পাট চাষে আগ্রহ নেই চাষিদের by মনিরুল ইসলাম
পাট
চাষে উৎপাদন খরচ বাড়ছে। কিন্তু বিক্রির সময় ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না
চাষিরা। যে কারণে যশোর অঞ্চলের ছয় জেলায় পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষিরা।
এতে এ বছর এই অঞ্চলে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোর আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে এ বছর পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৬১ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে। সেখানে আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫ হেক্টর জমিতে। হিসাব অনুযায়ী, ২৪ হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে এবার আবাদ কম হলো। গত বছরও এই অঞ্চলে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। চলতি বছরে যশোরে ২৬ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১৭ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। এ ছাড়া ঝিনাইদহে ২২ হাজার ৮৯৫ হেক্টরের বিপরীতে ২০ হাজার ৪২৫ হেক্টর, মাগুরায় ৩৬ হাজার ১১০ হেক্টরের বিপরীতে ৩২ হাজার ৪৫০ হেক্টর, কুষ্টিয়ায় ৩৫ হাজার ৪৮০ হেক্টরের বিপরীতে ৩২ হাজার ৮২৫ হেক্টর, চুয়াডাঙ্গায় ১৫ হাজার ১৮০ হেক্টরের বিপরীতে ১৩ হাজার ৮৫০ হেক্টর, মেহেরপুরে ২৫ হাজার ৩১০ হেক্টরের বিপরীতে ১৯ হাজার ৯২০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।
যশোর সদর উপজেলার উত্তর ললিতাদহ গ্রামের ওবায়দুল ইসলাম গত বছর দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করে লোকসানে পড়েন। এ জন্য এ বছর তিনি পাট চাষ করেননি। তিনি বলেন, ‘আমাদের এলাকায় পাট জাগ দেওয়ার জায়গার ভীষণ সংকট। এ সময় পুকুরেও পানি থাকে না। গত বছর পুকুরে পাট জাগ দিয়ে পাম্প দিয়ে প্রতিদিন সেচ দিয়ে পুকুরে পানি ভরে দিতে হয়েছে। এতে উৎপাদন খরচ বেশি হয়েছে। ফলে গত বছর পাট চাষ করে লোকসান হয়েছে। এ জন্য এ বছর আর চাষ করিনি।’
যশোরের কেশবপুরের দোরমুটিয়া গ্রামের মোনতাজ উদ্দীন বলেন, ‘এ বছর ৫৩ শতক জমিতে পাটের আবাদ করেছি। পাট চাষের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। সেই তুলনায় পাটের দাম পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে পাট চাষে তেমন আগ্রহ নেই। তারপরও আমরা চাষি মানুষ। চাষ করতে হয়। তাই করি। পাট চাষের জন্য জমি প্রস্তুত, সার-কীটনাশক, সেচ, তিনবার নিকানো, পাট কাটা-ধোয়া, বাড়িতে নেওয়া ও জমির ইজারা—সব মিলিয়ে ৪২ শতকের এক বিঘাতে খরচ হয় ১৬ থেকে ১৮ হাজার টাকা। এক বিঘাতে ১০ মণের মতো পাট পাওয়া যায়। গত বছর দেড় হাজার টাকা মণ দরে পাট বিক্রি হয়েছে। হিসাব অনুযায়ী ১০ মণ পাট থেকে ১৫ হাজার ও পাটখড়ি থেকে আরও তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে আয়-ব্যয় সমান সমান হচ্ছে। আমাদের শুধু কষ্টই করা হয়।’
লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এ বছর পাটের আবাদ কম কেন—এমন প্রশ্নের জবাবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোর আঞ্চলিক কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক সমীর কুমার গোস্বামী বলেন, ‘যশোরে পাট পচানোর জন্য জলাভূমির সংকট রয়েছে। ফলে চাষিদের পাট পচাতে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এ ছাড়া পাট উৎপাদনে চাষির খরচ বেড়ে যাচ্ছে। সেই তুলনায় তাঁরা দাম পাচ্ছেন না। এতে চাষিরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। তবে আশার কথা হচ্ছে, জমি খালি পড়ে থাকছে না। পাট চাষের জমিতে চাষিরা আউশ ধানের আবাদ করছেন।’ পাট চাষে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য কৃষি বিভাগের কোনো উদ্যোগ আছে কি না—জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে পাট চাষে কোনো ধরনের ভর্তুকি সরকার থেকে দেওয়া হচ্ছে না। এ-সংক্রান্ত কোনো প্রকল্পও আপাতত কার্যকর নেই। যে কারণে বিনা মূল্যে চাষির মধ্যে সার-বীজ দেওয়ার মতো সরকারি সুযোগ-সুবিধা আপাতত নেই।