৎকালীন নীল চাষিদের মতো হয়েছে। কারণ চা কারখানার মালিকদের একতরফা সিদ্ধান্তে কাঁচা চাপাতার যে মূল্যে দিচ্ছে তা দিয়ে বাগানের সার-কীটনাশক ও পাতা তোলার কামলা খরচও হয় না। আমি এ বিষয়ে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক ও বিভাগী কমিশনার মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি তারা যেন বাণিজ্যমন্ত্রী মহোদোয়ের সঙ্গে কথা বলে চা বাগান মালিকদের কাঁচা চাপাতার সঠিক মূল্য নির্ধারণের ব্যবস্থা করেন।
তেঁতুলিয়া উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়নের ব্রম্মতল এলাকার চা চাষি আমিরুল ইসলাম বলেন, আমি ১৫ একর জমিতে চা চাষ করেছি। এখন চা নিয়ে আমাদের নাজেহাল অবস্থা। সময়মতো বিক্রি করতে না পারলে চায়ের পাতা বৃদ্ধি পেয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেকেই দা দিয়ে অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়া চা পাতা কেটে ফেলে দিচ্ছে। এছাড়া কারখানাগুলো ১২ টাকা কেজি দরের উপর কিনছে না। এক কেজি চা পাতা তুলতেই তো ৪ থেকে ৫ টাকা খরচ হয়। সেখানে লাভের আশা কিভাবে করবো। সে আশা আর স্বপ্ন নিয়ে চা চাষ শুরু করেছিলাম সব স্বপ্নই আমাদের ভঙ্গ হয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ টি ফ্যাক্টরি অনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ট্রেজারার ও তেঁতুলিয়ার বাংলা টি ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রির স্বত্বাধিকারী শেখ মো. শাহ আলম বলেন, আমরা বর্তমানে নির্ধারিত প্রতি কেজি ১৬ টাকা ৮০ পয়সা দরেই কাঁচা চা পাতা ক্রয় করছি। তবে ভেজাপাতা থাকলে সেক্ষেত্রে ১০ শতাংশ কর্তন করা হয়। কাঁচা চা পাতার মূল্য কমে যাওয়ার পেছনে কোনো সিন্ডিকেটের প্রভাব নেই। বাংলাদেশ চা বোর্ড পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ে কর্মরত নর্দান বাংলাদেশ প্রকল্পের পরিচালক ড. মোহাম্মদ শামীম আল মামুন বলেন, নিলাম বাজারে পঞ্চগড় জেলার চায়ের মূল্য হ্রাস পাওয়ায় কাঁচা পাতার দামে প্রভাব পড়েছে। চা উৎপাদনে গুণগতমান রক্ষা করতে পারলে এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ হতে পারে। তবে কারখানা মালিকদেরও সচেতন হতে হবে। এছাড়া ইচ্ছেমতো যখন তখন কারখানা বন্ধ করা হলে চাষিরা বিপদে পড়তে পারেন। নির্ধারিত মূল্যে যাতে কারখানাগুলো চাষিদের কাছ থেকে চা পাতা ক্রয় করেন সেজন্য কাঁচা চাপাতার মূল্য নির্ধারণ ও তদারকি কমিটির তদারকি অব্যাহত আছে। তবে এই সমস্যা অল্পদিনের মধ্যে কেটে যাবে।
No comments