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোর আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে এ বছর পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৬১ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে। সেখানে আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫ হেক্টর জমিতে। হিসাব অনুযায়ী, ২৪ হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে এবার আবাদ কম হলো। গত বছরও এই অঞ্চলে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। চলতি বছরে যশোরে ২৬ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১৭ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। এ ছাড়া ঝিনাইদহে ২২ হাজার ৮৯৫ হেক্টরের বিপরীতে ২০ হাজার ৪২৫ হেক্টর, মাগুরায় ৩৬ হাজার ১১০ হেক্টরের বিপরীতে ৩২ হাজার ৪৫০ হেক্টর, কুষ্টিয়ায় ৩৫ হাজার ৪৮০ হেক্টরের বিপরীতে ৩২ হাজার ৮২৫ হেক্টর, চুয়াডাঙ্গায় ১৫ হাজার ১৮০ হেক্টরের বিপরীতে ১৩ হাজার ৮৫০ হেক্টর, মেহেরপুরে ২৫ হাজার ৩১০ হেক্টরের বিপরীতে ১৯ হাজার ৯২০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।
যশোর সদর উপজেলার উত্তর ললিতাদহ গ্রামের ওবায়দুল ইসলাম গত বছর দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করে লোকসানে পড়েন। এ জন্য এ বছর তিনি পাট চাষ করেননি। তিনি বলেন, ‘আমাদের এলাকায় পাট জাগ দেওয়ার জায়গার ভীষণ সংকট। এ সময় পুকুরেও পানি থাকে না। গত বছর পুকুরে পাট জাগ দিয়ে পাম্প দিয়ে প্রতিদিন সেচ দিয়ে পুকুরে পানি ভরে দিতে হয়েছে। এতে উৎপাদন খরচ বেশি হয়েছে। ফলে গত বছর পাট চাষ করে লোকসান হয়েছে। এ জন্য এ বছর আর চাষ করিনি।’
যশোরের কেশবপুরের দোরমুটিয়া গ্রামের মোনতাজ উদ্দীন বলেন, ‘এ বছর ৫৩ শতক জমিতে পাটের আবাদ করেছি। পাট চাষের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। সেই তুলনায় পাটের দাম পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে পাট চাষে তেমন আগ্রহ নেই। তারপরও আমরা চাষি মানুষ। চাষ করতে হয়। তাই করি। পাট চাষের জন্য জমি প্রস্তুত, সার-কীটনাশক, সেচ, তিনবার নিকানো, পাট কাটা-ধোয়া, বাড়িতে নেওয়া ও জমির ইজারা—সব মিলিয়ে ৪২ শতকের এক বিঘাতে খরচ হয় ১৬ থেকে ১৮ হাজার টাকা। এক বিঘাতে ১০ মণের মতো পাট পাওয়া যায়। গত বছর দেড় হাজার টাকা মণ দরে পাট বিক্রি হয়েছে। হিসাব অনুযায়ী ১০ মণ পাট থেকে ১৫ হাজার ও পাটখড়ি থেকে আরও তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে আয়-ব্যয় সমান সমান হচ্ছে। আমাদের শুধু কষ্টই করা হয়।’
লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এ বছর পাটের আবাদ কম কেন—এমন প্রশ্নের জবাবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোর আঞ্চলিক কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক সমীর কুমার গোস্বামী বলেন, ‘যশোরে পাট পচানোর জন্য জলাভূমির সংকট রয়েছে। ফলে চাষিদের পাট পচাতে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এ ছাড়া পাট উৎপাদনে চাষির খরচ বেড়ে যাচ্ছে। সেই তুলনায় তাঁরা দাম পাচ্ছেন না। এতে চাষিরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। তবে আশার কথা হচ্ছে, জমি খালি পড়ে থাকছে না। পাট চাষের জমিতে চাষিরা আউশ ধানের আবাদ করছেন।’ পাট চাষে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য কৃষি বিভাগের কোনো উদ্যোগ আছে কি না—জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে পাট চাষে কোনো ধরনের ভর্তুকি সরকার থেকে দেওয়া হচ্ছে না। এ-সংক্রান্ত কোনো প্রকল্পও আপাতত কার্যকর নেই। যে কারণে বিনা মূল্যে চাষির মধ্যে সার-বীজ দেওয়ার মতো সরকারি সুযোগ-সুবিধা আপাতত নেই।
No comments